সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মে, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মরিয়ম (আ) কি নবী বা রাসূল ছিলেন?

এক মরিয়ম (আ)-এর নিকট আল্লাহর ওহী, তাঁর বাণী ও তাঁর কিতাব এসেছিল। তিনি ঈসা নামক এক সন্তান জন্ম দেয়ার মাধ্যমে তাঁর দায়িত্ব পালন করেন। [সূত্র – আল কোর’আন, ৬৬: ১২] ঈসা (আ)-এর নিকটও আল্লাহর ওহী, তাঁর বাণী ও তাঁর কিতাব এসেছিল। তিনি মানুষকে উপদেশ দেয়ার মাধ্যমে তাঁর দায়িত্ব পালন করেন। মরিয়ম (আ) প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে আল্লাহর আদেশ পালন করার কারণে সাধারণ মানুষের আক্রমণের স্বীকার হন। ঈসা (আ)-ও প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে আল্লাহর আদেশ পালন করার কারণে সাধারণ মানুষের আক্রমণের স্বীকার হন। যেমন মা, তেমন সন্তান। দুই ইয়াহিয়া (আ)-এর মত মরিয়ম (আ)-এর নাম আল্লাহ তায়ালা নিজেই রেখেছেন [সূত্র ৩: ৩৬; ১৯: ৭],

নারী ও পুরুষের আচরণের ভিন্নতা

নারী ও পুরুষ উভয়ের আচরণের পার্থক্য বোঝার জন্যে উভয়ের ব্রেইন কাঠামো বুঝতে হয়। সাধারণত নারীদের ব্রেইনের ওজন ১২০০ গ্রাম, এবং পুরুষদের ব্রেইনের ওজন ১৩৭০ গ্রাম। অনেকে কৌতুক করে বলেন, পুরুষদের ব্রেইনের চেয়ে নারীদের ব্রেইন অনেক বেশি আপডেট। তাই পুরুষদের চেয়ে নারীদের ব্রেইন ছোট, কিন্তু কাজ করে বেশি। মানুষের ব্রেইন নিয়ে যারা গবেষণা করেন, তাঁরা বলেন, পুরুষের ব্রেইনে অনেকগুলো পার্টিশন আছে, কিন্তু নারীদের ব্রেইনে এত পার্টিশন নেই। ফলে পুরুষদের ব্রেইনের চেয়ে নারীদের ব্রেইন কিছুটা ছোট হওয়াই স্বাভাবিক। ধরুন, আপনার কাছে কাপড় রাখার একটি বক্স আছে। বক্সের পার্টিশন যত বেশি হবে, কাপড় তত কম রাখা যাবে। কিন্তু বক্সে যদি কোনো পার্টিশন না থাকে, তাহলে অনেক বেশি কাপড় রাখা যাবে। নারীদের ব্রেইনে পার্টিশন যেহেতু খুবই কম, ফলে নারীদের জন্যে ছোট একটা ব্রেইন হলেও চলে। কিন্তু পুরুষদের ব্রেইনে প্রচুর পার্টিশন থাকায় তাদের জন্যে কিছুটা বড় ব্রেইনের প্রয়োজন হয়। সহজে বললে, ছোট ছোট অসংখ্য কক্ষে বিশিষ্ট একটি ঘরের নমুনা হলো পুরুষদের ব্রেইন। আর, অনেক বড় এক কক্ষ বিশিষ্ট একটি ঘরের নমুনা হলো নারীদের ব্রেইন। মানুষের ব্রেইনের দুটি অংশ থা

শবে বরাত

আমরা ইসলামকে এমন একটি ধর্মে পরিণত করেছি, যার ফলে, কোর’আনের আদেশগুলো যেমন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না, আবার কোর’আনের নিষেধগুলোও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না। যারা শবে বরাত পালন করেন, তাঁরা এমন একটি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, যা কোর’আনে আদেশ করা হয়নি। আবার, যারা শবে বরাত পালন করতে নিষেধ করেন, তাঁরাও এমন একটি নিষেধ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, যা কোর’আনে নিষেধ করা হয়নি। শবে বরাত বাঙালিদের হাজার বছরের সার্বজনীন একটি সংস্কৃতি। ইসলামে এটাকে হালাল বা হারাম কিছুই বলা হয়নি। সুতরাং, কেউ যদি বলে, শবে বরাত সবাইকে পালন করতে হবে, তাহলে সেটাও যেমন বিদায়াত; আবার কেউ যদি বলে শবে বরাত হারাম, তাহলে সেটাও বিদায়াত। কারণ, রাসূল (স) শবে বরাতকে হারাম করে যাননি। কোর’আনের কোনো নির্দেশনা ছাড়াই বিভিন্ন শায়েখের রেফারেন্সে “এটা হালাল, ঐটা হারাম” এসব বলা মানে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করা। وَلَا تَقُولُوا۟ لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ ٱلْكَذِبَ هَـٰذَا حَلَـٰلٌۭ وَهَـٰذَا حَرَامٌۭ لِّتَفْتَرُوا۟ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ ۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ لَا يُفْلِحُونَ “তোমরা আল্লাহর বিরুদ

নেতা, মুরব্বী, আকাবের বা বড়দের কথা

যে কোনো নেতা, মুরব্বী, আকাবের বা বড়দের কথা বিনা যুক্তিতে মেনে নেয়ার বিপদ অনেক। কারণ, মানুষ যখন জাহান্নামে যাবে, তখন আল্লাহর নিকট অভিযোগ করে বলবে – وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءَنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا “হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের বা মুরব্বীদের কথা মেনে নিয়েছিলাম, তাই তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল”। [সূরা ৩৩/আহযাব – ৬৭] আল্লাহর আদালতে সরাসরি ও একাকী উপস্থিত হব আমি, সেখানে আমার ওকালতি অন্য কেউ করবে না। তাই, আমার যুক্তি-বুদ্ধি দিয়েই আমাকে আল্লাহর আনুগত্য করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা তার রাসূল (স)-কে দিয়েছেন ওহী, আর আমাদেরকে দিয়েছেন যুক্তি ও বুদ্ধি। এ দুটির সমন্বয়ে জীবন পরিচালনা না করে, অন্ধভাবে কোনো নেতা বা মুরব্বীর কথা মেনে নিলে, তাঁরা আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাতে পারবেন না।

ওহী ও যুক্তি কি পরস্পর বিরোধী?

মানুষের হৃদয়ের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। যাদের হৃদয় অচেতন, তাদেরকে মূর্খ বলা হয়। কিন্তু জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে যাদের হৃদয় উন্নত চেতনায় পৌঁছে, তাদের হৃদয়ে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তায়ালা বলছেন – بَلْ هُوَ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ فِي صُدُورِ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلَّا الظَّالِمُونَ বরং এটি স্পষ্ট আয়াত, যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদের অন্তরে এটি রয়েছে। কেবল জালিমরাই আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে। [সূরা ২৯/আনকাবুত – ৪৯] এ আয়াতে বলা হচ্ছে, জ্ঞানীদের অন্তরে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত রয়েছে। অর্থাৎ, কোর’আনেও আল্লাহর আয়াত রয়েছে, আবার জ্ঞানী লোকের অন্তরেও আল্লাহর আয়াত রয়েছে। তাই, জ্ঞানীদের অন্তর ও আল কোর’আন কখনো পরস্পর বিরোধী হতে পারে না। অনেকে বলেন, ওহী ও যুক্তির মাঝে পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু, এ আয়াতে দেখা যায়, ওহী ও যুক্তির উৎস একই। অর্থাৎ, ওহী আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা একটি আদেশ ও সুস্পষ্ট নিদর্শন, আবার হৃদয় পরিচালনাকারী রূহও আল্লাহর পক্ষে থেকে আসা একটি আদেশ ও সুস্পষ্ট নিদর্শন। দুটি একই উৎস থেকে আগত। সুতরাং, ওহী ও যুক্তির মাঝে কোনো পার্থক্য থাকতে পারে না। যদি কখনো ওহী

ইসলামে নারী ও পুরুষ

অনেকে অভিযোগ করে বলেন, সূরা বাকারার ২৮২ নং আয়াত এবং সূরা নিসার ১১, ৩৪, ১৭৬ নং আয়াতে নারী ও পুরুষের মাঝে বৈষম্য করা হয়েছে। দেখুন, কোর’আনের যতগুলো আয়াতে নারী ও পুরুষের মাঝে বৈষম্য রয়েছে বলে দাবী করা হয়, সবগুলো আয়াত-ই সম্পদ সম্পর্কিত। সুতরাং, ইসলামে সম্পদের ধারণা কি তা ভালোভাবে না বুঝলে এই আয়াতগুলোর অর্থ বোঝা মুশকিল। পৃথিবীতে মানুষই একমাত্র প্রাণী যারা পৃথিবীতে নিজেদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেছে। পৃথিবীকে যে যতটুকু দখল করতে পারে, সে ততবড় ধনী। আর যে পৃথিবীকে দখল করতে পারে না, সে গরিব। মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীরা পৃথিবীকে কখনো স্থায়ীভাবে ভাগাভাগি করে না। ফলে তাদের মাঝে কেউ ধনী বা কেউ গরিব নেই। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে বলেছেন পাখীদের থেকে শিক্ষা নিতে। রাসূল (স) পাখিদের মত রিজিকের সন্ধান করতে বলেছেন। কারণ, পাখিরা পৃথিবীকে দখল করে রাখে না, এবং পৃথিবীতে মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে না। পাখীরা সকালে খালি পেটে বের হয়, এবং সন্ধ্যায় ভরা পেটে ফিরে আসে। মানুষ যদি পৃথিবীতে নিজেদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা না করে, পাখিদের মত কেবল আল্লাহর উপর-ই তাওয়াককুল করতে পারে, তাহলে মানুষেরাও পাখিদের মত স্বাধীন ও সুখী হতে পারে। সুখী হ

এসো, আজি সুন্দরের রঙে হই রঙিন

সুন্দরকে কে না ভালোবাসে! সবাই সুন্দর হতে চায়, কিন্তু সুন্দর হওয়ার কৌশল খুব অল্প মানুষই জানে। শিল্পীরা বলেন, সুন্দর হতে হলে নাকি রঙের ধারণা থাকতে হয়। সুন্দরের সাথে রঙের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কোন রঙের সাথে কোন রঙ ভালো মিলে, তা না জানলে সুন্দরের শিল্পী হওয়া যায় না। যার কাছে রঙের জ্ঞান নেই, সে সৌন্দর্যকে অবলোকন করতে পারে না। সুন্দরকে আমরা বুঝি রঙের মাধ্যমে। রঙের সাথে রঙের মিলনেই সৌন্দর্য ফুটে উঠে। কিন্তু, রঙের কি কোনো অস্তিত্ব আছে? রঙ আসলে কি? বিজ্ঞানীরা বলেন, রঙ হলো আলোরই একটি রূপ। আলোর মাঝেই সকল রঙ লুকায়িত থাকে। যদি কোনো আলো প্রিজমের এক পাশ দিয়ে প্রবেশ করে, তাহলে অন্য পাশে দিয়ে সাত রঙ হয়ে বের হয়। আমরা একে বলি রঙধনু। রঙধনুর মাধ্যমে বিশ্বের সব রঙ তৈরি হয়। আচ্ছা, রঙের উৎস যদি আলো হয়, তাহলে আলোর আলোর উৎস কি? আমরা জানি, আলোর প্রধান উৎস সূর্য। কিন্তু সব ধরণের আলোর উৎস কি সূর্য? আপনি যে লেখাটি পড়ছেন, এই আলো কোত্থেকে এসেছে? বিদ্যুতের মাধ্যমে; তাই না? বিদ্যুৎ কোত্থেকে এসেছে? কয়লা, পানি বা গ্যাস জাতীয় পদার্থ থেকে। অর্থাৎ, কঠিন, তরল বা বায়বীয় সব ধরণের পদার্থের মাঝেই আলোর উপাদান রয়েছে। আচ্ছা, আস

ভালোবাসা মানে কি বিবেচনাহীন সব কথা মেনে নেওয়া?

আয়েশা (রা) রাসূল (স)-কে খুব ভালোবাসতেন। রাসূল (স)-ও আয়েশা (রা)-কে খুবই ভালোবাসতেন। কিন্তু, আয়েশা (রা)-এর বিরুদ্ধে অপবাদ আসার পর, রাসূল (স) তাঁকে বললেন – “হে আয়েশা, তুমি যদি কোনো গুনাহে জড়িয়ে গিয়ে থাক, তাহলে আল্লাহর কাছে তাওবা ও ইসতিগফার কর।” রাসূল (স)-এর এই কথার বিপরীতে আয়েশা (রা) তাঁর যুক্তি উপস্থাপন করে বললেন – “আমি যদি বলি আমি নিষ্পাপ, তাহলে আপনারা বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু আল্লাহ জানে আমি নিষ্পাপ। অন্যদিকে, আমি যদি বলি আমি দোষী, তাহলে আপনারা বিশ্বাস করবেন, কিন্তু আল্লাহ জানে আমি নিষ্পাপ। সুতরাং, আমি [তওবা না করে,] ধৈর্য ধারণ করব”। এরপর, যখন কোর’আন দ্বারা প্রমাণ হলো যে, আয়েশা রা ছিলেন নিষ্পাপ; তখন আয়েশা (রা)-এর মা তাঁকে বললেন – “যাও, রাসূলের কাছে গিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এসো”। তখন আয়েশা (রা) বললেন – “না। আমি আমার আল্লাহ ব্যতীত কারো কাছেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব না”। এখানে আয়েশা (রা) তাঁর নিজের যুক্তি-বুদ্ধির বিরুদ্ধে গিয়ে রাসূল (স)-এর সাধারণ একটি কথাকে মেনে নেননি, তিনি কেবল আল্লাহর কথাই বিনা যুক্তিতে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু, তাই বলে, আল্লাহর রাসূলের প্রতি আয়েশা (রা)-এর ভালোবাসা আমাদের চেয়ে