সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মে, ২০১৮ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বহুবিবাহ সম্পর্কে আল কোর'আন

কোর'আনে যেমন তালাকের বিধান আলোচনা করা হয়েছে, তেমনি বহুবিবাহের কথাও আলোচনা করা হয়েছে। তালাক দেয়ার আগে যেমন অনেক শর্ত রয়েছে, তেমনি বহু বিবাহ করার জন্যেও অনেক শর্ত রয়েছে। কোর'আনের যে আয়াতে বহুবিবাহ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, তা হলো সূরা নিসার ৩ নং আয়াত। এ আয়াতের শুরুতেই একটি শর্ত দেয়া হয়েছে, এবং শেষে একটি শর্ত দেয়া হয়েছে; আয়াতের মাঝখানে একটি বাক্যে বহুবিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ, কমপক্ষে দুটি শর্ত সাপেক্ষে বহুবিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে। আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলছেন - وَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامَىٰ فَانكِحُوا مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا فَوَاحِدَةً أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَلَّا تَعُولُوا "(১)যদি তোমরা অসহায় নারীদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না বলে আশংকা করো, তাহলে তোমরা নারীদের মধ্য থেকে দুই, তিন, চারজনকে বিয়ে করো। (২) যদি তোমরা (স্ত্রীদের মাঝে) সুবিচার করতে পারবে না বলে আশংকা করো, তাহলে একজনকেই বিয়ে করবে, অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীকে। আর এতেই পক্ষপাতিত্ব করার

মাদকের শাস্তি কি ক্রসফায়ার বা হত্যা?

বাংলাদেশের মতো একটি সেক্যুলার রাষ্ট্রে মদ বিক্রি বা খাওয়ার অভিযোগে গত দশ দিনে ৫৪ জন মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। অথচ, একটি ইসলামী রাষ্ট্রে মদ বিক্রি বা মদ খাওয়ার অপরাধে কাউকে ক্রসফায়ার বা হত্যা করা হতো না। মদকে নিষিদ্ধ করার জন্যে কোর'আনে তিনটি ধাপ অবলম্বন করা হয়েছে। প্রথম ধাপে বলা হয়েছে যে, মদের মধ্যে কিছু উপকারিতা আছে, তবে মদের ক্ষতি অনেক বেশি। [সূত্র - ২:২১৯] এর অনেকদিন পর, দ্বিতীয় ধাপে বলা হয়েছে যে, তোমরা মদ খেয়ে নামাজ পড়তে এসো না। [সূত্র - ৪:৪৩]। এর অনেকদিন পর, তৃ তীয় ধাপে বলা হয়েছে যে, মদ খাওয়া হচ্ছে শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা মদ খাওয়া পরিত্যাগ করো। [সূত্র - ৫:৯০, ৯১] দেখুন, একটি ইসলামী রাষ্ট্রে মদ বিক্রি বা খাওয়ার অপরাধে কাউকে হত্যা করার আদেশ দেয়া হচ্ছে না, বরং অনেক ধাপে ধাপে, আস্তে আস্তে মানুষকে মদ থেকে দূরে সরিয়ে আনা হচ্ছে। কিন্তু, একটি সেক্যুলার রাষ্ট্র কতটা নির্মম হলে মদ বিক্রি বা খাওয়ার অভিযোগে মানুষকে হত্যা করতে পারে? ধরুন, আজকে বাংলাদেশে যদি কোনো ইসলামী সরকার থাকতো, এবং মদ বিক্রি বা খাওয়ার অপরাধে কাউকে হত্যা করা হতো, তখন সারাবিশ্বের সেক্যুলারগণ ইসলামের বিরুদ্ধে য

মোহাম্মদ আসাদের শেষ সাক্ষাতকার

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠন করার জন্যে যে কয়েকজন বিদেশী বুদ্ধিজীবীর অবদান রয়েছে, আল্লামা মোহাম্মদ আসাদ তাঁদের অন্যতম। তিনি জন্ম গ্রহণ করেন জার্মানের একটি ইহুদি পরিবারে, কিন্তু সত্যের সন্ধান করতে করতে পরবর্তীতে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। মোহাম্মদ আসাদ কেন এবং কিভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন, তা আলোচনা করার জন্যে তিনি একটি বই লিখেছিলেন - The Road to Mecca বা “মক্কার পথে”। বইটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছেন কথাসাহিত্যিক উস্তাদ শাহেদ আলী। মোহাম্মদ আসাদ তাঁর জীবনের সর্বশেষ যে সাক্ষাতকারটি দিয়েছিলেন, সেখানে তিনি “মক্কার পথে” বইটিকে সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেছেন। তাঁর সাক্ষাৎকার থেকে কয়েকটি পয়েন্ট এখানে উল্লেখ করছি। ১) ইসলাম গ্রহণ করার আগে মোহাম্মদ আসাদের আগে নাম ছিলো Leopold। তিনি যখন ইসলাম গ্রহণ করার জন্যে জার্মানে বসবাসরত ভারতীয় মুসলিম আব্দুল জাব্বার খাইরির কাছে গিয়েছিলেন, তখন খাইরি তাকে বলেছিলেন – “জার্মান ভাষায় লেও (Leo) শব্দের অর্থ সিংহ, আর সিংহ শব্দের আরবি হলো “আসাদ”। তুমি তোমার নামটা পরিবর্তন করে মোহাম্মদ আসাদ রাখো”। সেই থেকে তাঁর নাম হয়ে গেলো মোহাম্মদ আসাদ।

অধুনিক যুগের শুরু

কেউ কেউ মনে করেন, আধুনিক যুগের শুরু হয়েছে ১৫ বা ১৬ শতাব্দীর পর থেকে। কিন্তু, উইলিয়াম মাভোর [William Fordyce Mavor] সহ অনেক পশ্চিমা ইতিহাসবিদ মনে করেন, মুহাম্মদ (স) এর আগের সময় হলো প্রাচীন যুগ, এবং মুহাম্মদ (স)-এর পরের যুগ হলো আধুনিক যুগ। অর্থাৎ, মুহাম্মদ (স)-এর মাধ্যমেই আধুনিক যুগের সূচনা হয়েছে। বিশ্বের ইতিহাস লেখার সময় উইলিয়াম মাভোর আধুনিক যুগের শুরু করেছেন রাসূল (স)-এর সময় থেকে। মাভোরের মতে, রাসূল (স)-এর আগমনের পর বিশ্বের ইতিহাস সম্পূর্ণ পালটে যায়। অর্থাৎ, রাসূল (স)-এর কারণে বিশ্বের মানুষ প্রাচীন যুগ থেকে আধুনিক যুগে প্রবেশ করে। বাকিটা উইলিয়াম মাভোরের "Universal History : Ancient and Modern" থেকেই দেখুন।

সেহরিতে ডাকার সংস্কৃতি

ফেইসবুকে এক সেক্যুলার বন্ধু লিখেছেন - "রোজা রাখার জন্যে কিন্তু আসলেই শেষ রাইতে মাইকে হাক ডাক দিয়া সবার ঘুম ভাঙানো জরুরি নয়। বাংলাদেশ ছাড়া দুনিয়ার আর কোন দেশের মুসলমানরা এমন বাজে কাজ করে কি? " ভদ্রলোক থাকেন নেদারল্যান্ডসে। বাংলাদেশের মাইকে ডাকাডাকি শুনে নেদারল্যান্ডস থেকে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়, তাই তিনি এ নিয়ে খুব চিন্তিত। যাই হোক, চিন্তা করার স্বাধীনতা সবার আছে, চিন্তা করুক। কিন্তু, উনি যে বাজে কথাটি বলেছেন, তা হলো, "বাংলাদেশ ছাড়া দুনিয়ার আর কোন দেশের মুসলমানরা এমন বাজে কাজ করে কি? " ভদ্রলোকের মতো অনেকেই না জেনে এ প্রশ্নটি করেন। প্রায় সব মুসলিম দেশেই রাতে সেহরির জন্যে ডাকা হয়। যেমন আমি তুরস্কের কথা বলতে পারি। রাতে সেহরির জন্যে ডাকাডাকি করাটা তুরস্কের অন্যতম একটি কালচার। মধ্যরাতে মানুষকে ঘুম থেকে জাগানোর জন্যে তুরস্কের প্রতিটি মহল্লায় কিছু স্বেচ্ছাসেবক ঢোল নিয়ে রাস্তায় নামে যায়। প্রত্যেক বিল্ডিং, বাসা ও ঘরের সামনে গিয়ে গিয়ে তাঁরা ঢোল বাজাতে থাকে, এবং মানুষকে ঘুম থেকে জাগতে বলে। এখানে কয়েকটি ভিডিও দেখুন।

হুকুম ও হিকমাহ-এর সম্পর্ক

তিউনিসিয়ার রশিদ ঘানুশী, তুরস্কের এরদোয়ান, এবং মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদকে দেখতে পারেন না আমাদের অনেক 'জিহাদি' ভাইয়েরা। এসব 'জিহাদি' ভাইদের যুক্তি হলো, ঘানুশী, এরদোয়া ও মাহাথিররা হলেন হিকমতপন্থী, শরিয়াহর হুকুমপন্থী নয়। কোর’আনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা রয়েছে; ১) হুকুম (حكم), ২) হিকমাহ (حكمة)। 'হুকুম' ও 'হিকমাহ' পরিভাষা দুটি একই শব্দমূল থেকে এসেছে, তাই হুকুম ও হিকমাহ একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। হুকুম মানে আল্লাহর আদেশ, যা বাস্তবায়ন করা মুসলিমদের জন্যে ফরজ; আর, হিকমাহ  মানে হুকুম বাস্তবায়ন করার কৌশল। ‘জিহাদি’ ভাইয়েরা শরিয়াহর হুকুম বাস্তবায়ন করতে চান, কিন্তু হিকমাহ বা কৌশল অবলম্বন করতে চান না। অর্থাৎ, তাঁরা কোর’আনের একটি হুকুমকে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আরেকটি হুকুমকে অর্থাৎ হিকমাহকে অবজ্ঞা করেন। ‘জিহাদি’ ভাইয়েরা বলেন, “সৃষ্টি যার আইন তাঁর; সুতরাং আল্লাহ যা বলবেন, তাই হবে; এখানে আবার হিকমাহ অবলম্বন করতে হবে কেন?”

বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের প্রাথমিক কাজ - শহর পরিচ্ছন্ন করা

ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা চায় ইসলামী শরীয়ত বাস্তবায়ন করতে। ইসলামী শরিয়তের আলোচনা করা হয় জ্ঞানের যে শাখায়, তার নাম ফিকহ। ফিকহের সকল গ্রন্থ শুরু হয় পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার আলোচনা দিয়ে। অর্থাৎ, ইসলামী শরিয়ত বাস্তবায়নের জন্যে প্রথম কাজ হলো পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা। এরদোয়ান ১৯৯৪ সালের ২৭ মার্চ যেদিন ইস্তানবুলের মেয়র হয়েছিলেন, সেদিন রাতের অন্ধকারে তিনি ও তাঁর সমর্থকরা সারা ইস্তানবুল শহরকে আবর্জনামুক্ত করে ফেললেন। ফলে সকালবেলা ইস্তানবুল শহরের লোকজন ঘুম থেকে উঠে অবাক হয়ে গেলেন। এর পর থেকেই সাধারণ মানুষের কাছে এরদোয়ানের জনপ্রিয়তা ও বিশ্বস্ততা বাড়তে শুরু করে। এক রাতেই ইস্তানবুল শহরকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করে ফেলার পরিকল্পনাটি হঠাৎকরে এরদোয়ানের মাথায় আসেনি। এর জন্যে তাকে অনেক প্রস্তুতি নিতে হয়েছিলো। তিনি যখন তুরস্কের ইসলামী আন্দোলনে অর্থাৎ রেফা পার্টিতে ইস্তানবুল শহরের দায়িত্ব পান, তখন থেকেই তাঁর প্রধান কর্মসূচি ছিলো নিজ নিজ এলাকাকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখা। তখন রেফা পার্টির কর্মীদের জন্যে বাধ্যবাধকতা ছিলো যে, কেউ বিস্কুট খেয়ে খালি প্যাকেট রাস্তায় ফেলতে পারবে না, বরং পকেটে রাখবে; এরপর ডাস

ইসলামী আইডোলজি প্রচারের জন্যে কি প্রয়োজন?

আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলেই যেমন দেশের সব মানুষ আওয়ামীলীগ হয়ে যায় না, তেমন ইসলামী দল ক্ষমতায় আসলেও দেশের সব মানুষ ভালো হয়ে যাবে না। ক্ষমতা মানুষকে সর্বোচ্চ মুনাফেক বানাতে পারে, মুমিন নয়। ইসলামী রাজনীতির সাথে অন্য রাজনীতির পার্থক্য হলো, ইসলামী রাজনীতিতে ভালোবাসা থাকে ক্ষমতার ঊর্ধ্বে, আর অন্য রাজনীতিতে ক্ষমতা থাকে ভালোবাসার ঊর্ধ্বে। উদাহরণ স্বরূপ আমাদের মা-বাবাকে লক্ষ্য করুন। তাঁরা আমাদের যতই শাসন করুক না কেনো, তাঁদের ভালোবাসা থাকে শাসনের ঊর্ধ্বে। তেমনি ইসলামী রাজনীতির কাজ হলো দে শের সব মানুষকে ভালোবাসা। ভালোবাসার জন্যেই মাঝে মাঝে হয়তো শাসন করতে হয়, কিন্তু, শাসন কখনোই ভালোবাসার ঊর্ধ্বে যেতে পারে না। যারা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চান, তাঁরা মূলত ভালোবাসাহীন ক্ষমতা দিয়ে দেশের সব মানুষকে ভালো বানিয়ে ফেলতে চান। কিন্তু এটা অসম্ভব। কেবল ক্ষমতা দিয়ে মানুষকে পরিবর্তন করা যায় না। মানুষকে পরিবর্তন করতে হয় ভালোবাসা দিয়ে। আর, কাউকে ভালোবাসার জন্যে ক্ষমতার প্রয়োজন হয় না।