সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

হাদিস লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মুরতাদ বা ধর্মত্যাগীর শাস্তি কি মৃত্যুদণ্ড?

অনেকে বলেন, মুরতাদ বা ধর্মত্যাগীদের শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু, কেউ যদি কোনো ধর্মত্যাগীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেয়, তাহলে কোর’আনের অসংখ্য আয়াত অকার্যকর হয়ে যাবে। যেমন, নিচের আয়াত দেখুনগুলো। কোর’আনের সাথে বৈপরীত্য – ১ إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا ثُمَّ كَفَرُوا ثُمَّ آمَنُوا ثُمَّ كَفَرُوا ثُمَّ ازْدَادُوا كُفْرًا لَّمْ يَكُنِ اللَّهُ لِيَغْفِرَ لَهُمْ وَلَا لِيَهْدِيَهُمْ سَبِيلًا “নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে, এরপর কাফের হয়ে যায়, তারপর আবার ঈমান আনে, এরপর আবার কাফের হয়ে যায়, অতঃপর তাদের কুফরি-ই বৃদ্ধি পায়, আল্লাহ তাদেরকে কখনোই ক্ষমা করবেন না, এবং তাদেরকে কোনো পথও দেখাবেন না”। [সূরা ৪/ নিসা – ১৩৭] এই আয়াতে স্পষ্ট যে, কেউ কেউ ঈমান আনার পর আবার কাফের হয়ে যায়। এরপর আবার ঈমান আনে। এখন প্রথমবার কাফের বা মুরতাদ হয়ে যাবার পরেই যদি একজন মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেয়া হয়, তাহলে সে দ্বিতীয়বার ঈমান আনবে কিভাবে? আর, ঐ মুরতাদ ব্যক্তিটির যদি দ্বিতীয়বার ঈমান আনার কোনো সুযোগ না থাকে, তাহলে আল্লাহর এই আয়াতটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। কোর’আনের সাথে বৈপরীত্য – ২

সকল জ্ঞান-ই ইসলামের সম্পদ

কোর'আন একটি জ্ঞান, হাদিস একটি জ্ঞান, ফিকাহ একটি জ্ঞান, দর্শন একটি জ্ঞান, এবং বিজ্ঞান একটি জ্ঞান। এদের মাঝে স্তরবিন্যাসে পার্থক্য থাকলেও একটি জ্ঞান কখনো অন্য জ্ঞানের বিরোধী হয় না। আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা প্রথম যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন, তা পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে কেউ যে নামেই জ্ঞান চর্চা করুক না কেন, তা আল্লাহর সত্য জ্ঞানের সাথে কখনো বিরোধী হওয়া সম্ভব না। অজ্ঞতার কারণে অনেকেই মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। এবং দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের বৈপরীত্য রয়েছে। নাস্তিকরা মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলুল কোর'আন মনে করেন, কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলে হাদিস মনে করেন, হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। কিছু কিছু ধার্মিক মনে করেন, ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। আধুনিক বস্তুবাদী বিজ্ঞানী মনে করেন, বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম ও দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। কিন্তু, আসলে সব জ্ঞান-ই আল্লাহর পক্...

সমাজ পরিবর্তনের সঠিক নিয়ম

সোশ্যাল মিডিয়ায় বা বাস্তবে আমরা প্রায়ই বলি, “ভাই, এটা করুন, ওটা করবেন না” “এটা করা উচিত, ওটা করা উচিত না”, “এটা হালাল, ওটা হারাম”, ইত্যাদি, ইত্যাদি...। আসলে এতে সমাজের তেমন কোনো পরিবর্তন হয় না। তাহলে সমাজের পরিবর্তন হয় কিভাবে? আমরা যখন ভালো কোনো কাজ করি, তখন আমাদের আশেপাশের মানুষেরা আমাদের ভালো কাজগুলো দেখে তারাও ভালো কাজ করার চেষ্টা করে, এবং এর ফলে সমাজ ভালো হতে শুরু করে। অন্যদিকে, আমরা মুখে যতই ভালো ভালো কথা বলি না কেন, অথবা, ফেইসবুকে যতই ভালো ভালো কথা লিখি না কেন, নিজেরা য দি ভালো কোনো কাজ না করি, তাহলে সমাজ কখনো ভালো হয় না। এটাই পৃথিবীর নিয়ম। ধরুন, আপনি যদি একজন বাবা অথবা মা হন, সন্তানকে আপনি যতই বলুন “এটা কর, ওটা করো না”, তারা আপনার কথা শুনবে না। আপনি যা করবেন, আপনার সন্তান তাই অনুসরণ করবে। আপনি যদি সত্য কথা বলেন, তাহলে আপনার সন্তানেরাও সত্য কথা বলবে। আর, আপনি যদি মিথ্যা কথা বলেন, তাহলে আপনার সন্তানকে যতই সত্য কথা বলার উপদেশ দিবেন, সে আপনার কথা শুনবে না। সেও মিথ্যা কথা বলবে। একইভাবে, একজন ইমাম, স্কলার, পীর, ধর্মীয় নেতা বা ফেইসবুক লেখক হিসাবে আপনি যতই বলুন না কেন, “এটা করুন, ওটা কর...

হুদাইবিয়া সন্ধির ঘটনা বর্ণিত হাদিস

মিস্ওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রাঃ) ও মারওয়ান (রহ.) হতে বর্ণিত। তাদের উভয়ের একজনের বর্ণনা অপরজনের বর্ণনার সমর্থন করে তাঁরা বলেন, আল্লাহর রাসূল ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) হুদাইবিয়ার সময় বের হলেন। যখন সহাবীগণ রাস্তার এক জায়গায় এসে পৌঁছলেন, তখন নাবী ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বললেন, ‘খালিদ ইবনু ওয়ালিদ কুরাইশদের অশ্বারোহী অগ্রবর্তী বাহিনী নিয়ে গোমায়ম নামক স্থানে অবস্থান করছে। তোমরা ডান দিকের রাস্তা ধর।’ আল্লাহর কসম! খালিদ মুসলিমদের উপস্থিতি টেরও পেলো না, এমনকি যখন তারা মুসলিম সেনাবাহিনীর পশ্চাতে ধূলিরাশি দেখতে পেল, তখন সে কুরাইশদের সাবধান করার জন্য ঘোড়া দৌঁড়িয়ে চলে গেল। এদিকে আল্লাহর রাসূল ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) অগ্রসর হয়ে যখন সেই গিরিপথে উপস্থিত হলেন, যেখান থেকে মক্কার সোজা পথ চলে গিয়েছে, তখন নাবী ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )-এর উটনী বসে পড়ল। লোকজন (তাকে উঠাবার জন্য) ‘হাল-হাল’ বলল, কাস্ওয়া ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, কাসওয়া ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আল্লাহর রাসূল ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বলেন, ‘কাসওয়া ক্লান্ত হয়নি এবং তা তার স্বভাবও নয় বরং তাকে তিনিই আটকিয়েছেন যিনি হস...

ভালোবাসা মানে কি বিবেচনাহীন সব কথা মেনে নেওয়া?

আয়েশা (রা) রাসূল (স)-কে খুব ভালোবাসতেন। রাসূল (স)-ও আয়েশা (রা)-কে খুবই ভালোবাসতেন। কিন্তু, আয়েশা (রা)-এর বিরুদ্ধে অপবাদ আসার পর, রাসূল (স) তাঁকে বললেন – “হে আয়েশা, তুমি যদি কোনো গুনাহে জড়িয়ে গিয়ে থাক, তাহলে আল্লাহর কাছে তাওবা ও ইসতিগফার কর।” রাসূল (স)-এর এই কথার বিপরীতে আয়েশা (রা) তাঁর যুক্তি উপস্থাপন করে বললেন – “আমি যদি বলি আমি নিষ্পাপ, তাহলে আপনারা বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু আল্লাহ জানে আমি নিষ্পাপ। অন্যদিকে, আমি যদি বলি আমি দোষী, তাহলে আপনারা বিশ্বাস করবেন, কিন্তু আল্লাহ জানে আমি নিষ্পাপ। সুতরাং, আমি [তওবা না করে,] ধৈর্য ধারণ করব”। এরপর, যখন কোর’আন দ্বারা প্রমাণ হলো যে, আয়েশা রা ছিলেন নিষ্পাপ; তখন আয়েশা (রা)-এর মা তাঁকে বললেন – “যাও, রাসূলের কাছে গিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এসো”। তখন আয়েশা (রা) বললেন – “না। আমি আমার আল্লাহ ব্যতীত কারো কাছেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব না”। এখানে আয়েশা (রা) তাঁর নিজের যুক্তি-বুদ্ধির বিরুদ্ধে গিয়ে রাসূল (স)-এর সাধারণ একটি কথাকে মেনে নেননি, তিনি কেবল আল্লাহর কথাই বিনা যুক্তিতে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু, তাই বলে, আল্লাহর রাসূলের প্রতি আয়েশা (রা)-এর ভালোবাসা আমাদের চেয়ে ...