সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

যুক্তি লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

‘যুক্তি’ ও ‘বুদ্ধি’ কাকে বলে?

‘যুক্তি’ শব্দটি ‘যুক্ত’ শব্দ থেকে এসেছে। কোনো একটি ঘটনাকে অন্য একটি ঘটনার সাথে যুক্ত করাকে বলে ‘যুক্তি’। যেমন, (ছেলেটি সারাদিন টিভি দেখতো,) ‘তাই’ (সে এখন চোখে কম দেখে।) এ বাক্যে, ‘টিভি দেখা’ ঘটনাটির সাথে ‘চোখে কম দেখা’ ঘটনাটিকে যুক্ত করে নতুন যে একটি বাক্য তৈরি করা হলো, এটাকেই যুক্তি বলে। একজন মানুষ পৃথিবীর যতবেশী ঘটনাকে পরস্পর যুক্ত করতে পারেন, তিনি ততবড় যুক্তিবাদী। ধর্ম মানুষকে সবচেয়ে বেশী যুক্তিবাদী হতে সাহায্য করে। কারণ, ধর্ম বলে, পৃথিবী ও পৃথিবীর বাইরের সকল দৃশ্য ও অদৃশ্য বস্তু এক আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন। এবং পৃথিবী ও পৃথিবীর বাইরের সকল ঘটনা এক আল্লাহ তায়ালার হুকুমেই ঘটে থাকে।। অর্থাৎ, পৃথিবী ও পৃথিবীর বাইরের সকল বস্তু ও ঘটনাকে এক আল্লাহর সাথে যুক্ত করার নামই ধর্ম। যিনি সবকিছুকে এক আল্লাহর সাথে যুক্ত করতে পারেন, তিনি সবচেয়ে বড় যুক্তিবাদী বা ধার্মিক হতে পারেন। নাস্তিকগণ বিজ্ঞানের সাথে ধর্মকে যুক্ত করতে পারেন না, পৃথিবী সৃষ্টির আগের সময়ের সাথে পৃথিবী ধ্বংসের পরের সময়কে যুক্ত করতে পারেন না, ধনী ব্যক্তির সাথে গরিব ব্যক্তিকে যুক্ত করতে পারেন না। পৃথিবীর এমন অনেক কিছুর পিছনেই তারা ক...

ওহী ও জ্ঞানের সম্পর্ক

মুহাম্মদ (স)-এর আগে পৃথিবীতে যখনি কোনো সমস্যা দেখা দিয়েছিলো, তখন আল্লাহ তায়ালা সেখানে একজন নবী বা রাসূল পাঠিয়ে সমস্যার সমাধান করে দিয়েছিলেন। কিন্তু, মুহাম্মদ (স) যখন বললেন যে, “আমি শেষ নবী, আমার পরে আর কোনো নবী নেই”, তখন নতুন একটি প্রশ্ন জাগ্রত হলো। মুহাম্মদ (স) মারা যাবার পরে পৃথিবীর সমস্যাগুলো কিভাবে সমাধান করা হবে? এ প্রশ্নটির উত্তর পাওয়া যায় রাসূল (স)-এর অন্য একটি হাদিসে। তিনি বলেন – إِنَّ العُلَمَاءَ وَرَثَةُ الأَنْبِيَاءِ، إِنَّ الأَنْبِيَاءَ لَمْ يُوَرِّثُوا دِينَارًا وَلَا دِرْهَمًا إِنَّمَا وَرَّثُوا العِلْمَ، فَمَنْ أَخَذَ بِهِ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ “নিশ্চয় জ্ঞানীগণ হলেন নবীগণের উত্তরসূরি। নবীরা টাকা-পয়সা কিছু রেখে যান না, তারা রেখে যান জ্ঞান। যে জ্ঞান অর্জন করে, সে সৌভাগ্য অর্জন করে।” [সুনানে আবু দাউদ – ৩৬৪১, এবং সুনানে তিরমিজি – ২৬৮২, মাকতাবায়ে শামেলা] এ হাদিসটি থেকে আমরা কিছু অনুসিদ্ধান্তে আসতে পারি –

ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞান

১ম পর্ব যুক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে ইসলামকে বুঝতে গেলে অনেকেই বলতে শুরু করেন - ‘দ্যাখ, ইবলিস কিন্তু তোর মত যুক্তি দিতে গিয়েই কাফের হইছিল’। যুক্তির বিরুদ্ধে ‘যুক্তি’ প্রদান করে অনেকে বলেন... ‘ইবলিস আল্লাহর সামনে ‘যুক্তি’ প্রদান করার কারণে সে কাফির ও শয়তান হয়ে গেছে’। কিন্তু, আল্লাহ তায়ালা বলেন... فَسَجَدَ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ إِلَّا إِبْلِيسَ اسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ “সমস্ত ফেরেশতা একযোগে সেজদায় নত হল। কিন্তু ইবলিস অহংকার করল এবং সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল”। [সূরা ৩৮ /সাদ – ৭৪] দেখুন, আমরা বলি, ইবলিস ‘যুক্তি’ প্রদান করার কারণে কাফির হয়ে গেছে; কিন্তু আল্লাহ তায়ালা বলছেন, ইবলিস অহংকার করার কারণে কাফির হয়েছে। তাহলে এখানে কার কথা সত্য?

নেতা, মুরব্বী, আকাবের বা বড়দের কথা

যে কোনো নেতা, মুরব্বী, আকাবের বা বড়দের কথা বিনা যুক্তিতে মেনে নেয়ার বিপদ অনেক। কারণ, মানুষ যখন জাহান্নামে যাবে, তখন আল্লাহর নিকট অভিযোগ করে বলবে – وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءَنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا “হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের বা মুরব্বীদের কথা মেনে নিয়েছিলাম, তাই তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল”। [সূরা ৩৩/আহযাব – ৬৭] আল্লাহর আদালতে সরাসরি ও একাকী উপস্থিত হব আমি, সেখানে আমার ওকালতি অন্য কেউ করবে না। তাই, আমার যুক্তি-বুদ্ধি দিয়েই আমাকে আল্লাহর আনুগত্য করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা তার রাসূল (স)-কে দিয়েছেন ওহী, আর আমাদেরকে দিয়েছেন যুক্তি ও বুদ্ধি। এ দুটির সমন্বয়ে জীবন পরিচালনা না করে, অন্ধভাবে কোনো নেতা বা মুরব্বীর কথা মেনে নিলে, তাঁরা আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাতে পারবেন না।

ওহী ও যুক্তি কি পরস্পর বিরোধী?

মানুষের হৃদয়ের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। যাদের হৃদয় অচেতন, তাদেরকে মূর্খ বলা হয়। কিন্তু জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে যাদের হৃদয় উন্নত চেতনায় পৌঁছে, তাদের হৃদয়ে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তায়ালা বলছেন – بَلْ هُوَ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ فِي صُدُورِ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلَّا الظَّالِمُونَ বরং এটি স্পষ্ট আয়াত, যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদের অন্তরে এটি রয়েছে। কেবল জালিমরাই আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে। [সূরা ২৯/আনকাবুত – ৪৯] এ আয়াতে বলা হচ্ছে, জ্ঞানীদের অন্তরে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত রয়েছে। অর্থাৎ, কোর’আনেও আল্লাহর আয়াত রয়েছে, আবার জ্ঞানী লোকের অন্তরেও আল্লাহর আয়াত রয়েছে। তাই, জ্ঞানীদের অন্তর ও আল কোর’আন কখনো পরস্পর বিরোধী হতে পারে না। অনেকে বলেন, ওহী ও যুক্তির মাঝে পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু, এ আয়াতে দেখা যায়, ওহী ও যুক্তির উৎস একই। অর্থাৎ, ওহী আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা একটি আদেশ ও সুস্পষ্ট নিদর্শন, আবার হৃদয় পরিচালনাকারী রূহও আল্লাহর পক্ষে থেকে আসা একটি আদেশ ও সুস্পষ্ট নিদর্শন। দুটি একই উৎস থেকে আগত। সুতরাং, ওহী ও যুক্তির মাঝে কোনো পার্থক্য থাকতে পারে না। যদি কখনো ওহী...