সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মানুষ ও বানর : ধৈর্য ও অধৈর্য

বানরকে আপনি যদি একটি কলা দিয়ে বলেন যে, '১ ঘণ্টা পরে এ কলাটি খাবি'। সে আপনার কথা না শুনে সাথে সাথেই কলাটি খেয়ে ফেলবে।

কারণ, পশুদের মাঝে ধৈর্য ধারণ করার শক্তি নেই।

মানুষ-ই একমাত্র প্রাণী যারা ধৈর্য ধারণ করতে পারে। কিন্তু মানুষ যখন তার ধৈর্য হারিয়ে ফেলে, তখন সে আর মানুষ থাকে না; বানর বা পশু হয়ে যায়।


কোর'আনে এর একটি উদাহরণ আছে।

আল্লাহ তায়ালা কিছু মানুষকে বললেন যে, তোমরা শনিবারে নদীতে মাছ ধরবে না, বরং ধৈর্য ধারণ করবে। এছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন মাছ ধরতে তোমাদের কোনো বাধা নেই। কিন্তু ঐ মানুষগুলো ধৈর্য ধারণ করতে চাইলো না, তারা শনিবারেই মাছ ধরতে শুরু করলো। ফলে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বানর বানিয়ে দিয়েছেন।

وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ ٱلَّذِينَ ٱعْتَدَوْا۟ مِنكُمْ فِى ٱلسَّبْتِ فَقُلْنَا لَهُمْ كُونُوا۟ قِرَدَةً خَـٰسِـِٔينَ

"তোমাদের মধ্যে যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাদেরকে তোমরা ভালোভাবেই জান। আমি বলেছিলাম, তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও"। [সূরা ২/বাকারা - ৬৫]

আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বানর বানিয়ে দেয়ার কারণ হলো, মানসিকভাবে তারা আগ থেকেই বানরের চরিত্র ধরণ করে রেখেছিল। তারা মানুষের গুণে গুণান্বিত হতে চায় নি, এবং ধৈর্য ধারণ পারেনি।

তাদের এ ঘটনা থেকে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে শিক্ষা নিতে বলেছেন।

فَجَعَلْنَـٰهَا نَكَـٰلًۭا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهَا وَمَا خَلْفَهَا وَمَوْعِظَةًۭ لِّلْمُتَّقِينَ

"অতঃপর আমি এ ঘটনাকে তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ এবং আল্লাহভীরুদের জন্য উপদেশস্বরূপ করে দিয়েছি"। [সূরা ২/বাকারা - ৬৬]

সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকাল ধৈর্যশীল মানুষের খুবই অভাব। আমাদের জানা উচিত, ধৈর্য মানুষের গুণ, আর অধৈর্য পশুদের গুণ।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

গড হেলমেট দিয়ে কি নাস্তিক কে আস্তিক বানানো যায়?

একবার, বিশ্বকুখ্যাত নাস্তিক রিচার্ড ডকিন্স-কে বিজ্ঞানী মাইকেল পের্সিঙের তার অফিসে ডেকে আনলেন। তাকে বললেন, আপনি তো বিজ্ঞানে বিশ্বাস করেন; তাই না? ডকিন্স : হুম। পের্সিঙের : তাহলে আমরা দেখব, বিজ্ঞানের সাহায্যে আপনার মস্তিষ্ককে পরিবর্তন করে আপনাকে নাস্তিক থেকে আস্তিক বানাতে পারি কিনা? ডকিন্স : ওকে। উল্লেখ্য, মাইকেল পের্সিঙের একজন নিউরো বিজ্ঞানী। তিনি এবং বিজ্ঞানী স্ট্যানলি করেন, উভয়ে একটি হেলমেট আবিষ্কার করেন। যার নাম – ‘গড হেলমেট’। এই ‘হেলমেট’টি দিয়ে তারা পরীক্ষা করেন যে - মানুষের মস্তিষ্কের কোন জায়গায় তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের অনুভূতি জাগ্রত হয়। তারা মানুষের মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরণের ধর্মীয় অনুভূতির সিগন্যাল পাঠিয়ে স্রষ্টায় বিশ্বাস তৈরির চেষ্টা করেন। তো, তারা ডকিন্স-কে একটি বদ্ধ ঘরে প্রবেশ করিয়ে তার মাথায় ‘গড হেলমেট’টি লাগিয়ে দিলেন। ডকিন্সের চোখ বন্ধ করে দিলেন। এবং ডকিন্সের রুম থেকে সবাই বের হয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন।