সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সেক্যুলার লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ইসলামী রাজনীতির উদ্দেশ্য

ইসলামী রাজনীতির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো রাষ্ট্রে আদালত প্রতিষ্ঠা করা। এখানে আদালত প্রতিষ্ঠা করা মানে, আদালত নামের একটি দালান তৈরি করা নয়, বরং রাষ্ট্রের সকল জনগণকে তার ন্যায্য অধিকার দেওয়া। এ কারণে, আবু বকর (রা) খলিফা হবার পর অল্প কয়েকটি বাক্যে ইসলামী রাষ্ট্রের মূলনীতিগুলো বলে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন – والضعيف فيكم قوي عندي حتى أريح عليه حقه إن شاء الله، والقوى فيكم ضعيف حتى آخذ الحق منه إن شاء الله، “তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তি আমার কাছে সবচেয়ে শক্তিশালী, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তাঁর অধিকার ফিরিয়ে দিতে না পারি। এবং তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি আমার কাছে সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তি, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার থেকে অন্যের অধিকার না নিতে পারি।” অর্থাৎ, আবু বকর (রা)-এর সূত্র হলো, শক্তি বা ক্ষমতার কারণে কেউ অতিরিক্ত অধিকার বা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে না। কিন্তু, বর্তমানে আমাদের সমাজে তাকালে দেখবো, যাদের শক্তি ও ক্ষমতা বেশী, তাদের অধিকারও বেশী। যেমন, ১) সাধারণ ছাত্রদের তুলনায় অবৈধ কোটার অধিকার বেশী। ২) গরীব মানুষের তুলনায় ধনী লোকদের অধিকার বেশী। ৩) উপজাতি বা আদিবাসীদের তুলনায় বাঙ্গালীদের অধিক...

রাজনীতির সাথে মুসলমানদের সম্পর্ক - শায়খ ড. জাসের আওদা

[‘ইসলাম ও রাজনীতি’ প্রসঙ্গে কেউ মনে করেন, প্রচলিত ব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলে ‘আদর্শ ইসলামী ব্যবস্থা’ প্রতিষ্ঠা করাই হলো একমাত্র করণীয়। আবার কেউ মনে করেন, রাজনীতির মধ্যে ইসলামকে টেনে আনা মোটেও ঠিক নয়। কিন্তু স্বয়ং ইসলাম ব্যাপারটিকে কীভাবে দেখে, তা নিয়ে সমাজে স্বচ্ছ ধারণার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। গত ২০ মে ২০১৬ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ADAMS সেন্টারের জুমার খুতবায় শায়খ ড. জাসের আওদা রাজনীতির সাথে মুসলমানদের সম্পর্ক নিয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন। সিএসসিএস -এর পাঠকদের জন্য বক্তব্যটি অনুবাদ করেছেন জোবায়ের আল মাহমুদ।]   গণসম্পৃক্ততা ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে নেতৃবৃন্দ, ইমাম ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্যে আমরা একটি নির্দেশনা তৈরি করেছি। আজকের বক্তব্যটি সেই প্রশিক্ষণেরই অংশ। বিশেষত, আমাদের নেতৃবৃন্দ, ইমাম ও শিক্ষকদের মধ্যে যারা এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন এ বক্তব্য তাদের জন্যে। একটি অনুষ্ঠানে আজকের  এই বক্তব্যের ঘোষণাটি দেয়ার পর বেশ কয়েকজন ভাইবোনের কাছ থেকে আমি কিছু প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। একজন বলেছেন, ‘ইসলাম ও রাজনীতি’ প্রসঙ্গটি নিয়ে মসজিদে আলোচনা করা উচিত নয়। এই ভাইয়ের য...

এরদোয়ানের ইসলামী রাজনীতির সূত্র

ইসলামী রাজনীতির ক্ষেত্রে এরদোয়ানের সূত্র হলো – "রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষ হবে, কিন্তু কোনো ব্যক্তি ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারে না" তাঁর কথাটি একটু ব্যাখ্যা করছি – ১। ইংরেজি সেক্যুলার শব্দের বাংলা অর্থ করা হয় ধর্মনিরপেক্ষ। ব্যবহারিকভাবে এটি একটি ভুল অনুবাদ। সেক্যুলারিজমের প্রকৃত অর্থ হলো ধর্মহীন বা ধর্মবিদ্বেষ। কারণ, সকল 'সেক্যুলার'-ই ধর্মের বিরোধিতা করেন, কেউই ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারেন না। ২। সেক্যুলারিজম হলো একটি রাজনৈতিক পদ্ধতির নাম, কোনো ব্যক্তি সেক্যুলার হতে পারে না। তেমনি, ধর্ম হলো ব্যক্তি মানুষের দৈনন্দিন পালনীয় কার্যাবলীর নাম, রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। যেমন, একজন ব্যক্তিকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হয়, কিন্তু রাষ্ট্রকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হয় না। ৩। পরিবার ছাড়া যেমন কোনো মানুষ হতে পারে না, তেমনি ধর্ম ছাড়াও কোনো মানুষ হতে পারে না। পরিবারহীন মানুষ যেমন পথ-শিশু হয়ে যায়, ধর্মহীন মানুষও তেমনি সমাজ বিচ্যুত হয়ে যায়। নাস্তিকতা একটি ধর্মের নাম। কারণ, স্রষ্টার ধারণা ছাড়াই পৃথিবীতে অনেক ধর্ম রয়েছে, যেমন, বৌদ্ধ ধর্ম। ৪। 'ধর্মহীন রাষ্ট্র' ও 'ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র' ...

জ্ঞানে ও বিজ্ঞানে সেরা হবার আর্থ-সামাজিক কারণ

জ্ঞানে ও বিজ্ঞানে মুসলিম সমাজ এক সময় বিশ্বসেরা ছিল – এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু, একটি সমাজে এমনি এমনি-ই জ্ঞানে ও বিজ্ঞানে বিশ্বসেরা হতে পারে না। এর পিছনে অনেকগুলো আর্থ-সামাজিক কারণ থাকে। যেমন, সে সময়ের মুসলিমরা ছিলেন ধর্মের প্রতি অনুগত এবং চিন্তার ক্ষেত্রে মুক্তমনা। আমাদের দেশে যেমন সেকুলার শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষা আলাদা আলাদা, তখন এমনটা ছিল না। তখনকার ধার্মিকরা ছিলেন অনেক বেশি মুক্তমনা। .. মতের ভিন্নতাকে তখন সুন্দরভাবে গ্রহণ করা হত। কেউ নিজের জ্ঞানকে একমাত্র সহি জ্ঞান মনে করতেন না। যেমন, ক্লাসিক্যাল তাফসীরগুলোতে আমরা দেখি, লেখক নিজের মতের সম্পূর্ণ বিপরীত মতটি তাঁর তাফসীরে তুলে দিচ্ছেন। এবং বলছেন, কোন মতটি সঠিক তা একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন। ২ মুসলিমরা তখন তাদের ইবাদাতসমূহ সহজভাবে পালন করার জন্যে বিভিন্ন প্রকার বস্তু ও কৌশল আবিষ্কার করতেন। যেমন, আল খাওয়ারিজমী কাবা শরীফের সঠিক দিক নির্ণয়ের জন্যে যে নিয়মগুলো আবিষ্কার করেছিলেন, পরবর্তীতে সেগুলো থেকেই জ্যামিতি শাস্ত্রের উদ্ভব হয়।

বাঙালির জন্ম নির্ণয়ে ধর্মের অবদান

একজন বাঙালি যতই সেক্যুলার বা নাস্তিক হোক না কেন, ধর্মের সাহায্য ব্যতীত তিনি তার অস্তিত্বের জানান দিতে পারবেন না। যেমন, কোনো নাস্তিককে যদি আপনি আপনি জিজ্ঞাস করেন, “ভাই, আপনার জন্ম কত সালে?” তিনি হয়তো বলবেন, “১৯৭১ সালে”। “আমি ১৯৭১ সালে জন্ম গ্রহণ করেছি” এর মানে হলো “আমি ঈসা (আ) এর জন্মের ১৯৭১ বছর পর জন্ম গ্রহণ করেছি”। “১৯৭১” বলার সাথে সাথেই একজন সেক্যুলার বা নাস্তিককে বাধ্য হয়েই আমাদের সম্মানিত নবী ঈসা (আ)-এর অস্তিত্ব ও অবদানকে স্বীকার করে নিতে হয়। এরপর আসুন, কোনো নাস্তিক যদি ১৯৭১ সালকে উল্লেখ না করে বলে যে, “আমি বাংলা ১৩৭৮ সালে জন্ম গ্রহণ করেছি”। তাহলে তার মানে হলো, “আমি মুহাম্মদ (স)-এর হিজরতের ১৩৭৮ সাল পরে জন্ম গ্রহণ করেছি”। কারণ, সম্রাট আকবর হিজরি সাল অনুযায়ী-ই বাংলা সাল প্রবর্তন করেছিলেন। সুতরাং, এ ক্ষেত্রেও, যে কোনো নাস্তিক তার জন্ম ও অস্তিত্বের জানান দেয়ার জন্যে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স)-এর অবদানকে স্বীকার করে নিতে হবে। ___________ কোনো সেক্যুলার বা নাস্তিক যদি ধর্ম থেকে দূরে সরে যায়, তাহলে তার জন্মের কোনো ঠিক থাকে না।

বাংলা ভাষা মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা

বাংলা ভাষা কি মুসলিমদের না ধর্ম-বিদ্বেষী সেক্যুলারদের? পৃথিবীর সব ভাষাই আল্লাহ তায়ালার। কিন্তু একেক ভাষা একেক জাতীর অধিকারে থাকে। সে হিসাবে বাংলা ভাষা মুসলিমদের অধিকারভুক্ত একটি ভাষা, এখানে ধর্ম-বিদ্বেষী সেক্যুলারদের তেমন কোনো স্থান নেই। ‘স্থান নেই’ মানে হলো, বাংলা ভাষা ধর্ম-বিদ্বেষী সেক্যুলারদের অধিকারভুক্ত নয়। একটু ব্যাখ্যা করে বলি। সেক্যুলারদের জন্ম হলো ফ্রান্সে। সে হিসাবে ফরাসী ভাষা হলো ধর্ম-বিদ্বেষী সেক্যুলারদের প্রধান ভাষা। সেক্যুলারদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা হলো চীনা ভাষা। অন্যদিকে, ইব্রাহীম (আ)-এর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ইসলাম ধর্মের উৎপত্তি হয় মক্কায়। সে হিসাবে আরবি ভাষা হলো মুসলিমদের প্রধান ভাষা। কিন্তু মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা হলো বাংলা ভাষা। তাই, বাংলা ভাষা হলো কেবল মুসলিমদের-ই অধিকারভুক্ত একটি ভাষা। প্রশ্ন করতে পারেন, বাংলা ভাষা মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা হলো কিভাবে? হিসাবটা একেবারে সহজ।