সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

বিশ্বাস লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

যার কাছে ধর্ম পৌঁছায়নি, তিনি কি জাহান্নামে যাবেন?

কেউ যদি অ্যামাজন জঙ্গলে বাস করে, অথবা, কোনো মানুষের নিকট যদি পৃথিবীর কোনো ধর্ম বা শিক্ষা না পৌঁছে, তাহলে সে কি জাহান্নামে যাবে? একজন ভাইয়া ইনবক্সে আমাকে এ প্রশ্নটি করেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলার আগে আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে একটু নজর দেই। বাংলাদেশে যখন S.S.C. পরীক্ষা শুরু হয়, তখন সারা দেশের সকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা একই দিনে এবং একই সময়ে শুরু হয়। ঢাকা, কুমিল্লা, বা যে কোনো বোর্ডের প্রশ্নপত্রগুলো সব একই রকম হয়। অর্থাৎ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করার জন্যে একটিমাত্র প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। কিন্তু, আল্লাহ তায়ালা মানুষদের থেকে এভাবে পরীক্ষা নেন না। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের যোগ্যতা ও সমর্থ অনুযায়ী আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক মানুষের জন্যে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্ন প্রস্তুত করেন। অর্থাৎ, বাংলাদেশী একজন মানুষকে আল্লাহ তায়ালা যেভাবে প্রশ্ন করবেন, অ্যামাজন জঙ্গলে বসবাসকারী একজন মানুষকে আল্লাহ তায়ালা ঠিক সেভাবে প্রশ্ন করবেন না। কোর’আনে আল্লাহ তায়ালা বলেন – لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا “আল্লাহ কোনো মানুষকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত কাজের ভার দেন না”। [সূরা ২/ বাকারা ...

বিশ্বাস করা ও অস্তিত্বের স্বীকার করা এক নয়

“আমি আহমদকে বিশ্বাস করি” –এ বাক্যের দ্বারা আহমদের অস্তিত্ব রয়েছে, তা বুঝানো হয় না। বুঝানো হয়, আহমদের সততার উপর আমার ভরসা রয়েছে। একইভাবে, “আমি আহমদকে বিশ্বাস করি না” –এ বাক্যের দ্বারা আহমদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয় না। বরং আহমদের সততাকে অস্বীকার করা হয়। কেউ যদি বলে, “সে আল্লাহকে বিশ্বাস করে না” –এর মানে এই নয় যে, “আল্লাহ নেই”। এর মানে হলো – “সে আল্লাহর আদেশগুলো মানতে রাজি নয়”। জিন জাতির মত পৃথিবীতে অনেক কিছুর-ই অস্তিত্ব আছে। কিন্তু সেগুলোকে আল্লাহ তায়ালা বিশ্বাস করতে বলেননি। কারণ, বিশ্বাস করা মানে কেবল অস্তিত্বের স্বীকৃতি দেয়া নয়। কাউকে বিশ্বাস করা মানে তার সব কথা মেনে চলা। আমাদের মুসলিমদের মাঝে অনেকেই আল্লাহর অস্তিত্বকে স্বীকার করেন, কিন্তু আল্লাহকে বিশ্বাস করেন না।

জিন-ভূতের বিশ্বাস!

– তুই কি জিন-ভূত বিশ্বাস করিস? : না – কি বলিস? জিনের কথা তো কোর'আনেও আছে। ভূতকে বিশ্বাস না করলেও চলবে, কিন্তু জিনকে তো বিশ্বাস করতে হবে। : হুম। কোর'আনে তো ইবলিস, ফিরাউন ও আবু লাহাব সহ অনেকের কথাই আছে। তাই বলে কি আপনি তাদেরকে বিশ্বাস করবেন? – না। কিন্তু... : এখানে কোনো কিন্তু নেই। বিষয়টি একেবারে স্পষ্ট। কোনো কিছুকে বিশ্বাস করা মানে কেবল তাঁর অস্তিত্বে বিশ্বাস করা নয়। ইসলামে সাতটি বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করতে বলা হয়েছে। আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর গ্রন্থসমূহ, তাঁর রসূলগণ, আখিরাত, আল্লাহর নির্ধারিত ভাগ্য, এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থান। এগুলোকে একত্রে বলা হয় অদৃশ্যে বিশ্বাস। ইসলামের কোথাও জিনকে বিশ্বাস করতে বলা হয়নি। কিন্তু, জিন আছে বলে কোর’আনে বর্ণনা করা হয়েছে।

একজন সত্য সন্ধানী ব্যক্তি কি বস্তুবাদী হতে পারে?

ফেইসবুকে রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছেন একজন ভাই। নাম – ‘সত্য সন্ধানী বাস্তববাদী’। নামটি দেখে খুব অবাক হলাম। কারণ, তিনি কিভাবে একজন ‘সত্য সন্ধানী’ হয়ে আবার ‘বাস্তববাদী’ও হতে পারলেন? আসলে, ঐ ভাইয়াটির দোষ নেই। সমস্যা আমাদের বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের – তাঁরা বাংলা ভাষার সঠিক প্রয়োগ করেন না। ফলে, ঐ ভাইয়াটির মত আরো অনেক ভাইয়া আছেন, যারা নিজেদেরকে একদিকে ‘সত্য সন্ধানী’ ভাবেন, আবার অন্যদিকে ‘বাস্তববাদী’ও ভাবেন। বাংলা ভাষায় ‘বস্তুবাদ’ ও ‘বাস্তববাদী’ ধারণাটি যেমন সমস্যাজনক, এর বিপরীতে ‘ভাববাদ’ ধারণাটিও সমান সমস্যাজনক। এই দু’টি ছোট বৃত্তের বাইরে সত্য অবস্থান করে। বস্তু, বস্তুবাদ ও বাস্তববাদী সম্পর্কে আজকে একটু বলি। অন্যদিন, ইনশাল্লাহ ‘ভাব’ ও ‘ভাববাদ’ নিয়ে বলা যাবে। ‘বস্তু’ শব্দটি থেকে এসেছে ‘বাস্তব’,‘বাস্তববাদী’ ও ‘বস্তুবাদ’ শব্দগুলো। কোনো কিছু সত্য বলে প্রমাণিত হলে বাংলা ভাষায় বলে ‘বাস্তব’। এবং ‘বাস্তবতা’কে যিনি জীবনের পথ হিসাবে গ্রহণ করেন, তাকে বলা হয় ‘বাস্তববাদী’। এ কারণে হয়তো, ঐ ভাইয়াটি মনে করে ছিলেন যে, বাস্তববাদী মানে সত্যবাদী।