সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ভালোবাসা লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ইসলামী আইডোলজি প্রচারের জন্যে কি প্রয়োজন?

আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলেই যেমন দেশের সব মানুষ আওয়ামীলীগ হয়ে যায় না, তেমন ইসলামী দল ক্ষমতায় আসলেও দেশের সব মানুষ ভালো হয়ে যাবে না। ক্ষমতা মানুষকে সর্বোচ্চ মুনাফেক বানাতে পারে, মুমিন নয়। ইসলামী রাজনীতির সাথে অন্য রাজনীতির পার্থক্য হলো, ইসলামী রাজনীতিতে ভালোবাসা থাকে ক্ষমতার ঊর্ধ্বে, আর অন্য রাজনীতিতে ক্ষমতা থাকে ভালোবাসার ঊর্ধ্বে। উদাহরণ স্বরূপ আমাদের মা-বাবাকে লক্ষ্য করুন। তাঁরা আমাদের যতই শাসন করুক না কেনো, তাঁদের ভালোবাসা থাকে শাসনের ঊর্ধ্বে। তেমনি ইসলামী রাজনীতির কাজ হলো দে শের সব মানুষকে ভালোবাসা। ভালোবাসার জন্যেই মাঝে মাঝে হয়তো শাসন করতে হয়, কিন্তু, শাসন কখনোই ভালোবাসার ঊর্ধ্বে যেতে পারে না। যারা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চান, তাঁরা মূলত ভালোবাসাহীন ক্ষমতা দিয়ে দেশের সব মানুষকে ভালো বানিয়ে ফেলতে চান। কিন্তু এটা অসম্ভব। কেবল ক্ষমতা দিয়ে মানুষকে পরিবর্তন করা যায় না। মানুষকে পরিবর্তন করতে হয় ভালোবাসা দিয়ে। আর, কাউকে ভালোবাসার জন্যে ক্ষমতার প্রয়োজন হয় না।

নারীরা কিভাবে কথা বলে?

নারী ও পুরুষের শারীরিক ও মানসিক ভিন্নতা যেমন রয়েছে, তেমনি তাদের উভয়ের কথা বলার ভিন্নতাও রয়েছে। একই কথা বা একটি বাক্য কোনো নারী বললে যে অর্থ হয়, কোনো পুরুষ বললে সে অর্থ হয় না। দু’জনে কথা বলার সময়ে একই শব্দ ব্যবহার করলেও অর্থ হয় ভিন্ন ভিন্ন। উদাহরণ স্বরূপ, কোনো নারী যদি তাঁর জীবনসঙ্গীকে বলেন – “তুমি কখনোই আমার কোনো কথা শুনো না”, তখন এ কথাটিকে পুরুষেরা আক্ষরিক অর্থে বুঝে নেন। কিন্তু নারীটি আক্ষরিক অর্থে বুঝানোর জন্যে এ কথাটা বলেননি। তিনি আসলে বুঝাতে চেয়েছেন যে – “আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই, তোমার কি শুনার আগ্রহ আছে?” নারীরা কোনো কথাকে আক্ষরিক অর্থে বলেন না, বরং সব কথাকে সাধারণ অর্থে বলে থাকেন। কিন্তু পুরুষরা নারীদের সব কথাকে আক্ষরিক অর্থে বুঝে থাকেন, এবং সেভাবেই উত্তর দেন। নিচের কয়েকটি উদাহরণ দেখুন –

ইসলাম কি ভালোবাসার বিরুদ্ধে?

ইসলাম ভালোবাসার বিরুদ্ধে নয়, বরং ভালোবাসার নামে যারা প্রতারণা করে, ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে। ইসলাম মানুষকে ভালোবাসার জন্যে আদেশ করে। যেমন রাসূল (স) বলেছেন - لا تدخلون الجنة حتى تؤمنوا ، ولا تؤمنوا حتى تحابوا أولا أدلكم على شيء إذا فعلتموه تحاببتم : أفشوا السلام بينكم “একজন মানুষ ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না ঈমান আনয়ন করবে। একজন মানুষ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না একে অপরকে ভালোবাসবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি জিনিস বলব, যা  পালন করলে তোমাদের মধ্যে ভালোবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো – তোমাদের মধ্যে সালামের বিস্তার ঘটাও।” [সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৯৩] তাহলে ইসলাম কিসের বিরুদ্ধে? ইসলাম ভালোবাসার নামে প্রতারণার বিরুদ্ধে। একটি উদাহরণ দিচ্ছি।

ভালোবাসার কথামালা

ভালোবাসার তিনটি সূত্র: ১। নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো বা মন্দ যাই হোক না কেনো, সমর্থ অনুযায়ী অন্যের জন্যে সময় ও অর্থ ব্যয় করা। ২। নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল জানা। ৩। অন্যকে দোষারোপ না করে ক্ষমা করে দেয়া। [সূত্র: আল কোর'আন, সূরা ৩/ আল ইমরান, আয়াত - ১৩৪] ******************** LOVE is for giving and forgiving. [Source: Al Quran, 3:134] ********************

নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, কি এবং কেন?

ভালোবাসা দুই প্রকার। ১। আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা। ২। আল্লাহর জন্যে ভালোবাসা। আল্লাহকে ভালোবাসা মানে আল্লাহর ইবাদাত করা এবং আল্লাহর হালাল-হারাম মেনে চলা। আর, আল্লাহর জন্যে ভালোবাসা মানে হলো, স্ত্রী, স্বামী, সন্তান, বাবা, মা, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবকে নিঃস্বার্থে ভালোবাসা। দ্বিতীয় প্রকার ভালোবাসার সম্পর্কে রাসূল (স) বলেন - الحُبُّ فِي اللَّهِ وَالبُغْضُ فِي اللَّهِ مِنَ الإِيمَانِ "আল্লাহর জন্যে ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্যে ঘৃণা করাটা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।" [সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা] অপর এক বর্ণনায় রাসূল (স) বলেন - أفضل الأعمال الحب في الله، والبغض في الله "সর্বোত্তম কাজ হলো আল্লাহর জন্যে কাউকে ভালোবাসা, এবং আল্লাহর জন্যে কাউকে ঘৃণা করা" [সুনানে আবু দাউদ, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং - ৪৫৯৯] আল্লাহ জন্যে কাউকে ভালোবাসা মানে নিঃস্বার্থভাবে কাউকে ভালোবাসা, এবং আল্লাহর জন্যে কাউকে ঘৃণা করা মানে নিজের স্বার্থের কারণে কাউকে ঘৃণা না করা।

দেনমোহর

ওদের আছে অনেক কিছু বাড়ি, গাড়ি, টাকা আমার ওসব কিছুই নেই পকেটটাও ফাঁকা নেই নেই তো কিছুই নেই বিয়ের মাহর কেমনে দেই? কিন্তু জানো? বুকের ভিতর এক জিনিসে ঠাসা, তাঁহার জন্যে এই হৃদয়ের শুদ্ধ ভালোবাসা।

দাওয়াত দিতে হয় ভালোবাসা দিয়ে, ভয় দেখিয়ে না

আমরা পৃথিবীতে যা কিছু করি না কেনো, তার পিছনে থাকে কারো না কারো প্রতি ভালোবাসা। যে কোনো কাজে যখন ভালোবাসা থাকে, তখন সে কাজটি আমাদের কাছে খুবই প্রিয় ও মধুর মনে হয়। কিন্তু যখন ভালোবাসা থাকে না, তখন সে একই কাজটি আমাদের কাছে খুবই কষ্টকর ও বিরক্তিকর মনে হয়। উদাহরণ স্বরূপ, আমাদের সমাজের একজন সাইফুল সাহেবের কথা কল্পনা করুন। সাইফুল সাহেব নতুন বিয়ে করেছেন। তাঁর স্ত্রী তাঁকে একটি অনুরোধ করেছেন, যাতে তিনি দাঁড়ি রেখে দেন। স্ত্রীর প্রতি অনেক ভালোবাসা থাকায় সাইফুল সাহেব তাঁর কথা ফেলে দিতে প ারেননি, দাঁড়ি রেখে দিয়েছেন। কিন্তু এই সাইফুল সাহেবের জীবনে কত শত মানুষ হাজার বার বলেও তাঁকে এক ওয়াক্ত নামাজ পড়াতে পারেন নি। প্রতি শুক্রবার ইমাম সাহেব বলতেন, কিন্তু সে কথা সাইফুল সাহেবের কানে যেতো না। এখন প্রিয়তমা সঙ্গিনীর প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে তিনি কেবল নিয়মিত নামাজ-ই পড়েন না, দাঁড়িও রেখে দিয়েছেন। অথবা, আমাদের সমাজের একজন সালমার কথা কল্পনা করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে কখনো তিনি হিজাব পরতেন না। এ জন্যে তাঁকে কতজনে কতো কথা বলতো, তিনি তাদের কথার কোনো পাত্তাই দিতেন না। কিন্তু এখন জীবনসঙ্গীর অনুরোধ রক্ষার্থে এবং তাঁর প্...

আরেকটি হৃদয় কর দান

হে প্রভু, আমার হৃদয় এতো বড়ো নয় যেখানে ভালোবাবাসার জায়গা হয়,   এ বুকে আরেকটা হৃদয় কর দান যেখানে হবে তাঁর উপযুক্ত স্থান।   প্রথমত, তুমি আমার ভালোবাসা দ্বিতীয়ত, তুমি আমার ভালোবাসা অষ্টম, নবম, দশম, তুমি আমার ভালোবাসা।   يا رب قلبي لم يعد كافيا لأن من أحبها .. تعادل الدنيا فضع بصدري واحدا غيره يكون في مساحة الدنيا   فأولا: حبيبتي أنت وثانيا: حبيبتي أنت وثامنا وتاسعا وعاشرا.. حبيبتي أنت

মনের মত মানুষ পাওয়া সম্ভব?

"আমি আমার মনের মত একজন মানুষ চাই" - এ বাক্যটি প্রায়ই আমরা বলে থাকি, কিংবা শুনে থাকি। সাধারণত বিয়ে করার সময়ে, অথবা, জীবনসঙ্গীকে পছন্দ করার সময়ে মানুষ এ কথাটি বলে থাকে। কিন্তু, এ বাক্যটির মাঝে একটি বড় ধরণের ভ্রান্তি রয়েছে। ভ্রান্তিটি হলো, কেউ যদি তাঁর মনের মত মানুষ চায়, তাহলে সারাজীবনেও তিনি তাঁর 'মনের মত মানুষ' খুঁজে পাবেন না। কেননা, আল্লাহ তায়ালা এ পৃথিবীতে প্রত্যেক মানুষকেই ইউনিক করে তৈরি করেছেন। অর্থাৎ, পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে তিনি একটি স্বতন্ত্র মন এবং স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ ব দান করেছেন। ফলে, পৃথিবীর যে কোনো দু'জন মানুষের দুটি মন কখনোই শতভাগ মিল হওয়া সম্ভব না। ধরুন, একই পরিবারের যমজ দুই বোন বা যমজ দুই ভাই। তাঁরা উভয়ে একই বাবা-মায়ের সন্তান; একই সময়ে এবং একই পরিবেশে বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও দু'জনের মন কখনো হুবহু এক হয় না। তাহলে, দুইটি পরিবারে এবং দুইটি পরিবেশে বড় হওয়া একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মন কিভাবে এক হওয়া সম্ভব? যেখানে আমরা নিজেরাই নিজেদের মনকে ঠিকভাবে বুঝতে পারি না, সেখানে নিজের মনের মত অন্য একজন মানুষকে খুঁজে পাওয়া কি আদৌ সম্ভব?

বিয়ের আগে মেয়ের সাথে পরিচিত হতে হবে?

বিয়ে করতে গেলে তিনটি পর্ব বা তিনটি সময় অতিক্রম করতে হয়। এক – খিতবাহ বা মেয়ের সাথে পরিচিতি পর্ব। দুই – আকদ বা বিয়ের চুক্তি পর্ব। তিন – নিকাহ বা দাম্পত্য জীবন পর্ব। আমাদের দেশে বিয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বটি সম্পর্কে অনেকের স্বচ্ছ ধারণা থাকলেও প্রথম পর্বটি নিয়ে কেউ কেউ বেশ দ্বিধায় থাকেন। অর্থাৎ, খিতবাহ পর্ব বা মেয়ের সাথে পরিচয় পর্বটা আসলে কেমন হবে? –এটা অনেকের কাছে স্বচ্ছ নয়। খিতবাহ হলো বিয়ের উদ্দেশ্যে ছেলে-মেয়ে পরস্পরকে দেখা ও জানা-বুঝার পর্ব। মেয়ে যদি বিধবা হয়, তাহলে মেয়ের পরিবারের অজ্ঞাতেই ছেলে মেয়েটিকে জানা-বুঝার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু, মেয়ে যদি কুমারী হয়, তাহলে মেয়ের পরিবারের সম্মতিতে মেয়েকে দেখা ও জানা-বুঝা চেষ্টা করাটাকে খিতবাহ পর্ব বলা হয়। খিতবাহ পর্বটি ভালোভাবে না বুঝার কারণে সাধারণ দুটি ভুল হয়।

মা দিবস ও কিছু কথা

ছোট বেলায় কোনো দুষ্টুমি করলে, দাদী ডাক দিয়ে বলতেন – “খবরদার! তোর দাদা দেখলে কিন্তু বকা দিবে!” অথবা, আম্মু বলতেন, - “সাবধান! তোর আব্বু দেখলে কিন্তু খবর আছে!” আমাদের দাদীরা সবসময় দাদাদের ভয় দেখাতেন, আর মায়েরা সবসময় বাবাদের ভয় দেখাতেন। কিন্তু, বর্তমানে শিশুদেরকে এখন আর বাবা-দাদাদেরর ভয় দেখানো হয় না। তাদেরকে বরং কাল্পনিক ভুত, বাঘ, ভল্লুক, সিংহ, পেঁচা এসবের ভয় দেখানো হয়। তাতে ক্ষতি কি হয়? ১। শিশুরা তাদের বাবা-মাকে শ্রদ্ধা ও ভয় করতে শিখে না। ২। শিশুরা বাবাকে ভালো মনে করে, কিন্তু মাকে হিংস্র মনে করে। ৩। শিশুরা মনে করে তাদের মা মিথ্যা কথা বলে। কারণ, শিশুরা অন্যায় করে ফেললেও বাঘ ও ভল্লুক কখনো তাদেরকে খেতে আসে না। প্রশ্ন হলো, আধুনিক নারীরা শিশুদেরকে পুরুষদের ভয় না দেখিয়ে বাঘ-ভল্লুকের ভয় দেখায় কেন?

শবে বরাত

আমরা ইসলামকে এমন একটি ধর্মে পরিণত করেছি, যার ফলে, কোর’আনের আদেশগুলো যেমন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না, আবার কোর’আনের নিষেধগুলোও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না। যারা শবে বরাত পালন করেন, তাঁরা এমন একটি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, যা কোর’আনে আদেশ করা হয়নি। আবার, যারা শবে বরাত পালন করতে নিষেধ করেন, তাঁরাও এমন একটি নিষেধ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, যা কোর’আনে নিষেধ করা হয়নি। শবে বরাত বাঙালিদের হাজার বছরের সার্বজনীন একটি সংস্কৃতি। ইসলামে এটাকে হালাল বা হারাম কিছুই বলা হয়নি। সুতরাং, কেউ যদি বলে, শবে বরাত সবাইকে পালন করতে হবে, তাহলে সেটাও যেমন বিদায়াত; আবার কেউ যদি বলে শবে বরাত হারাম, তাহলে সেটাও বিদায়াত। কারণ, রাসূল (স) শবে বরাতকে হারাম করে যাননি। কোর’আনের কোনো নির্দেশনা ছাড়াই বিভিন্ন শায়েখের রেফারেন্সে “এটা হালাল, ঐটা হারাম” এসব বলা মানে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করা। وَلَا تَقُولُوا۟ لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ ٱلْكَذِبَ هَـٰذَا حَلَـٰلٌۭ وَهَـٰذَا حَرَامٌۭ لِّتَفْتَرُوا۟ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ ۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ لَا يُفْلِحُونَ “তোমরা আল্লাহর বিরুদ...

ভালোবাসা মানে কি বিবেচনাহীন সব কথা মেনে নেওয়া?

আয়েশা (রা) রাসূল (স)-কে খুব ভালোবাসতেন। রাসূল (স)-ও আয়েশা (রা)-কে খুবই ভালোবাসতেন। কিন্তু, আয়েশা (রা)-এর বিরুদ্ধে অপবাদ আসার পর, রাসূল (স) তাঁকে বললেন – “হে আয়েশা, তুমি যদি কোনো গুনাহে জড়িয়ে গিয়ে থাক, তাহলে আল্লাহর কাছে তাওবা ও ইসতিগফার কর।” রাসূল (স)-এর এই কথার বিপরীতে আয়েশা (রা) তাঁর যুক্তি উপস্থাপন করে বললেন – “আমি যদি বলি আমি নিষ্পাপ, তাহলে আপনারা বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু আল্লাহ জানে আমি নিষ্পাপ। অন্যদিকে, আমি যদি বলি আমি দোষী, তাহলে আপনারা বিশ্বাস করবেন, কিন্তু আল্লাহ জানে আমি নিষ্পাপ। সুতরাং, আমি [তওবা না করে,] ধৈর্য ধারণ করব”। এরপর, যখন কোর’আন দ্বারা প্রমাণ হলো যে, আয়েশা রা ছিলেন নিষ্পাপ; তখন আয়েশা (রা)-এর মা তাঁকে বললেন – “যাও, রাসূলের কাছে গিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এসো”। তখন আয়েশা (রা) বললেন – “না। আমি আমার আল্লাহ ব্যতীত কারো কাছেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব না”। এখানে আয়েশা (রা) তাঁর নিজের যুক্তি-বুদ্ধির বিরুদ্ধে গিয়ে রাসূল (স)-এর সাধারণ একটি কথাকে মেনে নেননি, তিনি কেবল আল্লাহর কথাই বিনা যুক্তিতে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু, তাই বলে, আল্লাহর রাসূলের প্রতি আয়েশা (রা)-এর ভালোবাসা আমাদের চেয়ে ...

প্রেম ও বিয়ে : সমস্যা ও সমাধান

বড় ভাই ও বন্ধুদের মাঝে যাদের ‘প্রেম-বিয়ে’র গল্প আমাকে শুনতে হয়েছে, সবগুলো মোটামুটি একই। ছেলে-মেয়ে দু’জন দুজনকে দেখে পছন্দ হয়েছে। কিছুদিন প্রেম করেছে। এরপর, মেয়ের পরিবার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিতে চাইলো। কিন্তু ছেলে তখনো বেকার, পড়াশুনা করে। বেকার ছেলের কাছে মেয়ের পরিবার কোনোভাবেই মেয়ে বিয়ে দিবে না। কারণ, ছেলে বিয়ে করে মেয়েকে রাখবে কোথায়? খাওয়াবে কোত্থেকে, এবং পরাবে কি? সুতরাং, ছেলে-মেয়ের এ সম্পর্ক কোনো ভাবেই মেনে নেয়া হবে না – এটাই মেয়ের পরিবারের শেষ সিদ্ধান্ত হয়। তারপর, তারা দু’জন পালিয়ে বিয়ে করে ফেলেন। এখন দুই পরিবারের কেউই এ বিয়ে মেনে নিচ্ছে না। - এ সমস্যাটি আমাদের সমাজে প্রচুর। বন্ধু হিসাবে আপনি যদি বন্ধুর পক্ষে কথা বলেন, তাহলে বন্ধুর পরিবার আপনাকে খারাপ বলবে। অন্যদিকে, আপনি যদি বন্ধুর পরিবারের পক্ষে কথা বলেন, তাহলে আপনার প্রিয় বন্ধুকে আপনি চিরতরে হারাতে হবে। সুতরাং, এ ক্ষেত্রে সমাধান কি? কেউ কেউ হয়তো বলবেন, যেহেতু তারা প্রেম করে বিয়ে করেছে, সুতরাং তাদের পক্ষে না যাওয়া-ই ভালো। আবার, কেউ কেউ হয়তো বলবেন, তারা যেহেতু বিয়ে করেই ফেলেছে, সুতরাং পরিবারের উচিত এই বিয়ে মেনে নেয়া। আসলে, এ ক্ষেত্রে...

মঙ্গল শোভাযাত্রায় কারা যায় এবং কেন যায়?

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছিলাম, তাই ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অনেক কিছুই দেখতে ও শুনতে হয়েছে। ভালো মুসলিমদের কেউ কখনো মঙ্গল শোভাযাত্রায় যায় না। এটাকে শিরক মনে করে। তাহলে যায় কারা? এবং কেন? এক। মঙ্গল শোভাযাত্রায় সবচেয়ে বেশি অংশ গ্রহণ করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। ঢাকেশ্বরী মন্দির ও জগন্নাথ হলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মঙ্গল শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। মঙ্গল শোভাযাত্রাকে অনেক হিন্দু যেহেতু তাদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান মনে করেন, তাই এ নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যত ইচ্ছা তত যেতেই পারেন তাদের মঙ্গল শোভাযাত্রায়। দুই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে থাকা ছাত্র-ছাত্রীরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণে দ্বিতীয়। ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই নিজ ইচ্ছায় মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করে, ব্যাপারটা এমন না। ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জোর করে মঙ্গল শোভাযাত্রায় নিয়ে যায়। যারা হলে থেকেছেন, তারা বিষয়টা ভালোভাবে জানেন। নেতা-নেত্রীরা নিজেদেরকে ভগবানের ছেয়েও বড় মনে করে। তাদের ছোট্ট একটা কথাও যদি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা না শুনে তাহলে হাত-পা ভেঙ্গে সোজা পুলিশে ধরিয়ে দেয়া হয়। ...

সখী, ভালোবাসা কারে কয়?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বিখ্যাত একটি কবিতায় গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রশ্ন তুলছিলেন। তিনি প্রশ্ন করেন – সখী, ভালোবাসা কারে কয়? সে কি কেবলই যাতনাময়? রবীন্দ্রনাথের কথা হলো, আকাশ-বাতাস, গাছগাছালি, সাগর-নদী, গ্রহ-তারা, চাঁদ-সূর্য, বিশ্বের সবাই ভালোবেসে সুখী হয়। কিন্তু মানুষ কেন ভালোবেসে যন্ত্রণা ভোগ করে? কেন ভালোবাসার যন্ত্রণায় মানুষ নিজে নিজে জ্বলে পুড়ে মরে যায়? কেন এ যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে মানুষ আত্মহত্যা করে? কেন নিজের ভালোবাসার মানুষকে সে নিজেই হত্যা করে? রবীন্দ্রনাথ এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেয়েছিলেন কিনা জানি না। তবে আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার চেষ্টা করব। প্রথমত বোঝার চেষ্টা করি, ভালোবাসা কি? এর কি কোনো বস্তুগত সংজ্ঞা আছে? উত্তর হলো – না। ভালোবাসার কোনো বস্তুগত সংজ্ঞা নেই। ভালোবাসাকে যিনি যেভাবে উপলব্ধি করেন, তিনি সেভাবে এর সংজ্ঞা নির্ধারণ করেন। ভালোবাসা পানির মত কোনো বস্তু নয় যে তার সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা দেয়া যায়, এটি হলো অনুভবের বিষয়। বস্তুর আকার, স্থান, কাল ও সীমানা থাকে; কিন্তু অনুভবের আকার, স্থান, কাল বা সীমানা থাকে না। অনুভব বস্তুর ঊর্ধ্বে। তাই ভালোবাসার বস্তুগত...

ভালোবাসা

এই দুনিয়ায় আসি মোরা, ভালোবাসার জন্য ভালোবাসা ছাড়া মোদের, নেই কোনো কাজ ভিন্ন। শরীরের কোষগুলো সব, ডেকে বলে আল্লাহ তোমায় ছাড়া দেখি না কিছু, সোবহান আল্লাহ। আসমান জমিন প্রতি ক্ষণে, ডেকে বলে আল্লাহ অহংকার নাই হয়ে যায়, তোমায় দেখে আল্লাহ ভালোবাসা যে পায়, সে দুনিয়ার আর কি চায়? দমে দমে তাই সে বলে আল্লাহ ও আল্লাহ। [তুরস্কের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্যে তাঁদের বিখ্যাত একটি গানের বাংলা অনুবাদ করে দিলাম।] https://youtu.be/XFPeblMoqTw

সুদ ব্যবস্থা কি মূর্তি পূজার চেয়েও ভয়ঙ্কর?

মূর্তি পূজার মত সুদ ব্যবস্থারও বিরোধিতা করা উচিত। কারণ, মূর্তি পূজার চেয়েও বড় শিরক হলো সুদ ব্যবস্থা। কোর’আনে বলা হয়েছে, যারা সুদের ব্যবসা করে, আল্লাহ তায়ালা তাদের সাথে যুদ্ধ করেন। فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا۟ فَأْذَنُوا۟ بِحَرْبٍۢ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ۖ وَإِن تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَ‌ٰلِكُمْ لَا تَظْلِمُونَ وَلَا تُظْلَمُونَ অর্থাৎ, “তোমরা যদি সুদের ব্যবসা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমরা নিজের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করবে না এবং তোমাদের সাথেও কেউ অত্যাচার করবে না ।” [সূরা ২/বাকারা - ১৭৯] এ আয়াতটিকে আমি যেভাবে বুঝেছি – পৃথিবীর যাবতীয় অপরাধের মূল হলো অর্থের লোভ। অর্থের প্রতি লোভ থাকার কারণে মানুষ সুদের পন্থা আবিষ্কার করে। সুদ ব্যবস্থা তখনি শুরু হয়, যখন মানুষ দান-সদকা করতে চায় না। আর দান-সদকা তখনি মানুষ করতে চায় না, যখন তার অন্তরে দয়া ও ভালোবাসা থাকে না। মানুষের হৃদয়ে তখনি দয়া ও ভালোবাসার পরিধি বৃদ্ধি হয় না, যখন তার কাছে সত্যের জ্ঞান না থাকে। আর, সত্যের জ্ঞান মানে হলো আল্লাহ তায়...