সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নাস্তিকতা প্রসঙ্গে স্যার আইজাক নিউটন

"পেশাগতভাবে নাস্তিকতা ও কর্মগতভাবে মূর্তিপূজা হলো ধর্মপরায়ণতার বিপরীত। মানবজাতির মধ্যে নাস্তিকতা এমন এক নির্বোধ ও ঘৃণ্য হিসাবে বিবেচিত যে এর পক্ষে তেমন কোন প্রচারক নেই।

এটা কি কোন দৈবাৎ হতে পারে যে, পশু-পাখি ও মানুষের শরীরের (পেটের অংশটি ব্যতীত) ডান ও বাম পাশ ঠিক একই রকমের? তাদের মুখের দু’পাশে দুটি চোখ আছে, কিন্তু মুখের এক পাশে অতিরিক্ত কোনো চোখ নেই। তাদের মাথার দু’পাশে দুটি কান আছে, কিন্তু মাথার একপাশে অতিরিক্ত কোনো কান নেই। দু’চোখের মাঝামাঝিতে দু’রন্ধ্রের একটি নাক আছে। নাকের নিচ বরাবর একটি মুখ আছে। সম্মুখে দুটি পা, অথবা দুটি ডানা, কিংবা দুটি বাহু আছে। পিছনে বা নিচে দু’টি পা আছে। কোনো একপাশে অতিরিক্ত কিছু নেই। – এসব কি হঠাৎ কোন দৈবাৎক্রমে হয়ে যেতে পারে? কোথা হতে তাদের শরীরের বাহ্যিক কাঠামোর মধ্যে এমন সামঞ্জস্য আসলো? নাকি এটি কোনো স্রষ্টার কৌশল ছিল?


খুবই ছোট জীবিত প্রাণী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের প্রাণীগুলোর চোখ আলোকভেদ্য। শরীরের মধ্যে একমাত্র চোখেই আলো ভেদ করতে পারে। চোখের বাইরের অংশে একটি শক্ত স্বচ্ছ আলোকভেদ্য চামড়া রয়েছে। এর মাঝখানে আছে স্ফটিকের মতো একটি স্বচ্ছ লেন্স। লেন্সের সামনে আছে একটি চোখের মনি। দেখার জন্যে এগুলোর সবকিছুকে সঠিক আকৃতিতে ও সঠিক জায়গায় এমন সঠিকভাবে বসানো হয়েছে যে, অন্য কোন শিল্পী অন্য-কোনভাবে তা সাজাতে পারবে?

সকল প্রাণীর চোখের জন্যে উপযোগী আলো এবং এর প্রতিসরণের ফলে তারা সবচেয়ে কৌতূহলী বিষয়গুলো দেখতে পারে। অন্ধের পক্ষে কি কখনো জানা সম্ভব, আলো এবং এর প্রতিসরণ কি?

এসব বিষয়গুলোর বিবেচনা মানবজাতিকে সর্বদা এই বিশ্বাসের প্রতি পরিচালিত করে যে, নিশ্চয় এমন এক সত্ত্বা রয়েছে যিনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং সবকিছু তাঁরই ক্ষমতাধীনে; আর তাই তাঁকেই ভয় করা উচিত।"

Source: Keynes Ms. 7, King's College, Cambridge, UK

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?

এক ভাইয়া প্রশ্ন করেছেন – “তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?” এ প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় ও দার্শনিক দিক থেকে পৃথিবীতে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, এবং এখনো চলছে। কিন্তু ভাইয়া আমাকে বলেছেন খুব সহজ ভাষায় লেখার জন্যে। অবশ্য, আমি সবকিছু সহজ-সরল করেই লেখার চেষ্টা করি। কারণ, আমি ছোট মানুষ, কঠিন ও প্যাঁচালো লেখা যথাসম্ভব কম পড়ি ও লিখি। যাই হোক, তাকদীরের বিষয়টা আমার কাছে খুবই সহজ একটি বিষয় মনে হয়। এ বিষয়ে আমাদের মনে সাধারণত দু’টি প্রশ্ন জাগে। ১। ‘তাকদীর’ বা ভাগ্য যদি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আগেই নির্ধারিত হয়ে থাকে, তাহলে আমরা আর ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে লাভ কি? অথবা, ২। আমরাই যদি নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে আল্লাহ দ্বারা নির্ধারিত ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে হবে কেন? এ প্রশ্নগুলোর জবাব জানার আগে কিছু উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বোঝার চেষ্টা করব।

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...