সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সুখ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আদম (আ)-এর গল্পের শিক্ষা কি?

কোর’আনের প্রতিটি ঘটনাই আমাদের জন্যে শিক্ষণীয়। কেবল নবী রাসুলদের ইতিহাস জানানোর জন্যে আল্লাহ তায়ালা কোর’আনে বিভিন্ন কাহিনী দিয়ে ভরে রাখেননি, বরং প্রতিটি কাহিনীর পিছনে আমাদের জন্যে অসংখ্য শিক্ষা রয়েছে। যেমন, আদম (আ)-কে জান্নাত থেকে নামিয়ে দেয়ার ঘটনাকে আমরা একটি ঐতিহাসিক তথ্য আকারে গ্রহণ করি। অথবা, মূসা (আ)-এর নদী পার হয়ে যাবার ঘটনাকে আমরা একটি অলৌকিক মুজিযা আকারে গ্রহণ করি। কিন্তু এসব ঘটনা কেবল ঐতিহাসিক কোনও তথ্য দেয়ার জন্যে, অথবা কোনও নবীর মুজিযা প্রকাশ করার জন্যে বর্ণনা করা হয়নি। বরং আমাদেরকে শিক্ষা দেয়ার জন্যেই এসব ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ আদম (আ)-এর কাহিনীটি কল্পনা করা যাক, কোর’আনে আদম (আ)-কে জান্নাত থেকে নামিয়ে দেয়ার কাহিনীটি যখন বর্ণনা করা হয়, তখন আমরা ভাবতে থাকি, এটি আদম (আ)-এর কাহিনী, সুতরাং এই ঘটনাটি থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়ার তেমন কিছু নেই। অথচ আদম এর ঘটনাটি আমাদের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রতিদিন ঘটে থাকে। দেখুন, আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের সব গাছ থেকেই খাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন, কিন্তু কেবল একটি গাছ থেকে খেতে নিষেধ করেছিলেন। তেমনি, আমাদেরকেও আল্লাহ তায়ালা সবকিছু খাওয়...

সুখ

রহিমা চাচীকে বলি, সুখ কি? বলে, হাঁস আছে, মুরগি আছে, গরু আছে দুটি, আমার বাবা সুখের অভাব কি। শহরের মিথিলাকে বলি, সুখ কি? বলে, আত্মহত্যা ছাড়া সুখ আবার কি। ওরা সুখের সন্ধানে পড়ি দেয় কত সাগর, কত নদী দেশ, বিদেশ কত কি। গ্রামের রহিমা চাচী, হাঁসটা ঘরে ফিরলেই সুখী।

পড়, তোমার মনের কিতাব!

লোকে বলে, মানুষের মন বুঝা সবচেয়ে কঠিন। আসলেই কঠিন। অন্যের মন বুঝা তো দূরে থাক, নিজের মন বুঝাই কষ্টকর। যে নিজের মনকে নিজে বুঝতে পারে, পৃথিবীতে সেই সবচেয়ে সুখী। নিজের মন নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসার নাম-ই শান্তি। এর অপর নাম সালাম, বা ইসলাম। যে নিজের মনকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে পারে, কিংবা, যে নিজের মনকে নিজেই বন্ধী করতে পারে, অথবা, যে নিজের কাছে নিজের মনকে সমর্পণ করতে পারে, সে জান্নাতি সুখ অনুভব করে। নিজের মনকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসার সর্বোত্তম ও সহজ দিকনির্দেশনা প্রদান করে যে গ্রন্থটি, তার নাম আল কোর’আন। আল কোর’আনের প্রথম শব্দ পড়। অর্থাৎ, রবের নামে তোমার মনকে পড়। সুখ, দুঃখ, বা রাগের সময় মনকে শান্ত বা নিয়ন্ত্রণ রাখার সবচেয়ে কার্যকারী কৌশল শেখায় আল কোর’আন। শান্ত মন-ই কেবল জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে। অশান্ত মনের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণা। নিজেই নিজের মনকে জানা, বোঝা ও নিয়ন্ত্রণ করা পৃথিবীতে অনেক কষ্টকর হলেও আখিরাতে বিনাকষ্টে সবাই নিজের মনকে নিজেই দেখতে পাবে। কারণ, মৃত্যুর পরে সবার চোখের সীমাবদ্ধতা দূর হয়ে যায়। তাই সবাই তাদের নিজেদেরকে খুব ভালোভাবে দেখতে পারে। পৃথিবীর অশান্ত মনগুলো আখিরাতে নিজেদের বিশ্র...

সখী, ভালোবাসা কারে কয়?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বিখ্যাত একটি কবিতায় গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রশ্ন তুলছিলেন। তিনি প্রশ্ন করেন – সখী, ভালোবাসা কারে কয়? সে কি কেবলই যাতনাময়? রবীন্দ্রনাথের কথা হলো, আকাশ-বাতাস, গাছগাছালি, সাগর-নদী, গ্রহ-তারা, চাঁদ-সূর্য, বিশ্বের সবাই ভালোবেসে সুখী হয়। কিন্তু মানুষ কেন ভালোবেসে যন্ত্রণা ভোগ করে? কেন ভালোবাসার যন্ত্রণায় মানুষ নিজে নিজে জ্বলে পুড়ে মরে যায়? কেন এ যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে মানুষ আত্মহত্যা করে? কেন নিজের ভালোবাসার মানুষকে সে নিজেই হত্যা করে? রবীন্দ্রনাথ এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেয়েছিলেন কিনা জানি না। তবে আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার চেষ্টা করব। প্রথমত বোঝার চেষ্টা করি, ভালোবাসা কি? এর কি কোনো বস্তুগত সংজ্ঞা আছে? উত্তর হলো – না। ভালোবাসার কোনো বস্তুগত সংজ্ঞা নেই। ভালোবাসাকে যিনি যেভাবে উপলব্ধি করেন, তিনি সেভাবে এর সংজ্ঞা নির্ধারণ করেন। ভালোবাসা পানির মত কোনো বস্তু নয় যে তার সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা দেয়া যায়, এটি হলো অনুভবের বিষয়। বস্তুর আকার, স্থান, কাল ও সীমানা থাকে; কিন্তু অনুভবের আকার, স্থান, কাল বা সীমানা থাকে না। অনুভব বস্তুর ঊর্ধ্বে। তাই ভালোবাসার বস্তুগত...