সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুন, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ওহী ও যুক্তি কি একে অপরের বিপরীত হতে পারে?

মানুষের হৃদয়ের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। যাদের হৃদয় অচেতন, তাদেরকে মূর্খ বলা হয়। কিন্তু জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে যাদের হৃদয় উন্নত চেতনায় পৌঁছে, তাদের হৃদয়ে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তায়ালা বলছেন – بَلْ هُوَ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ فِي صُدُورِ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلَّا الظَّالِمُونَ যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের অন্তরে রয়েছে স্পষ্ট আয়াত। কেবল জালিমরাই আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে। [সূরা ২৯/আনকাবুত – ৪৯] এ আয়াতে বলা হচ্ছে, জ্ঞানীদের অন্তরে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত রয়েছে। অর্থাৎ, কোর’আনেও আল্লাহর আয়াত রয়েছে, আবার জ্ঞানী লোকের অন্তরেও আল্লাহর আয়াত রয়েছে। তাই, জ্ঞানীদের অন্তর ও আল কোর’আন কখনো পরস্পর বিরোধী হতে পারে না। অনেকে বলেন, ওহী ও যুক্তির মাঝে পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু, এ আয়াতে দেখা যায়, ওহী ও যুক্তির উৎস একই। অর্থাৎ, ওহী আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা একটি আদেশ ও সুস্পষ্ট নিদর্শন, আবার হৃদয় পরিচালনাকারী রূহও আল্লাহর পক্ষে থেকে আসা একটি আদেশ ও সুস্পষ্ট নিদর্শন। দুটি একই উৎস থেকে আগত। সুতরাং, ওহী ও যুক্তির মাঝে কোনো পার্থক্য থাকতে পারে না। যদি কখনো ওহী ও যুক্তির ম

আকীদা পন্থী ও শবে বরাত পন্থী

১ শবে বরাত পন্থীদেরকে আপনি যদি বলেন, ‘ভাই, শবে বরাত তো কোর’আন ও হাদিসে নেই’; তাৎক্ষনিক সে আপনাকে ১০০০১ টি যুক্তি দিয়ে বলবে, ‘দেখুন, শবে বরাত কোর’আন ও হাদিসে না থাকলেও এটা ইসলামের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়’। তেমনি, আকীদা পন্থীদেরকে আপনি যদি বলেন, ‘ভাই, আকীদা তো কোর’আন ও হাদিসের কোথাও নেই’’ তাৎক্ষনিক সে আপনাকে ১০০০১ টি যুক্তি দিয়ে বলবে, ‘দেখুন, কোর’আন ও হাদীসে আকীদা না থাকলেও এটা কিন্তু ইসলামের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ২ শবে বরাত পন্থীদের যুক্তি হলো, কোর’আনে ‘লাইলাতুল মোবারক’ শব্দটি আছে, হাদিসে ‘নিসফে শাবাব’ শব্দটি আছে, সুতরাং শবে বরাত ইসলামের-ই একটি অংশ। আপনি যদি তাকে বলেন, ‘আচ্ছা, ঠিক আছে। আপনি ‘শবে বরাত’ শব্দটি ব্যবহার না করে, 'লাইলাতুল মোবারক' অথবা ‘নিসফে শাবান’ শব্দটি ব্যবহার করুন’। সে আপনার যুক্তি মানবে না। তেমনি,

'আকিদা'র হাকিকত

‘আকীদা’ শব্দটি এমন একটি শব্দ, যা দিয়ে মুসলিমদের মাঝে বিভক্তি ঘটানো হয়। ফলে এ শব্দটি এখন খুবই বিপদজনক হয়ে গেছে। কথিত এক ' এমাম ' তাঁর জনসভায় বলেছেন, “ধর্মের প্রথম হলো আকীদা, তারপর হলো ঈমান, তারপর ইসলাম। যার আকীদা ঠিক নেই, তার ঈমান ও ইসলাম কিছুই ঠিক নেই।” আমার জানার খুব ইচ্ছা, তিনি ‘আকীদা’ শব্দটি কোথায় পেলেন? কোর’আন ও হাদিসের কোথাও যে শব্দটি নেই, তা না থাকলে নাকি ঈমান ও ইসলাম কিছুই থাকে না!!! আকীদাপন্থীদের এ এক সমস্যা। ধর্মে যা নেই, তাই তারা ধর্মের মৌলিক ভিত্তি হিসাবে চালিয়ে দেয়। সাহাবীগণ ও সালফে সালেহীন কেউ যে শব্দটি ব্যবহার করেননি, সে শব্দটি দিয়েই এখন সাধারণ মুসলিমদেরকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। অথচ, ‘আকীদা’ ধর্মের মৌলিক কোনো বিষয় নয়। আল্লাহ তায়ালা ধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো সাহাবীদেরকে শিক্ষা দেয়ার জন্যে স্বয়ং জিবরাঈল (আ)-কে মানুষের আকৃতিতে সাহাবীদের সামনে উপস্থিত করলেন। এ ঘটনাটিকে আমরা হাদিসে জিবরাঈল হিসাবে জানি।

জুপিটার কেন সৃষ্টি হল?

বড়দের কাজ হলো ছোটদেরকে বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করা। এ দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা মানুষদেরকে যেমন দিয়েছেন, তেমনি সৌরজগতের গ্রহগুলোকেও দিয়েছেন। আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহের নাম জুপিটার। পৃথিবীর চেয়ে ১১ গুন বড়। অর্থাৎ, কম করে হলেও ১৩০০টি পৃথিবীকে সে একাই গিলে খেতে পারবে। বড় ভাই হিসাবে জুপিটারকে আল্লাহ তায়ালা অনেক দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে তার প্রধান দায়িত্ব হলো ছোট ভাই পৃথিবীকে বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করা। বিপদ-আপদগুলো কি? এবার সে সম্পর্কে একটু বলি। বিভিন্ন সৌরজগতের কিছু কিছু নক্ষত্র মাঝেমধ্যে আমাদের সৌরজগতে বেড়াতে আসে। এদের নাম - Hot Jupiters । এরা বেড়াতে আসার পর আমাদের সৌরজগতের নক্ষত্রদের কেউ বলে, এটা আমার জায়গা, তুই এখানে আসলি কেন? বেড়াতে আসা নক্ষত্র বলে, এটা আমার জায়গা, তুই এখানে আসলি কেন? এক পর্যায়ে তাদের উভয়ের মাঝে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এবং উভয় নক্ষত্র ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে যায়। কিছু কিছু টুকরা আকারে আমাদের পৃথিবীর মত বড় হয়, আবার কিছু কিছু টুকরা একটু ছোট হয়। এই টুকরোগুলোকেই আমরা ধূমকেতু বলি। নক্ষত্রগুলো ধ্বংস হবার পর টুকরাগুলো এদিক-সেদিক ছুটতে থাকে। কিছু কিছু টুকরা সূর্যের গায়ের উপর গিয়ে পড়ে। আর

আমাদের দৃষ্টি সৌরজগতে যায় না, কিন্তু যায় কোথায়?

শহরের সবচেয়ে প্রাচীন Bursa Ulucami মসজিদে আসরের সালাত পড়তে গেলাম। এ মসজিদটি দেখলেই আমার প্রাণ জুড়িয়ে যায়। ১৩৯৯ সালে উসমানী খিলাফতের প্রথম শতাব্দীতে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু, আশ্চর্যের বিষয় হলো, যখন নাসার দেশ আমেরিকার কোনো অস্তিত্ব নেই। যখন ইউরোপ বিশ্বাস করতো, পৃথিবী সমতল। তখন মুসলিমদের মসজিদের মিম্বারের দু’পাশে সৌরজগতের গ্রহ নক্ষত্রে ভরা। মিম্বারের একপাশে সৌরজগতের গ্রহগুলোর আকৃতি ও পারস্পরিক দূরত্ব নিখুঁত ভাবে খচিত রয়েছে। আর অন্য পাশে খচিত রয়েছে পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের আকৃতি, সম্পর্ক ও দূরত্ব।  ছবিগুলো দেখুন এখানে। আমাদের মুসলিম উম্মাহর মসজিদগুলো ছিল এমনি। ইমামের পায়ের নিচে থাকতো সৌরজগতের সমস্ত গ্রহ নক্ষত্রগুলো। আর এখন? ______ ইসলামের সোনালী যুগে মানুষ মসজিদে প্রবেশ করলে দেখতে পেত, সৌরজগতের কোথায় কোন গ্রহ থাকে। আর, এখন মানুষ মসজিদে প্রবেশ করলে দেখতে পায়, হাত কি বুকের উপর থাকে না নাভির নিচে থাকে। . আমাদের দৃষ্টির সীমানা সৌরজগত পর্যন্ত না যেতে পেরে এখন মুসল্লিদের পেটের উপর গিয়ে পড়ে।  

অন্য সভ্যতার সাথে ইসলামের পার্থক্য

পৃথিবীতে চারটি বড় সভ্যতা রয়েছে। ইসলামী সভ্যতা, পশ্চিমা সভ্যতা, ভারতীয় সভ্যতা এবং চিনা সভ্যতা। ইসলামের সাথে বাকি তিনটি সভ্যতার পার্থক্য হলো, ইসলাম একটি বৈশ্বিক সভ্যতা, কিন্তু বাকি তিনটি হলো ভৌগোলিক সভ্যতা। ভারতীয় সভ্যতা তার ভৌগোলিক কারণেই চিনা সভ্যতার অংশ হতে পারে না। এবং চিনা সভ্যতা তার ভৌগোলিক কারণেই পশ্চিমা সভ্যতার অংশ হতে পারে না। কিন্তু ইসলামী সভ্যতা ভৌগোলিক কোনো সভ্যতা না হবার কারণে ভারতীয়, চিনা ও পশ্চিমা সভ্যতা সহ বিশ্বের সকল সভ্যতার অংশ হতে পারে। [Dr. Bruce Lawrence থেকে অনূদিত]  

হাতমোজা সমাচার

আমার আপু ইনবক্সে আমাকে একটা লেখা পাঠিয়েছেন। হাতমোজা নিয়ে অন্য একজনের লেখা । লেখার নিচে মন্তব্যগুলো পড়ে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জেগেছে। ১। মুসলিমদের মহাসম্মেলনে অর্থাৎ হজ্জের সময়ে লাখো লাখো পুরুষের সামনে নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরেন না কেন? ২। নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরে যদি একেবারে ১০০% ঢেকে ফেলেন, তাহলে সূরা নূরের ৩০ নং আয়াতে পুরুষদেরকে দৃষ্টি নত করতে বলা হয়েছে কেন? ৩। সূরা নূরের ৩১ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “নারীদের যা প্রকাশ্য থাকার তা ব্যতীত” তাদের বক্ষদেশ আভরণ করার জন্যে। কিন্তু হাতমোজা দিয়ে ১০০% ঢেকে ফেললে নারীদের আর প্রকাশ্য থাকে কি? ৪। রাসূল (স) সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বলেছেন, “সহজ কর, কঠিন করো না”। কোনো নারী যদি হাতমোজা না পরতে চান, তাহলে তার জন্যে কঠিন কঠিন নিময় করার জন্যে কি রাসূল (স) বলেছেন? ৫। ঈমান ও তাকওয়া কি মানুষের হৃদয়ে থাকে না হাতে-পায়ে থাকে?

নাস্তিক কাকে বলে? এটি কত প্রকার ও কি কি?

কোর’আনে সরাসরি কোথাও নাস্তিক শব্দটি নেই। কারণ, নাস্তিক একটি আধুনিক ও কৃত্রিম শব্দ। অনেকে মনে করেন, নাস্তিকরা কোনো ধরণের স্রষ্টাকে বিশ্বাস করে না। আসলে এটি একটি ভুল ধরনা। নাস্তিকরা যে স্রষ্টায় বিশ্বাস করে তার নাম – হাওয়া বা প্রবৃত্তি। যেমন, কোর’আনে বলা হয়েছে – أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَٰهَهُ هَوَاهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَيْهِ وَكِيلًا “আপনি কি তাকে দেখেন না, যে প্রবৃত্তিকে তার উপাস্য রূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি তার উকিল হবেন?” [সূরা ২৫/ফুরকান - ৪৩] অর্থাৎ, যারা নিজের কামনা, বাসনা ও প্রবৃত্তিকে পূজা করে, তাদেরকে-ই আধুনিক ভাষায় নাস্তিক বলা হয়। সহজ ভাষায় নাস্তিকদেরকে আমরা ‘প্রবৃত্তি পূজারী’ বলতে পারি। কোর’আনে এদেরকে মুশরিক বলা হয়েছে। আমাদের সমাজে আমরা দেখি, প্রবৃত্তি পূজারী বা নাস্তিকরা নিজেদেরকে অনেক জ্ঞানী মনে করেন। আসলে কি তারা জ্ঞানী? এ প্রশ্নের উত্তর সাথে সাথেই আল্লাহ তায়ালা পরবর্তী আয়াতে দিয়ে দিয়েছেন। أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَ ۚ إِنْ هُمْ إِلَّا كَٱلْأَنْعَـٰمِ ۖ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا “আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শুনে অথবা যুক্তি-বু

নাস্তিকতা একটি অ-প্রাকৃতিক আচরণের নাম

নাস্তিকতা কি স্বাভাবিক কোনো কিছু? মানব শিশু জন্ম গ্রহণ করার আগেই আল্লাহ তায়ালা তার মধ্যে কয়েকটি বিষয় ডিফল্ট সেটিং করে দেন; শিশুকে তা অন্য কারো কাছ থেকে শিখতে হয় না। যেমন, কান্না। শিশু জন্ম গ্রহণ করর পরেই কাঁদতে পারে, এটা শিশুকে অন্য কারো কাজ থেকে শিখতে হয় না। তেমনি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করাটাও প্রত্যেক শিশুর ডিফল্ট সেটিং করা থাকে। পরিবার ও পরিবেশ থেকে শিশুকে চাপ না দিলে সে মনের অজান্তেই এক আল্লাহকে বিশ্বাস করতে শুরু করে। শিশুদের সাইকোলজি ও বিশ্বাস নিয়ে জাস্টিন ব্যারেট [Justin Barrett] একটি গবেষণামূলক বই লিখেছেন। নাম – Born Believers: The Science of Children's Religious Belief এখানে তিনি অনেকগুলো জরিপ উপস্থাপন করেছেন। যেমন, কোনো শিশুদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয়, “এই পাহাড়টি কি নিজে নিজে তৈরি হয়েছে, না এটাকে কেউ বানিয়েছে?” তখন শিশুরা উত্তর দেয়, “পাহাড়টা কেউ একজন বানিয়েছে”।

আল্লাহকে ছাড়া কেউ কি ভালো হতে পারে?

আল্লাহকে বিশ্বাস করা ছাড়া কেউ কি ভালো মানুষ হতে পারে? হ্যাঁ, হতে পারে। কারণ, আমরা মাঝে মধ্যে দেখি, নাস্তিক-সেকুলারগণও ভালো কিছু কথা বলছেন। এবং তারাও মাঝে মধ্যে মানুষের উপকার করার চেষ্টা করেন। এখন, প্রশ্ন হলো, আল্লাহকে ছাড়া কি কেউ ভালো মানুষ হতে পারে? উত্তর – না। আল্লাহকে ছাড়া কেউ ভালো মানুষ হতে পারে না। পার্থক্যটি লক্ষ করুন। আল্লাহকে ‘বিশ্বাস করা’ ছাড়া কেউ ভালো মানুষ হতে পারলেও আল্লাহকে ছাড়া কেউ ভালো মানুষ হতে পারেন না। কারণ, আল্লাহ হচ্ছেন যাবতীয় ভালোর উৎস। পৃথিবীতে গুণবাচক যত নাম আছে এবং ভালো যত কাজ আছে, সবগুলোর উৎস হলেন আল্লাহ তায়ালা। সুতরাং, আল্লাহকে ছাড়া কেউ ভালো মানুষ হতে পারেন না। আরেকটু সহজ করে বলি। ধরুন, আপনারা দুই ভাই বা দুই বোন। আপনার আম্মু বলছেন, তুই তো তোর ভাইয়ের চেয়ে ‘খাটো’। এখানে আপনার আম্মু আপনার ভাইকে স্ট্যান্ডার্ড মনে করে আপনাকে ‘খাটো’ বলছেন। কিন্তু আপনার খালাতো ভাই যদি আপনার চেয়েও ‘খাটো’ হয়, তখন আপনার আম্মু আবার বলবেন, তুই তো তোর খালাতো ভায়ের চেয়ে ‘লম্বা’। অর্থাৎ একই আপনি দুইটি ভিন্ন স্ট্যান্ডার্ড এর কারণে একবার ‘খাটো’ হিসাবে বিবেচিত হলেন, আবার ‘লম্বা’ হিসাবে বিবেচিত

নাস্তিকতা প্রসঙ্গে স্যার আইজাক নিউটন

"পেশাগতভাবে নাস্তিকতা ও কর্মগতভাবে মূর্তিপূজা হলো ধর্মপরায়ণতার বিপরীত। মানবজাতির মধ্যে নাস্তিকতা এমন এক নির্বোধ ও ঘৃণ্য হিসাবে বিবেচিত যে এর পক্ষে তেমন কোন প্রচারক নেই। এটা কি কোন দৈবাৎ হতে পারে যে, পশু-পাখি ও মানুষের শরীরের (পেটের অংশটি ব্যতীত) ডান ও বাম পাশ ঠিক একই রকমের? তাদের মুখের দু’পাশে দুটি চোখ আছে, কিন্তু মুখের এক পাশে অতিরিক্ত কোনো চোখ নেই। তাদের মাথার দু’পাশে দুটি কান আছে, কিন্তু মাথার একপাশে অতিরিক্ত কোনো কান নেই । দু’চোখের মাঝামাঝিতে দু’রন্ধ্রের একটি নাক আছে। নাকের নিচ বরাবর একটি মুখ আছে। সম্মুখে দুটি পা, অথবা দুটি ডানা, কিংবা দুটি বাহু আছে। পিছনে বা নিচে দু’টি পা আছে। কোনো একপাশে অতিরিক্ত কিছু নেই। – এসব কি হঠাৎ কোন দৈবাৎক্রমে হয়ে যেতে পারে? কোথা হতে তাদের শরীরের বাহ্যিক কাঠামোর মধ্যে এমন সামঞ্জস্য আসলো? নাকি এটি কোনো স্রষ্টার কৌশল ছিল? খুবই ছোট জীবিত প্রাণী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের প্রাণীগুলোর চোখ আলোকভেদ্য। শরীরের মধ্যে একমাত্র চোখেই আলো ভেদ করতে পারে। চোখের বাইরের অংশে একটি শক্ত স্বচ্ছ আলোকভেদ্য চামড়া রয়েছে। এর মাঝখানে আছে স্ফটিকের মতো একটি স্বচ্ছ লেন্স। লেন্সে

সূরা শু'আরা ও কোর'আনের চমৎকার স্টাইল

কোর’আনের কিছু কিছু সূরায় একসাথে অনেক নবী-রাসূলের ঘটনা বর্ণনা করা হয়। সাধারণত, একই সূরার মধ্যে অবস্থিত সকল নবী-রাসূলের ঘটনা বর্ণনা করার সময় একটি কমন প্যাটার্ন অনুসরণ করা হয়। উদাহরণ স্বরূপ আমরা সূরা শু’আরা দেখতে পারি। এ সূরার রুকু সংখ্যা ১১ টি। এবং এখানে ৭ জন নবীর নাম ও তাদের সম্প্রদায়ের আলোচনা করা হয়েছে। ১ম রুকুতে একটি ভূমিকা দেয়া হয়েছে। ২য়, ৩য় এবং ৪র্থ রুকুতে মূসা (আ)-এর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। ৫ম রুকুতে ইব্রাহীম (আ), ৬ষ্ঠ রুকুতে নূহ (আ), ৭ম রুকুতে হূদ (আ), ৮ম রুকুতে সালিহ (আ), ৯ম রুকুতে লূত (আ), এবং ১০ম রুকুতে শুয়াইব (আ) এর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। সর্বশেষ ১১ তম রুকুতে একটি উপসংহার দেয়া হয়েছে। মূলত, ভূমিকা ও উপসংহার হলো মুহাম্মদ (স)-এর উদ্দেশ্য, যদিও তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়নি। মুহাম্মদ (স) সহ ৮ জন নবীর উল্লেখ করা হয়েছে এই সূরায়। সবার ক্ষেত্রেই কিছু কমন প্যাটার্ন ব্যবহার করা হয়েছে। নূহ, হূদ, সালিহ, লূত এবং শু'আইব (আ) এই ৫ জন নবীর সম্প্রদায়কে আল্লাহ তায়ালা ধ্বংস করে দিয়েছিলেন, তাই তাদের সবার আলোচনা হুবহু একই প্যাটার্নে করা হয়েছে। অর্থাৎ, ৬ থেকে ১০ নং রুকু পর্যন্ত প্রতিটি রুকুর প্যাটার্ন

বিজ্ঞান ও বিগ্যান এর মধ্যে পার্থক্য কি?

বিজ্ঞান (Science) ও বিগ্যান (Big gun) এর মধ্যে পার্থক্য কি?___সংজ্ঞাগত পার্থক্য: বিজ্ঞান হলো এমন একটি জ্ঞান, যা প্রাকৃতিক নিয়মসমূহ বা সুন্নাতুল্লাহ’কে আবিষ্কার করে। কিন্তু, বিগ্যান (Big gun) হলো এমন একটি জ্ঞান, যা বন্দুকধারী বা চেতনাবাজদের আবিষ্কার করে। ___প্রতিষ্ঠাতাদের পার্থক্য: বিজ্ঞানে অবদান রেখেছেন ইবনে সিনা ও স্যার আইজাক নিউটনের মত মানুষেরা, যারা ছিলেন তাঁদের নিজ নিজ ধর্মের অনেক বড় স্কলার। কিন্তু, বিগ্যানে অবদান রেখেছেন ‘স্যার’-এর মত মানুষেরা, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও বন্দুকধারী চেতনায় বিশ্বাসী। ___কার্যাবলীর পার্থক্য: এটা আপনারা লিখুন। তবে বিজ্ঞান ও বিগ্যানের পার্থক্য করতে ভুলবেন না।

বেদনাদায়ক কৌতুক

এক লোক ব্রিজ থেকে পড়ে মারা যাবে, এমন সময় A এসে বলল, আরে... আরে... কর কি? এমন করো না। B – না, আমি আত্মহত্যা করব। কেউ আমাকে ভালোবাসে না। A – আচ্ছা, তুমি কি মুসলিম? B – হুম। A – ওয়াও, আমিও মুসলিম। কিন্তু, তুমি শিয়া না সুন্নি? B – সুন্নি। A – আমিও সুন্নি। কিন্তু তুমি আহলে হাদিস না মাজহাবী? B – মাজহাবী। A – ভালো, আমিও। কিন্তু, তুমি হানাফি, শাফেয়ী, মালিকি না হাম্বলী? B – হানাফি। A – আমিও হানাফি। কিন্তু, দেওবন্দী না বেরলভী? B – বেরলভী। A – বেশ ভালো, আমিও বেরলভী। কিন্তু, তুমি তানজীহি না তাফকীরি? B – তানজিহী। A – ওয়াও, আমিও তাই। কিন্তু, তুমি ‘তানজীহি আজমাতি’ না ‘তানজীহি ফারহাতি’? B – তানজীহি ফারহাতি। A – আমিও। কিন্তু, তুমি ‘তানজীহি ফারহাতি জামিউল উলুম আজমীর’ না ‘তানজীহি ফারহাতি জামিউন নুর মেয়াত’? B – তানজীহি ফারহাতি জামিউন নুর মেয়াত। A – হায় হায়। তুই তো কাফির। যা মর গিয়ে, তোকে আমি বাঁচাতে পারব না।

আয়েশা (রা)-এর বয়স নিয়ে প্রশ্ন

আয়েশা (রা) তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কখনো অভিযোগ করে বলেননি যে, কেন তাকে ছোট বয়সে বিয়ে দেয়া হয়েছিল? অথচ, ধর্ম-বিদ্বেষীরা এ নিয়ে রাসূল (স)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। আদালতের নিয়ম অনুযায়ী, বাদী নিজে অভিযোগ না করা সত্ত্বেও অন্য কেউ অভিযোগ তুললে আইনের কাছে সেটি একটি ভুয়া অভিযোগ হিসাবে প্রমাণিত হয়। এবং এমন ভুয়া অভিযোগকারীকে মানহানি মামলায় শাস্তি প্রদান করার বিধান রয়েছে। আদালতের দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারা অনুযায়ী, কোনো মৃত ব্যক্তির মানহানি করা যাবে না। তাই, রাসূল (স)–এর মানহানিও অন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ______ আয়েশা (রা)-এর বয়স নিয়ে প্রশ্ন যারা করেন, তাদেরকে রাসূল (স)-এর প্রথম স্ত্রীর নাম, বয়স ও বিয়ে করার কারণ জিজ্ঞেস করুন। সঠিক জবাব দিতে পারবেন না। আসলে, যারা খাদিজার (রা)-এর বয়স জানেন না, তারাই আয়েশা (রা)-এর বয়স নিয়ে ভুয়া অভিযোগ করেন।

জ্ঞানে ও বিজ্ঞানে সেরা হবার আর্থ-সামাজিক কারণ

জ্ঞানে ও বিজ্ঞানে মুসলিম সমাজ এক সময় বিশ্বসেরা ছিল – এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু, একটি সমাজে এমনি এমনি-ই জ্ঞানে ও বিজ্ঞানে বিশ্বসেরা হতে পারে না। এর পিছনে অনেকগুলো আর্থ-সামাজিক কারণ থাকে। যেমন, সে সময়ের মুসলিমরা ছিলেন ধর্মের প্রতি অনুগত এবং চিন্তার ক্ষেত্রে মুক্তমনা। আমাদের দেশে যেমন সেকুলার শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষা আলাদা আলাদা, তখন এমনটা ছিল না। তখনকার ধার্মিকরা ছিলেন অনেক বেশি মুক্তমনা। .. মতের ভিন্নতাকে তখন সুন্দরভাবে গ্রহণ করা হত। কেউ নিজের জ্ঞানকে একমাত্র সহি জ্ঞান মনে করতেন না। যেমন, ক্লাসিক্যাল তাফসীরগুলোতে আমরা দেখি, লেখক নিজের মতের সম্পূর্ণ বিপরীত মতটি তাঁর তাফসীরে তুলে দিচ্ছেন। এবং বলছেন, কোন মতটি সঠিক তা একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন। ২ মুসলিমরা তখন তাদের ইবাদাতসমূহ সহজভাবে পালন করার জন্যে বিভিন্ন প্রকার বস্তু ও কৌশল আবিষ্কার করতেন। যেমন, আল খাওয়ারিজমী কাবা শরীফের সঠিক দিক নির্ণয়ের জন্যে যে নিয়মগুলো আবিষ্কার করেছিলেন, পরবর্তীতে সেগুলো থেকেই জ্যামিতি শাস্ত্রের উদ্ভব হয়।

আমাদের দেশের নারীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র নয়

পুরুষেরা বিয়ের সময় আবশ্যিকভাবে নারীদেরকে মোহর বা সম্পদ দিতে হয়। ধরুন, একজন পুরুষ বিয়ে করার সময় তাঁর সঙ্গিনীকে পাঁচ লাখ টাকা দিলো। এ টাকাটা ঐ নারীটি কি করবে? অনেকে হয়তো ব্যাংকে জমা রেখে দিবে। কিন্তু মুসলিম নারী যেহেতু সুদ খায় না, সুতরাং মোহরের টাকাটা কোনো ব্যাংকে সে রাখবে না। তাহলে কি টাকাটা পুরুষকে ফিরিয়ে দিবে? না। কারণ, পুরুষকে টাকাটা ফিরিয়ে দিলে সেটা আর স্ত্রীর মোহর বা সম্পদ হিসাবে থাকে না। সেটা তখন পুরুষের নিজের সম্পদ হয়ে যায়। তাহলে, সংসারের চাল-ডাল কিনার জন্যে খরচ করবে? না। কারণ, সংসারের চার-ডাল কেনার দায়িত্ব কেবল পুরুষের। তাহলে?

শত শত পন্থীদের ভিড়ে

আপনি যদি শুধু মুসলিম হন, তাহলে অন্যরা আপনার সমালোচনা করবে। কিন্তু আপনি যদি ‘আহলে হাদিসপন্থী’, ‘মাজারপন্থী’, ‘সহীহ আকীদাপন্থী’, ‘পীরপন্থী’, ‘তরীকাপন্থী’ 'তাবলীগপন্থী', 'আওয়ামীপন্থী', বিএনপিপন্থী, ইত্যাদি হন, তাহলে আপনার দলের মানুষ আপনাকে খুব ভালোবাসবে। দেখুন, কোনো ব্যক্তি, আলেম, স্কলার বা পীর ইসলামের মালিক বা অথোরিটি হতে পারেন না। ইসলামের একমাত্র অথোরিটি আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল (স)। সুতরাং মুসলিম হওয়ার জন্যে আপনাকে কোনো ‘পন্থী’ হতে হবে না। একজন মানুষ পৃথিবীর যত বড় পীর, শাইখ বা স্কলার হোন না কেন, সবাই ইসলামের অনুসারী ও অনুসন্ধানী। আমরা সবাই পৃথিবীর পরীক্ষার হলে আছি। আমরা সবাই পরীক্ষার্থী। কেউ কেউ নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট দাবী করে অন্যদের বহিষ্কার করতে শুরু করেন। অথচ তারা জানেন না, তারা নিজেরাও পরীক্ষার্থী। এক পরীক্ষার্থী অন্য পরীক্ষার্থীকে ঠিক বা বেঠিক বলার অধিকার আল্লাহ তায়ালা আমাদের কাউকে দেননি।

যুগে যুগে কাবার পথে বাধা দেয় কারা?

৬ষ্ঠ হিজরি। মক্কা থেকে পেয়ারা নবী অনেক দূরে। স্বপ্ন দেখলেন একদিন কাবা ঘর, তাওয়াফ করছেন। বললেন সাহাবীদের, চল মক্কায়, ওমরাহ করে আসি। যেই কথা সেই কাজ। সবকিছু ঠিকঠাক, চললেন কবার উদ্দেশ্যে, মক্কার দিকে। কিন্তু, কাবা ঘর ঘিরে রেখেছে কাফেরের দল। প্রিয় নবী ও প্রিয় মানুষগুলোকে যেতে দিবে না মক্কায়। মূর্খের দল মনে করে, কাবা ও মক্কার মালিক তারা নিজেরাই। কিন্তু তারা জানে না, পৃথিবীর সকল স্থান-ই আল্লাহর, সকল স্থান-ই সেজদার। বাধা পেয়ে যাননি মক্কায় প্রিয় নবী। পশুগুলো উৎসর্গ করতে বললেন সাহাবীদের । কিন্তু শুনছে না কেউ তাঁর কথা। ভাবছে, বুঝি মক্কায় না গেলে পশু উৎসর্গ করা যায় না। আমাদের মা সালমার পরামর্শে, প্রিয় নবী নিজেই উৎসর্গ করলেন নিজের পশু। সাহাবীদের জ্ঞান হলো। বাধা পেলে মক্কায় যাবার দরকার কি? আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় সবাই ছুটে যেতে লাগলেন। তাই, হুদাইবিয়া হয়ে গেলো কাবার ভূমি। কাফেরের দল বসে নেই। যুগে যুগে ইমানদারদের কাবায় যেতে বাধা দিবে, আল্লাহ কি জানেন না? তাই তো কোর’আনের ঘোষণা – إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ ٱلَّذِى جَعَلْنَـٰهُ لِلنَّاسِ سَوَآءً

নাস্তিক একটি প্রতিক্রিয়াশীল শব্দ

নাস্তিক শব্দটির মাঝেই প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তার বীজ রয়েছে। কারণ, পৃথিবীতে সবকিছু শুরু হয় একটি প্রস্তাবনা বা thesis এর মাধ্যমে। এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে পরবর্তীতে 'প্রতি-প্রস্তাবনা' বা antithesis এর জন্ম হয়। ‘আস্তিক’ বা theist শব্দটি একটি স্বভাবগত প্রস্তাবনা। এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে তৈরি হয় ‘না-আস্তিক’ বা atheist শব্দটি। 'না-আস্তিক' শব্দটি সম্পূর্ণভাবে 'আস্তিক' শব্দটির উপর নির্ভরশীল, কিন্তু 'আস্তিক' শব্দটি 'নাস্তিক' শব্দটির উপর নির্ভরশীল নয়। নাস্তিকের অবর্তমানে আস্তিক তার নিজের অস্তিত্ব হাজির করতে পারে, কিন্তু আস্তিকের অবর্তমানে নাস্তিক তার নিজের অস্তিত্ব হাজির করতে পারে না। অর্থাৎ, স্বভাবগত আস্তিক প্রস্তাবনার বিপরীতে তৈরি হওয়া একটি প্রতিক্রিয়াশীল প্রস্তাবনার নাম হলো নাস্তিক। ____ ইসলামের মূল বাণী “লা ইলাহা, ইল্লাল্লাহ” হলো আস্তিক ও নাস্তিক উভয়ের মাঝে একটি মেলবন্ধন বা সিন-থিসিস।

আরবের কেউ কেউ বলেন, “আমরা নাকি মুসলিম না”

আরবের কেউ কেউ বলেন, “আমরা নাকি মুসলিম না”। কিন্তু দেখুন, আরবদের সম্পর্কে আল্লাহ কি বলছেন – قَالَتِ ٱلْأَعْرَابُ ءَامَنَّا ۖ قُل لَّمْ تُؤْمِنُوا۟ وَلَـٰكِن قُولُوٓا۟ أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ ٱلْإِيمَـٰنُ فِى قُلُوبِكُمْ ۖ وَإِن تُطِيعُوا۟ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ لَا يَلِتْكُم مِّنْ أَعْمَـٰلِكُمْ شَيْـًٔا ۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌ “আরবেরা বলে, আমরা ঈমান এনেছি। আপনি বলুন, তোমরা ঈমান আন নাই। তোমরা বরং বল, আমরা বশ্যতা স্বীকার করেছি। এখনও তোমাদের অন্তরে ঈমান প্রবেশ করেনি। যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর, তবে তোমাদের কর্ম বিন্দুমাত্রও নিষ্ফল করা হবে না। নিশ্চয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান। [সূরা ৪৯/ হুজরাত – ১৪] অর্থাৎ, আরবের লোকজন যতই নিজেদেরকে মুমিন-মুসলিম দাবী করুক না কেন, তাদের অন্তরে এখনো ঈমান প্রবেশ করেনি। আরবদেরকে উদ্দেশ্য করে শায়খুল আকবার ইবনুল আরাবী বলেন, “দীনুকুম দিনারুকুম।” অর্থাৎ, তোমার ধর্ম হচ্ছে তোমাদের দিনার। আমার আরব রুমমেট আমাকে প্রায়ই বলে, “আরব কেবল নবীর দেশ না, এটি মূর্খ কাফির আবু জাহেলের দেশও বটে”।

সূরা তা-হা এর শিক্ষা

অপেক্ষা, প্রতীক্ষা, ধৈর্য ও সময়ের হিসাব মিলানোর একটি সূরা হলো ‘তা-হা’। সম্পূর্ণ সূরায় নানাভাবে ধৈর্যের আলোচনা ও অধৈর্যের সমালোচনা করা হয়েছে। সূরাটি শুরু হল। মূসা (আ) তাঁর পরিবারকে বললেন, এখানে অপেক্ষা কর। ঐ যে দূরে আগুন দেখা যাচ্ছে, গিয়ে দেখি, তোমাদের জন্যে কিছু পাই কিনা সেখানে। আগুনের কাছে যাবার পর আল্লাহ তায়ালা মূসা (আ)-কে বললেন, শেষ সময় বা কেয়ামতকে আমি মানুষের কাছে গোপন রাখি, যাতে মানুষ তাড়াহুড়া না করে। তখন মূসা (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা স্মরণ করিয়ে দিলেন, তুমি জন্ম গ্রহণ করার পর তোমাকে নদীতে ছেড়ে দিয়ে তোমার মা অপেক্ষা করেছিল। এর ফল হিসাবে আমি তোমার মায়ের নিকট আবার তোমাকে ফিরিয়ে দিয়েছি। . এরপর ফেরাউনের ঘটনাটি শুরু হলো। ফেরাউনের ও মূসা (আ) উভয়ে মিলে একটি দিন নির্ধারণ করলেন, যেদিন সত্য ও মিথ্যা যাচাই করা হবে। মূসা (আ) ধৈর্য ধারণ করলেন। জাদুকরগণ আগে জাদু প্রদর্শন করলেন, এবং মূসা (আ) পরে প্রদর্শন করলেন। ফলে মূসা (আ) জয়ী হলেন।

সমাজ পরিবর্তনের সঠিক নিয়ম

সোশ্যাল মিডিয়ায় বা বাস্তবে আমরা প্রায়ই বলি, “ভাই, এটা করুন, ওটা করবেন না” “এটা করা উচিত, ওটা করা উচিত না”, “এটা হালাল, ওটা হারাম”, ইত্যাদি, ইত্যাদি...। আসলে এতে সমাজের তেমন কোনো পরিবর্তন হয় না। তাহলে সমাজের পরিবর্তন হয় কিভাবে? আমরা যখন ভালো কোনো কাজ করি, তখন আমাদের আশেপাশের মানুষেরা আমাদের ভালো কাজগুলো দেখে তারাও ভালো কাজ করার চেষ্টা করে, এবং এর ফলে সমাজ ভালো হতে শুরু করে। অন্যদিকে, আমরা মুখে যতই ভালো ভালো কথা বলি না কেন, অথবা, ফেইসবুকে যতই ভালো ভালো কথা লিখি না কেন, নিজেরা য দি ভালো কোনো কাজ না করি, তাহলে সমাজ কখনো ভালো হয় না। এটাই পৃথিবীর নিয়ম। ধরুন, আপনি যদি একজন বাবা অথবা মা হন, সন্তানকে আপনি যতই বলুন “এটা কর, ওটা করো না”, তারা আপনার কথা শুনবে না। আপনি যা করবেন, আপনার সন্তান তাই অনুসরণ করবে। আপনি যদি সত্য কথা বলেন, তাহলে আপনার সন্তানেরাও সত্য কথা বলবে। আর, আপনি যদি মিথ্যা কথা বলেন, তাহলে আপনার সন্তানকে যতই সত্য কথা বলার উপদেশ দিবেন, সে আপনার কথা শুনবে না। সেও মিথ্যা কথা বলবে। একইভাবে, একজন ইমাম, স্কলার, পীর, ধর্মীয় নেতা বা ফেইসবুক লেখক হিসাবে আপনি যতই বলুন না কেন, “এটা করুন, ওটা কর

মৃত্যু পরবর্তী জীবনের প্রমাণ

যে কোনো কিছু সর্বপ্রথম ধর্মের আলোচ্য বিষয় হিসাবে থাকে, এরপর সেটি হয় দর্শনের আলোচ্য বিষয়, এবং সর্বশেষ সেটি হয় বিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। যেমন, মৃত্যু পরবর্তী জীবন বা আখিরাত। মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে সর্বপ্রথম বিভিন্ন ধর্মে আলোচনা করা হয়। এরপর, বিভিন্ন দার্শনিক মৃত্যু পরবর্তী জীবনের বাস্তবতা নিয়ে যুক্তি দিতে শুরু করেন। আর এখন, বিজ্ঞান মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে প্রমাণ দিতে শুরু করলো। উদাহরণ স্বরূপ বিজ্ঞানী Jeffrey Long এর “Evidence of the afterlife” বইটির কথা উল্লেখ করা যাক। এ বইটি লেখার আগে তিনি একটি গবেষণা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম – “Near death experiences research foundation”। সংগঠনটির ওয়েব সাইট হলো – http://www.nderf.org প্রায় ২৫ বছর থেকে ‘মৃত্যু পরবর্তী জীবন’ নিয়ে তারা গবেষণা করছেন। তাদের গবেষণার পদ্ধতিটা এবার একটু বোঝার চেষ্টা করি। কোনো এক্সিডেন্ট বা হার্ট অ্যাটাকের পর মানুষের হার্ট ও ব্রেইন উভয়টি যখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়, তখন ডাক্তারগণ তাকে ‘ক্লিনিক্যাল ডেথ’ বা মৃত বলে ঘোষণা করে। কিন্তু, আল্লাহর ইচ্ছায় এরপরও কিছু কিছু মানুষ তাদের জীবন ফিরে পায়। যেসব মানুষ এভাবে মৃত্যুর একেবারে নিকটে গ

বস্তুবাদী বিজ্ঞানের চারটি মিথ

বিজ্ঞানের মোড়কে যেসব বস্তুবাদী চিন্তা সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাকে বলা হয় বস্তুবাদী বিজ্ঞান। গত শতাব্দীতে বস্তুবাদী বিজ্ঞান যেসব অন্ধ বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে ছিল, তা এখন একে একে সব ভেঙ্গে পড়ছে। উদাহরণ স্বরূপ বস্তুবাদী বিজ্ঞানের কিছু মিথ উল্লেখ করছি এখানে। ________ মিথ – ১ । “মহাবিশ্বের সবকিছু বস্তু দ্বারা সৃষ্টি। যা কিছু বস্তু দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব, তা হলো বিজ্ঞান; আর যা কিছু বস্তু দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়, তা বিজ্ঞান নয়।” … বস্তুবাদী বিজ্ঞানের উপরোক্ত তত্ত্বটি এখন ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। ডার্ক এনার্জি ও ডার্ক মেটার আবিষ্কার হওয়ার পর বস্তুবাদী বিজ্ঞানের এই অন্ধ বিশ্বাসকে অস্বীকার করা ছাড়া কোয়ান্টাম বিজ্ঞানের আর কোনো ভিন্ন উপায় নেই। ________ মিথ – ২ । “আবেগ, অনুভূতি, দয়া ও ভালোবাসা এগুলো মানুষের মস্তিষ্কে উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ, মানুষ হলো একটি বায়োলজিক্যাল রোবট।” ... কিন্তু সম্প্রতি চিকিৎসা বিজ্ঞানে ‘out of body experience’ বা ‘near death experience’ আবিষ্কার হওয়ার পর বিজ্ঞানকে আজ বিশ্বাস করতে হচ্ছে যে, মানুষের মস্তিষ্ক-ই সব না। মানুষ আসলে তার শরীর ও মস্তিষ্কের বাইরেও অবস্থান করতে পারে।

হুদাইবিয়া সন্ধির ঘটনা বর্ণিত হাদিস

মিস্ওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রাঃ) ও মারওয়ান (রহ.) হতে বর্ণিত। তাদের উভয়ের একজনের বর্ণনা অপরজনের বর্ণনার সমর্থন করে তাঁরা বলেন, আল্লাহর রাসূল ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) হুদাইবিয়ার সময় বের হলেন। যখন সহাবীগণ রাস্তার এক জায়গায় এসে পৌঁছলেন, তখন নাবী ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বললেন, ‘খালিদ ইবনু ওয়ালিদ কুরাইশদের অশ্বারোহী অগ্রবর্তী বাহিনী নিয়ে গোমায়ম নামক স্থানে অবস্থান করছে। তোমরা ডান দিকের রাস্তা ধর।’ আল্লাহর কসম! খালিদ মুসলিমদের উপস্থিতি টেরও পেলো না, এমনকি যখন তারা মুসলিম সেনাবাহিনীর পশ্চাতে ধূলিরাশি দেখতে পেল, তখন সে কুরাইশদের সাবধান করার জন্য ঘোড়া দৌঁড়িয়ে চলে গেল। এদিকে আল্লাহর রাসূল ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) অগ্রসর হয়ে যখন সেই গিরিপথে উপস্থিত হলেন, যেখান থেকে মক্কার সোজা পথ চলে গিয়েছে, তখন নাবী ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )-এর উটনী বসে পড়ল। লোকজন (তাকে উঠাবার জন্য) ‘হাল-হাল’ বলল, কাস্ওয়া ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, কাসওয়া ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আল্লাহর রাসূল ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বলেন, ‘কাসওয়া ক্লান্ত হয়নি এবং তা তার স্বভাবও নয় বরং তাকে তিনিই আটকিয়েছেন যিনি হস

আদম (আ)-কে কিভাবে জান্নাত থেকে নামিয়ে দেয়া হলো?

জান্নাত থেকে নেমে যাওয়ার জন্যে আল্লাহ তায়ালা আদম (আ)-কে বললেন, قَالَ اهْبِطُوا بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ وَلَكُمْ فِي الْأَرْضِ مُسْتَقَرٌّ وَمَتَاعٌ إِلَىٰ حِينٍ “তোমরা নেমে যাও। তোমরা এক অপরের শত্রু। পৃথিবীতে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের বসবাসের ও জীবিকার ব্যবস্থা রয়েছে”। [সূরা ৭/আ’রাফ – ২৪] এখানে আদম (আ)-কে জান্নাত থেকে নামিয়ে দেয়ার জন্যে ‘ইহবিতু’ (اهْبِطُوا) শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। আরবি ভাষায়, কোনো কিছু উপর থেকে নিচের দিকে নেমে যাওয়া বুঝাতে ‘হাবত’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। হাবত শব্দটি দিয়ে কাউকে আদেশ করলে বলা হয় ‘ইহবিত’। __________ উদাহরণ - এক __________

ডাক্তারদেরকে আধ্যাত্মিক বিদ্যা অর্জন করতে হবে

একজন ডাক্তার যখন একজন ইঞ্জিনিয়ারের মত আচরণ করেন, তখন সমস্যা সৃষ্টি হয়। একজন ইঞ্জিনিয়ার কেবল বস্তু নিয়ে কাজ করেন, কিন্তু একজন ডাক্তারকে মানুষ ও প্রাণীদের নিয়ে কাজ করতে হয়। বস্তু ও মানুষ এক নয়। একজন ইঞ্জিনিয়ার কোনো বস্তুকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে কাটতে পারেন, এবং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে জোড়া লাগাতে পারেন। কিন্তু একজন ডাক্তার মানুষকে বস্তুর মত ব্যবহার করতে পারেন না। প্রতিটি মানুষের শরীরের সাথে একটি চেতনা রয়েছে, যাকে আমরা বলি আত্মা। মানুষের বস্তুগত অংশ হলো শরীর, এবং অবস্তুগত অংশ হলো আত্ মা। শরীর ও আত্মা মিলেই তৈরি হয় একজন মানুষ। কোনো ডাক্তার যদি মানুষের আত্মাকে অস্বীকার করে কেবল বস্তুগত শরীরকে গুরুত্ব দেয়, তাহলে তিনি আর ডাক্তার থাকেন না, বরং একজন ইঞ্জিনিয়ারে পরিণত হন। ফলে, ডাক্তারের দায়িত্ব হারিয়ে তিনি একজন শ্রমিকের দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেন। কোনো শ্রমিক যদি ভালোভাবে কাজ না করে, তাহলে অত্যাচারী মালিক সে শ্রমিককে মারধর করে। আমাদের দেশের ডাক্তারগণও নাকি মাঝে মাঝে রোগীর অভিভাবকদের হাতে মার খান। এর কারণ হতে পারে, ডাক্তারগণ তাদের উপযুক্ত সম্মান হারিয়ে ফেলেছেন। অথবা, আমরা বাঙালীরা জাতিগতভাবে অনেক বেশি

কেন এত দুর্নীতি?

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও দেশের সর্বত্র এত দুর্নীতি কেন? একটি জরিপের মাধ্যমে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করি। মানুষের মূল্যবোধ জরিপ করে বিশ্বের যেসব সংগঠন, তাদের মধ্যে প্রসিদ্ধ একটি সগঠনের নাম হলো World Values Survey । বাংলাদেশকে নিয়ে তারা একটি জরিপ করেছিল অনেক আগে, কমেন্টে জরিপের মূল লিঙ্কটি দিয়ে দিয়েছি। ঐ জরিপটি থেকে এখানে দুটি প্রশ্ন তুলে দিচ্ছি। : আপনি কি আল্লাহ বা স্রষ্টাকে বিশ্বাস করেন? এর জবাবে, ৯৯.১% মানুষ বলেছে ‘হ্যাঁ’। ০.৫% মানুষ বলেছে ‘না’, এবং ০.৪% মানুষ বলেছে ‘জানি না’। উত্তরটি দেখে আমরা হয়তো খুব খুশী হয়েছি। মনে হচ্ছে, নাস্তিক মুক্ত এক বাংলাদেশ দেখছি। তো চলুন, এবার অন্য একটি প্রশ্ন দেখি। : আপনি কি মৃত্যুর পরবর্তী জীবনে বিশ্বাস করেন? এর জবাবে, মাত্র ৫৩.৮% মানুষ বলেছে ‘হ্যাঁ’। বাকি ৪২.৩% মানুষ বলেছে ‘না’, এবং ৩.৯% মানুষ বলেছে ‘জানি না’। কি বুঝলেন?

ব্রেইন, হার্ট ও মাইন্ড : টেলিভিশন

ব্রেইন, হার্ট ও মাইন্ড –এ তিনটির সম্পর্ক বোঝার জন্যে একটি টেলিভিশনকে কল্পনা করা যাক। টেলিভিশনের মনিটর বা পর্দা হলো আমাদের ব্রেইন, টেলিভিশনের অ্যান্টেনা হলো আমাদের হার্ট এবং স্যাটেলাইট সিগন্যাল হলো আমাদের মাইন্ড। _________ একটি টেলিভিশনের কথা বললে আমরা কেবল বক্সের মত একটি যন্ত্রকে বুঝি না। আমরা জানি, টেলিভিশনের তরঙ্গ আসা-যাওয়ার জন্যে পৃথিবীর উপরে একটি স্যাটেলাইট বসাতে হয়। স্যাটেলাইট থেকে তরঙ্গ আসলেই কেবল পৃথিবীর সকল টেলিভিশন তাদের দৃশ্য ও শব্দ ধারণ করতে পারে। তাই, প্রতিটি টেলি ভিশনের-ই একটি বাহ্যিক ও একটি অদৃশ্য অংশ থাকে। তেমনি, আমাদের প্রত্যেক মানুষের-ই দুটি অংশ থাকে। হার্ট ও মস্তিষ্ক হলো আমাদের শরীরের বাহ্যিক দুটি অংশ, এবং আমাদের আত্মা বা মাইন্ড হলো অদৃশ্য একটি অংশ। মাইন্ড আমাদের শরীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং সারা বিশ্বে বিচরণ করে। হার্টের মাধ্যমে আমরা যখন আমাদের মাইন্ডের কোনো একটি অংশের প্রতি মনোযোগী হই, তখন আমাদের মস্তিষ্কে তা ফুটে উঠে।

সিয়াম, রোজা ও অটোফেজি

মুসলিমরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘সিয়াম’। খ্রিস্টানরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘ফাস্টিং’। হিন্দু বা বৌদ্ধরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘উপবাস’। বিপ্লবীরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘অনশন’। আর, মেডিক্যাল সাইন্স রোজা রাখলে তাকে বলা হয় 'অটোফেজি’। খুব বেশি দিন হয়নি, মেডিক্যাল সাইন্স ‘অটোফেজি’র সাথে পরিচিত হয়েছে। ২০১৬ সালে নোবেল কমিটি জাপানের ডাক্তার ‘ওশিনরি ওসুমি’-কে অটোফেজি আবিষ্কারের জন্যে পুরষ্কার দেয়। এরপর থেকে আধুনিক মানুষেরা ব্যাপকভাবে রোজা রাখতে শুরু করে। কমেন্টে কিছু ভিডিও দিব। রোজা রাখার জন্যে আধুনিক সচেতন নারী ও পুরুষেরা কেমন ব্যস্ত হয়ে পড়ছে, দেখুন!!! শত হলেও, মেডিক্যাল সাইন্স বলে কথা!! যাই হোক, Autophagy কি? এবার তা বলি। Autophagy শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ। Auto অর্থ নিজে নিজে, এবং Phagy অর্থ খাওয়া। সুতরাং, অটোফেজি মানে নিজে নিজেকে খাওয়া। না, মেডিক্যাল সাইন্স নিজের গোস্ত নিজেকে খেতে বলে না। শরীরের কোষগুলো বাহির থেকে কোনো খাবার না পেয়ে নিজেই যখন নিজের অসুস্থ কোষগুলো খেতে শুরু করে, তখন মেডিক্যাল সাইন্সের ভাষায় তাকে অটোফেজি বলা হয়। আরেকটু সহজভাবে বলি।

মানুষ ও বানর : ধৈর্য ও অধৈর্য

বানরকে আপনি যদি একটি কলা দিয়ে বলেন যে, '১ ঘণ্টা পরে এ কলাটি খাবি'। সে আপনার কথা না শুনে সাথে সাথেই কলাটি খেয়ে ফেলবে। কারণ, পশুদের মাঝে ধৈর্য ধারণ করার শক্তি নেই। মানুষ-ই একমাত্র প্রাণী যারা ধৈর্য ধারণ করতে পারে। কিন্তু মানুষ যখন তার ধৈর্য হারিয়ে ফেলে, তখন সে আর মানুষ থাকে না; বানর বা পশু হয়ে যায়। কোর'আনে এর একটি উদাহরণ আছে। আল্লাহ তায়ালা কিছু মানুষকে বললেন যে, তোমরা শনিবারে নদীতে মাছ ধরবে না, বরং ধৈর্য ধারণ করবে। এছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন মাছ ধরতে তোমাদের কোনো বাধা নেই। কিন্তু ঐ মানুষগুলো ধৈর্য ধারণ করতে চাইলো না, তারা শনিবারেই মাছ ধরতে শুরু করলো। ফলে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বানর বানিয়ে দিয়েছেন। وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ ٱلَّذِينَ ٱعْتَدَوْا۟ مِنكُمْ فِى ٱلسَّبْتِ فَقُلْنَا لَهُمْ كُونُوا۟ قِرَدَةً خَـٰسِـِٔينَ "তোমাদের মধ্যে যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাদেরকে তোমরা ভালোভাবেই জান। আমি বলেছিলাম, তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও"। [সূরা ২/বাকারা - ৬৫] আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বানর বানিয়ে দেয়ার কারণ হলো, মানসিকভাবে তারা আগ থেকেই বানরের চরিত্র ধরণ করে রেখেছিল। তারা ম

হৃদয় ও মস্তিষ্কের সম্পর্ক

এক মানুষের ব্রেইন পাঁচটি অঙ্গের উপর নির্ভরশীল। নাক, চামড়া, চোখ, কান ও হৃদয়। ব্রেইনকে সবচেয়ে কম প্রভাবিত করে নাক, এরপর চামড়া, এরপর চোখ, এরপর কান। আর, ব্রেইনকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে হৃদয়। অন্যদিকে, নাক নির্ভর করে চোখের উপর, চোখ নির্ভর করে কানের উপর, এবং কান নির্ভর করে হৃদয়ের উপর। তাই, ব্রেইনের কর্তা হলো হৃদয়। মানুষের ব্রেইন দ্বারা হৃদয়ের কাঠামো ও কার্যক্রমকে পরিবর্তন করা যায় না। কিন্তু হৃদয় দ্বারা ব্রেইনের কাঠামো ও কার্যক্রমকে পরিবর্তন করা যায়। হৃদয়ের দ্বারা ব্রেইনকে ভালোভাবে প্রভাবিত করার জন্য ব্রেইনের গঠন কাঠামো ও কার্যপদ্ধতি ভালোভাবে জানা প্রয়োজন।

ভাস্কর্য এবং মূর্তির পার্থক্য

এক ভাস্কর্য এবং মূর্তির মাঝে অনেক বড় পার্থক্য আছে। ভাস্কর্য হলো সুন্দরের প্রতীক, কিন্তু মূর্তি হলো চেতনার প্রতীক। থেমিসের জন্যে যারা কান্নাকাটি করছে, তারা থেমিসকে সুন্দরের প্রতীক মনে না করে বরং চেতনার প্রতীক মনে করে। প্রশ্ন হলো, ইসলাম ভাস্কর্যকে সমর্থন করলেও মূর্তিকে সমর্থন করে না কেন? কারণ হলো, কোনো অচেতন বস্তু কখনো কোনো চেতনার প্রতীক হতে পারে না। পৃথিবীতে মানুষ উন্নত চেতনার অধিকারী, এবং পাথর নিম্ন চেতনার অধিকারী। উন্নত চেতনার মানুষ যখন নিম্ন চেতনার পাথরকে তার চেতনার প্রতীক মনে করে, তখন মানুষের চেতনা নিম্নগামী হতে শুরু করে। মানুষ যখন তার চেতনার স্তর থেকে নিম্ন বস্তুর স্তরে নামতে শুরু করে, তখন মানুষ পশু হয়ে যায়। এভাবে কেউ যদি পশুর স্তর থেকে আরো নিচে নামতে শুরু করে, তাহলে সে একসময় অচেতন বস্তুর মত হয়ে যায়। পৃথিবীতে মানুষের কাজ হলো বিশ্বের সর্বোচ্চ চেতনার সাথে নিজেকে সম্পর্কিত করা। ধার্মিক মানুষেরা এ কাজটি তাদের সালাত ও সাওমের মাধ্যমে পালন করার চেষ্টা করে। কিন্তু যারা অচেতন বস্তুকে তাদের চেতনার প্রতীক মনে করে, তারা প্রকৃতির বিপরীতে চলতে চায়। এর ফলে তারা মানুষের চেতনার স্তর থেকে বস্তুর স্ত

বাঙালির জন্ম নির্ণয়ে ধর্মের অবদান

একজন বাঙালি যতই সেক্যুলার বা নাস্তিক হোক না কেন, ধর্মের সাহায্য ব্যতীত তিনি তার অস্তিত্বের জানান দিতে পারবেন না। যেমন, কোনো নাস্তিককে যদি আপনি আপনি জিজ্ঞাস করেন, “ভাই, আপনার জন্ম কত সালে?” তিনি হয়তো বলবেন, “১৯৭১ সালে”। “আমি ১৯৭১ সালে জন্ম গ্রহণ করেছি” এর মানে হলো “আমি ঈসা (আ) এর জন্মের ১৯৭১ বছর পর জন্ম গ্রহণ করেছি”। “১৯৭১” বলার সাথে সাথেই একজন সেক্যুলার বা নাস্তিককে বাধ্য হয়েই আমাদের সম্মানিত নবী ঈসা (আ)-এর অস্তিত্ব ও অবদানকে স্বীকার করে নিতে হয়। এরপর আসুন, কোনো নাস্তিক যদি ১৯৭১ সালকে উল্লেখ না করে বলে যে, “আমি বাংলা ১৩৭৮ সালে জন্ম গ্রহণ করেছি”। তাহলে তার মানে হলো, “আমি মুহাম্মদ (স)-এর হিজরতের ১৩৭৮ সাল পরে জন্ম গ্রহণ করেছি”। কারণ, সম্রাট আকবর হিজরি সাল অনুযায়ী-ই বাংলা সাল প্রবর্তন করেছিলেন। সুতরাং, এ ক্ষেত্রেও, যে কোনো নাস্তিক তার জন্ম ও অস্তিত্বের জানান দেয়ার জন্যে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স)-এর অবদানকে স্বীকার করে নিতে হবে। ___________ কোনো সেক্যুলার বা নাস্তিক যদি ধর্ম থেকে দূরে সরে যায়, তাহলে তার জন্মের কোনো ঠিক থাকে না।

আদম (আ) কি পৃথিবীর প্রথম মানব ছিলেন?

আল কোর’আনে কমপক্ষে চারটি স্থানে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তায়ালা ‘একটি নফস’ থেকে সমস্ত মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু, ‘আল্লাহ তায়ালা আদম (আ) থেকে সমস্ত মানুষকে সৃষ্টি করেছেন’ – এ কথা কোর’আনে কোথাও বলা হয়নি। [সূত্র ৪: ১, ৬: ৯৮, ৭: ১৮৯, ৩৯: ৬] অনেকে বলেন, কোর’আনে বর্ণিত ‘একটি নফস’ দ্বারা আদম (আ)-কেই বুঝানো হয়েছে। কিন্তু, ‘একটি নফস’ দ্বারা আমরা যদি আদম (আ) কল্পনা করি, তাহলে এটি কোর’আনের অসংখ্য আয়াতের সাথে বৈপরীত্য তৈরি করে। ________ বৈপরীত্য – ১ । একটি নফস থেকে সৃষ্ট প্রথম মানুষের শিরক। ________ কোর’আনের বর্ণনা মতে, ‘একটি নফস’ থেকে সৃষ্ট প্রথম মানুষ ও তার সঙ্গিনীকে আল্লাহ তায়ালা যখন সন্তান দান করলেন, তখন তারা আল্লাহর সাথে শিরক করতে শুরু করলো। [সূত্র ৭: ১৮৯-১৯০] এখানে ‘একটি নফস’ হিসাবে যদি আদম (আ)-কে ধারণা করে নেয়া হয়, তাহলে আদম (আ)-এর উপর শিরকের মত একটি জঘন্য অপরাধের মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করা হবে। কেননা নবী-রসূলগণ ছোট-খাট কিছু ভুল করলেও শিরকের মত জঘন্য অপরাধ কখনোই করতে পারেন না। আদম (আ) ও তাঁর সঙ্গিনী উভয়ের সন্তান-সন্ততি জন্ম লাভ করার পূর্বে, শয়তানের প্ররোচনায় তারা একটি ছোট্ট ভুল করে ফেলেছিলেন। ক

আদম (আ) কি জান্নাতে ছিলেন?

- আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর জন্যে সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু তাঁকে জান্নাতে রেখে দিলেন কেন? - শয়তান কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে না, কিন্তু আদম (আ)-এর জান্নাতে শয়তান কিভাবে প্রবেশ করল? - জান্নাত থেকে আদম (আ) কিভাবে পৃথিবীতে চলে আসল? - শয়তান যদি প্রতারণা না করত, তাহলে আদম (আ) কি কখনোই পৃথিবীতে আসতো না? এ জাতীয় হাজারো প্রশ্নের সমাধান মিলবে, যদি আমরা নিচের একটি সহজ প্রশ্নের উত্তর জানতে পারি। আদম (আ) কি দুনিয়ার জান্নাতে ছিলেন না আখিরাতের জান্নাতে ছিলেন? কোর’আনে দুই ধরণের জান্নাতের বর্ণনা করা রয়েছে। একটি দুনিয়ার জান্নাত, অন্যটি আখিরাতের জান্নাত। দুনিয়ার জান্নাতের সাথে আখিরাতের জান্নাতের পার্থক্য বুঝার জন্যে প্রথমে দুনিয়া ও আখিরাতের পার্থক্য জানা প্রয়োজন। দুনিয়া শব্দের অর্থ নিকটবর্তী, এবং আখিরাত শব্দের অর্থ পরবর্তী। পৃথিবীতে যেসব গাছ-গাছালি, সুন্দর বন বা বাগান আমরা দেখতে পাই, তা হলো পৃথিবীর জান্নাত। আর, মৃত্যুর পরে ভালোমন্দ বিচার করার পর আমাদেরকে যে জান্নাত দেয়া হবে, তা হলো আখিরাতের জান্নাত। এবার, কোর’আনের আলোকে দুনিয়ার জান্নাত ও আখিরাতের জান্নাতের কিছু পার্থক্য দেখুন।

মানুষের বিবর্তন

এক আখিরাতে কিভাবে আমাদের উত্থান হবে, তা জানার জন্যে সৃষ্টির বিবর্তনকে ভালোভাবে বুঝা প্রয়োজন। [বিস্তারিত দেখুন, আল কোর’আন; সূরা ২৯/আনকাবুত – ১৯ ও ২০ নং আয়াত] দুই আমরা সবাই জানি, চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্বের মাঝে অনেক অসঙ্গতি ও ত্রুটি রয়েছে। বিজ্ঞান এসব ত্রুটি বের করতে করতে হয়তো আরো কয়েক‘শ বছর লেগে যেতে পারে। কিন্তু, মুসলিমরা ইচ্ছা করলে, আল কোর’আনের সাহায্যে আধুনিক বিবর্তনবাদ তত্ত্বের সঠিক বিবর্তন ঘটিয়ে এখনি একটি বিশুদ্ধ ও পূর্ণ তত্ত্ব হাজির করতে পারবে। মুসলিম বিজ্ঞানীরা যদি চমৎকার এ সুযোগটি কাজে না লাগাতে পারে, তাহলে একশ বছর পর বলবে – “দেখুন, বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত বিবর্তনবাদ কিন্তু কোর’আনের এই...এই... আয়াতগুলোর মধ্যে রয়েছে”। দেখুন, আল কোর’আন, ৭৬: ১, ৭১: ১২-১৪, ৩২: ৭, ৯৫: ৪, ৬৭: ৩-৪, ৬: ১৩৩-১৩৪, ৭৬: ২৮, ২০: ৫৩, ২৪: ৪৫, ৬: ২, ৩২: ৭, ৩৭: ১১, ৫৫: ১৪, ২৩: ১২, ৭: ১১, ৮২:৭-৮

ফেরেশতা, জিন ও মানুষের সম্পর্ক

প্রতিটি মানুষের মাঝে দুটি সত্ত্বা থাকে। একটি জিন সত্ত্বা, এবং অন্যটি ফেরেশতা সত্ত্বা। জিন সত্ত্বা মানুষকে সবসময় খারাপ কাজের আদেশ দেয়, আর ফেরেশতা সত্ত্বা মানুষকে সবসময় ভালো কাজের আদেশ দেয়। মানুষের কাজ হলো, ফেরেশতা সত্ত্বার দ্বারা জিন সত্ত্বাকে প্রতিহত করা। মানুষের ভিতরের ফেরেশতা সত্ত্বা যদি কখনো তার জিন সত্ত্বাকে হারাতে পারে, তাহলে মানুষ মুসলিম হতে পারে। কিন্তু জিন সত্ত্বা যদি ফেরেশতা সত্ত্বাকে হারিয়ে দেয়, তাহলে মানুষ শয়তান হয়ে যায়। এ কারণে, ইসলামে ফেরেশতাকে বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে, কিন্তু জিন ও শয়তানকে বিশ্বাস করতে বলা হয়নি। রেফারেন্স:

আমাদের পৃথিবীটা যেন একটি ফুটবল

ফুটবল খেলা আমার পছন্দ না হলেও এটা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। কেন এ খেলা এত জনপ্রিয়, তা বুঝি না; তবে ফুটবল খেলা দ্বারা পৃথিবীকে আমি ভালোভাবে বুঝতে পারি। যেমন, ফুটবলকে আমি আমাদের পৃথিবীর মত মনে করি এবং খেলার ৯০ মিনিট সময়কে আমাদের দুনিয়াবি সময় মনে করি। ১. ফুটবল খেলা হয় দুটি পক্ষ মিলে। একটি মিত্রপক্ষ এবং অন্যটি শত্রুপক্ষ। খেলার মাঠে একে অপরের শত্রু হলেও কেউ কাউকে আঘাত করতে পারে না। কেউ যদি কাউকে আঘাত করে, তাহলে রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন। তেমনি, পৃথিবীতে আমাদের অনেক শক্রপক্ষ আছে। কিন্তু কেউ কাউকে কোনো রকম আঘাত না করেই শত্রু পক্ষের সাথে প্রতিযোগিতা করে যেতে হয়। কখনো কাউকে আঘাত করলে আল্লাহর নির্ধারিত লাল কার্ড দ্বারা আমাদের সম্মান ও স্থানচ্যুত করে দেয়া হয়। ২. ফুটবল খেলা খেলতে হয় দলগতভাবে। কিন্তু এককভাবে প্রত্যেকেই ভালো খেলার চেষ্টা করতে হয়। কেউ ভালো খেলার পরেও কোনো কারণে নিজের দল যদি হেরে যায়, তাতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, হেরে যাওয়া দলের খেলোয়াড়কেও অনেক সময় সেরা খেলোয়াড় হিসাবে পুরস্কৃত করা হয়। তেমনি,

বিশ্বাস করা ও অস্তিত্বের স্বীকার করা এক নয়

“আমি আহমদকে বিশ্বাস করি” –এ বাক্যের দ্বারা আহমদের অস্তিত্ব রয়েছে, তা বুঝানো হয় না। বুঝানো হয়, আহমদের সততার উপর আমার ভরসা রয়েছে। একইভাবে, “আমি আহমদকে বিশ্বাস করি না” –এ বাক্যের দ্বারা আহমদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয় না। বরং আহমদের সততাকে অস্বীকার করা হয়। কেউ যদি বলে, “সে আল্লাহকে বিশ্বাস করে না” –এর মানে এই নয় যে, “আল্লাহ নেই”। এর মানে হলো – “সে আল্লাহর আদেশগুলো মানতে রাজি নয়”। জিন জাতির মত পৃথিবীতে অনেক কিছুর-ই অস্তিত্ব আছে। কিন্তু সেগুলোকে আল্লাহ তায়ালা বিশ্বাস করতে বলেননি। কারণ, বিশ্বাস করা মানে কেবল অস্তিত্বের স্বীকৃতি দেয়া নয়। কাউকে বিশ্বাস করা মানে তার সব কথা মেনে চলা। আমাদের মুসলিমদের মাঝে অনেকেই আল্লাহর অস্তিত্বকে স্বীকার করেন, কিন্তু আল্লাহকে বিশ্বাস করেন না।

জিন-ভূতের বিশ্বাস!

– তুই কি জিন-ভূত বিশ্বাস করিস? : না – কি বলিস? জিনের কথা তো কোর'আনেও আছে। ভূতকে বিশ্বাস না করলেও চলবে, কিন্তু জিনকে তো বিশ্বাস করতে হবে। : হুম। কোর'আনে তো ইবলিস, ফিরাউন ও আবু লাহাব সহ অনেকের কথাই আছে। তাই বলে কি আপনি তাদেরকে বিশ্বাস করবেন? – না। কিন্তু... : এখানে কোনো কিন্তু নেই। বিষয়টি একেবারে স্পষ্ট। কোনো কিছুকে বিশ্বাস করা মানে কেবল তাঁর অস্তিত্বে বিশ্বাস করা নয়। ইসলামে সাতটি বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করতে বলা হয়েছে। আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর গ্রন্থসমূহ, তাঁর রসূলগণ, আখিরাত, আল্লাহর নির্ধারিত ভাগ্য, এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থান। এগুলোকে একত্রে বলা হয় অদৃশ্যে বিশ্বাস। ইসলামের কোথাও জিনকে বিশ্বাস করতে বলা হয়নি। কিন্তু, জিন আছে বলে কোর’আনে বর্ণনা করা হয়েছে।

ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞান

১ম পর্ব যুক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে ইসলামকে বুঝতে গেলে অনেকেই বলতে শুরু করেন - ‘দ্যাখ, ইবলিস কিন্তু তোর মত যুক্তি দিতে গিয়েই কাফের হইছিল’। যুক্তির বিরুদ্ধে ‘যুক্তি’ প্রদান করে অনেকে বলেন... ‘ইবলিস আল্লাহর সামনে ‘যুক্তি’ প্রদান করার কারণে সে কাফির ও শয়তান হয়ে গেছে’। কিন্তু, আল্লাহ তায়ালা বলেন... فَسَجَدَ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ إِلَّا إِبْلِيسَ اسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ “সমস্ত ফেরেশতা একযোগে সেজদায় নত হল। কিন্তু ইবলিস অহংকার করল এবং সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল”। [সূরা ৩৮ /সাদ – ৭৪] দেখুন, আমরা বলি, ইবলিস ‘যুক্তি’ প্রদান করার কারণে কাফির হয়ে গেছে; কিন্তু আল্লাহ তায়ালা বলছেন, ইবলিস অহংকার করার কারণে কাফির হয়েছে। তাহলে এখানে কার কথা সত্য?

উলিল আমর কারা?

আল কোর’আনের সূরা নিসার ৫৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে – يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَطِيعُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُوا۟ ٱلرَّسُولَ وَأُو۟لِى ٱلْأَمْرِ مِنكُمْ ۖ فَإِن تَنَـٰزَعْتُمْ فِى شَىْءٍۢ فَرُدُّوهُ إِلَى ٱللَّهِ وَٱلرَّسُولِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْءَاخِرِ ۚ ذَ‌ٰلِكَ خَيْرٌۭ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর। রাসূল ও উলিল আমরের আনুগত্য কর। এরপর যদি তোমাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতবিরোধ ঘটে, তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের নিকট ফিরে যাবে; যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতকে বিশ্বাস কর। এটাই তোমাদের জন্যে সুন্দর ও উত্তম উপায়”। [সূরা ৪/নিসা – ৫৯] . এ আয়াতটি অনুবাদ করার সময় অনেকেই ‘উলিল আমরের’ অর্থ করেন – ‘নেতা’। কিন্তু উলিল আমরের অর্থ যদি “নেতা” করা হয়, তাহলে কোর’আনের অন্য একটি আয়াতে সাথে বৈপরীত্য তৈরি হয়। কেননা, কেয়ামতের দিন জাহান্নামীরা আল্লাহর নিকট অভিযোগ করে বলবে – “আমরা আমাদের নেতার আনুগত্য করেছিলাম বলে তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে।” وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءَنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا “হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আমা

মা দিবস ও কিছু কথা

ছোট বেলায় কোনো দুষ্টুমি করলে, দাদী ডাক দিয়ে বলতেন – “খবরদার! তোর দাদা দেখলে কিন্তু বকা দিবে!” অথবা, আম্মু বলতেন, - “সাবধান! তোর আব্বু দেখলে কিন্তু খবর আছে!” আমাদের দাদীরা সবসময় দাদাদের ভয় দেখাতেন, আর মায়েরা সবসময় বাবাদের ভয় দেখাতেন। কিন্তু, বর্তমানে শিশুদেরকে এখন আর বাবা-দাদাদেরর ভয় দেখানো হয় না। তাদেরকে বরং কাল্পনিক ভুত, বাঘ, ভল্লুক, সিংহ, পেঁচা এসবের ভয় দেখানো হয়। তাতে ক্ষতি কি হয়? ১। শিশুরা তাদের বাবা-মাকে শ্রদ্ধা ও ভয় করতে শিখে না। ২। শিশুরা বাবাকে ভালো মনে করে, কিন্তু মাকে হিংস্র মনে করে। ৩। শিশুরা মনে করে তাদের মা মিথ্যা কথা বলে। কারণ, শিশুরা অন্যায় করে ফেললেও বাঘ ও ভল্লুক কখনো তাদেরকে খেতে আসে না। প্রশ্ন হলো, আধুনিক নারীরা শিশুদেরকে পুরুষদের ভয় না দেখিয়ে বাঘ-ভল্লুকের ভয় দেখায় কেন?