সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ক্ষুদে চিন্তা



আমরা যখন বিয়ে করতে চাই, তখন এমন মেয়ে দেখি, যে আমার চেয়ে সুন্দর। এমন পরিবারের মেয়ে দেখি, যাদের মান-সম্মান আমাদের চেয়ে বেশি, যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা আমাদের চেয়ে ভালো। অর্থাৎ, মেয়ের সবকিছুই হতে হবে আমার চেয়ে ভালো।

বিয়ের পরে মেয়ে যখন দেখে, তাঁর জামাই সবদিক থেকে তাঁর অযোগ্য, এবং সে যখন তাঁর জামাইকে অবজ্ঞা শুরু করে, তখন আমরা বলি, আজকাল মেয়েরা তাঁদের স্বামীদেরকে দাম দেয় না। এখানে দোষ কার? আমাদের নাকি মেয়েদের?



 

ইমাম গাজালি তিনটি কারণে আল ফারাবি ও ইবনে সিনা-কে ভ্রান্ত বলেছেন। ১) পুনরুত্থান শারীরিকভাবে হবে না, বরং আধ্যাত্মিক ভাবে হবে। ২) আল্লাহ সামগ্রিক বিষয়ে জানেন, কিন্তু বিশেষায়িত বিষয়ে জানেন না। ৩) আসমান-জমিন কখনো নাই হয়ে যাবে না, ধ্বংস হয়ে অন্য আকার ধারণ করবে। উপরোক্ত তিনটি কারণে গাজালি উনাদেরকে ভ্রান্ত মনে করেন। কিন্তু একইভাবে আবার আকলের ব্যবহার, ক্রিটিকাল থিংকিং এবং দার্শনিক চিন্তার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন।

**************

রাসূল (স) প্রথম স্ত্রীকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেননি। বরং, প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পরেই দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন।

যারা চার বিয়ে করার স্বপ্ন দেখেন, তাঁরা আগে রাসূলের সুন্নাত পালন করুন।
**************

মূর্খরা তর্ক করে অন্যকে হারিয়ে দেয়ার জন্য, আর জ্ঞানীরা তর্ক করে অন্যের মন জয় করার জন্যে।
**************

অনেকেই ইসলাম বুঝার আগে মাজহাবপন্থী থাকে, এরপর একটু একটু ইসলামের জ্ঞান হওয়ার পর সালাফি বা আহলে-হাদিসপন্থী হয়, তারপর ইসলামের আরো বেশি জ্ঞান অর্জন করার পর আবার মাজহাবের পথ ধরে।

ইসলামের জ্ঞান অর্জন হবার আগে মাজহাবপন্থী হওয়া এবং ইসলামের জ্ঞান অর্জন হবার পরে মাজহাব মানার মাঝে আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে।
**************

তুরস্কের প্রতিটি মসজিদেই নারীদের নামাজ পড়ার জায়গা রয়েছে; এবং বড় মসজিদগুলোতে নারী ও পুরুষ উভয়ে একই দরজা দিয়ে প্রবেশ করে। পশ্চিমা বিশ্বের অধিকাংশ মসজিদে নারীদের জন্যে স্থান রয়েছে, যদিও তা তুরস্কের মতো এতো সচরাচর নয়। আরব দেশগুলোতে নারীরা মসজিদে নামাজ পড়তে পারে, যদিও পুরুষ ও নারীদের স্থান ভিন্ন ভিন্ন। চীনে অনেক নারী মসজিদ রয়েছে, এবং সেসব মসজিদের ইমামও একজন নারী। মালয়েশিয়ার নারীরাও মসজিদে এসে নামাজ পড়ে। আফ্রিকার কিছু মসজিদে নারীদের জন্যে স্থান রয়েছে, আবার কিছু মসজিদে নেই।

কিন্তু, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হলো উপমহাদেশ অর্থাৎ ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নারীরা। কারণ, এসব দেশে হাতেগোনা দু'একটি মসজিদ ব্যতীত অন্য মসজিদগুলোতে নারীদের জন্যে কোনো স্থান নেই, এবং নারীদের জন্যে আলাদা কোনো মসজিদও নেই।
**************

খাদ্য ও পানি হলো শরীরের দাস। শরীর হলো পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের দাস। পঞ্চ ইন্দ্রিয় হলো ব্রেইনের দাস। ব্রেইন হলো হৃদয়ের দাস। এবং হৃদয় হলো আল্লাহর হুকুমের দাস।
**************

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্বৈরাচারী পদ্ধতি হলো জাতিসঙ্ঘ। কারণ, জাতিসঙ্ঘের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কোনো পরিবর্তন নেই।
**************

পৃথিবী পরিবর্তনের সকল চিন্তা ক্ষুধার্ত পেট থেকে বের হয়েছে।
**************

বাংলাদেশী ইসলামপন্থীদের কেউ কেউ বলেন, "বিপ্লবীদের হাতি পালতে নেই"। অর্থাৎ, ইসলামী আন্দোলন যারা করেন এবং যারা বিপ্লবের স্বপ্ন দেখেন, তাঁদের বিয়ে করা উচিত না।

উপরোক্ত সূত্রের কারণেই বাংলাদেশের ইসলামী ছাত্র সংগঠনগুলোতে বিয়ে করার পর বিদায় দিয়ে দেয়া হয়।

অথচ, বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুইজন বিপ্লবী, মুহাম্মদ (স) এবং কার্ল মার্কস উভয়ে বিয়ে করেছিলেন ২৫ বছর বয়সে। এবং তাঁদের উভয়ের বিপ্লবের পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিলো তাঁদের জীবনসঙ্গিনীর।
**************

ইসলামের নামে কেউ আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেন, কেউ নিজের দিকে দাওয়াত দেন। আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিলে আল্লাহর অনুসারী বাড়ে, আর নিজের দিকে দাওয়াত দিলে নিজের অনুসারী বাড়ে।
**************

প্রতিটি মানুষের চেহারা যেমন ভিন্ন ভিন্ন, তেমনি প্রতিটি মানুষের চিন্তাও ভিন্ন ভিন্ন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। অথচ, কেউ কেউ মনে করেন, সবার চিন্তা একই রকম হওয়া প্রয়োজন।

আমাদের চেহারার ভিন্নতা যেমন একতার জন্যে সমস্যা না, তেমনি আমাদের চিন্তার ভিন্নতাও একতার জন্যে সমস্যা না। সমস্যা হলো অহংকার। অহংকার-ই একতাকে নষ্ট করে, যেমন ইবলিশ অহংকারের কারণে ঐক্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

নিরহঙ্কারী চিন্তার বৈচিত্র্য কখনো একতাকে নষ্ট করে না, বরং ঐক্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
**************

রাগ হলো গাড়ির ড্রাইভিং চাকার মতো।

ড্রাইভিং চাকা ছাড়া যেমন কোনো গাড়ি হয় না, তেমনি রাগ ছাড়াও কোনো মানুষ হয় না। গাড়ির ড্রাইভিং চাকাকে যেমন নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, তেমনি রাগকেও নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। ড্রাইভিং চাকাটা ছেড়ে দিলে বা উল্টাপাল্টা ঘুরালে যেমন গাড়ি এক্সিডেন্ট করে, তেমনি অতিরিক্ত রাগ করলে এবং যে কারো উপর ঝাড়লে মানুষের জীবনও এক্সিডেন্ট করে।

পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো রাগকে নিয়ন্ত্রণ করা। সঠিক সময়ে, সঠিক ব্যক্তির উপর, সঠিক মাত্রায় রাগ করতে পারার যোগ্যতা অর্জন করাই সঠিক মানুষের কাজ।

**************

সত্যকে মানুষ ভয় পায়, তাই, সত্যকে সবাই মেনে নিতে পারে না। যেমন, মৃত্যু একটি চিরসত্য বিধান। কিন্তু মানুষ মৃতুকে ভয় পায় এবং তা মেনে নিতে পারে না।
**************

অনেকের ধারণা আমরা জীবনে একবার মারা যাই। এই ধারনা সঠিক নয়। জীবনের প্রতিদিন ঘুমের সময় আমরা মারা যাই, এবং প্রতিদিন আবার জেগে উঠি। প্রতি সেকেন্ডে আমাদের শরীরের কোষগুলো মারা যাচ্ছে, এবং নতুন কোষ জন্মাচ্ছে।

গতকাল পর্যন্ত আমরা যা যা করেছিলাম, তার ফল আজকে এখন ভোগ করছি। এবং আজকে-এখন আমরা যা যা করছি, তার ফল ভোগ করবো আগামী দিন এবং এর পরের দিনগুলোতে। এভাবেই চলতে থাকবে আখিরাত পর্যন্ত। দুনিয়াতে থাকাকালীন সময়ে আমরা যা যা করবো, দুনিয়ার পর সেই ফল ভোগ করবো। এটাই পৃথিবী এবং পৃথিবী পরবর্তী জীবনের নিয়ম।
**************

পৃথিবী ও দুনিয়ার জীবন হলো একটি ডিমের মতো। ডিমকে উত্তাপ দেয়ার পর ডিম থেকে যেমন মোরগের বাচ্চা বের হয়, তেমনি পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবার পর পৃথিবী থেকেই আখিরাত প্রকাশিত হবে। ডিমের উপর থেকে দেখলে যেমন ডিমের ভিতরের মোরগের বাচ্চাটিকে বুঝা যায় না, তেমনি দুনিয়ায় থেকে দেখলে আখিরাতকে বুঝা যায় না।

- উস্তাদ সাইদ নুরসী।
**************

শবে বরাত নিয়ে একদিকে বাড়াবাড়ি করেন পীরপন্থীরা, অন্যদিকে বাড়াবাড়ি করেন আধুনিক সালাফি ও আহলে হাদিসগন। এই দুই বাড়াবাড়ির মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান নিয়েছেন উস্তাদ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহি)।

যারা শবে বরাত নিয়ে বিস্তারিত জানতে চান, তারা উস্তাদের 'শবে বরাত' বইটি পড়তে পারেন। অথবা, শবে বরাত সম্পর্কিত ইউটিউব থেকে তাঁর বক্তব্য শুনতে পারেন।

'শবে বরাত' বইটির পিডিএফ ডাউনলোড করুন এখান থেকে -
http://assunnahtrust.com/wps/archives/1051
**************

শবে বরাত - হাজার বছরের একটি বাঙালি সংস্কৃতি।
**************

সমালোচনাকারীর চেয়ে সমালোচিত ব্যক্তি বেশি মর্যাদাবান।
**************

"ইসলাম উত্তরাধিকারসূত্রেপাপ্ত কোনো সম্পত্তি না, যা পিতা থেকে পুত্র, এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্ম পেয়ে থাকে।

যারা ইসলামকে উত্তরাধিকার সম্পদ মনে করে, তারা ইসলামের মূল্য বোঝে না। কারণ, কোনো কষ্ট-ক্লেশ ছাড়াই তাদের কাছে ইসলাম পৌঁছেছে। এ কারণেই তাদের নিকট ইসলামের কোনো ক্ষতির কথা পৌঁছুলে তাদের কানের পশমও নড়ে না। হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয় না।

কিন্তু সাহাবায়ে কেরাম দীনের জন্যে রক্তসাগর পাড়ি দিয়েছেন। অতিক্রম করেছেন বিপদসংকুল সুদীর্ঘ সেতু। তাই তাঁদের নিকট সবচাইতে প্রিয় ছিলো দীন। নিজের জীবনের চেয়েও প্রিয়। পরিবার-পরিজন এবং ধনসম্পদের চেয়েও বেশি প্রিয় ছিলো দীন"।

[সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী, মধ্য প্রাচ্যের ডায়রী]

আমাদের বাঙ্গালী মুসলিম ও ইউরোপ-অ্যামেরিকার মুসলিমদের মধ্যে পার্থক্য এটাই। পশ্চিমা নও মুসলিমরা ইসলামকে যতটা মূল্য দেন, আমরা ইসলামকে ততটা মূল্য দিতে পারি না। তারা ইসলাম নিয়ে যতটা পড়াশুনা করেন, আমরা ইসলাম নিয়ে ততটা পড়াশুনা করি না।
**************

স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মার্কেট, বাবার বাড়ী, স্বামীর বাড়ী, আত্মীয় স্বজনের বাড়ী, সবস্থানে নারীরা যেতে পারে; কেবল একটি স্থানে নারীরা যাবার অনুমতি পায় না, তা হলো আল্লাহর ঘর মসজিদ।
**************

রাসূল (স) বলেছেন -
المُؤْمِنُ مِرَآةُ المُؤْمِنِ
"এক মুমিন অন্য মুমিনের আয়না"

এ হাদিসটির মানে হলো,

(১) মানুষ যেমন নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে নেয়ার জন্যে আয়নার সামনে যায়, তেমনি এক মুমিন নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্যে অন্য মুমিনের সামনে যায়।

(২) আয়নায় সামনে দাঁড়িয়ে আমরা যা যা করি, আয়নার ভিতরের মানুষটিও ঠিক তা তা করে। একজন মানুষের সাথে আমরা যে আচরণ করবো, সে মানুষটিও আমাদের সাথে একই আচরণ করবে। আমি ভালো আচরণ করলে আমার সামনে মানুষটিও ভালো আচরণ করবে। আর, আমি খারাপ আচরণ করলে, আমার সামনের মানুষটিও খারাপ আচরণ করবে।

(৩) আয়নার ভিতরের মানুষটির চুল যদি এলোমেলো থাকে, তাহলে আমরা আয়নাকে দোষ না দিয়ে নিজের চুল আঁচড়াতে থাকে। তেমনি, কোনো মানুষের দোষ যদি আমাদের চোখে পড়ে, তাহলে তাঁকে দোষ না দিয়ে নিজেকে সংশোধন করতে হবে।
**************

যাদের সৃজনশীল কাজ করার যোগ্যতা থাকে না, তারা প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে। যেমন, ৭১ টিভির সাংবাদিকগণ।
**************

বিশ্বের প্রথম মানচিত্র। অঙ্কন করেছেন মুসলিম ভূগোলবিদ ইবনে ফাদলুল্লাহ আল উমারি। খলিফা মামুন এর সময়ে (৮১৩-৮৩৩ খ্রি)।
**************
আমাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডকে আমরা আমাদের দেহের সাথে তুলনা করতে পারি।

আমাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডকে চারভাগে ভাগ করা যায়। ১) জৈবিক কাজ, ২) বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ, ৩) সাংস্কৃতিক কাজ এবং ৪) ধর্মীয় কাজ।

জৈবিক কাজকে আমাদের খাদ্যনালীর সাথে তুলনা করা যায়, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজকে আমাদের মস্তিষ্কের সাথে তুলনা করা যায়, সাংস্কৃতিক কাজকে আমাদের চর্মের সাথে তুলনা করা যায়, এবং, ধর্মীয় কাজকে আমাদের হৃদয়ের সাথে তুলনা করা যায়।

খাদ্যনালী, মস্তিষ্ক, চর্ম ও হৃদয়, সবাই একে অপরের উপর নির্ভরশীল হলেও সবার কাজের ধরণ ও সময় ভিন্ন ভিন্ন।

১) খাদ্যনালীকে প্রতিদিন অবশ্যই ২/৩ বার খাবার দিতে হয়।

২) মস্তিষ্ক দিয়ে চিন্তাও করা যায়, আবার, মস্তিষ্কের ওপরে একটা বস্তা রাখা যায়। শরীরের বাহ্যিক অঙ্গগুলো নড়াচড়া করার দরকার হলেই তখন কেবল মস্তিষ্কের প্রয়োজন।

৩) চর্মের কাজ বাইরের ধুলাবালি শরীরের ভিতরে প্রবেশ করতে না দেয়া। কিন্তু চর্ম নিজে প্রায়ই ময়লা হয়ে যায়, এবং নিজেকে নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হয়।

৪) হৃদয়ের কাজ প্রতি মিনিটে ৬০ বারের অধিক সারা শরীরে উষ্ণতা ছড়িয়ে দেয়া। হৃদয়ের কাজ তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশী।

অর্থাৎ, জৈবিক কাজগুলো আমাদেরকে অবশ্যই করতে হয়, কিন্তু প্রতিদিন খুব অল্প সময় দিতেই তার চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। বুদ্ধিবৃত্তিক কাজগুলো সবাই করতে হয় না, এটা ইচ্ছের উপর নির্ভরশীল। সাংস্কৃতিক কাজগুলোই মানুষের পরিচয় বহন করে, কিন্তু সাংস্কৃতিক কাজগুলো খুব দ্রুত দুষিত হয়ে যায়, তাই সাংস্কৃতিক কাজগুলো নিয়মিত পরিশোধন করা প্রয়োজন। ধর্মীয় কাজগুলো ধনী-গরিব সকল মানুষকে সর্ব অবস্থায় করতে হয়, এক মিনিটও ধর্মীয় চিন্তার বাইরে যাওয়া যায় না।

**************

মানুষ কখনোই আমার বিরোধিতা করে না। মানুষ বিরোধিতা করে আমার অহংকারের।

ধরুন, আমি বা আপনি, কেউ যদি আমাদের বিরোধিতা করেন, তখন আমরা ততটুকুই তাঁর উপর রেগে যাই, যতটুকু আমাদের অহংকার আছে।

অর্থাৎ, কারো বিরোধিতা যখন আমাদের অহংকারকে ভেঙ্গে দিতে চায়, তখন আমরা রেগে যাই, এবং মনে করি সে আমার বিরোধিতা করছে।

কিন্তু আপনার যদি অহংকার না থাকে, তাহলে অন্যের বিরোধিতা আপনার কাছে স্বাভাবিক মনে হবে। আর, আপনার যদি অহংকার থাকে, তাহলে অন্যের স্বাভাবিক কথাও আপনার কাছে বিরোধিতা মনে হবে।

**************

তরুণদের আন্দোলন সফল হয়েছে। তাই এ আন্দোলন থেকে ইসলামী দলগুলোর অনেক কিছুই শেখার আছে।

১) বাংলাদেশের জন্যে শেখ মুজিব খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ডিসকোর্স বা বয়ান। তাই শেখ মুজিবকে বর্তমান আওয়ামীলীগের বাইরে চিন্তা করতে হবে। শেখ মুজিবকে মুসলিম লীগের একজন একনিষ্ঠ কর্মী হিসাবে গ্রহণ করে ইসলামী রাজনীতিতে তার স্থান করে দেয়া প্রয়োজন।

এ কাজটা তুরস্কেও হয়েছে। তুরস্কের বর্তমান ক্ষমতাশীল ইসলামপন্থী দল একে পার্টি তাদের জাতীর পিতা মোস্তফা কামালকে নতুনভাবে এবং নতুন বয়ানে হাজির করেছিলেন। এখনো এরদোয়ান তার অনেক বক্তব্যে মোস্তফা কামাল থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে নিজের মতকে প্রতিষ্ঠিত করেন। সুতরাং, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মতোই শেখ মুজিবকে সাথে নিয়েই ইসলামপন্থীদের রাজনীতির পথ খোঁজা প্রয়োজন।

২) রাসুল (স)-এর দাওয়াতি কাজে, মসজিদে ও জিহাদে নারীদের যেমন অংশগ্রহণ ছিলো, তেমনি ইসলামী রাজনীতিতেও পুরুষদের সাথেই নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কোটা সংস্কার আন্দোলন সফল হবার পিছনে নারীরা অনেক বেশি ভূমিকা পালন করেছিলেন।

৩) দেশপ্রেমের ভিত্তিতে কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বৈষম্যকে প্রতিহত করা যায়, এটি এই আন্দোলন থেকে শেখার আছে। ইসলামী রাজনীতি করতে হলে, নামে 'ইসলামী' না হয়ে, কাজে 'ইসলামী' হওয়া প্রয়োজন। কোথায় কোথায় বৈষম্য ও জুলুম রয়েছে, এবং কিভাবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব, মানুষকে তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ, সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক স্পষ্ট বয়ান তৈরি করতে হবে, যাতে সবাই বুঝতে পারে যে এটা বৈষম্য।
**************

আমরা শুনার চেয়েও বলতে বেশি পছন্দ করি। অথচ, আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে শুনার জন্যে কান দিয়েছেন দুটি, কিন্তু বলার জন্যে মুখ দিয়েছেন কেবল একটি। যদি শুনার চেয়ে বলার উপকারিতা বেশি হতো, তবে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কথা বলার জন্যে মুখ দিতেন দুটি, এবং কথা শুনার জন্যে কান দিতেন একটি।
**************

মূর্খরা যা দেখে, তাই বিশ্বাস করে। আর, জ্ঞানীরা যা বিশ্বাস করে, তাই দেখে।

উদাহরণ,

মিডিয়া যা বিশ্বাস করে, তা দেখায় দর্শকদের।
আর দর্শকরা যা দেখে, তা বিশ্বাস করে।
**************

অনেকে বলেন, আমরা এখন প্রযুক্তির যুগে বাস করছি, তাই সকল জ্ঞান আমাদের হাতের নাগালে। গুগলে সার্চ করলেই যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়। সুতরাং আমরা এখন অতীতের মানুষগুলোর চেয়ে অনেক উন্নত, জ্ঞানী ও সভ্য। এ কথাটা আসলে ভুল।

অতীতের মানুষগুলো আমাদের চেয়ে উন্নত, জ্ঞানী ও সভ্য ছিলেন। যেমন, ১৩০০ শতাব্দীর ইবনে মানজুর এর কথাই উল্লেখ করা যাক। তিনি একাই 'লিসানুল আরব' নামে ২৫ খণ্ডের বিশাল একটি অভিধান লিখেছিলেন। তখন কম্পিউটার বা টাইপিং মেশিন ছিলো না, সব কিছু তাঁকে নিজের হাতেই লিখতে হয়েছিলো।

২৫ খণ্ডের 'লিসানুল আরব' বইটি কোনো ইতিহাসের বই ছিলো না যে, শাহরিয়ার কবিরের মতো মিথ্যা কথা লিখে ফেললেই হয়ে যাবে। অথবা, এটি কোনো উপন্যাসও ছিলো না যে, হুমায়ুন আহমদের মতো এক রাতেই একটা উপন্যাস লিখে ফেলা যায়। এটি ছিলো একটি অভিধান। আমরা জানি, একটি অভিধানের প্রতিটি শব্দই গুরুত্বপূর্ণ, এবং প্রতিটি শব্দ লিখার জন্যে অনেক রিসার্চ করতে হয়।

বর্তমানে আমাদের কাছে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, গুগল সব থাকলেও ইবনে মানজুরের মতো একটা অভিধান লিখা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। সুতরাং, আমরা প্রযুক্তির যুগে বাস করি বলেই আমরা অতীতের মানুষদের থেকে বেশি জ্ঞানী ও উন্নত, তা বলা যায় না।
**************

ইউরোপের শিল্পী-সাহিত্যিকরা আগে মুসলিমদের বিরোধিতা করতেন একভাবে, এখন বিরোধিতা করেন অন্যভাবে।

২০০ বছর আগেও, ইউরোপের শিল্পীরা ছবি এঁকে এবং সাহিত্যিকরা গল্প-উপন্যাস লিখে বলতেন যে, মুসলিম খলিফাদের হেরেমে নারীরা অশালীন পোষাকে চলাফেরা করে, সুতরাং মুসলিমরা বর্বর। উদাহরণ স্বরূপ, গুগলে 'Pool in a Harem' লিখে সার্চ দিলেই বুঝবেন, আগে কার্টুন এঁকে কিভাবে মুসলিমদেরকে অপমান করা হতো। বলা হতো, হেরেমের নারীরা অশালীন ও বর্বর।

কিন্তু, এখন ইউরোপের শিল্পী-সাহিত্যিকরা বলেন যে, মুসলিম নারীরা হিজাব ও নিকাব পরে চলাফেরা করে, সুতরাং এরা বর্বর। ইউরোপের কাছে আসলে হেরেম, হিজাব, নিকাব এগুলো মূল বিষয় না, মূল বিষয় হলো ইসলামের বিরোধিতা।
**************

বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানবাদের মাঝে পার্থক্য

১) বিজ্ঞান হলো প্রকৃতির নিয়ম, যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। বিজ্ঞানবাদ হলো মানুষের নিয়ম, যা মানুষ বিজ্ঞানের নামে চালিয়ে দেয়।

২) বিজ্ঞানবাদ হলো বিজ্ঞানকে ব্যবহার করার দর্শন ও রাজনীতি।

৩) বিজ্ঞান পরিবেশ থেকে সূত্র সংগ্রহ করে। আর, বিজ্ঞানবাদ সেই সূত্রকে কাজে লাগিয়ে পরিবেশকে ধ্বংস করে।

৪) বিজ্ঞানের সাথে বিজ্ঞানবাদের সম্পর্ক নেই। বিজ্ঞানবাদ আসলে বিজ্ঞান নয়, বরং এটি একটি দর্শন।

৫) নিউটনের গতিসূত্র হলো বিজ্ঞানের উদাহরণ। আর, চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ হলো বিজ্ঞানবাদের উদাহরণ।
**************

কোর’আনের ব্যাখ্যাকারী সাহাবী, ইবনে মাসউদ (রা) বলেন –

إنا صعب علينا حفظ ألفاظ القرآن، وسهل علينا العمل به، وإن مَنْ بعدنا يسهل عليهم حفظ القرآن ويصعب عليهم العمل به

“আমাদের জন্যে কোর’আন মুখস্থ করাটা ছিলো কঠিন, কিন্তু কোর’আনের উপর আমল করাটা ছিলো সহজ। আর, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে কোর’আন মুখস্থ করাটা হবে সহজ, কিন্তু কোর’আনের উপর আমল করাটা হয়ে যাবে কঠিন।”

[সূত্র: হিদায়াতুল কোর’আন, মাকতাবায়ে শামেলা]
**************

দেশের কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেই এক পক্ষ নারীদেরকে দোষ দিতে থাকেন, আরেক পক্ষ পুরুষদেরকে দোষ দিতে থাকেন। এভাবে, নারী ও পুরুষকে পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে আসল দোষীরা থাকে আলোচনার বাইরে।

কোনো রাষ্ট্র যখন অকার্যকর ও ব্যর্থ হয়ে পড়ে, তখন পুরুষরা নির্বিচারে হত্যা হতে থাকে, এবং নারীরা গণহারে ধর্ষিত হতে থাকে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রটি যখন ব্যর্থ ও অকার্যকর হয়ে গিয়েছিলো, তখন বর্তমান সময়ের মতো একই ঘটনা ঘটেছিলো।

নারী ও পুরুষ উভয়কে নিয়েই আমাদের সমাজ। আমরা কেউ কারো শত্রু নই, বরং বন্ধু। যারা বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর বানিয়ে ফেলেছে, তারাই আমাদের আসল শত্রু। ধর্ষণের জন্যে নারী বা পুরুষকে দায়ী না করে, দেশের আইন ও শাসনকে প্রশ্ন করা প্রয়োজন।
**************

সালাতের মতোই জিহাদ (যুদ্ধ) একটি ইবাদাত।

১) সালাত যেমন সমাজের সবাইকে নিয়ে একসাথে জামাতে আদায় করতে হয়, তেমনি জিহাদও সমাজের সবাইকে নিয়ে একসাথে করতে হয়। একা একা গিয়ে কাউকে হত্যা করে আসা, কিম্বা, বোমা ফাটিয়ে দেয়াকে জিহাদ বলা যায় না।

২) সালাতের জন্যে যেমন অজু করে প্রস্তুতি নিতে হয়, তেমনি জিহাদের জন্যেও অনেক প্রস্তুতি নিতে হয়।

৩) নাপাক জায়গায় যেমন সালাত আদায় করা যায় না, তেমনি জিহাদও সকল জায়গায় করা যায় না।

৪) সালাতের জন্যে যেমন নির্ধারিত একটি সময় থাকে, জিহাদের জন্যেও তেমনি নির্ধারিত একটি সময় আছে। সূর্য উঠার সময়ে যেমন সালাত পড়া যায় না, তেমনি সবসময়ে জিহাদ করা যায় না। এ জন্যেই আল্লাহ তায়ালা রাসূল (স)কে তাঁর মক্কা জীবনে জিহাদ করার অনুমতি দেন নি।

৫) স্থান-কাল-পাত্র ভেদে জিহাদের জন্যে অনেক শর্ত রয়েছে। শর্ত না মেনে জিহাদ করা হলো অজু ছাড়া সালাত পড়ার মতো।
**************

উমর (রা) অনেক চিন্তা-ভাবনা করে ইসলামী শরিয়াহ আইন বাস্তবায়ন করতেন। যেমন, দুর্ভিক্ষের সময়ে তিনি চোরের হাত কাটা নিষেধ করে দিয়েছিলেন।

একবার চুরির অভিযোগে এক লোককে উমর (রা)-এর কাছে নিয়ে আসা হলো। তিনি চোরকে বললেন -

أسرقت؟ قل: لا
"তুমি কি চুরি করেছো? বল - "না"।

তখন লোকটি বললেন, "না"।

এরপর উমর (রা) তাঁকে ছেড়ে দিলেন।

[সূত্র: মুসনাফে আবদুর রাজ্জাক, ১৮৯২০, মাকতাবায়ে শামেলা]

**************

উসমানী খিলাফতের ৬২৫ বছরে শরিয়া আইনের মাধ্যমে মাত্র ১ জন যিনাকারিণীকে হত্যা করা হয়েছিলো। কিন্তু আমাদের সেক্যুলার দেশে ধর্ষণ, জিনা ও অবাধ যৌনাচারের কারণে প্রতিদিন-ই নারীদের হত্যা করা হচ্ছে।

সূত্র: টার্কি ভাষায় লিখিত তুরস্কের সরকারী পত্রিকা।
https://goo.gl/vmr7N6
উসমানী খিলাফতের ৬২৫ বছরে শরিয়া আইনের মাধ্যমে মাত্র ১ জন যিনাকারিণীকে হত্যা করা হয়েছিলো। কিন্তু আমাদের সেক্যুলার দেশে ধর্ষণ, জিনা ও অবাধ যৌনাচারের কারণে প্রতিদিন-ই নারীদের হত্যা করা হচ্ছে।

সূত্র: টার্কি ভাষায় লিখিত তুরস্কের সরকারী পত্রিকা।
https://goo.gl/vmr7N6
******************

ইমাম মালিক, ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল সহ অধিকাংশ ফকিহ এর মতে, নারীদের ব্যবহৃত গয়নার উপর যাকাত নেই।

এর কারণ হলো,

পুরুষদের জন্যে এক বছরের খাওয়ারের টাকাটা যেমন অতীব প্রয়োজন। নারীদের জন্যে গয়না তেমন অতীব প্রয়োজনীয়। আর, অতীব প্রয়োজনীয় জিনিসের যাকাত দিতে হয় না।
******************

দর্শন হলো চিন্তাশীল মানুষের ধর্ম। আর ধর্ম হলো কর্মশীল মানুষের দর্শন।
******************

শিশুদেরকে কোনো কাজ নিষেধ করলেও তারা সেটি করতে থাকে। আমরা তখন মনে করি যে, শিশুটি আমাদের কথা শুনছে না।

আসল ব্যাপারটা হলো, শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই কোনো কিছু মনে রাখতে পারে না। আমরা যখন তাদেরকে কোনো কিছু করতে 'না' করি, সাথেসাথেই তারা তা ভুলে যায়, এবং কাজটি আবার করতে থাকে।

এ কারণে ইসলামী শরিয়তে শিশুদের কোনো অন্যায়কে অন্যায় মনে করা হয় না। কিন্তু আমরা শিশুদের অন্যায়কে অন্যায় মনে করে তাদেরকে মারধর করি। এটি ইসলামী শরিয়তে ঠিক না। একটি শিশু বালেগ বা পূর্ণ বয়স্ক হবার আগে তাকে কোনো শাস্তি দেয়া উচিত নয়।
******************

ক্রিকেট খেলার মনস্তাত্ত্বিক রূপ হলো, ১১ জন মানুষ মাঠে সক্রিয়ভাবে খেলবে, আর ১১ কোটি মানুষ নিষ্ক্রিয়ভাবে খেলা দেখবে ও ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিবে।

মনস্তাত্ত্বিক এই বিষটা ধর্মের ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায়। সমাজের অল্প কিছু মানুষ সক্রিয়ভাবে কোর'আন-হাদিস পড়ে, আর আমরা কোটি কোটি মুসলিম নিষ্ক্রিয়ভাবে তাঁদের কথা শুনি।
******************

পশ্চিমা এনলাইটেনমেন্ট মানে ফটো স্টুডিওর মতো অতিরিক্ত লাইট দিয়ে মানুষের আসল চেহারাকে মুছে দিয়ে সব মানুষকে সাদা বানিয়ে ফেলা।

******************

পৃথিবীতে আমাদেরকে দুটি জিনিস অর্জন করতে হয়। ১) জ্ঞান, ২) সম্পদ । অনেকে জ্ঞান অর্জনের জন্যে সম্পদ বিসর্জন দেন, আবার অনেকে সম্পদ অর্জনের জন্যে জ্ঞানকে বিসর্জন দেন।

মনে রাখা প্রয়োজন, আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর সকল মানুষ ও সৃষ্টির জন্যে রিজিকের ওয়াদা করেছেন, কিন্তু সকলের জন্যে জ্ঞানের ওয়াদা করেননি। সুতরাং সম্পদকে প্রাধান্য না দিলে আমরা ক্ষুধার্ত হয়ে মরে যাব না। কিন্তু জ্ঞানকে প্রাধান্য না দিলে আমরা অবশ্যই মূর্খ থেকে যাব।
******************

ক্রিকেট খেলা দেখার সাথে ধূমপান করার মিল আছে।

যারা ধূমপান করেন, তাঁরা জানেন, ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর, তবুও তাঁরা ধূমপান করেন। আর যারা ক্রিকেট খেলা দেখেন, তাঁরাও জানেন যে, ক্রিকেট খেলা দেখলে সময়ের অপচয় হয় এবং ক্যারিয়ার ও ব্যবসার ক্ষতি হয়, তবুও তাঁরা খেলা দেখেন।
******************

**********

দর্শন ও কালাম শাস্ত্রের মাঝে একটি মৌলিক পার্থক্য হলো - দর্শনে আল্লাহর গুণাবলীর কারণে তাঁকে স্বীকার করা বা অস্বীকার করার প্রশ্ন উত্থাপন করা যায়। কিন্তু, কালাম শাস্ত্রে আল্লাহর গুণাবলী নিয়ে অনেক ভিন্ন ভিন্ন মত থাকলেও, আল্লাহর ধারণাকে কেউ অস্বীকার করে না।
**********

পৃথিবীতে তিন ধরণের মানুষ চিন্তা ও প্রতিচিন্তাকে সহ্য করতে পারে না।

১। মূর্খ ধার্মিক - ধর্ম নিয়ে কেউ ভিন্ন চিন্তা করলে বলবে কাফির।

২। সরকার - দেশ নিয়ে কেউ ভিন্ন চিন্তা করলে বলবে রাষ্ট্রদ্রোহী।

৩। আধুনিক - সমকালীন বিশ্বকে প্রশ্ন করলে বলবে পশ্চাৎপদ।
**********

দ্বীন – সকল নবী ও রাসূলের জন্যে একই। কখনোই পরিবর্তন হয় না।

শরিয়ত – আল্লাহ প্রদত্ত, কিন্তু সাধারণত প্রত্যেক নবী ও রাসূলের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

ফিকহ – এটি মানুষের তৈরি। স্থান-কাল-পাত্র ভেদে প্রত্যেক মানুষের জন্যে ফিকহ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
**********

জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাঝে পার্থক্য:

জ্ঞান হলো এটা জানা যে, "সিগারেটের অনেক ক্ষতি রয়েছে"।
প্রজ্ঞা হলো, "সিগারেট থেকে নিজেকে দূরে রাখতে সমর্থ হওয়া"।

অর্থাৎ,

জ্ঞান হলো খারাপ কাজের কুফল সম্পর্কে জানা।
প্রজ্ঞা হলো খারাপ কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখা।

একজন আলিম ও দার্শনিক অনেক কিছুই জানতে পারেন, কিন্তু তিনি মুত্তাকী ও প্রজ্ঞাবান নাও হতে পারেন। যদিও মুত্তাকী হবার প্রথম শর্ত আলিম হওয়া।
**********

ফরাসি দার্শনিক রনে দেকার্ত বলতেন - "I think therefore I am" অর্থাৎ, আমি চিন্তা করতে পারি, কারণ "আমি" বলে একটি জিনিসের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যায় না।

রনে দেকার্তের আগে মুসলিম দার্শনিক ইবনে সিনাও একই কথা বলেছেন, তবে আরো সুন্দর করে। ইবনে সিনা বলেছিলেন - ""I think therefore Allah is" অর্থাৎ, আল্লাহর অস্তিত্ব আছে বলেই আমি চিন্তা করতে পারি।
**********


তুরস্কের অনেক এলাকায় এখন বরফ। শীতকালে বরফের কারণে যখন সম্পূর্ণ এলাকা ডেকে যায়, তখন মুসলিমদের ঐতিহ্য অনুযায়ী তুরস্কের মানুষেরা পাখিদের জন্যে পাহাড়ের উপরে গিয়ে খাদ্য দিয়ে আসে, যাতে খাদ্যের অভাবে পাখীরা মারা না যায়।

অনেকে বলেন, খলিফা ওমর বিন আব্দুল আজিজ এর সময় থেকে এই প্রথা চালু হয়েছে। তিনি তাঁর লোকজনকে আদেশ দিতেন – “যাও, পাহাড়ে গিয়ে পাখিদের জন্যে খাবার রেখে এসো। মুসলিম দেশে একটি পাখীও যাতে খাদ্যের অভাবে মারা না যায়।”

ছবিটি ফেইসবুক থেকে নেয়া।

তুর্কি

**********

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম দিকের শিক্ষার্থী সবাই ছিলেন মাদ্রাসার ছাত্র।

ইতিহাসের একজন শিক্ষক হয়ে যিনি এই তথ্যটি জানেন না, তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা উচিত। এমন মূর্খ শিক্ষকদের কারণেই আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ কলঙ্কিত।

ছবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতাদের কয়েকজন। সবাই টুপি-পাঞ্জাবি পরা এবং মাদ্রাসার ছাত্র।








Image may contain: 1 person, standing and outdoor







**********

কাউকে আল্লাহর চেয়ে বেশি ভালোবাসা হলো শিরক। [সূত্র: আল কোর'আন - ২/১৬৫]
কিন্তু, আমরা কখন বুঝবো যে, কাউকে আল্লাহর চেয়ে বেশি ভালোবাসি নাকি?
যখন কাউকে ভালোবাসার কারণে কোনো মিথ্যা বা অন্যায়ের আশ্রয় গ্রহণ করতে হয়, তখন আমরা বুঝবো যে, আমরা আল্লাহর চেয়ে অন্যকে বেশি ভালোবাসি।

**********

পৃথিবীর সকল ভাষা আল্লাহ তায়ালার দান। আরবি ভাষা আল্লাহ তায়ালার ভাষা, আর ইংরেজি ভাষা শয়তানের ভাষা, ব্যাপারটা এমন না।
একজন মানুষ যতো বেশি ভাষা জানেন, তিনি তত বেশি সমৃদ্ধ হন। মাদ্রাসার ছাত্রদের যেমন ইংরেজি জানা উচিত, তেমনি স্কুলের ছাত্রদেরও আরবি জানা উচিত।
অবশ্য, মাদ্রাসার ছাত্ররা যতবেশি ইংরেজি পারেন, স্কুলের ছাত্ররা ততবেশি আরবি পারেন না। সে হিসাবে মাদ্রাসার ছাত্রদের ভাষাগত যোগ্যতা স্কুলের ছাত্রদের তুলনায় অনেক বেশি।
শুধু আরবি বা ইংরেজি নয়, আমাদের জাতীয় কবি নজরুলের মতো, আমাদেরকে উর্দু, হিন্দি ও ফার্সি ভাষাটাও শেখা উচিত। আর, বর্তমান সময়ের রাজনীতি বুঝার জন্যে টার্কি ভাষাটাও জানা উচিত।
ফার্সি ভাষা শেখার একটি ভালো ইউটিউব চ্যানেল কমেন্টে শেয়ার করলাম।

https://www.youtube.com/channel/UCYRyoX3ru_BfMiXVCGgRS6w
**********

The English language, the parliamentary democracy, the rule of law, the railways, even the tea, every single one of these things was brought in by the British to advance their control of India and to make all Indians as their slaves. That's why Mesbah Kamal became one of the British slaves.

**********

কোনো চিন্তাকে যতক্ষণ পর্যন্ত প্রশ্ন করা যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তা দর্শন হিসাবে বিবেচিত হয়। কিন্তু যখন সে চিন্তাকে আর কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ দেয়া হয় না, তখন তা আইডোলজিতে পরিণত হয়ে যায়।

**********

ধর্মের প্রতি ভালোবাসা থাকলেও জ্ঞানের অভাবে ধর্মান্ধতা ও উগ্রবাদের সৃষ্টি হয়।
জ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা থাকলেও ধর্মের অভাবে দুর্নীতি ও অত্যাচারের সৃষ্টি হয়।

**********

একজন বিবাহিত নারীবাদী পুরুষ ইমতিয়াজ মাহমুদের সাথে একজন অবিবাহিত নারীবাদী নারী জান্নাতুন নাঈম প্রীতির অবৈধ সম্পর্ক প্রমাণ করে যে, নারীবাদীরাও বহুবিবাহের পক্ষে।

**********

বাঙালী মুসলিমদের জন্যে যারা রাজনীতি করতে চায়, অথবা, যারা বাঙালি মুসলিমদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে চায়, কিংবা, যারা বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতি করতে চায়, তাদের জন্যে একজন আদর্শ পুরুষ খান বাহাদুর আহ‌্ছানউল্লা।
আমরা যখন রাজনৈতিকভাবে আমাদের আদর্শ পুরুষদেরকে চিনতে ভুল করি, তখন মাজার-পূজারি মানুষেরা সেই মহান পুরুষদের নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। খান বাহাদুর আহছানউল্লাকে নিয়েও এখন তাই করা হচ্ছে।
সংযুক্ত ডকুমেন্টারিতে দেখুন –
আহছানউল্লা সারাজীবন জুলমের বিরুদ্ধে লড়েছেন, কিন্তু তিনি মারা যাবার পর মাজার-পূজারিদের ব্যবসার পুঁজি হয়ে গিয়েছে।

https://www.youtube.com/watch?v=N0N9qwMfANY&t=31s

**********

মহাবিশ্বে অন্ধকারের কোনো কারণ বা অস্তিত্ব নেই, সূর্যের অনুপস্থিতেই অন্ধকারের সৃষ্টি হয়।
তেমনি,
আমাদের সমাজে মন্দের কাজের পিছনে কোনো কারণ নেই, ভালো কাজের অনুপস্থিতেই মন্দ কাজের সৃষ্টি হয়।

**********

সহীহ হাদিসকে অস্বীকার করা গুনাহ হতে পারে। কিন্তু, সহীহ হাদিস অস্বীকারকারীকে কাফের বলা যায়, এর পক্ষে একটি সহীহ হাদিসও নেই।

**********

উস্তাদ ইউসুফ আল কারদায়ী বলেন -
"সত্যিকার অর্থে আমি বিশ্বাস করি না যে, মেহদী নামে কেউ আসবে। কারণ, মেহদী সম্পর্কে পর্যাপ্ত সহীহ হাদিস আমি কোথাও খুঁজে পাইনি। এ সম্পর্কে সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে একটি হাদিসও নেই।"

https://www.youtube.com/watch?v=czGLwyoFGGA

**********

ইউরোপ ও অ্যামেরিকার নিজস্ব কোনো ধর্ম নেই। যদিও আমরা দেখি, ইউরোপ ও অ্যামেরিকার অধিকাংশ মানুষ খ্রিস্টান, কিন্তু খ্রিস্টান ধর্ম ইউরোপ বা অ্যামেরিকার নিজের কোনো ধর্ম নয়।
ঈসা (আ)-এর জন্ম ফিলেস্তিনে, এবং মুহাম্মদ (স)-এর জন্ম মক্কায়। দু’জন-ই এশিয়ায় জন্ম গ্রহণ করেছেন। ফলে, খ্রিস্টান ধর্ম ও ইসলাম ধর্ম উভয়টির প্রচার শুরু হয়েছে এশিয়া মহাদেশ থেকে।
ঈসা (আ) যেহেতু মুহাম্মদ (স)-এর ৫৭০ বছর আগে জন্ম গ্রহণ করেছেন, তাই খ্রিষ্টান ধর্ম রাসূল (স)-এর জন্মের আগেই ইউরোপে প্রবেশ করেছে।
ইউরোপ ও আমেরিকা একমাত্র খ্রিষ্টানদের-ই রাষ্ট্র, এটা মনে করা ভুল। মুসলিমরা যদি সুন্দরভাবে ইউরোপ ও অ্যামেরিকায় প্রবেশ করে সেখানে ইসলামের দাওয়াত চালিয়ে যায়, তাহলে সেখানেও ইসলামের বিজয় হতে পারে।

**********

বিয়ে মানে একটি অনিবার্য ঝামেলাকে হাসি মুখে মেনে নেওয়া।

**********

নিম্ন মানের লোকেরা ব্যক্তির সমালোচনা করে, মধ্যম মানের লোকেরা ঘটনার সমালোচনা করে, আর উচ্চ মানের লোকেরা চিন্তার সমালোচনা করে।

**********

আমরা সম্পদ অর্জন করি গোপনে, যাতে অন্যরা এসে আমাদের সম্পদ না নিয়ে যেতে পারে। আর, আমরা জ্ঞান অর্জন করি প্রকাশ্যে, যাতে অন্যরা আমাদের থেকে জ্ঞান নিতে আসে।
জ্ঞান যদি সম্পদের মতো হতো, তাহলে গোপনে জ্ঞান অর্জনের জন্যে আমরা প্রতিযোগিতা করতাম। আর সম্পদ যদি জ্ঞানের মতো হতো, তাহলে আমাদের সম্পদ অন্যকে দেয়ার জন্যে আমারা ব্যকুল হয়ে যেতাম।

**********

অলস মানুষরাই কেবল স্বপ্ন দেখে। পরিশ্রমী মানুষরা খুব বেশি স্বপ্ন দেখার সময় পায় না।

**********

ব্রিটিশরা ভারতকে যেমন ভেঙ্গে দিয়েছে, ঠিক একইভাবে এবং একই সময়ে উসমানী খেলাফতকেও তারা ভেঙ্গে দিয়েছিলো। এখন ইন্দোনেশিয়াকেও ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা করছে। এভাবে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ভেঙ্গে দেয়ার জন্যে ইউরোপকে অস্ত্র হাতে নিতে হয় না। আইএমএফ এর একটা অর্থনৈতিক নিয়ম পরিবর্তন করে দিলেই হয়।
- ওয়েল হাল্লাক, বিশ্ববিখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।

**********

"সেক্যুলারিজম এখন স্রষ্টার স্থান দখল করে নিয়েছে। ফলে আমরা স্রষ্টার জন্যে জীবন দিতে প্রস্তুত না থাকলেও, সেক্যুলার রাষ্ট্রের জন্যে জীবন দিতে প্রস্তুত থাকি।"
- ওয়েল হাল্লাক, বর্তমান সময়ের প্রসিদ্ধ রাজনীতি বিশেষজ্ঞ।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=WFAqQiIVsF8&t=4699s

**********

"সেক্যুলারিজম এখন স্রষ্টার স্থান দখল করে নিয়েছে। ফলে আমরা স্রষ্টার জন্যে জীবন দিতে প্রস্তুত না থাকলেও, সেক্যুলার রাষ্ট্রের জন্যে জীবন দিতে প্রস্তুত থাকি।"
- ওয়েল হাল্লাক, বর্তমান সময়ের প্রসিদ্ধ রাজনীতি বিশেষজ্ঞ।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=WFAqQiIVsF8&t=4699s

**********

ইবনে তাইমিয়া, ইবনুল কায়্যুম, অথবা হাসানুল বান্না, তাঁরা প্রত্যেকে ইসলামী চিন্তার ক্ষেত্রে ছিলেন একজন সুন্নী, রাজনৈতিকভাবে ছিলেন একজন সালাফী, এবং ব্যক্তিগতভাবে ছিলেন একজন সূফী।
- উস্তাদ ইউছুফ আল কারাদাভী।

**********

সুলতান আবদুল হামিদ যখন মুসলিম জাহানের খিলাফতের দায়িত্বে, তখন ব্রিটিশরা আমাদেরকে শোষণ করছিলো।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে ভারতের মুসলিমদের জন্যে সুলতান আব্দুল হামিদ খান অসাধারণ কিছু ভূমিকা রেখেছিলেন।

তুরস্কের বিখ্যাত একটি সিরিয়াল থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশের বাংলা সাব-টাইটেল বসিয়ে দিলাম।

https://www.youtube.com/watch?v=jovbFhrucQg

**********

মানুষ হলো বিশ্বের ছোট্ট একটি রূপ
বিশ্ব হলো মানুষের বৃহৎ একটি রূপ।

الإنسان هو العالم المصغر
والعالم هو الإنسان المنفتح

ব্যাখ্যা:

মানুষের চোখ আকাশের তারার মতো, মানুষের চুল বনের মতো, মানুষের পশম গাছের মতো, মানুষের রক্ত নদীর মতো, মানুষের শরীরের হাড় পাথর শিলার মতো, মানুষের হৃদয় সূর্যের মতো, শরীরের প্রতিটি কোষ সেই হৃদয়ের চতুঃপার্শ্বে ঘুরছে। মানুষের রূহ হলো এই মহাবিশ্ব নিজেই।

********

বুদ্ধিজীবী বা সাধারণ মানুষদের দিয়ে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি তাঁরাই করতে পারেন, যারা বুদ্ধিজীবীদের চিন্তাকে প্রায়োগিক-ভাবে সাধারণ মানুষদের কাছে নিয়ে যান।

********

আমরা কথায় কথায় বলি, "বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষটি এমন বা তেমন"। এ বাক্যে "বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ" শব্দটির পরিবর্তে "জীবনের দৃষ্টিকোণ" শব্দটি ব্যবহার করা প্রয়োজন।

কারণ,

মুসলিমদের দৃষ্টিভঙ্গি কেবল এ বিশ্বে বা পৃথিবীতে সীমাবদ্ধ নয়। মুসলিমদের প্রতিটি চিন্তা আখিরাতের সাথে সম্পর্কিত। এ কারণে, কেবল 'বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ' দিয়ে মুসলিমরা কোনো কিছু ভাবতে পারে না। দুনিয়া ও আখিরাত দুটি মিলিয়ে আমাদের জীবন। সুতরাং, "বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ" পরিভাষাটির পরিবর্তে আমরা "জীবনের দৃষ্টিকোণ" পরিভাষাটি ব্যবহার করতে পারি।

********

মসজিদের মুসল্লি: হুজুর, জুম্মার নামাজের খুতবা আরবিতে দিলেন, নামাজও আরবিতে পড়ালেন, মুনাজাতও আরবিতে দিলেন, কিন্তু, সবশেষে মসজিদের টাকা উঠানোর সময় কেনো বাংলায় বললেন?

ইমাম সাহেব: টাকা উঠানোর কথা আরবিতে বললে তো কেউ বুঝবে না, এবং মসজিদের জন্যে টাকাও দিবে না, তাই টাকা উঠানোর কথা বাংলায় বলেছি।

********

বছরের সবচেয়ে বেশি মিথ্যা কথা বলার ও লিখার দিন হলো ১৬ ডিসেম্বর।

********

ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরা সব সময় এগিয়ে ছিলো। আমরা জানি, প্রথম মুসলিম ছিলেন খাদিজা (রা)।

রাসূল (স) সকল ফুফু শুরুতেই ইসলাম গ্রহণ করেছেন, কিন্তু তাঁর সকল চাচা ইসলাম গ্রহণ করেন নি।

আবু বকর (রা)-এর বাবার আগে তাঁর মা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।


ওমর (রা) এর আগে তাঁর বোন ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।

ইসলামের প্রাথমিক যুগে যতো মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছেন, সবার মায়েরা ইসলাম গ্রহণ করলেও সবার বাবারা ইসলাম গ্রহণ করেনি।


********

আমাদের প্রিয়জন যদি আমাদের চেয়ে অন্য কাউকে বেশি ভালোবাসে, তাহলে আমরা তা সহ্য করি না।

ঠিক তেমনি,

আল্লাহর প্রিয় বান্দারা যদি তাঁকে ছেড়ে অন্য কাউকে বেশি ভালোবাসে, তাহলে তিনিও তা সহ্য করেন না।

********

"শিয়া ও সুন্নি হলো মুসলিমদের দুটি রাজনৈতিক দল। কনজারভেটিভ ও ডেমোক্রেটিক পার্টি যেমন একই দেশের দুটি রাজনৈতিক দল, শিয়া ও সুন্নীরাও একই মুসলিম জাতীর দুটি রাজনৈতিক দল।"

- শাইখ ইয়াসির ক্বাদী

********

ইমাম মেহদির আগমনের সংবাদ যারা দিয়ে থাকেন, তাঁরা বলেন, ইমাম মেহদী আসবেন খোরাসান অঞ্চল থেকে। খোরাসান হলো মূলত ইরানের একটি অঞ্চল, সাথে আফগানিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের সীমান্ত রয়েছে। খোরাসান অঞ্চলের মুসলিমরা প্রধানত শিয়া। সে হিসাবে ইমাম মেহদি কি একজন শিয়া হবেন?

ইমাম মেহদি যদি একজন শিয়া মুসলিম হয়ে থাকেন, সুন্নি মুসলিমরা কি তাঁর সাথে যোগ দিবেন?

ইমাম মেহদি একজন শিয়া মুসলিম হবার কারণেই কি মক্কা দখল করবেন?

********

ইসলাম, ঈমান ও ইহসান এ তিনটির সমন্বয়ে আমাদের ধর্ম।

ইসলাম কর্মের বিষয়, ঈমান চিন্তার বিষয়, এবং ইহসান অনুভূতির বিষয়।

ইসলাম মানুষের শরীরের কাজ, ঈমান মানুষের আকলের কাজ, ইহসান মানুষের হৃদয়ের কাজ।


ইসলাম অনেক বেশি অনুসরণ করার বিষয়, ঈমান অনেক বেশি বোঝার বিষয়, এবং ইহসান অনেক বেশি উপলব্ধি করার বিষয়।

ইসলাম হলো ব্যক্তির সাথে সমাজের প্রকাশ্য সম্পর্ক, ঈমান হলো ব্যক্তি নিজের সাথে নিজের সম্পর্ক, এবং ইহসান হলো ব্যক্তির সাথে আল্লাহর সম্পর্ক।

ইসলাম আলোচনা হয় ফিকহের গ্রন্থসমূহে, ঈমান আলোচনা হয় কালাম বা যুক্তি শাস্ত্রে, আর ইহসান আলোচনা হয় সুফি গ্রন্থসমূহে।

ইসলাম সমাজ গঠন করে, ঈমান ব্যক্তি গঠন করে, এবং ইহসান ব্যক্তি ও সমাজে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।

[হাদিসে জিবরাঈল অবলম্বনে]


********

আলী - তুমি ওই তাম্বু, মানে বোরকা পর কেন?

শবনম - স্বচ্ছন্দে যেখানে খুশী আসা-যাওয়া করা যায় বলে। আহাম্মুক ইউরোপীয়ানরা ভাবে, ওটা পুরুষের সৃষ্টি, মেয়েদের লুকিয়ে রাখবার জন্য। আসলে ওটা মেয়েদের আবিষ্কার – আপন সুবিধের জন্য।

[সৈয়দ মুজতবা আলী'র "শবনম" উপন্যাস থেকে]

********

অন্যের ভালোবাসা দিয়ে শুরু হয় আমাদের জীবন, অন্যের চিন্তা দিয়ে নয়।

********

নারী ও পুরুষকে আল্লাহ তায়ালা পরস্পর ভিন্নভাবে সৃষ্টি করেছেন। ফলে, উভয়ের চিন্তা করার ধরণ ভিন্ন, অনুভব করার আবেগ ভিন্ন, কথা বলার ভাষা ভিন্ন, একে অপরকে বুঝার উপায় ভিন্ন, প্রতিক্রিয়া দেখানোর পন্থা ভিন্ন, প্রতিবাদ করার পদ্ধতি ভিন্ন, ভালোবাসার ছন্দ ভিন্ন, প্রয়োজন ও ইচ্ছা ভিন্ন।

নারী-পুরুষ উভয়ের মাঝে যখন ভুল বুঝাবুঝি শুরু হয়, তখন একটু অপেক্ষা করা উচিত; এবং নিজেকে নিজে প্রশ্ন করা উচিত যে, আপনি কি আসলেই আপনার প্রতিপক্ষের ভিন্ন ভাষাটি সঠিকভাবে অনুবাদ করতে পেরেছেন?

- John Gray, 'Men Are from Mars, Women Are from Venus'.

********

মানুষ দুঃখ পেলে অতীতের দিনগুলোকে মনে করে, অথচ মনে করা উচিত ভবিষ্যতের দিনগুলোকে।

আজকে যে কারণে আপনার যতটা দুঃখ মনে হচ্ছে, ১ বছর পর এই দুঃখটিকে কোনো কিছুই মনে হবে না।

********

পথেঘাটে ‘আল্লামা’ শব্দটি আমরা প্রচুর শুনি। কিন্তু আমরা অনেকেই না বুঝেই ‘আল্লামা’ শব্দটি ব্যবহার করি।

আল্লামা ও আলেম শব্দ দুটির মাঝে অনেক বড় পার্থক্য রয়েছে। আলেম মানে যিনি কেবল একটি মাত্র জ্ঞানের অধিকারী। আর আল্লামা মানে যিনি অনেক ধরণের জ্ঞানের অধিকারী। ইংরেজি ভাষায় আমরা যাদেরকে encyclopedic বলি, আরবি ভাষায় তাঁদেরকে ‘আল্লামা’ বলা হয়।

ধরুন, একজন মানুষ শুধু ধর্মীয় জ্ঞানে জ্ঞানী, অথবা, শুধু অর্থনৈতিক জ্ঞানে জ্ঞানী, তাহলে তাঁকে আমরা ‘আলেম’ বলতে পারি। কিন্তু একজন মানুষ যখন ধর্মীয় জ্ঞান, অর্থনৈতিক জ্ঞান, রাজনৈতিক জ্ঞান, দর্শন, বিজ্ঞান সহ অনেক ধরণের জ্ঞানে সমানভাবে পারদর্শী হন, তখনি কেবল তাঁকে ‘আল্লামা’ বলা যায়।


ইমাম গাজালী, ইমাম ফখরুদ্দীন আল রাজি, ইবনে তাইমিয়া, ইবনে খালদুন, উনারা ছিলেন আল্লামা। কারণ তারা কুরআন হাদীসের পাশাপাশি সমসাময়িক সকল বিজ্ঞান ও দর্শনে সমান জ্ঞানী ছিলেন। আমরা যাদেরকে আল্লামা বলি, তাঁরা আসলে কেউ আল্লামা নন, বরং তাঁদেরকে আমরা শুধু 'আলেম' বলতে পারি।


********

তিন ধরণের মানুষকে খুব ভয় পাই।

১। যারা চিন্তা-প্রতিচিন্তা নিয়ে বিতর্ক না করে, ব্যক্তি নিয়ে বিতর্ক করেন।

২। যারা অর্থ ও ভাবের প্রতি নজর না দিয়ে, অক্ষর নিয়ে পড়ে থাকেন।


৩। যারা সুদূরপ্রসারী চিন্তা না করে, প্রতিদিনের রাজনীতি ও ঘটনা বর্ণনা করেন।


********

ধরুন, আমি ও আপনি মিলে একটু কোম্পানি খুললাম। কোম্পানির ম্যানেজার আপনি, এবং আমি হলাম শ্রমিক। ম্যানেজার হিসাবে আপনার কাজ হলো কোম্পানির বিল্ডিংর ভিতরে বসে বসে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করা। আর আমার কাজ হলো কোম্পানির পণ্য বাজারে বিক্রি করে, কোম্পানিকে লাভবান করা।

পরিবার নামক কোম্পানিতে নারী ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন, এবং পুরুষ শ্রমিকের দায়িত্ব পালন করেন। এর সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হলো, খাদিজা (রা) ও রাসূল (স)-এর জীবন।

[একটি ভবিষ্যৎ বিজ্ঞপ্তি]

********

নবী রাসূলদের সুন্নাত ছিল, অন্যের সাথে নিজের খাবার শেয়ার করা।
আর, আমাদের সুন্নাত হলো, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের খাবার শেয়ার করা।

খাবার দিয়ে নবী-রাসূলগণ অন্যদের খুশী করতেন, কিন্তু আমরা অন্যদের কষ্ট দেই।


পুনশ্চ: কেউ খাবারের ছবি আপলোড দিলে, বুঝা যায় যে, লোকটি জীবনের প্রথম এই খাবার খাচ্ছেন। তাই, এই ভেবে আমাদেরও দুঃখ হয় না।


********

কোর'আন এমন একটি গ্রন্থ, যা ভয় দিয়ে নয়, বরং ভালোবাসা দিয়ে শুরু হয়। এর প্রথম বাক্য "পরম করুণাময় ও দয়াময় আল্লাহর নামে শুরু"।

********

ভালোবাসা ও ভয়, এ দুটি অনুভূতি মানুষের জন্যে খুবই প্রয়োজন। ভালোবাসার কারণে মানুষ যে কোনো কিছু করার জন্যে উদ্বুদ্ধ হয়, আর, ভয়ের কারণে মানুষকে কাজটি সঠিকভাবে করতে হয়।

ভালোবাসা না থাকলে মানুষ অলস হয়ে যায়, আর, ভয় না থাকলে মানুষ বেপরোয়া হয়ে যায়।

********

হজ্জের একটি অপরিহার্য কাজ হলো, সাফা ও মারওয়া নামক দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাতবার দৌড় দেয়া বা দ্রুত আসা-যাওয়া করা।

সকল মুসলিমকে এই কাজটি করতে হয়, একজন মহীয়সী নারীকে অনুসরণ করার জন্যে।

********
কে আছ বন্ধু তুমি তাঁর থেকে দূরে,
তুমিও ব্যকুল দেখো মিলনের সুরে।

- আল্লামা জালাল উদ্দিন রুমি


হারকাছে কো দূরে মানাদ আজ আছলে খেশ, বাজে জুইয়াদ রোজে গারে ওয়াছলে খেশ।

هر کسی کاو دور ماند از اصل خویش ** باز جوید روزگار وصل خویش‌‌

Everyone who is left far from his source wishes back the time when he was united with it.


************
টার্কি ভাষায় কথা বলেন ৭০ মিলিয়ন মুসলিম, আর বাংলা ভাষায় কথা বলেন ১৭০ মিলিয়ন মুসলিম। অর্থাৎ, টার্কি ভাষার চেয়ে বাংলা ভাষায় কথা বলা মুসলিমের সংখ্যা ১০০ মিলিয়ন বেশি।

কিন্তু, টার্কি ভাষায় ইসলামি ক্লাসিক্যাল বইগুলোর যে পরিমাণ অনুবাদ হয়েছে, তার ৫% ও বাংলা ভাষায় হয়নি।

কারণটা কি? আমাদের তো আলেম ওলামার অভাব নেই।

************
জ্ঞান ক্ষমতার অধীনে আসা মানে সংঘাত,
ক্ষমতা জ্ঞানের অধীনে আসা মানে শান্তি।

- তাসকুফরুজাদে, তুর্কি দার্শনিক।
************
একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গতা অস্বস্তিকর, ওরা বলে। আমি বলি, না। ও-জগতে সুখী থাকার জন্যে এ-জগতের অনুশীলনের নাম একাকীত্ব।
************
আমাদের তাহাজ্জুদগুলোও এখন আধুনিক হয়ে উঠেছে। ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদ পড়তো মানুষ, ক'দিন আগেও। আমরা পড়ি ঘুমানোর আগে।

সে যুগে, তাহাজ্জুদের সময়ে আশেপাশের পরিবেশ থাকতো নীরব, নিস্তব্ধতায় ঘেরা। সম্পর্ক সৃষ্টি করা যেতো কেবল আল্লাহর সাথেই। কিন্তু এখন নীরবতা হারিয়ে গেছে ঐ দূরে। ২৪ ঘণ্টাই জেগে থাকে সোশ্যাল মিডিয়া, গভীর রাতেও ডাকে সাড়া দেয়ার মতো কেউ না কেউ থাকেই। ফলে আল্লাহকে ডাকার মত নীরব সময় এখন আমরা কই পাই?
************
'নিজেকে সেরা প্রমাণের চেষ্টা' এবং 'নিজে সেরা হবার চেষ্টা' দুটি বিষয়ের মাঝে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। প্রথমটি নাটকের মঞ্চে অভিনয় করার মতো, এবং দ্বিতীয়টি যুদ্ধের মাঠে জেতার মতো।
************
মানুষের নিজস্ব কোনো চিন্তা না থাকলে, তিনি হয় নিজের সাথে নিজে সংগ্রাম করেন, অথবা অন্যের সাথে বিতর্ক করেন।

************
খারেজি কাদেরকে বলা হয়?

যারা নিজেদের ছাড়া অন্যদের খারিজ করে দেয়, তাঁদের খারেজি বলে। অর্থাৎ, খারিজি তাঁরাই, যারা নিজেদের বাদে অন্য কোনো মুসলিমকে বলে যে, "তাঁর ঈমান নেই"।
************
সত্যের স্বভাব তিক্ত, মিথ্যার স্বভাব মিষ্টি।

মাঝে মাঝে মনে হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো, "সত্যকে মিষ্টি ভাষায় উপস্থাপন করা"।
************
তুরস্কে কোনো এমন কোনো স্কলার নেই, যিনি হিন্দু বা বৌদ্ধ সংস্কৃতি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ। ইউরোপ ও অ্যামেরিকার বলয় থেকে মুক্ত হতে চাইলে, তুরস্কের লোকজনকে প্রাচ্যের সভ্যতাগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে।

- জামিল আইদিন, টার্কি স্কলার।
************
যে জ্ঞান মানুষের মাথা থেকে হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না, সে জ্ঞান নষ্ট হয়ে অহংকারে রূপান্তরিত হয়।
************
আমাদের জীবনে তিন ধরণের বন্ধু রয়েছে।

কিছু বন্ধুদের সাথে একত্রীত হলে আল্লাহর কথা মনে পড়ে। এ ধরণের বন্ধুরা হলো আমাদের প্রতিদিনের খাবারের মত, যাদের ছাড়া আমরা চলতে পারি না।

কিছু বন্ধুদের থেকে পার্থিব সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়া যায়। এ ধরণের বন্ধুরা হলো ঔষধের মত, যাদেরকে বিভিন্ন সময়ে আমাদের প্রয়োজন হয়।


কিছু বন্ধুদের সাথে একত্রীত হলে আল্লাহর কথা মনে থাকে না। এ ধরণের বন্ধুরা হলো রোগের মত, এদের থেকে দূরে থাকাই ভালো।


************
আমরা কাকে বেশি ভালোবাসি? এ প্রশ্নের উত্তর অনেক সময় আমরা নিজেরাও জানি না।

কিন্তু বোঝার একটা উপায় আছে, কেবল নামাজে দাঁড়ালেই হলো। নামাজে যেসব বিষয়ের চিন্তা আমাদের মনে আসে, সেগুলোকেই মূলত আমরা বেশি ভালোবাসি।

কেউ নামাজে দাঁড়ালে আল্লাহর কথা স্মরণ হয়, কারো মনে হয় প্রিয় মানুষের কথা। কেউ লিখার আইডিয়া পায়, কেউ কবিতার ছন্দ মিলায়। কেউবা চিন্তা করে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে, কেউবা হিসাব মিলায় সম্পদের।


আমরা যাকে যতবেশি ভালোবাসি, তাঁর কথাই নামাজে ততবেশি মনে পড়ে।


************

ইসলামের সু-প্রতিষ্ঠিত সভ্যতাকে ধ্বংস করার জন্যে তিনটি বড় ধরণের আক্রমণ হয়েছে।

১। দ্বাদশ শতাব্দীতে ক্রুসেডদের আক্রমণ।
২। মঙ্গোলিয়ানদের আক্রমণ।
৩। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইউরোপীয়দের উপনিবেশ।


এই তিনটির মাঝে প্রথম ২টি আক্রমণে বুদ্ধিবৃত্তিক কোনো আক্রমণ ছিলো না। ফলে, মুসলিমরা খুব সহজেই নিজেদের অস্তিত্ব ও সভ্যতাকে রক্ষা করতে পেরেছিলো।

কিন্তু, তৃতীয় আক্রমণটি ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক। এখানেই মুসলিমরা ব্যাপকভাবে পরাজিত হয়। এবং আজো আমরা সেই পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে চলছি।


************
উসমানী খিলাফতের আলেম, স্কলার ও সুলতানদের চারটি বৈশিষ্ট্য ছিল।

১। তাঁরা সবাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
২। তাঁরা আহলে বাইতকে ভালোবাসতেন। এবং তাঁদেরকে স্মরণ করতেন।
৩। তাঁরা বিভিন্ন সুফি ও ইরফানী ধারণা দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন।
৪। গণিত, দর্শন ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁরা মধ্য এশিয়ার 'মাওয়ারা উন-নহর' স্কুলের অনুসরণ করতেন।


************

খাবার হজম করতে পারলে যেমন শক্তি হয়, রাগ হজম করতে পারলেও তেমন আনন্দ হয়।
************
আগেকার যুগে, মুরব্বীরা মেয়ে দেখতে গেলে দুটি কথা বলতেন -

১ - "মা, একটু কোর'আন পড়ে শুনাও তো..."

২ - "মা, তোমার ঠিকানাটা লিখে দাও তো..."


সত্যি বলতে, এ দুটি প্রশ্নের গুরুত্ব অনেক বেশি।

যাদের কোর'আন পড়া সুন্দর, তাঁরা তাদের ছেলে-মেয়েদেরকেও সুন্দর করে কোর'আন শিখাতে পারে, যা দুনিয়া ও আখিরাতে জন্যে কল্যাণকর।

আর, যাদের হাতের লেখা সুন্দর, তাঁরা সাধারণত মেধাবী হয়ে থাকে, ফলে ছেলে-মেয়েও মেধাবী হবার সম্ভাবনা থাকে। যেমন ধরুন, মায়ের লেখা সুন্দর হলে, বাচ্চাদের লেখাও সুন্দর হবে। আর, লেখা সুন্দর হলে স্কুলে নম্বর বেশি পাবে। এটা হলো মেধাবী হবার সূচনা।


************

পৃথিবীর অধিকাংশ যুদ্ধ অর্থনৈতিক কারণেই হয়ে থাকে। হোক সেটি ঘরের যুদ্ধ, অথবা, বাহিরের যুদ্ধ।

************

যায়েদ ও জয়নব। দু'জন-ই অসাধারণ ভালো মানুষ এবং দু'জন-ই রাসূল (স)-এর প্রিয় সাহাবী। যায়েদ এমন একজন সাহাবী, যার নাম কোর'আনে এসেছে। অন্যদিকে, জয়নব রাসূল (স)-এর প্রিয়তমা স্ত্রীর মর্যাদা গ্রহণ করেন।

কিন্তু যায়েদ ও জয়নব উভয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কেবল তাঁদের-ই নয়, রাসূল (স)-এর অনেক নারী-পুরুষ সাহাবী ভালো মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের মাঝে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

কেন?


কারণ হলো, বিয়ে কেবল দু'জন মানুষের সম্পর্ক না। বিয়ে হলো দু'টি পরিবার ও দুটি পরিবেশের সম্পর্ক। দুটি পরিবার ও দুটি পরিবেশ একে অপরকে গ্রহণ করতে না পারলে, দুজন ভালো মানুষের মাঝেও বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়।


************

জ্ঞান ও বিবেক দুটি ভিন্ন বিষয়। একজন মানুষ অনেক জ্ঞানী হয়েও বিবেকহীন হতে পারে।

জ্ঞান হলো ব্যাংকে জমানো টাকার মতো মস্তিষ্কে জমানো কিছু তথ্যের নাম। কিন্তু, বিবেক হলো যথোপযুক্ত স্থানে যথোপযুক্ত জ্ঞানকে ব্যবহার করার কৌশলের নাম।

অনেকের ব্যাংকে অনেক টাকা থাকা সত্ত্বেও যেমন কাজের সময়ে সেই টাকার ব্যবহার করতে জানে না, তেমনি অনেকের মস্তিষ্কে অনেক জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও বিবেকের অভাবে সঠিক সময়ে সেই জ্ঞানকে কাজে লাগাতে পারে না।

************
ইসলাম যে কোনো গ্রামকে শহর বানিয়ে ফেলে। গ্রামের মানুষ সাধারণত তাদের খাদ্য ও বস্ত্রের জন্যে যাবতীয় পরিশ্রম করে। কিন্তু শহরের মানুষ খাদ্য ও বস্ত্রের পাশাপাশি বিনোদনের জন্যেও পরিশ্রম করে।

ইসলাম যে গ্রামে প্রবেশ করে, সেখানে খাদ্য ও বস্ত্র ছাড়াও মানুষকে আরেকটি কাজ করতে হয়। তা হলো ইবাদাত। আর, ইবাদাত হলো বিনোদনের বিকল্প।

এভাবে সামষ্টিকভাবে ইবাদাত করার মাধ্যমে যে কোনো গ্রাম আস্তে আস্তে শহর হয়ে উঠে। এর একটি প্রমাণ হলো মদিনাতুল মোনাওয়ারা।

************

সমাজের সংজ্ঞা অনুযায়ী,

নারীর জন্যে পুরুষের যে ত্যাগ, তার নাম ভালোবাসা।

আর,


পুরুষের জন্যে নারীর যে ত্যাগ, তার নাম সেক্রিফাইস বা কম্প্রোমাইজ।


************

যারা ফেইসবুকিং করে, এবং যারা ফেইসবুকিং করে না, উভয়ে কি সমান?

আমার উপলব্ধি হলো,

আমরা যারা ফেইসবুকিং করি, তাঁদের চেয়ে যারা ফেইসবুকিং করেন না, তাঁদের সফলতার সম্ভাবনা বেশি। অর্থাৎ, ১০ বছর পর, তাঁরা তত বেশি সফল হবে, যারা এখন যত কম ফেইসবুকিং করে।



************

স্বাধীন হতে চাই বলে, আকাশের দিকে মাথা উঁচু করে মুক্ত চলা পাখীটির দিকে তাকিয়ে থাকি। একটু পর দেখি, স্বাধীন মুক্ত একা পাখীটিও অন্য পাখীদের দলে ভিড়ে গেছে। সেও এখন চলছে নিয়ম মেনে, সব পাখীদের সাথে, একসাথে।

আচ্ছা, একসাথে চলা কি স্বাধীনতা নয়? নিয়ম মেনে চলা কি পরাধীনতা?

ঐ যে বিশাল আকাশের সূর্যটি দেখি। সে কি স্বাধীন, না, সেও নিয়মের-ই অধীন? ঐ যে লক্ষ্মী চাঁদ, গ্রহ, নক্ষত্র; সবাই কি স্বাধীন? না, তারাও অধীন?


আসলে স্বাধীনতা অর্থ মানিয়ে নেয়া। ভালোবাসা ও সৌন্দর্যের জন্যে নিয়ম চলাই স্বাধীনতা। ভালোবাসাহীন মুক্ত স্বাধীনতা মানে বিষণ্ণতা।

মুক্ত-স্বাধীন একা পাখীটিও যখন কিছু নিয়ম মেনে দলের সাথে ভিড় করে, তখনি আকাশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। একা চলা স্বাধীন পাখীটির দিকে তাকিয়ে থাকার চেয়েও দলবদ্ধ ছুটে চলা পাখীদের দিকে তাকিয়ে থাকতেই বেশি আনন্দ, বেশি ভালো লাগে আমাদের।


************

এক চামচ লবণ কাউকে খেতে দিলে, কেউ তা খেতে পারবে না কিংবা খেতে চাইবে না। কিন্তু, এক লিটার পানিতে এক চামচ লবণ মিশিয়ে দিলে, সেই লবণপানি পান করতে কেউ তেমন আপত্তি করবে না।

সমালোচনা হলো এক চামচ লবণের মত, কেউই তা গ্রহণ করতে চায় না। কিন্তু, সুন্দর উপদেশ হলো এক লিটার পানিতে মিশানো এক চামচ লবণের মত। মানসিক ডাইরিয়া হলে অনেকেই সেই পানি পান করতে চায়।

সমালোচনা ও উপদেশ এক নয়। সমালোচনা আসে অহংকার থেকে, আর, উপদেশ আসে ভালোবাসা থেকে। অন্যের সমালোচনাকে কোর'আনে নিষেধ করা হয়েছে, কিন্তু অন্যকে উপদেশ দেয়ার জন্যে কোর'আনে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। [৪৯/১১, ১০৩/৩]


আমরা উপদেশের নামে অধিকাংশ সময়ে আসলে মানুষের সমালোচনাই করি।


************

প্রতিটি মুসলিমকে সূর্য ও সৌরজগত সম্পর্কে জানতে হয়, নামাজ ও রোজার সময় ঠিক করার জন্যে।

প্রতিটি মুসলিমকে পানি-মাটি ও পরিবেশ সম্পর্কে জানতে হয়, নামাজের প্রস্তুতি নেয়ার জন্যে।

প্রতিটি মুসলিমকে ভূগোল ও পৃথিবীর মানচিত্র সম্পর্কে জানতে হয়, কাবা শরীফের দিক নির্ণয় করার জন্যে।


প্রতিটি মুসলিমকে শারীরিকভাবে শক্তিশালী হতে হয়, রোজা রাখার জন্যে।

মুসলিমদেরকে অর্থ-সম্পদের মালিক হতে হয়, যাকাত-দান-সদকা ও কুরবানি করার জন্যে।

সামর্থবান মুসলিমদেরকে বিদেশ ভ্রমণ করতে হয়, হজ্জ ও ওমরাহ পালন করার জন্যে।


************

ভালোবাসা কোনো শ্রমিকের বেতন নয় যে, আগে কাজ পরে ভালোবাসা।

ভালোবাসা হলো জ্বালানি তেলের মতো, কাউকে যতটুকু ভালোবাসাবেন, তিনি আপনার জন্যে ততটুকু কাজ করবে।

************

"কারণ" শব্দটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো কথা "কারণ" শব্দের সাহায্যে বলা হলে, কথাটি অন্যরা খুব সহজে মেনে নেয়।

ধরুন, টাকা তোলার জন্যে একটি ব্যাংকে বিশাল লাইন। আপনি যদি সবার সামনে গিয়ে বলেন যে, "ভাই একটু সাইড দেন তো, আমাকে তাড়াতাড়ি টাকাটা তুলতে হবে"। তখন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষেরা তাঁদের সামনে আপনাকে যেতে দিবে না।

কিন্তু, আপনি যদি তাঁদেরকে বুঝিয়ে বলেন যে, "আমার টাকাটা তাড়াতাড়ি তুলতে হবে, কারণ, হাসপাতালে আমার মুমুর্ষ রোগী আছে", তখন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অনেকেই বলবে - "আচ্ছা, ঠিক আছে, যান, টাকাটা তুলে নিন"।


এখানে দেখুন,

প্রথমবার বলার সময় লোকটি "কারণ" শব্দটি না বলায় মানুষেরা তাঁকে টাকা তুলতে দেয়নি। কিন্তু, দ্বিতীয়বার বলার সময় "কারণ" শব্দটি যুক্ত করায় অনেকেই তাঁকে টাকা তোলার সুযোগ করে দিয়েছেন।

পার্থক্যটা হচ্ছে - "কারণ"
______

অনেকেই কেবল কোর'আনের আয়াত বা হাদিস উল্লেখ করেই মানুষকে তা পালন করতে বলেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ ঐ আয়াতটি বা হাদিসটি আমল করার জন্যে তেমন কোনো উৎসাহ-ই পায় না।

অথচ,

কোর'আনের যে কোন আয়াত বা রাসূল (স) এর যে কোনো হাদিসের পিছনে অনেকগুলো সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক কারণ থাকে। আমরা যদি সেসব "কারণ" সহকারে কোর'আন ও হাদিসকে সাধারণ মানুষের সামনে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারি, তাহলে মানুষ সহজেই তা মেনে নিতে পারবে।


************

শিক্ষা-দীক্ষা, স্বাস্থ্য-চিকিৎসা, সামরিক-যুদ্ধ, সবকিছুতেই আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়। কিন্তু, বিশ্বকাপ ক্রিকেট ও ফুটবলে আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হতে পারে না কেন?

************

একজন জ্ঞানী বা একজন নেতার কাজ হলো, তিনি চলমান সমস্যাগুলো উপলব্ধি করার জন্যে মানুষের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করেন। আর, সেই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তির জন্যে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করেন।

আমাদের বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিকদের এক অংশ কেবল মানুষের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করেন, ফলে গণ-মানুষের সমস্যাগুলো তাঁরা বুঝতে পারেন। কিন্তু আল্লাহর সাথে সম্পর্ক না থাকার কারণে সঠিক সমাধান করতে পারছেন না।

অন্যদিকে, আরেক পক্ষ কেবল আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রাখার কারণে তাঁদের কাছে সমাধান আছে। কিন্তু গণ-মানুষের সাথে সম্পর্ক না থাকার কারণে, মানুষের সমস্যাই তাঁরা চিহ্নিত করতে পারছেন না।

************

যাদের কাছে আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই, তাঁদের সাথে আমরা কিভাবে আচরণ করি, তা দিয়েই আমাদের চরিত্র বোঝা যায়।



************

জীবন কোনো গণিতের সূত্র নয়। সবার জীবনে দুইয়ে দুইয়ে যোগ করলে চার হয় না। কারো হয় তিন, কারো হয় পাঁচ।

************

কেবল দু'জনে মিলে প্রেম হয় না। প্রেম করার জন্যে প্রয়োজন হয় প্রকৃতি ও পরিবারের।

একজন মানুষের প্রেম শুরু হয়, যখন সে তার প্রিয় মানুষকে সাগর-নদী, চাঁদ-তারা, আকাশ-বাতাস অর্থাৎ প্রকৃতির সাথে তুলনা দেয়।

আর, একজন মানুষের প্রেম পূর্ণ ও সঠিক হয়, যখন সে তার প্রিয় মানুষকে পরিবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। অর্থাৎ, বিয়ে করে ফেলে।


তাই, একা একা প্রেম হয় না। প্রকৃতি ও পরিবারের সাহায্য নিয়েই প্রেম চালিয়ে যেতে হয়।





************

"আমি মনে করি, বাঙালিরা খুবই বিনয়ী মানুষ। আল্লাহর কসম, বাংলাদেশের মানুষ খুবই বিনয়ী।

৫০০ বছর আগে বিশ্বের সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয়ের দেশ ছিলো বাংলাদেশ। এটি ছিলো এই মহাবিশ্বের সবচেয়ে সভ্য একটি দেশ।

১৬ শতাব্দীতে ব্রিটিশরা প্রথম যখন ঢাকায় আসলো, তখন তারা বিশ্বাস করতে পারেনি, কতটা উন্নত ছিলো ঢাকা শহর। বাংলাদেশের ছিলো মহান ঐতিহ্য। এবং তারা ছিলো বিশ্বের সবচেয়ে সভ্য মানুষ।"


- শাইখ হামজা ইউছুফ।





************

মানুষের নফস হলো একটি ঘোড়ার মত। ঘোড়ার সাহায্যে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়া যায়, যুদ্ধ করা যায়।

নফস বা ঘোড়াকে যদি আদব ও শৃঙ্খলা শেখানো যায়, তাহলে তার দ্বারা অনেক উপকার হয়। কিন্তু, নফস বা ঘোড়াকে যদি শৃঙ্খলা না শিখানো যায়, তাহলে তার দ্বারা অনেক ক্ষতি হয়।

************

জ্ঞানী ও মূর্খ উভয়ে ভুল করেন। পার্থক্য হলো, জ্ঞানীরা খুব সহজেই তাঁদের ভুল স্বীকার করেন, কিন্তু মূর্খরা কিছুতেই তাঁদের ভুল স্বীকার করতে চান না।

************

মানুষের নফস হলো একটি ঘোড়ার মত। ঘোড়ার সাহায্যে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়া যায়, যুদ্ধ করা যায়।

নফস বা ঘোড়াকে যদি আদব ও শৃঙ্খলা শেখানো যায়, তাহলে তার দ্বারা অনেক উপকার হয়। কিন্তু, নফস বা ঘোড়াকে যদি শৃঙ্খলা না শিখানো যায়, তাহলে তার দ্বারা অনেক ক্ষতি হয়।

************

অতীতের স্কলার বা আলেমদের কোন কোন চিন্তা এখনো কাজে লাগবে, এবং কোন কোন চিন্তা এখন আর আর কাজে লাগবে না, তা নির্ধারণ করাই সমসাময়িক স্কলার বা আলেমদের কাজ।

- ফখরুদ্দিন আল রাজি।

************

অন্যের জন্যে ধৈর্য ধারণ করার নাম ভালোবাসা। নিজের জন্যে ধৈর্য ধারণ করার নাম আশা। এবং আল্লাহর জন্যে ধৈর্য ধারণ করার নাম বিশ্বাস।

************

খাবারের মাঝে লবণের যেমন প্রয়োজন, আমাদের জীবনে পৃথিবীর তেমন প্রয়োজন।

পরিমাণ মত লবণ ব্যবহার করলে খাবার খুবই সুস্বাদু হয়। কম লবণ দিলে খাবার কোনোভাবে খাওয়া যায়। কিন্তু বেশি লবণ পড়লে খাবার মোটেও খাওয়া যায় না।

তদ্রূপ,


পরিমাণ মত পৃথিবীকে অর্জন করলে দুনিয়া ও আখিরাতে সুখ পাওয়া যায়। পৃথিবীকে বর্জন করলেও কষ্ট করে পৃথিবীতে চলা যায়। কিন্তু অতিরিক্ত পৃথিবীর প্রেমে পড়লে জীবন বিষণ্ণ হয়ে যায়।

 


************

সময়ের অপর নাম মানুষ। মানুষ ভালো হলে আমরা বলি সময়টা ভাল। মানুষ খারাপ হলে আমরা বলি সময়টা খারাপ।

************

ভালোবাসা যুক্তির বিপরীত প্রান্তে নয়, বরং যুক্তির সর্বোচ্চ স্তরে অবস্থান করে।

************

বর্তমান হলো অতীতের ফল ও ভবিষ্যতের কারণ।

আমরা এখন যে বর্তমানকে দেখছি, তা হলো অতীতের অনেকগুলো ঘটনার ফলাফল। একইভাবে, আমরা এখন যে কাজগুলো করছি, সেটাই ভবিষ্যতকে নির্মাণ করবে।

************

আমাদের বর্তমান সময়ে,
তথ্য পাওয়া খুবই সহজ, কিন্তু জ্ঞানী হওয়া খুবই কঠিন।

************

ইমাম বোখারী খুবই মেধাবী ও প্রজ্ঞাবান একজন মানুষ ছিলেন। তিনি প্রায় ১ লক্ষ সহীহ হাদিস মুখস্থ করেছিলেন। কিন্তু, তাঁর প্রজ্ঞা ও যুক্তি-বুদ্ধির মাধ্যমে ১ লক্ষ সহীহ হাদিস থেকে বাছাই করে মাত্র ৭,৫৬৩ টি হাদিস তিনি গ্রহণ করেছেন। বাকি হাজার হাজার হাদিস সহীহ হওয়া সত্ত্বেও তিনি বাদ দিয়েছেন।

তেমনি, আমরাও কোনো সহীহ হাদিস গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোর'আন ও যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করা উচিত। এটাই সালফে সালিহীনদের সুন্নত।

************

ভালোবাসা অসীম। পৃথিবীর সকল স্থানে ভালোবাসা ছড়িয়ে থাকে। ভালোবাসাকে কোনো একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা বস্তুর মাঝে সীমাবদ্ধ করে ফেললে, সে ভালোবাসা মারা যায়। ভালোবাসা তখন যন্ত্রণায় পরিণত হয়।

আমরা অধিকাংশ সময়ে অপাত্রে ভালোবাসা প্রদান করি, তাই আমাদের ভালোবাসা নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের পরিবার, পথশিশু, এতিম, চাকর-চাকরানী, দুর্বল মানুষ ও আমাদের অধীনস্থরা সব সময় আমাদের থেকে ভালোবাসা পাবার জন্যে উন্মুখ হয়ে থাকে। আমরা তাঁদের মাঝে ভালোবাসার বীজ বপন না করে নষ্ট জমিতে ভালোবাসার চারা লাগাই। ফলে যত কষ্ট করেই ভালোবাসার চারা রোপণ করি না কেন, দিনশেষে সব নষ্ট হয়ে যায়। তখন আমরা বলতে শুরু করি, ‘ভালোবাসার অপর নাম যন্ত্রণা’।

************

পৃথিবীর সকল জ্ঞান সৃষ্টি হয়েছে আসমানি কিতাবকে ব্যাখ্যা করার জন্যে।

************

তিনটি গুনাহ কল্পনা করুন।

কোর'আন না পড়া। দাঁড়ি না রাখা। এবং অহংকার করা।

এবার, যদি সাধারণ একজন মানুষকে বলেন যে, এ তিনটি গুনাহকে বড় থেকে ছোট আকারে সাজান।


তিনি বলবেন - ১) দাঁড়ি না রাখা > ২) কোর'আন না পড়া > ৩) অহংকার করা।

কিন্তু, আপনি যদি কোর'আন পড়া একজন মানুষকে বলেন যে, এ তিনটি গুনাহকে বড় থেকে ছোট আকারে সাজান।

তখন তিনি বলবেন - ১) অহংকার করা > ২) কোর'আন না পড়া > ৩) দাঁড়ি না রাখা।
_____

আমরা সাধারণ মানুষেরা কিছু বিষয়কে খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকি, কিন্তু কোর'আন সেটাকে খুবই কম গুরুত্ব দেয়। আবার, আমারা কিছু বিষকে কম গুরুত্ব দিয়ে থাকি, কিন্তু কোর'আন সেটাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়।


************

মানুষ দুটি কারণে গুনাহ করে থাকে। এক – অজ্ঞতা, দুই – অহংকার।

অজ্ঞতার কারণে মানুষ যে গুনাহ করে তার নাম পাপ। আর, অহংকারের কারণে মানুষ যে গুনাহ করে তার নাম অন্যায়।

অজ্ঞতা ও পাপ থেকে মানুষ সহজে ফিরে আসতে পারলেও অহংকার ও অন্যায় থেকে মানুষ সহজে ফিরে আসতে পারে না।


এ কারণেই,

আদম (আ) এর গুনাহ থেকে তিনি ফিরে আসতে পারলেও ইবলিস তার গুনাহ থেকে ফিরে আসতে পারেনি।

 


************

ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞান - এগুলোর প্রত্যেককে আলাদা আলাদা কল্পনা করাটা জ্ঞানের শিরক।

অন্যদিকে, সকল জ্ঞানের সমন্বয় সাধন করাকে বলা যায় জ্ঞানের তাওহীদ।

************
আধুনিকতা আমাদেরকে কিছু উপহার দিয়েছে।

১। সৌন্দর্য ছাড়া শিল্প।
২। ছন্দ ছাড়া কবিতা।
৩। আলো, বাতাস ও সবুজ ঘাস ছাড়া বাসা-বাড়ি।
৪। কণ্ঠ ছাড়া বাদ্যের গান। এবং
৫। ভদ্রতা ছাড়া সমালোচনা।


************

সেকুলারিজম এবং ধর্মীয় উগ্রবাদ উভয়ে একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। বা, থিসিস ও এন্টি-থিসিস।

সেকুলারিজম মানুষকে ধর্ম ছাড়ার জন্যে বাধ্য করে, আর ধর্মীয় উগ্রবাদ মানুষকে ধর্ম পালন করতে বাধ্য করে।

উভয়ে মানুষের স্বভাবগত ও স্বাধীন ইচ্ছার বিরোধী।

************

ধরুন, আহলে হাদিস, হানাফি, অথবা তাবলীগের কোনো মানুষ সপ্তাহে একদিনও কোর'আন পড়ার সুযোগ পান না।

কিন্তু,

বিএনপি বা আওয়ামী লীগের একজন মানুষ সপ্তাহের প্রতিদিন কোর'আন পড়ার চেষ্টা করেন।


প্রশ্ন হলো, এ দু'জন ব্যক্তির মাঝে কে বেশি হেদায়েত প্রাপ্ত হবার সম্ভাবনা আছে?
____
আমরা একে অপরকে ভ্রান্ত প্রমাণ করার জন্যে যত সময় ব্যয় করি, কোর'আন নিয়ে তত সময় ব্যয় করি না।

অথচ, আল্লাহ তায়ালা বলেন -

إِنَّ ٱلَّذِينَ يَتْلُونَ كِتَـٰبَ ٱللَّهِ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنفَقُوا۟ مِمَّا رَزَقْنَـٰهُمْ سِرًّۭا وَعَلَانِيَةًۭ يَرْجُونَ تِجَـٰرَةًۭ لَّن تَبُورَ

"যারা আল্লাহর কিতাব অধ্যয়ন করে, সালাত কায়েম করে, এবং আমি যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা করে, যাতে কখনও লোকসান হবে না।" [সূরা ৩৫/ফাতির - ২৯]

দেখুন, এই আয়াতে সালাত কায়েমের আগে কোর'আন অধ্যয়ন করার কথা বলা হয়েছে। আমরা সালাতে হাতবাঁধা ও 'আমীন' নিয়ে যত বিতর্ক করি, কোর'আন নিয়ে কি তত কথা বলি?

 


************

আকাশ দেখার নেশা যাদের আছে, অথবা, যারা খুব সহজে শিশুদেরকে নক্ষত্র বিজ্ঞান শেখাতে চান, তাঁরা Stellarium সফটওয়ারটি ব্যবহার করতে পারেন।

ওয়েব সাইটে (http://www.stellarium.org) ডাউনলোডের লিঙ্ক সহ বিস্তারিত দিক-নির্দেশনা দেয়া আছে। আকাশ প্রেমীদের জন্যে এটা খুবই উপকারী এবং সম্পূর্ণ ফ্রি একটি সফটওয়ার।

************

পদ্ধতি - ১

কেউ কেউ বিভিন্ন আলেম, স্কলার, শায়েখ ও পীরদের কথা অনুযায়ী হাদিস বুঝার চেষ্টা করেন। এবং এরপর, হাদিস অনুযায়ী কোর'আন বুঝার চেষ্টা করেন।

পদ্ধতি - ২


কেউ কেউ কোর'আন অনুযায়ী হাদিস বুঝার চেষ্টা করেন। এবং এরপর, হাদিস অনুযায়ী বিভিন্ন শায়েখ, আলেম, মুফতি, পীর ও স্কলারদের কথা বুঝার চেষ্টা করেন।
_____

তাহলে, তাঁরা উভয়ে কি সমান হতে পারে?


************

মুসলিমদের বিজ্ঞানের ইতিহাস ও সরঞ্জামগুলো দিয়ে ড ফুয়াদ সেজগিন তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনেক বড় একটি জাদুঘর করেছেন।

আপসোস করার কোনো কারণ নেই।

আপনি বিশ্বের যেখানেই থাকুন না কেন হেঁটে হেঁটে জাদুঘরটি দেখার সুব্যবস্থা তারা করে রেখেছেন।


জাস্ট ক্লিক করুন, এবং সামনে যেতে থাকুন।

http://en.ibtav.org/virtualtour


************

ঈদের দিনে আমি মানুষের নতুন পাঞ্জাবি বা জামার দিকে তাকিয়ে থাকি।

আমার কাছে কেন যেনো মনে হয়, একজন মানুষের সাইকোলজি বুঝার জন্যে তার ঈদের দিনের নতুন জামা বা পাঞ্জাবিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণত ঈদের জামা কিনার সময়ে কোনো মানুষকে তার স্কুল, কলেজ, চাকরি বা ব্যবসার জন্যে মানানসই কোনো জামার কথা ততটা চিন্তা করতে হয় না। মানুষ স্বাধীনভাবে নিজের পছন্দ অনুযায়ী অথবা পছন্দের মানুষের পছন্দ অনুযায়ী ঈদের জামা কিনে। ফলে ঈদের জামা বা পাঞ্জাবিতে খুব সহজে মানুষের সাইকোলজি ধরা পড়ে।


তবে সমস্যা হয় তখন, যখন কেউ খুব সাদামাটা কিছু গায়ে দিয়ে ঈদ করেন। এসব মানুষের সাইকোলজি বোঝা খুব মুশকিল।


************

বাংলাদেশে দু’একটি শিয়া মসজিদ আছে। চার-পাঁচটা আহলে হাদিসের মসজিদ আছে। অল্প কিছু খাজা বাবাদের মসজিদ আছে। এবং কিছু হানাফি মসজিদ আছে।

এ ছাড়া বাদবাকি লক্ষ লক্ষ মসজিদ সব মুসলিমদের।

************

অহংকার এমন একটি অভ্যাস, যাকে একদিনে বা এক মাসে পরিবর্তন করা যায় না। অহংকারকে দূর করার জন্যে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রতি মুহূর্তে নিজের সাথে নিজের যুদ্ধ করতে হয়।

************

আমরা অন্তরের জগতে যতবেশি সজাগ ও সচেতন হই, বাইরের জগতে ততবেশি নীরব হয়ে যাই। অন্যদিকে, আমরা বাইরের জগতে যতবেশি সজাগ ও তৎপর থাকি, অন্তরের জগতে ততবেশি নীরব হয়ে যাই।

************

"গণিত এমন একটি ভাষা যা দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বিশ্বজগতকে লিখেছেন।"

- গ্যালিলিও গ্যালিলেই

“Mathematics is the language in which God has written the universe”

― Galileo Galilei

************

নাস্তিকগণ বলেন, বিশ্বজগত এমনি এমনিই সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ ও মানুষের বুদ্ধিও এমনি এমনি সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, মানুষের আবিষ্কৃত গণিতের সাথে বিশ্ব জগতের সবকিছুর হিসাব (fine tuning) মিলে যাচ্ছে কেন?

এর কারণ হচ্ছে, মানুষ, তার জ্ঞান ও বিশ্বজগত সবকিছু আল্লাহ থেকে এসেছে। আল্লাহর সৃষ্টি।

************

ইসলামকে ধারণ করার ক্ষমতা সেকুলারিজমের নেই। তবে সেকুলারিজমকে ধারণ করার ক্ষমতা ইসলামের আছে।

************

সাধারণ জ্ঞান:

বর্তমান বিশ্বের একমাত্র হিজাবি প্রধানমন্ত্রীর নাম কি?

************

রাসূল (স) –এর নিজের কোনো ব্যবসা ছিল না, ব্যবসা ছিল তাঁর স্ত্রীর।

রাসূল (স) –এর নিজের কোনো ঘর ছিল না। তিনি থাকতেন তাঁর স্ত্রীদের ঘরে।

আফসোস!


জগতে এখন ব্যবসায়ী অথবা বাড়ি ওয়ালা নারীর খুবই অভাব।


************

কোর'আনের তাফসীর নিয়ে আমার দেখা সবচেয়ে ভালো একটি ওয়েব সাইট হলো - http://www.altafsir.com

জর্ডানের একটি সংগঠন এই ওয়েব সাইটটি পরিচালনা করে। এর ভালো দিক হলো, এখানে আপনি ক্লাসিক্যাল, সুন্নি, শিয়া, সালাফি, সুফী, জায়দি, আবাদি, জাফরি, মডার্ন, এবং বিভিন্ন পন্থীদের তাফসীর একসাথে দেখতে পারবেন। বেশ কিছু তাফসীরের ইংরেজি ভার্সনও আছে।

যারা কোর'আনকে সব এঙ্গেল থেকে এবং সামগ্রিকভাবে দেখতে চান, তারা এটি দেখতে পারেন।

************

সমালোচনাকে আমি ভালোবাসি। কারণ, সমালোচনা মানুষকে সত্য পেতে সাহায্য করে।

প্রশংসাকে মানুষ ভালোবাসে। কারণ, প্রশংসা পেলে মানুষকে সত্য খোঁজার কষ্ট করতে হয় না।

************

জাকারিয়া আল কাযভীনী একজন মুসলিম বিজ্ঞানী। তিনি ১২০৩ সালে ইরানে জন্ম গ্রহণ করেন, এবং ১২৮৩ সালে ইরাকে মৃত্যু বরণ করেন। অর্থাৎ, চার্লস ডারউইনের ছয়’শ বছর আগে তাঁর জন্ম।

বিভিন্ন প্রাণীদের বিবর্তন তিনি একটি বই লিখেন। নাম – “সৃষ্টির বিস্ময় ও অদ্ভুত অস্তিত্ব” / The Wonders of Creation and the Curiosities of Existence / عجائب المخلوقات و غرائب الموجودات

পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে আল কাযভীনী যেসব অদ্ভুত প্রাণীর সন্ধান পান, তা বিস্তারিত লিখে ও অংকন করে যান তাঁর এ বইয়ে।


বইটির কয়েকটি পৃষ্ঠা গুগলে আছে, দেখুন


************

একজন অসহিষ্ণু বিজ্ঞানী বিজ্ঞানের মোড়কে তার অসহিষ্ণুতা প্রকাশ করেন। একজন অসহিষ্ণু শিল্পী শিল্পের মোড়কে তার অসহিষ্ণুতা প্রকাশ করেন। একজন অসহিষ্ণু বুদ্ধিজীবী টেলিভিশনের টক-শো এসে তার অসহিষ্ণুতা প্রকাশ করেন। একজন অসহিষ্ণু ধার্মিক ভালো কথার মোড়কে তার অসহিষ্ণুতা প্রকাশ করেন।

আমাদের প্রত্যেক মানুষের একটি খারাপ গুন হলো অসহিষ্ণুতা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সহিষ্ণু হবার তৌফিক দান করুক।

************

- ইবলিস কি নাস্তিক ছিল না আস্তিক ছিল?

: অবশ্যই আস্তিক ছিল।

- তারপর, আদম (আ)-কে সেজদা না করার কারণে সে কি নাস্তিক হয়ে গিয়েছিলো?


: অবশ্যই না।

- তাহলে, ইবলিসকে মুমিন বা বিশ্বাসী না বলে কাফির বলা হয় কেন?

: কারণ, কেবল আল্লাহর অস্তিত্বের স্বীকার করা মানে আল্লাহকে বিশ্বাস করা নয়, বরং আল্লাহর আদেশ মেনে চলা মানেই হলো আল্লাহকে বিশ্বাস করা।

ইবলিসের মত অনেক অস্তিক আছেন, যারা আল্লাহকে স্বীকার করে, কিন্তু বিশ্বাস করে না।


************

সন্তান বাবার বংশ হলেও প্রকৃত অর্থে মায়ের-ই অংশ।

মা খারাপ কিন্তু সন্তান ভালো হয়েছে, এমন কোনো উদাহরণ কোর’আনে নেই। কিন্তু বাবা খারাপ হওয়া সত্ত্বেও সন্তান ভালো হয়েছে, এমন উদাহরণ কোর’আনে প্রচুর।

তাই,

ভালো সন্তানের জন্যে ভালো বাবার চেয়ে ভালো মায়ের গুরুত্ব ও প্রয়োজন অনেক বেশি।

************

"মায়ের অনুগত থাকতে আমাকে আদেশ করা হয়েছে। তিনি আমাকে খারাপ ও অহংকারী হিসাবে সৃষ্টি করেননি।"

- আল কোর'আন, সূরা মারিয়াম, আয়াত ৩২।

************

আমাদের পিঠ আমরা দেখি না। পিঠ দেখতে হলে দুটি আয়নার প্রয়োজন হয়। একটি আয়না পিঠের পিছনে, এবং অন্য একটি তার বরাবর চোখের সামনে রাখতে হয়। তারপর আমরা আমাদের পিঠ দেখি।

ঠিক একইভাবে,

পঞ্চেন্দ্রিয় দ্বারা আমরা যা কিছু ধারণ করি, তা মস্তিষ্কে একটি দৃশ্য তৈরি করে, এবং একইসাথে হৃদয়েও একটি দৃশ্য ধারণ করে। হৃদয়ের ধারণকৃত দৃশ্যই হলো আমাদের উপলব্ধি।

************

হেফজতে ইসলামকে খুন করে সরকার বললেন, তারা গায়ে রক্ত লাগিয়ে রেখেছে।

ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল ইউসুফ (আ)-এর ক্ষেত্রে। ইউসুফ (আ)-কে তাঁর ভাইয়েরা কুয়ায় ফেলে দিয়ে ইউসুফের জামায় কৃত্রিম রক্ত লাগিয়ে এনে বলেছিলেন, ইউছুফকে বাঘে খেয়ে ফেলেছে।

সূত্র – আল কোর'আন ১২-২৮

************

টার্কি ভাষা শেখার সময় আমাদের শিক্ষকেরা সবাই ছিলেন নারী। আমি ভাবতাম, পুরুষের কি অভাব হয়েছে? এখানে এত নারী শিক্ষক কেন?

কিছুদিন পর বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পারলাম।

যে কোনো ভাষা শেখার চেয়ে শেখানোটা বেশি কষ্টকর। যিনি ভাষা শিক্ষা দেন, তাঁকে প্রচুর কথা বলতে হয় এবং অসম্ভব রকম ধৈর্য ধারণ করতে হয়। কিন্তু, পুরুষেরা এতবেশি কথা বলতে পারে না, তাদের মাথা ব্যথা শুরু হয়। ফলে, ভাষা শিক্ষা দেয়ার জন্যে নারীরাই অগ্রগণ্য।


পুরুষেরা প্রায়ই অভিযোগ করেন, “নারীরা বেশি কথা বলে, সারাক্ষণ কানের কাছে এসে প্যান প্যান করে”।

শুনুন,

আমাদের মায়েরা যদি বেশি কথা না বলতেন, তাহলে আমি বা আপনি কেউ ভাষা শিখতে পারতাম না।


************

পঞ্চইন্দ্রিয় গুপ্তচরগণ নিজ নিজ এলাকার সংবাদ একত্রিত করে মস্তিষ্কের সামনের অংশে বা কল্পনাশক্তি নামক বিশেষ দূতের কাছে প্রেরণ করে। দূত এই সংবাদগুলো মস্তিষ্কের পিছনে বসে থাকা স্মৃতিশক্তি নামক কোষাধ্যক্ষের নিকট প্রেরণ করে। কোষাধ্যক্ষ অতীতের সকল হিসাব সহ একসাথে হৃদয় নামক বাদশাহর নিকট প্রেরণ করে। বাদশাহ তার বোধশক্তির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় সংবাদ যাচাই করে সৈন্য বাহিনী বা শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে কাজের আদেশ করে।

এই কাজটি এত দ্রুত হয় যে সব মানুষ বুঝতে পারে না।

************

নিষ্পাপ আত্মা নতুন চকককে আয়নার মত। কিন্তু গুনাহ দ্বারা কলঙ্কিত আত্মা তওবার মাধ্যমে পরিষ্কার করা হলেও নতুন আয়নার মত ঝলমল করে না।

************

আমাদের পিঠ আমরা দেখি না। পিঠ দেখতে হলে দুটি আয়নার প্রয়োজন হয়। একটি আয়না পিঠের পিছনে, এবং অন্য একটি তার বরাবর চোখের সামনে রাখতে হয়। তারপর আমরা আমাদের পিঠ দেখি।

ঠিক একইভাবে,

পঞ্চেন্দ্রিয় দ্বারা আমরা যা কিছু ধারণ করি, তা মস্তিষ্কে একটি দৃশ্য তৈরি করে, এবং একইসাথে হৃদয়েও একটি দৃশ্য ধারণ করে। হৃদয়ের ধারণকৃত দৃশ্যই হলো আমাদের উপলব্ধি।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মুসলিম চিন্তাবিদ ও মনীষীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা

বিংশ শতাব্দীর মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা ১. আয়াতুল্লাহ খমিনী – (ইরান, ১৯০২ - ১৯৮৯) ২. আল্লামা তাবাতাবাঈ – (ইরান, ১৯০৩ - ১৯৮১) ৩. আবুল আ’লা মওদুদী – (পাকিস্তান, ১৯০৩ - ১৯৭৯) ৪. মালিক বিন নাবী – (আলজেরিয়া, ১৯০৫ - ১৯৭৩) ৫. হাসান আল বান্না – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৪৯) ৬. সাইয়েদ কুতুব – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৬৬) ৭. নুর উদ্দিন তোপচু – (তুরস্ক, ১৯০৯ – ১৯৭৫ ৮. ফজলুর রহমান – (পাকিস্তান, ১৯১৯- ১৯৮৮) ৯. মুর্তাজা মোতাহারী – (ইরান, ১৯২০ - ১৯৭৯) ১০. ইসমাইল রাজি আল ফারুকি - (ফিলিস্তিন, ১৯২১ - ১৯৮৬ ) ১১. আলী আইজাত বেগোভিচ – (বসনিয়া, ১৯২৫ - ২০০৩) ১২. নাজিমুদ্দিন এরবাকান – (তুরস্ক, ১৯২৬ - ২০১১) ১৩. শহীদ মোহাম্মদ বেহেশতী – (ইরান, ১৯২৮ - ১৯৮১) ১৪. নাকিব আল-আত্তাস – (ইন্দোনেশিয়া, ১৯৩১ - ) ১৫. হাসান আত-তুরাবী, (সুদান, ১৯৩২ - ২০১৬) ১৬. আলী শরিয়তি – (ইরান, ১৯৩৩ - ১৯৭৭) ১৭. সেজাই কারাকোচ - (তুরস্ক, ১৯৩৩ - ) ১৮. সাইয়্যেদ হোসাইন নাসর – (ইরান, ১৯৩৩ - ) ১৯. হাসান হানাফি – (মিশর, ১৯৩৫ - ) ২০. আবেদ আল জাবেরি – (মরক্কো, ১৯৩৬ - ২০১০) ২১. রশিদ ঘানুশী – (তিউনিসিয়া, ১৯৪১ - ) ২২. নাসের আবু জায়েদ – (মিশর, ১৯৪৩ - ২০

সকল জ্ঞান-ই ইসলামের সম্পদ

কোর'আন একটি জ্ঞান, হাদিস একটি জ্ঞান, ফিকাহ একটি জ্ঞান, দর্শন একটি জ্ঞান, এবং বিজ্ঞান একটি জ্ঞান। এদের মাঝে স্তরবিন্যাসে পার্থক্য থাকলেও একটি জ্ঞান কখনো অন্য জ্ঞানের বিরোধী হয় না। আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা প্রথম যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন, তা পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে কেউ যে নামেই জ্ঞান চর্চা করুক না কেন, তা আল্লাহর সত্য জ্ঞানের সাথে কখনো বিরোধী হওয়া সম্ভব না। অজ্ঞতার কারণে অনেকেই মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। এবং দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের বৈপরীত্য রয়েছে। নাস্তিকরা মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলুল কোর'আন মনে করেন, কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলে হাদিস মনে করেন, হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। কিছু কিছু ধার্মিক মনে করেন, ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। আধুনিক বস্তুবাদী বিজ্ঞানী মনে করেন, বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম ও দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। কিন্তু, আসলে সব জ্ঞান-ই আল্লাহর পক্

কওমী মাদ্রাসার পাঠ্যপুস্তকের লিস্ট

কওমী মাদ্রাসার অনেক বন্ধু আছেন আমার ফেইসবুকে। তাঁদের থেকে একটা বিষয় জানতে চাই। বাংলাদেশের কমমী মাদ্রাসগুলোতে দরসে নেজামীর সিলেবাস অনুসারে নিম্নের কোন বইগুলো পড়ানো হয়? এবং কোনগুলো পড়ানো হয় না? ইলমুস সরফ (শব্দ ও তার রুপান্তর শাস্ত্র) = মীযানুস সরফ , মুনশায়িব, পাঞ্জেগাঞ্জ, ইলমুস সীগাহ (মুফতী ইনায়েত আহমাদ কাকুরী প্রনীত), ফুসুলে আকবরী, শাফিয়া। নাহু (ব্যাকরণ) =নাহবেমীর, মিয়াতে আমেল (আব্দুল কাহির জুরজানির ব্যখ্যাসহ), আবু হাইয়ান আন্দালুসীর হিদায়াতুন নাহু, কাফিয়া, শরহে জামী। মানতিক ( যুক্তিবিদ্যা) =সুগরা-কুবরা, মুখতাসার ঈসাগুজি, তাহযিবুল মানতিক ওয়াল কালাম, শরহে তাহযীব, কুতবী, মীর কুতবী, সুল্লামুল উলুম। হিকমত ও ফালসাফা (দর্শন ও তত্ত্বজ্ঞান)=হিদায়াতুল হিকমাহ ব্যখ্যাগ্রন্থ মারযুবী, সদরা, শামসে বাযেগা। গণিত =খুলাসাতুল হিসাব ওয়াল হানদাসা, উসুলুল হানদাসাতিল ইকলীদাস, তাশরিহুল আফলাক, রিসালাতু কুশজিয়া, শরহে চুগমীনী (প্রথম অধ্যায়)। বালাগাত (অলংকারশাস্ত্র) =মুখতাসারুল মাআনি, মুতাওয়াল । ফিকহ =শরহে বেকায়া, হেদায়া। উসুলে ফিকহ =নুরুল আনোয়ার, আত তাওহীদ ফী হাললি গাওয়ামিদিত তানকীহ, আত তালবীহ, মুসাল্লামুস সুবুত।