সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

কোর’আন লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আমরা কেন কোর'আন পড়ি না?

শত ইচ্ছে থাকলেও আমরা নিয়মিত কোর'আন পড়তে পারি না। কিন্তু, অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ফেইসবুকে না এসে আমরা থাকতে পারি না। এর কারণ কি? ১) ফেইসবুক আমাদের হাতের কাছেই থাকে, কিন্তু কোর’আন আমাদের হাতের কাছে থাকে না। ২) মোবাইল দিয়ে কোর’আন পড়ার সময়ে ফেইসবুকে কোনো ম্যাসেজ বা নোটিফিকেশন আসলে কোর’আন রেখে আমরা ফেইসবুকে চলে যাই। ৩) অজু ছাড়া যখন তখন ফেইসবুক ধরা যায় এবং পড়া যায়, কিন্তু কোর’আন অজু ছাড়া ধরা যায় না। ৪) কোর’আন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে পড়তে হয়, এবং খতম করতে হয়; কিন্তু ফেইসবুক খতম করার কোনো পদ্ধতি নেই। ৫) ফেইসবুক পড়লে আমরা বুঝি, এবং এতে আমাদের মনে নতুন নতুন অনেক চিন্তা আসে। কিন্তু কোর’আন পড়লে আমরা বুঝি না, এবং আমাদের মনে নতুন কোনো চিন্তাও আসে না। এ ছাড়া আরো অনেক কারণেই আমরা কোর’আনের চেয়ে ফেইসবুককে বেশি ভালোবাসি, এবং ফেইসবুকে বেশি সময় দেই। এখন প্রশ্ন হলো, এসব সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় কি?

কোর’আনে কি মস্তিষ্কের বিষয়ে কোনো কথা আছে?

ব্রেইন বা মস্তিষ্ক মানুষের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। কিন্তু কোর’আনে কি মানুষের মস্তিষ্কের বিষয়ে কোনো কথা আছে? উত্তর – জ্বি, আছে। কোর’আনের অন্তত ১৬ টি স্থানে মানুষের মস্তিষ্কের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু কোর’আনের অধিকাংশ অনুবাদে ‘মস্তিষ্ক’ শব্দটিকে ‘হৃদয়’, ‘অন্তর’ বা ‘মন’ শব্দগুলো দ্বারা অনুবাদ করা হয়েছে। ‘হৃদয়’ শব্দটির জন্যে কোর’আনে ব্যবহার করা হয়েছে ‘কালব’ (قلب) শব্দটি এবং ‘মস্তিষ্ক’ শব্দটির জন্যে কোর’আনে ব্যবহার করা হয়েছে ‘ফুয়াদ’ (فؤاد ) শব্দটি। কিন্তু অধিকাংশ সময়ে ‘কলব’ ও ‘ফুয়াদ’ শব্দ দুটির অনুবাদ করা হয় ‘হৃদয়’ শব্দটি দ্বারা। অথচ, ফুয়াদ শব্দটির প্রকৃত অর্থ হবে 'মস্তিষ্ক'। হৃদয় দিয়ে আমরা চিন্তা করি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। আর, মস্তিষ্ক দিয়ে আমরা আমাদের চিন্তা ও সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন করি। কালব ও ফুয়াদের পার্থক্য জানার জন্যে নিম্নের আয়াতটি আমরা দেখতে পারি। আল্লাহ তায়ালা বলছেন – وَأَصْبَحَ فُؤَادُ أُمِّ مُوسَىٰ فَارِغًا ۖ إِن كَادَتْ لَتُبْدِي بِهِ لَوْلَا أَن رَّبَطْنَا عَلَىٰ قَلْبِهَا لِتَكُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ “মূসা জননীর ‘ফুয়াদ’ ( বা মস্তিষ্ক) অস্থির হয়ে পড়ল। যদি আম...

মানুষ, প্রাণী ও বস্তুর সাথে ভাষার সম্পর্ক

আমাদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয়, ভাষা মানে কি? তখন আমাদের মনে “অ, আ, ক, খ” এমন বর্ণগুলো ভাসতে থাকে। এ কারণে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি আসলেই চতুর্দিকে বিভিন্ন পোষ্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ডে আমরা বাংলা বর্ণগুলো নিয়মিত দেখতে পাই। এরপর, আমাদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয়, মাতৃভাষা কাকে বলে? তখন ছোটবেলায় মায়ের কাছে আমরা যে ভাষাটি শিখেছি, তা মনে পড়ে। আসলে ভাষা মানে চোখে দেখা কয়েকটি অক্ষর, অথবা, কানে শুনা কয়েকটি শব্দ নয়। ভাষা মানে হচ্ছে ভাবের বিনিময়। আমাদের মনে যখন কোনো একটি ভাবের উদয় হয়, তখন সে ভাবটি অন্যের নিকট উপস্থাপন করাকেই ভাষা বলে। মানুষের জন্যে ভাব প্রকাশ করার সবচেয়ে সহজ ও প্রাচীন মাধ্যম হলো মুখ দিয়ে শব্দ উচ্চারণ করা, এবং কান দিয়ে তা শুনা। কিন্তু, প্রাচীন কালে কথা বলার মাধ্যমে যে ভাব প্রকাশ করা হতো, তা খুব অস্থায়ী ও সীমিত রূপ ধারণ করতো। কারণ, মুখে কোনো শব্দ উচ্চারণ করার সাথে সাথে তা বাতাসে মিশে যেতো। তখন মুখের আশেপাশে থাকতো, তারাই কেবল মুখে উচ্চারিত শব্দগুলোর ভাব বুঝতে পারতো।

কোর’আনে নবী-রাসূলদের এতো বেশি কাহিনী কেন?

কেউ যখন প্রথম প্রথম কোর’আন পড়তে শুরু করে, তখন মনে হয়, কোর’আনে কেবল আগেকার যুগের নবী-রাসূলদের কিচ্ছা-কাহিনী দিয়ে ভরা। তাই, অনেকেই কোর’আন পড়ে খুব বেশি মজা পায় না। আসলে কোর’আনের বর্ণিত অতীতের নবী রাসূলদের সকল গল্পের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ (স)-কে বিভিন্ন শিক্ষা দিয়েছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ মুসা (আ)-এর কাহিনীগুলো দেখুন, সূরা আরাফ, সূরা শুআরা, সূরা কাসাস, সূরা সাফফাত সহ যেসব সূরা মক্কায় নাযিল হয়েছে, সেগুলো পড়লে আমরা দেখব যে, সেখানে মূসা (আ)-এর সাথে ফিরাউনের দ্বন্দ্বের বিষয়টি বারবার আলোচনা করা হচ্ছে। কারণ, তখন মক্কা জীবনে রাসূল (স)-এর সাথে আবু জাহেলদের ব্যাপক দ্বন্দ্ব হচ্ছিল। তাই, তখন আল্লাহ তায়ালা রাসূল (স) ও সাহাবীদেরকে মক্কার বিভিন্ন পরিস্থিতির মোকাবেলা করার জন্যে মূসা (আ) ও ফিরাউনের কাহিনীগুলো বর্ণনা করছিলেন। কিন্তু, রাসূল (স) মদিনায় যাবার পর মূসা (আ) ও ফিরাউনের কাহিনী আর নাযিল হয়নি। তখন শুরু হয়েছে, মূসা (আ)-এর সাথে বনী ইজরাইলের দ্বন্দ্বগুলোর আলোচনা। কেননা, মদিনায় আসার পর মক্কার মতো রাসূল (স)-এর আর কোনো শত্রু ছিলো না। কিন্তু তখন আবার শুরু হলো মুনাফিকদের চক্রান্ত। ফলে, সূরা বাকারা সহ ম...

মুরতাদ বা ধর্মত্যাগীর শাস্তি কি মৃত্যুদণ্ড?

অনেকে বলেন, মুরতাদ বা ধর্মত্যাগীদের শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু, কেউ যদি কোনো ধর্মত্যাগীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেয়, তাহলে কোর’আনের অসংখ্য আয়াত অকার্যকর হয়ে যাবে। যেমন, নিচের আয়াত দেখুনগুলো। কোর’আনের সাথে বৈপরীত্য – ১ إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا ثُمَّ كَفَرُوا ثُمَّ آمَنُوا ثُمَّ كَفَرُوا ثُمَّ ازْدَادُوا كُفْرًا لَّمْ يَكُنِ اللَّهُ لِيَغْفِرَ لَهُمْ وَلَا لِيَهْدِيَهُمْ سَبِيلًا “নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে, এরপর কাফের হয়ে যায়, তারপর আবার ঈমান আনে, এরপর আবার কাফের হয়ে যায়, অতঃপর তাদের কুফরি-ই বৃদ্ধি পায়, আল্লাহ তাদেরকে কখনোই ক্ষমা করবেন না, এবং তাদেরকে কোনো পথও দেখাবেন না”। [সূরা ৪/ নিসা – ১৩৭] এই আয়াতে স্পষ্ট যে, কেউ কেউ ঈমান আনার পর আবার কাফের হয়ে যায়। এরপর আবার ঈমান আনে। এখন প্রথমবার কাফের বা মুরতাদ হয়ে যাবার পরেই যদি একজন মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেয়া হয়, তাহলে সে দ্বিতীয়বার ঈমান আনবে কিভাবে? আর, ঐ মুরতাদ ব্যক্তিটির যদি দ্বিতীয়বার ঈমান আনার কোনো সুযোগ না থাকে, তাহলে আল্লাহর এই আয়াতটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। কোর’আনের সাথে বৈপরীত্য – ২

কোর'আনের হরকত ও নোকতা ইতিহাস

কোর’আন নাযিলের সময়ে আরবি ভাষার অক্ষরগুলোতে কোনো নোকতা বা হরকত ছিলো না। ফলে রাসূল (স) যখন তাঁর সাহাবীদেরকে দিয়ে কোর’আন লেখাচ্ছিলেন, তখন কোর’আনের অক্ষরগুলোর মধ্যেও কোনো নোকতা বা হরকত ছিলো না। ছবি দুটি দেখুন, এগুলো প্রথম জামানার লিখিত কোর’আন। দ্বিতীয় ছবিটি এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে প্রাচীন কোর’আনের একটি ছবি, যা চামড়ার উপর লিখিত হয়েছে।

নারী কি পুরুষের পাঁজরের হাড়?

“নারীদেরকে পুরুষের পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে” – এ কথাটি আমরা প্রায়ই শুনি। ইসলামকে বিতর্কিত করার জন্যে অনেকেই এ কথাটি বলে থাকেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, ইসলাম ধর্মের কোথাও এ কথাটি নেই। এটি হলো খ্রিস্টান ধর্মের একটি কথা। বাইবেলে বলা হয়েছে – Then the LORD God made a woman from the rib he had taken out of the man, and he brought her to the man. [Bible, New International Version, Genesis,Chapter 2, Verse 22] “স্রষ্টা পুরুষের পাঁজর থেকে একটি হাড় নিয়ে তা দিয়ে একজন নারীকে সৃষ্টি করেছেন। এবং তিনি নারীটিকে পুরুষের সামনে উপস্থিত করলেন।“ বাইবেলের এই লাইনটির ব্যাখ্যায় খ্রিস্টানগণ বলেন, আল্লাহ তায়ালা প্রথম আদম (আ)-কে সৃষ্টি করেছেন। এরপর আদমের পাঁজর থেকে একটি হাড় সংগ্রহ করেন। তারপর তা থেকে হাওয়া (আ)-কে সৃষ্টি করেন। খ্রিস্টানদের এ কথাটি এখন মুসলিম সমাজে খুবই পরিচিত। কিন্তু এর কারণ কি? মূলত, রাসূল (স) –এর একটি হাদিসকে কোর’আনের সাহায্যে ব্যাখ্যা না করে, বাইবেলের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলেই এ সমস্যাটি সৃষ্টি হয়েছে।

সকল জ্ঞান-ই ইসলামের সম্পদ

কোর'আন একটি জ্ঞান, হাদিস একটি জ্ঞান, ফিকাহ একটি জ্ঞান, দর্শন একটি জ্ঞান, এবং বিজ্ঞান একটি জ্ঞান। এদের মাঝে স্তরবিন্যাসে পার্থক্য থাকলেও একটি জ্ঞান কখনো অন্য জ্ঞানের বিরোধী হয় না। আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা প্রথম যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন, তা পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে কেউ যে নামেই জ্ঞান চর্চা করুক না কেন, তা আল্লাহর সত্য জ্ঞানের সাথে কখনো বিরোধী হওয়া সম্ভব না। অজ্ঞতার কারণে অনেকেই মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। এবং দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের বৈপরীত্য রয়েছে। নাস্তিকরা মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলুল কোর'আন মনে করেন, কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলে হাদিস মনে করেন, হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। কিছু কিছু ধার্মিক মনে করেন, ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। আধুনিক বস্তুবাদী বিজ্ঞানী মনে করেন, বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম ও দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। কিন্তু, আসলে সব জ্ঞান-ই আল্লাহর পক্...

বড় জিহাদ কি? কিভাবে লড়তে হয়?

আমাদের উপর জিহাদ ফরজ করা হয়েছে, তাই আমাদেরকে জিহাদ করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কোন জিহাদ সবচেয়ে বড়? আল্লাহ তায়ালা বলছেন – فَلَا تُطِعِ ٱلْكَـٰفِرِينَ وَجَـٰهِدْهُم بِهِۦ جِهَادًۭا كَبِيرًۭا “তুমি কাফেরদের আনুগত্য করবে না এবং তাদের সাথে কোর’আনের সাহায্যে বড় জিহাদ কর”। [সূরা ২৫/ ফুরকান - ৫২] এ আয়াত দ্বারা স্পষ্ট যে, তরবারির সাহায্যে নয়, বরং কোর’আনের সাহায্যে যে জিহাদ করা হয়, তা হল সবচেয়ে বড় জিহাদ। অর্থাৎ, কোর’আনের মাধ্যমে বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদ-ই হল সবচেয়ে বড় জিহাদ। ... এছাড়া, উত্তম জিহাদ সম্পর্কে রাসূল (স)-কে জিজ্ঞাস করা হলে তিনি বলেন - عن أبي ذر قال: قلت يا رسول الله أي الجهاد أفضل قال: أن يجاهد الرجل نفسه وهواه "হযরত আবু জর রা: থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, "কোন জিহাদ সর্বোত্তম?" তিনি বললেন, "নফস ও কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদই উত্তম জিহাদ"। [সুয়ুতী, জামিউল আহাদীস, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং - ৪১৬৮৩। কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আক্বওয়াল ওয়াল আফআল, হাদিস নং- ১১৭৮০] নফস ও কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ করার সবচেয়ে ব...

বিভিন্ন ধর্মের দশ আদেশ

ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম ধর্মের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো আল্লাহর ‘দশ আদেশ’ বা ‘Ten Commandments’। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মাঝে এই দশটি আদেশ খুব বেশি পরিচিত না হলেও ইহুদি ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী মানুষেরা এ নিয়ে প্রচুর গবেষণা করেন। তারা আল্লাহর এই দশটি আদেশকে কেবল ধর্মীয় আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ‘Ten Commandments’ নামে প্রচুর শিল্প, সাহিত্য ও ধর্মীয় সিনেমা তৈরি করেছেন। আল্লাহর এই দশটি আদেশ তাদের ধর্মীয় গ্রন্থসমূহের যেমন মূল শিক্ষা, কোরআনেরও তেমনি মূল শিক্ষা। কোরআনে সূরা আন’আমের ১৫১ থেকে ১৫৩ আয়াতে এই দশটি আদেশের কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাত বা পুরাতন বাইবেলের এক্সোডাস ২০ অধ্যায়ের ১-১৭ অনুচ্ছেদ ও ডিউটরনমি ৫ অধ্যায়ের ৬-২১ অনুচ্ছেদে; এবং খ্রিষ্টানদের ধর্মগ্রন্থ ইঞ্জিলে বা নতুন বাইবেলের মথি ১৯ অধ্যায়ের ১৬-১৯ অনুচ্ছেদ ও ২২ অধ্যায়ের ৩৪-৪০ অনুচ্ছেদে এই দশটি আদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কেবল ধর্মগ্রন্থ নয়, বিজ্ঞানীরাও এই দশটি আদেশকে তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। যেমন বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন তার লেখায় উল্লেখ করেন যে, ‘মানুষকে সত্য বুঝতে হলে আল্লাহর এই...

উত্তম জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনী লাভের উপায়

উত্তম জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনী লাভের দোয়া: وَٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَ‌ٰجِنَا وَذُرِّيَّـٰتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍۢ وَٱجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا "হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এমন জীবনসঙ্গী এবং সন্তান দান করুন, যারা হবে আমাদের চোখের মণি। এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে নেতা বা ইমাম করুন"। [সূরা ২৫/ফুরকারন - ৭৪] ______ উত্তম জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনী নির্বাচনের উপায়: জিজ্ঞাস করুন, "আপনি জীবনে কয়বার অর্থসহ সম্পূর্ণ কোর'আন পড়েছেন?" যিনি জীবনে যতবেশি কোর'আন অধ্যয়ন করেছেন, তিনি ততবেশি উত্তম জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনী হতে পারবেন। কেননা, রাসূল (স) বলেছেন - إِنَّ أَفْضَلَكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ القُرْآنَ وَعَلَّمَهُ "নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে উত্তম হলো সে, যে নিজে কোর'আন অধ্যয়ন করে এবং অন্যকে তা শিক্ষা দেয়"। [সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদীস নং - ৫০২৮] [এটি একটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা]

সূরা শু'আরা ও কোর'আনের চমৎকার স্টাইল

কোর’আনের কিছু কিছু সূরায় একসাথে অনেক নবী-রাসূলের ঘটনা বর্ণনা করা হয়। সাধারণত, একই সূরার মধ্যে অবস্থিত সকল নবী-রাসূলের ঘটনা বর্ণনা করার সময় একটি কমন প্যাটার্ন অনুসরণ করা হয়। উদাহরণ স্বরূপ আমরা সূরা শু’আরা দেখতে পারি। এ সূরার রুকু সংখ্যা ১১ টি। এবং এখানে ৭ জন নবীর নাম ও তাদের সম্প্রদায়ের আলোচনা করা হয়েছে। ১ম রুকুতে একটি ভূমিকা দেয়া হয়েছে। ২য়, ৩য় এবং ৪র্থ রুকুতে মূসা (আ)-এর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। ৫ম রুকুতে ইব্রাহীম (আ), ৬ষ্ঠ রুকুতে নূহ (আ), ৭ম রুকুতে হূদ (আ), ৮ম রুকুতে সালিহ (আ), ৯ম রুকুতে লূত (আ), এবং ১০ম রুকুতে শুয়াইব (আ) এর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। সর্বশেষ ১১ তম রুকুতে একটি উপসংহার দেয়া হয়েছে। মূলত, ভূমিকা ও উপসংহার হলো মুহাম্মদ (স)-এর উদ্দেশ্য, যদিও তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়নি। মুহাম্মদ (স) সহ ৮ জন নবীর উল্লেখ করা হয়েছে এই সূরায়। সবার ক্ষেত্রেই কিছু কমন প্যাটার্ন ব্যবহার করা হয়েছে। নূহ, হূদ, সালিহ, লূত এবং শু'আইব (আ) এই ৫ জন নবীর সম্প্রদায়কে আল্লাহ তায়ালা ধ্বংস করে দিয়েছিলেন, তাই তাদের সবার আলোচনা হুবহু একই প্যাটার্নে করা হয়েছে। অর্থাৎ, ৬ থেকে ১০ নং রুকু পর্যন্ত প্রতিটি রুকুর প্যাটার্ন...

কোর'আনের ভাষা কেন বাংলা নয়?

আপনি আফসোস করেছেন কিনা জানি না, তবে আমি ছোটবেলায় খুব আফসোস করতাম – “আহ!!! কোর’আন যদি বাংলা ভাষায় নাযিল হত!!! কত ভালো হত!!!” কিন্তু আল্লাহ বলছেন, إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ “আমি একে আরবি ভাষায় কোর'আন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার।” [সূরা ইউসুফ, আয়াত – ২] আগে এ আয়াতটা পড়লে আমার মনে একটা প্রশ্ন জেগে উঠত, আমি বাঙালি, আরবি বুঝি না। কিন্তু আল্লাহ বলছেন, আমি আরবি ভাষায় কোর’আন নাযিল করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার। তার মানে কোর’আন কি কেবল আরব ভাষাভাষী মানুষদের জন্যে নাযিল হয়েছিল? এ প্রশ্নটার জবাব অনেক পরে পেয়েছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে, বাধ্য হয়ে যখন চর্যাপদ পড়তে হয়েছিল। কোর’আন নাযিলের প্রায় ৪০০ বছর পর চর্যাপদ লেখা হয়েছিলো, প্রাচীন বাংলা ভাষায়। কমেন্টের ঘরে সেই চর্যাপদের একটা ছবি দিয়েছি। দেখুন তো, পড়তে পারেন কিনা? আচ্ছা, ঠিক আছে। পড়তে না পারলে সমস্যা নেই। আধুনিক বাংলা অক্ষরে চর্যাপদের দুই লাইন এখানে তুলে দিচ্ছি। দেখুন তো, বুঝেন কিনা?

কোর'আনের সংখ্যাতাত্ত্বিক মুজিযা নিজে নিজেই যাচাই করুন!

কোর’আনকে সংখ্যা দিয়ে বিশ্লেষণ করার প্রয়োজনটা কি? –এ প্রশ্ন অনেকেই করেন। আসলে আমাদের বর্তমান যুগে, চোখের সামনে আমরা যত প্রযুক্তি দেখছি, সব কিছুই সংখ্যার দ্বারা পরিচালিত। সব কিছুর ভাষা-ই সংখ্যা। কম্পিউটার বা মোবাইলের মত সকল প্রযুক্তি-ই আমাদের বাংলা বা ইংরেজি ভাষাকে চিনে না, সে চিনে কিছু বাইনারি সংখ্যাকে। আমরা যা-ই লেখি না কেন, সে এটাকে বাইনারি সংখ্যায় কনভার্ট করে নেয়। এই যে ফেইসবুকে বাংলায় এই লেখাটি পড়ছেন, এটাও কিন্তু আসলে কিছু সংখ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। একটা যুগ ছিল সাহিত্যের। সে যুগে সাহিত্যকে চ্যালেঞ্জ করে কোর’আন নিজেই নিজের মুজিযা প্রকাশ করেছে। এরপর একটা যুগ ছিল জ্যোতির্বিদ্যার, সেই যুগে কোর’আন জ্যোতির্বিদ্যাকে চ্যালেঞ্জ করে নিজের মুজিযা প্রকাশ করেছে। এভাবে একের পর এক চলতে থাকে। কিন্তু, বর্তমান যুগ হলো সংখ্যার যুগ। সব কিছুকেই সংখ্যা দিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়। তাই সংখ্যাতত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ করে কোর’আন এখন নিজেই নিজের মুজিযা প্রকাশ করছে। তো চলুন, হাতের কাছে কাগজ-কলম থাকলে, নিজে নিজেই কোর’আনের একটি সংখ্যাতাত্ত্বিক মুজিযা বের করে ফেলি। খুব সহজে।

মানুষের তিনটি স্তরবিন্যাস

আল কোর’আনে বর্ণিত মানুষের চরিত্র নিয়ে গত সপ্তাহ একটা স্ট্যাটাস দেয়ার পর একজন ভাই আমার এক প্রিয় স্যারের কাছে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বললেন – “ইসলামে কি মানুষের ব্যাপারে শুধু নেতিবাচক বক্তব্যই আছে? সুন্দর সুন্দর অনেক উদাহরণ বা রহমতের কোথাও তো আছে। এগুলোর উল্লেখ করলে বরং মানুষ তা ভালোভাবে নিত, আমল করতে পারত।” আসলে, ভাইয়ার কথাটা ঠিক। তিনি দারুণ প্রশ্ন তুলেছেন। দেখুন, আল কোর’আন কিভাবে এ বিষয়টির চমৎকার ব্যাখ্যা করছে। মানুষকে বুঝানোর জন্যে আল কোর’আনে অনেকগুলো শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন – বাশার [الْبَشَر ] নাস [النَّاس ], এবং ইনসান [ الْإِنْسَان ] এ তিনটি শব্দের অর্থই মানুষ। কিন্তু তিনটি শব্দ দ্বারা একই চরিত্রের মনুষকে বোঝানো হয় না। অর্থৎ, প্রত্যেকটি শব্দ-ই আলাদা আলাদা চরিত্রের মানুষকে নির্দেশ করে। আল কোর’আনের মুজেযা এটাই। কোর’আনে একই জিনিসের অনেকগুলো সমর্থক শব্দ থাকলেও প্রত্যেকটি শব্দের আলাদা আলাদা সংজ্ঞা থাকে। প্রতিটি শব্দ-ই ইউনিক। ফলে, কোর’আনের একটি শব্দের স্থানে অন্য কোনো সমর্থক শব্দ বসানো যায় না। বাশার, নাস এবং ইনসান – এ তিনটি শব্দ মানুষের তিনটি স্তরবিন্যাসকে নির্দেশ করে। মানুষের এই তিনটি স...

আল কোর'আনের আলোকে মানুষের বৈশিষ্ট্য

আল কোর’আনে মানুষের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ রয়েছে। এগুলোকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়। এক – শারীরিক বৈশিষ্ট্য এবং দুই – চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। মানুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলো হলো – ১. সুন্দর আকৃতি বিশিষ্ট। لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ “আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে।” [সূরা ৯৫/তীন – ৪] ২. দুর্বল প্রকৃতির। [সূত্র: সূরা ৪/নিসা - ২৮] ৩. শ্রম নির্ভর। [সূত্র: সূরা ৯০/বালাদ -৪] আর, মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো হলো –

কোর'আনের একটি সূরার সাথে পরবর্তী সূরার সম্পর্ক

আল কোর’আন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটা চেইনের মত; এর একটি আয়াত অন্য একটি আয়াতের সাথে সংযুক্ত, এবং একটি সূরা অন্য একটি সূরার সাথে সম্পর্কিত। আল কোর’আনের অন্যতম দুটি বৈশিষ্ট্য হলো – - প্রত্যেকটি সূরার প্রথম আয়াতগুলোর সাথে শেষের আয়াতগুলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এবং - কোর’আনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকটি সূরা একটির সাথে অন্যটি সম্পর্কিত। কিছু উদাহরণ দিচ্ছি। সূরা ফাতিহার প্রথম ও শেষ আয়াতের সম্পর্ক।  الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ [সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।] صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ [যাদেরকে তুমি অনুগ্রহ দান করেছ, সে সমস্ত লোকের পথ আমাদের দেখাও। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার ক্রোধ নিপতিত হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।] দেখুন, সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত হলো আল্লাহর উপর মানুষের সন্তুষ্টির বর্ণনা, এবং শেষ আয়াতটি হলো মানুষের উপর আল্লাহর সন্তুষ্টির বর্ণনা। সূরা ফাতিহার সাথে সূরা বাকারার সম্পর্ক।  اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ “আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর।” [সূরা ফাতিহা – ৫] ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ...

স্বাধীনতা কারে কয়?

এক, দুই, তিন আমরা কি স্বাধীন? চার, পাঁচ, ছয় স্বাধীনতা কারে কয়? সাত, আট, নয় দেশ কি মোদের নয়? দশ, এগারো, বারো ভয় কি কর কারো? – তেরো, চোদ্দো, পনেরো কোর’আনটাকে ধরো। ষোল, সতের, আঠারো ভালো করে পড়ো। উনিশ, বিশ, একুশ আসবে ফিরে হুঁশ। হবে স্বাধীন মানুষ।।