সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০১৮ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মাতৃগর্ভে কি আছে তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ জানা সম্ভব?

সূরা লোকমানের শেষ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন – “মাতৃগর্ভে কি আছে তা আল্লাহ জানেন”। কিন্তু আধুনিক যুগে আলট্রাসাউন্ড করেই আমরা জেনে নিতে পারি যে, মায়ের গর্ভের শিশুটি ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে। আল্লাহ যা জানেন, তা তো আমরা নিজেরাই জেনে যেতে পারি। এখানে আল্লাহর বিশেষত্ব আর কি রইলো? একজন ভাইয়া ইনবক্সে এমন একটি প্রশ্ন করেছেন। প্রশ্নের উত্তরে যাবার আগেই সূরা লোকমানের শেষ আয়াতটা দেখে নেই। আল্লাহ তায়ালা বলছেন – إِنَّ اللَّهَ عِندَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ ۖ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا ۖ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ “কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহ নিকট রয়েছে। তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন। তিনি জানেন মাতৃগর্ভে কি আছে। কেউ জানে না আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে। কেউ জানে না কোন স্থানে তার মৃত্যু হবে। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে অবহিত।” [সূরা ৩১ / লোকমান - ৩৪] ------------- ব্যাখ্যা – ১ ------------- এ আয়াতে পাঁচটি বিষয়ের কথা বলা হয়েছে। সবগুলো বিষয়ে আল্লাহর জানা আছে, কিন্তু সবগুলো জানা একই ধরণের নয়।

বিজ্ঞানের ভিত্তি কল্পনা

বিজ্ঞান যে শাস্ত্রের মাধ্যমে গড়ে উঠে তার নাম গণিত। গণিত ছাড়া বিজ্ঞান অকল্পনীয়। কিন্তু, গণিতের কোনো অস্তিত্ব বাস্তব জগতে নেই, গণিত গড়ে উঠে কিছু কাল্পনিক ধারনার উপর ভিত্তি করে। যেমন ধরুন, আমি যদি বলি "কলা", তাহলে বাস্তব জগতে আপনি একটি কলাকে ধরতে পারবেন, এবং ইচ্ছে করলে খেতেও পারবেন। কিন্তু, আমি যদি বলি "৫', তাহলে "পাঁচ" নামের কোনো কিছুকে আপনি বাস্তব জগতে খুঁজে পাবেন না, এবং হাত দিয়ে ধরতেও পারবেন না। "৫" নামের একটি সংখ্যাকে আমরা উচ্চারণ করতে পারি, এবং কলম দিয়ে কাগজে লিখতে পারি, কিন্তু  বাস্তব জগতে "৫" নামের কোনো কিছুকে আমরা খুঁজে পাই না। অথচ, "৫" ছাড়া গণিত অচল, এবং গণিত ছাড়া বিজ্ঞান অচল। অর্থাৎ, বিজ্ঞান গড়ে উঠে কিছু কাল্পনিক ধারনার উপর ভিত্তি করে, যা বাস্তব জগতে পাওয়া যায় না। যারা বলেন, আমরা আল্লাহকে না দেখে বিশ্বাস করি না, তারা কিন্তু ঠিকই গণিতের সংখ্যাগুলোকে বাস্তব জগতে না দেখেই বিশ্বাস করে। তাদেরকে আপনি যদি বলেন, "দেখি আমাকে বাস্তব জগতে গণিতের সংখ্যাগুলো দেখাও তো", তখন সে আপনাকে কিছুই দেখাতে পারবে না।

আল ফারাবী প্রসঙ্গে

একটি উত্তম রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আল ফারাবী বলেন – يكون كل واحد من أهلها مطلق خال بنفسه يعمل ما يشاء، أهلها يتساوون وسنتهم أن لا فضل لإنسان على إنسان في شيء أصلاً. ويكون أهلها أحرارًا يعملون ما يشاؤون ولا يكون لأحد على أحد منهم ولا من غيرهم سلطان إلا أن يعمل ما تزول به حريتهم. [الفارابي : "السياسة المدنية"، تحقيق فوزي متري النجار ط 1 المطبعة الكاتوليكية بيروت في 1964 ص 99] অর্থাৎ, “একটি উত্তম রাষ্ট্রের অধিবাসীরা প্রত্যেকে নিজেই নিজের অধীনে থাকবে, এবং সে যা ইচ্ছে, তা করতে পারবে। সে রাষ্ট্রের অধিবাসীরা সবাই সমান মর্যাদার অধিকারী হবে, কোনও একজন মানুষ অন্য মানুষের উপর বিশেষ মর্যাদা প্রাপ্ত হবে না। এর অধিবাসীরা সবাই স্বাধীন, কেউ কারো উপর কর্তৃত্ব করতে পারবে না। তবে, কেউ কারো স্বাধীনতা হরণ করলে তখন ভিন্ন কথা”। আল ফারাবীর “জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র”-এর ধারণা বর্তমান গণতান্ত্রিক আধুনিক রাষ্ট্রের চেয়েও অনেক বেশি উন্নত ছিলো। ________________________

মানুষ, প্রাণী ও বস্তুর সাথে ভাষার সম্পর্ক

আমাদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয়, ভাষা মানে কি? তখন আমাদের মনে “অ, আ, ক, খ” এমন বর্ণগুলো ভাসতে থাকে। এ কারণে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি আসলেই চতুর্দিকে বিভিন্ন পোষ্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ডে আমরা বাংলা বর্ণগুলো নিয়মিত দেখতে পাই। এরপর, আমাদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয়, মাতৃভাষা কাকে বলে? তখন ছোটবেলায় মায়ের কাছে আমরা যে ভাষাটি শিখেছি, তা মনে পড়ে। আসলে ভাষা মানে চোখে দেখা কয়েকটি অক্ষর, অথবা, কানে শুনা কয়েকটি শব্দ নয়। ভাষা মানে হচ্ছে ভাবের বিনিময়। আমাদের মনে যখন কোনো একটি ভাবের উদয় হয়, তখন সে ভাবটি অন্যের নিকট উপস্থাপন করাকেই ভাষা বলে। মানুষের জন্যে ভাব প্রকাশ করার সবচেয়ে সহজ ও প্রাচীন মাধ্যম হলো মুখ দিয়ে শব্দ উচ্চারণ করা, এবং কান দিয়ে তা শুনা। কিন্তু, প্রাচীন কালে কথা বলার মাধ্যমে যে ভাব প্রকাশ করা হতো, তা খুব অস্থায়ী ও সীমিত রূপ ধারণ করতো। কারণ, মুখে কোনো শব্দ উচ্চারণ করার সাথে সাথে তা বাতাসে মিশে যেতো। তখন মুখের আশেপাশে থাকতো, তারাই কেবল মুখে উচ্চারিত শব্দগুলোর ভাব বুঝতে পারতো।

আল্লাহ যদি দয়ালু হন, তাহলে তিনি মানুষকে বিপদের সম্মুখীন করেন কেন?

দয়া করার অর্থ সবসময় মানুষের ভালো করা, ব্যাপারটা এমন না। কখনো কখনো মানুষকে একটি বড় বিপদ থেকে উদ্ধার করার জন্যে একটি ছোট বিপদের মধ্যে ফেলে দেয়াও এক ধরণের দয়া। যেমন, একজন ডাক্তার দয়ালু হয়ে একজন গর্ভবতী মায়ের পেট কেটে বাচ্চা বের করেন। এ ক্ষেত্রে এই ডাক্তারকে কি আমরা দয়াহীন বলতে পারি? পারি না। কারণ এখানে ডাক্তার একজন গর্ভবতী মাকে বড় একটি বিপদের থেকে বাঁচানোর জন্যে ছোট একটি বিপদে ফেলে দিয়েছেন। তেমনি, আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে জাহান্নামের অনেক বড় বিপদ থেকে উদ্ধার করার জন্যে মাঝে মধ্যে দুনিয়াতে কিছু ছোট-খাটো কিছু বিপদ দেন। তিনি যে মানুষকে ছোট-খাটো বিপদের সম্মুখীন করেন, এটাও তাঁর একটি দয়া। ফিরাউনকে আল্লাহ তায়ালা জীবনে কোনো অসুখ দেননি, কারণ, তাঁর প্রতি আল্লাহর খুব বেশি দয়া ছিলো না। আমাদেরকে আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন বিপদ-আপদ দেন, কেননা, আমাদের প্রতি আল্লাহর দয়া বেশি।

কোর’আনে নবী-রাসূলদের এতো বেশি কাহিনী কেন?

কেউ যখন প্রথম প্রথম কোর’আন পড়তে শুরু করে, তখন মনে হয়, কোর’আনে কেবল আগেকার যুগের নবী-রাসূলদের কিচ্ছা-কাহিনী দিয়ে ভরা। তাই, অনেকেই কোর’আন পড়ে খুব বেশি মজা পায় না। আসলে কোর’আনের বর্ণিত অতীতের নবী রাসূলদের সকল গল্পের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ (স)-কে বিভিন্ন শিক্ষা দিয়েছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ মুসা (আ)-এর কাহিনীগুলো দেখুন, সূরা আরাফ, সূরা শুআরা, সূরা কাসাস, সূরা সাফফাত সহ যেসব সূরা মক্কায় নাযিল হয়েছে, সেগুলো পড়লে আমরা দেখব যে, সেখানে মূসা (আ)-এর সাথে ফিরাউনের দ্বন্দ্বের বিষয়টি বারবার আলোচনা করা হচ্ছে। কারণ, তখন মক্কা জীবনে রাসূল (স)-এর সাথে আবু জাহেলদের ব্যাপক দ্বন্দ্ব হচ্ছিল। তাই, তখন আল্লাহ তায়ালা রাসূল (স) ও সাহাবীদেরকে মক্কার বিভিন্ন পরিস্থিতির মোকাবেলা করার জন্যে মূসা (আ) ও ফিরাউনের কাহিনীগুলো বর্ণনা করছিলেন। কিন্তু, রাসূল (স) মদিনায় যাবার পর মূসা (আ) ও ফিরাউনের কাহিনী আর নাযিল হয়নি। তখন শুরু হয়েছে, মূসা (আ)-এর সাথে বনী ইজরাইলের দ্বন্দ্বগুলোর আলোচনা। কেননা, মদিনায় আসার পর মক্কার মতো রাসূল (স)-এর আর কোনো শত্রু ছিলো না। কিন্তু তখন আবার শুরু হলো মুনাফিকদের চক্রান্ত। ফলে, সূরা বাকারা সহ ম

আদম (আ)-এর গল্পের শিক্ষা কি?

কোর’আনের প্রতিটি ঘটনাই আমাদের জন্যে শিক্ষণীয়। কেবল নবী রাসুলদের ইতিহাস জানানোর জন্যে আল্লাহ তায়ালা কোর’আনে বিভিন্ন কাহিনী দিয়ে ভরে রাখেননি, বরং প্রতিটি কাহিনীর পিছনে আমাদের জন্যে অসংখ্য শিক্ষা রয়েছে। যেমন, আদম (আ)-কে জান্নাত থেকে নামিয়ে দেয়ার ঘটনাকে আমরা একটি ঐতিহাসিক তথ্য আকারে গ্রহণ করি। অথবা, মূসা (আ)-এর নদী পার হয়ে যাবার ঘটনাকে আমরা একটি অলৌকিক মুজিযা আকারে গ্রহণ করি। কিন্তু এসব ঘটনা কেবল ঐতিহাসিক কোনও তথ্য দেয়ার জন্যে, অথবা কোনও নবীর মুজিযা প্রকাশ করার জন্যে বর্ণনা করা হয়নি। বরং আমাদেরকে শিক্ষা দেয়ার জন্যেই এসব ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ আদম (আ)-এর কাহিনীটি কল্পনা করা যাক, কোর’আনে আদম (আ)-কে জান্নাত থেকে নামিয়ে দেয়ার কাহিনীটি যখন বর্ণনা করা হয়, তখন আমরা ভাবতে থাকি, এটি আদম (আ)-এর কাহিনী, সুতরাং এই ঘটনাটি থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়ার তেমন কিছু নেই। অথচ আদম এর ঘটনাটি আমাদের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রতিদিন ঘটে থাকে। দেখুন, আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের সব গাছ থেকেই খাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন, কিন্তু কেবল একটি গাছ থেকে খেতে নিষেধ করেছিলেন। তেমনি, আমাদেরকেও আল্লাহ তায়ালা সবকিছু খাওয়

ফাঁস

প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে সব যুগে সব দেশে, খুঁজে দেখো পাবে তুমি প্রমাণ ইতিহাসে। "হ" দিয়ে ঐ হীরক রাজা "হ" দিয়ে তার নাম, যুগে যুগে করলো তারাই প্রশ্ন ফাঁসের কাম। মুক্তিযুদ্ধ করে মোরা হয়েছি স্বাধীন, তাই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হবে বাধাহীন।

এরদোয়ানের ইসলামী রাজনীতির সূত্র

ইসলামী রাজনীতির ক্ষেত্রে এরদোয়ানের সূত্র হলো – "রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষ হবে, কিন্তু কোনো ব্যক্তি ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারে না" তাঁর কথাটি একটু ব্যাখ্যা করছি – ১। ইংরেজি সেক্যুলার শব্দের বাংলা অর্থ করা হয় ধর্মনিরপেক্ষ। ব্যবহারিকভাবে এটি একটি ভুল অনুবাদ। সেক্যুলারিজমের প্রকৃত অর্থ হলো ধর্মহীন বা ধর্মবিদ্বেষ। কারণ, সকল 'সেক্যুলার'-ই ধর্মের বিরোধিতা করেন, কেউই ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারেন না। ২। সেক্যুলারিজম হলো একটি রাজনৈতিক পদ্ধতির নাম, কোনো ব্যক্তি সেক্যুলার হতে পারে না। তেমনি, ধর্ম হলো ব্যক্তি মানুষের দৈনন্দিন পালনীয় কার্যাবলীর নাম, রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। যেমন, একজন ব্যক্তিকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হয়, কিন্তু রাষ্ট্রকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হয় না। ৩। পরিবার ছাড়া যেমন কোনো মানুষ হতে পারে না, তেমনি ধর্ম ছাড়াও কোনো মানুষ হতে পারে না। পরিবারহীন মানুষ যেমন পথ-শিশু হয়ে যায়, ধর্মহীন মানুষও তেমনি সমাজ বিচ্যুত হয়ে যায়। নাস্তিকতা একটি ধর্মের নাম। কারণ, স্রষ্টার ধারণা ছাড়াই পৃথিবীতে অনেক ধর্ম রয়েছে, যেমন, বৌদ্ধ ধর্ম। ৪। 'ধর্মহীন রাষ্ট্র' ও 'ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র'

শিক্ষিত দাস

আমরা সবাই আধুনিক শিক্ষিত ও দাস, শিক্ষা হলো কর্পোরেটের দাসত্ব বিন্যাস। জ্ঞান মানেই সার্টিফিকেট পরীক্ষা আর পাশ, রেজাল্ট মানে আগের রাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস। সরকারী চাকরগিরি কোটার জন্যে খাস, মেধাবীরা গ্রামে গিয়ে করবে জমির চাষ। শিক্ষামন্ত্রী যোগ্যতাতে একেবারেই পাশ, ইচ্ছে তাহার জাতীর মেধার করবে সর্বনাশ।

কোন স্কলারের কথা শুনবো?

এ হুজুর বলেন, ঐ হুজুরের কথা শুনবেন না। ঐ হুজুর বলেন, এ হুজুরের কথা শুনবেন না। এ শায়েখ বলেন, ঐ শায়েখের কথা শুনবেন না। ঐ শায়েখ বলেন, এ শায়েখের কথা শুনবেন না। ফলে, সাধারণ মানুষ পড়ে বিপাকে। তারা তখন বলতে থাকেন, ইসলামের মধ্যে এতো বেশি মত কেন? আসলে কোর'আন ও হাদিসের সব কথা তো লিখাই আছে, তা আমরা সবাই পড়তে পারি। কোনো হুজুর বা শায়েখ যখন কোর'আন বা হাদিসের কোনো কথা ব্যাখ্যা করেন, তখন তিনি কোর'আন ও হাদিস থেকে সরাসরি কোনো উদ্ধৃতি দেয়ার আগে ও পরে যত কথা বলেন, সবি তার নিজের কথা। আপনার ইচ্ছে  হলে সে কথাগুলো মানবেন, আর ইচ্ছা না হলে মানবেন না, এতে কোনো সমস্যা নেই। পৃথিবীতে যত মানুষ আছে, ততটা মত হওয়াটাই স্বাভাবিক। আল্লাহ মানুষকে শারীরিকভাবে যেমন ভিন্ন ভিন্ন তৈরি করেছেন, তেমনি মানসিক ভাবেও ভিন্ন ভিন্ন তৈরি করেছেন। একজন আলেম বা শায়েখের কথা অন্য একজনের সাথে মিলবে না, এটাই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে কোর'আনের নির্দেশনা হলো, সব হুজুর বা শায়েখের কথা শুনা। এরপর, যার কথা আপনার কাছে সুন্দর ও যুক্তিযুক্ত মনে হবে, তার কথা মেনে চলা। আল্লাহ তায়ালা বলেন - الَّذِينَ يَسْتَمِعُونَ الْقَوْلَ فَيَتَّبِعُونَ أَحْس

মুরতাদ বা ধর্মত্যাগীর শাস্তি কি মৃত্যুদণ্ড?

অনেকে বলেন, মুরতাদ বা ধর্মত্যাগীদের শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু, কেউ যদি কোনো ধর্মত্যাগীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেয়, তাহলে কোর’আনের অসংখ্য আয়াত অকার্যকর হয়ে যাবে। যেমন, নিচের আয়াত দেখুনগুলো। কোর’আনের সাথে বৈপরীত্য – ১ إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا ثُمَّ كَفَرُوا ثُمَّ آمَنُوا ثُمَّ كَفَرُوا ثُمَّ ازْدَادُوا كُفْرًا لَّمْ يَكُنِ اللَّهُ لِيَغْفِرَ لَهُمْ وَلَا لِيَهْدِيَهُمْ سَبِيلًا “নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে, এরপর কাফের হয়ে যায়, তারপর আবার ঈমান আনে, এরপর আবার কাফের হয়ে যায়, অতঃপর তাদের কুফরি-ই বৃদ্ধি পায়, আল্লাহ তাদেরকে কখনোই ক্ষমা করবেন না, এবং তাদেরকে কোনো পথও দেখাবেন না”। [সূরা ৪/ নিসা – ১৩৭] এই আয়াতে স্পষ্ট যে, কেউ কেউ ঈমান আনার পর আবার কাফের হয়ে যায়। এরপর আবার ঈমান আনে। এখন প্রথমবার কাফের বা মুরতাদ হয়ে যাবার পরেই যদি একজন মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেয়া হয়, তাহলে সে দ্বিতীয়বার ঈমান আনবে কিভাবে? আর, ঐ মুরতাদ ব্যক্তিটির যদি দ্বিতীয়বার ঈমান আনার কোনো সুযোগ না থাকে, তাহলে আল্লাহর এই আয়াতটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। কোর’আনের সাথে বৈপরীত্য – ২

"আল্লাহ কি এমন একটি পাথর বানাতে পারবেন, যা তিনি নিজেই তুলতে পারবেন না?"

নাস্তিকরা প্রায়ই এই প্রশ্নটি করেন - "আল্লাহ তায়ালা কি এমন একটি পাথর বানাতে পারবেন, যা তিনি নিজেই তুলতে পারবেন না?" এ প্রশ্নের উত্তরে আপনি যদি "হাঁ" বলেন, তাহলেও বিপদ; আপনি যদি "না" বলেন, তাহলেও বিপদ। তো, একবার এক বাঙালি আস্তিককে এ প্রশ্নটি করার পর, তিনি উত্তরে বললেন: "জ্বি... না..."। তিনি "হাঁ" বা "না" কোনো একটি না বলে বরং দুটাই একসাথে বলে দিলেন। এবং প্রশ্নকারী নাস্তিককে বললেন যে, তোমার প্রশ্নের একটি অংশের উত্তর "হাঁ" এবং অন্য একটি অংশের উত্তর "না"। তাই আমি "জ্বি... না..." বলেছি। তখন আস্তিকটির "যেমন কুকুর, তেমন মুগুর" দেখে নাস্তিকটি আর কথা না বাড়িয়ে চলে গেলেন। আসলে এখানে উত্তরে সমস্যা না, সমস্যা হলো প্রশ্নে। যেমন, কেউ যদি আপনাকে বলে: "তুমি কি আগের মতো তোমার স্ত্রীকে এখনো মারো?" এখানে এ প্রশ্নের উত্তরে আপনি যদি "হাঁ" বলেন, তার মানে আপনি আপনার স্ত্রীকে মারেন। আর, প্রশ্নটির উত্তরে আপনি যদি "না" বলেন, তার মানে, আপনি বর্তমানে আপনার স্ত্রীকে মারেন না, কিন্তু আগে আ

ইসলাম কি ভালোবাসার বিরুদ্ধে?

ইসলাম ভালোবাসার বিরুদ্ধে নয়, বরং ভালোবাসার নামে যারা প্রতারণা করে, ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে। ইসলাম মানুষকে ভালোবাসার জন্যে আদেশ করে। যেমন রাসূল (স) বলেছেন - لا تدخلون الجنة حتى تؤمنوا ، ولا تؤمنوا حتى تحابوا أولا أدلكم على شيء إذا فعلتموه تحاببتم : أفشوا السلام بينكم “একজন মানুষ ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না ঈমান আনয়ন করবে। একজন মানুষ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না একে অপরকে ভালোবাসবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি জিনিস বলব, যা  পালন করলে তোমাদের মধ্যে ভালোবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো – তোমাদের মধ্যে সালামের বিস্তার ঘটাও।” [সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৯৩] তাহলে ইসলাম কিসের বিরুদ্ধে? ইসলাম ভালোবাসার নামে প্রতারণার বিরুদ্ধে। একটি উদাহরণ দিচ্ছি।

ভালোবাসার কথামালা

ভালোবাসার তিনটি সূত্র: ১। নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো বা মন্দ যাই হোক না কেনো, সমর্থ অনুযায়ী অন্যের জন্যে সময় ও অর্থ ব্যয় করা। ২। নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল জানা। ৩। অন্যকে দোষারোপ না করে ক্ষমা করে দেয়া। [সূত্র: আল কোর'আন, সূরা ৩/ আল ইমরান, আয়াত - ১৩৪] ******************** LOVE is for giving and forgiving. [Source: Al Quran, 3:134] ********************

কোর'আনের হরকত ও নোকতা ইতিহাস

কোর’আন নাযিলের সময়ে আরবি ভাষার অক্ষরগুলোতে কোনো নোকতা বা হরকত ছিলো না। ফলে রাসূল (স) যখন তাঁর সাহাবীদেরকে দিয়ে কোর’আন লেখাচ্ছিলেন, তখন কোর’আনের অক্ষরগুলোর মধ্যেও কোনো নোকতা বা হরকত ছিলো না। ছবি দুটি দেখুন, এগুলো প্রথম জামানার লিখিত কোর’আন। দ্বিতীয় ছবিটি এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে প্রাচীন কোর’আনের একটি ছবি, যা চামড়ার উপর লিখিত হয়েছে।

যার কাছে ধর্ম পৌঁছায়নি, তিনি কি জাহান্নামে যাবেন?

কেউ যদি অ্যামাজন জঙ্গলে বাস করে, অথবা, কোনো মানুষের নিকট যদি পৃথিবীর কোনো ধর্ম বা শিক্ষা না পৌঁছে, তাহলে সে কি জাহান্নামে যাবে? একজন ভাইয়া ইনবক্সে আমাকে এ প্রশ্নটি করেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলার আগে আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে একটু নজর দেই। বাংলাদেশে যখন S.S.C. পরীক্ষা শুরু হয়, তখন সারা দেশের সকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা একই দিনে এবং একই সময়ে শুরু হয়। ঢাকা, কুমিল্লা, বা যে কোনো বোর্ডের প্রশ্নপত্রগুলো সব একই রকম হয়। অর্থাৎ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করার জন্যে একটিমাত্র প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। কিন্তু, আল্লাহ তায়ালা মানুষদের থেকে এভাবে পরীক্ষা নেন না। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের যোগ্যতা ও সমর্থ অনুযায়ী আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক মানুষের জন্যে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্ন প্রস্তুত করেন। অর্থাৎ, বাংলাদেশী একজন মানুষকে আল্লাহ তায়ালা যেভাবে প্রশ্ন করবেন, অ্যামাজন জঙ্গলে বসবাসকারী একজন মানুষকে আল্লাহ তায়ালা ঠিক সেভাবে প্রশ্ন করবেন না। কোর’আনে আল্লাহ তায়ালা বলেন – لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا “আল্লাহ কোনো মানুষকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত কাজের ভার দেন না”। [সূরা ২/ বাকারা

বিজ্ঞানে মুসলিমদের ঐতিহ্য ও ‘নিল ডিগ্রেস টাইসন’-এর মিথ্যাচার

বিজ্ঞানের জগতে এমন কেউ নেই, যিনি ‘নিল ডিগ্রেস টাইসন’কে চিনেন না। টাইসন একজন মার্কিন জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী, বিশ্বতাত্ত্বিক, অনেকগুলো বেস্টসেলার বইয়ের লেখক এবং জনপ্রিয় বক্তা। তিনি প্রায়ই ইসলাম নিয়ে কথা বলেন। খুব দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন যে, মুসলিমরা এক সময়ে বিজ্ঞানে অনেক উন্নত ছিলো, কিন্তু আজ মুসলিমদের কেন এই দুর্দশা? বিজ্ঞানী টাইসনের একটি ভিডিও এখানে যুক্ত করে দিয়েছি, যেখানে তিনি দেখানোর চেষ্টা করেছেন, কেন মুসলিমদের আজ এই দুর্দশা। প্রথমে আসুন, তাঁর সেই ভিডিওতে তিনি কি বলেছিলেন, তা একটু সংক্ষেপে তুলে ধরি। https://www.youtube.com/watch?v=08sBrXM0u4Q বিজ্ঞানী টাইসন বলেন – “আমরা আকাশে যে নক্ষত্র ও তারাগুলো দেখছি, সেগুলোর মধ্যে অসংখ্য তারকার নাম আরবিতে, এবং মুসলিমরাই এগুলো আবিষ্কার করেছিলেন, এবং তাঁরাই এগুলোর নাম দিয়েছিলেন। গণিতে শাস্ত্রে আমরা এখন যে আল-জেবরা (Algebra - বীজগণিত) শব্দটি ব্যবহার করি, এটি একটি আরবি শব্দ। অথবা, কম্পিউটারের জন্যে আমরা যে অ্যালগরিদম (Algorithm) পরিভাষাটি ব্যবহার করি, এটিও একটি আরবি শব্দ এবং এগুলো মুসলিমদের-ই আবিষ্কার।

কোন খাদ্যটি খেতে কোর'আন বলে?

যে কোনো কিছু খাওয়ার আগে, আল কোর’আনের নির্দেশনা অনুযায়ী, খাবারের দুটি বৈশিষ্ট্য দেখে নেয়া উচিত। ১। খাবারটি হালাল কিনা? ২। খাবারটি বিশুদ্ধ কিনা? আল্লাহ তায়ালা বলছেন – يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُوا مِمَّا فِي الْأَرْضِ حَلَالًا طَيِّبًا وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ “হে মানবজাতি, তোমরা পৃথিবী থেকে আহার করো, যা হালাল ও বিশুদ্ধ। আর তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” [সূরা ২/বাকারা - ১৬৮] ১। কোনো খাদ্য বিশুদ্ধ, কিন্তু তা হালাল নাও হতে পারে। যেমন, অন্যের মালিকানাধীন এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানি, বিনা অনুমতিতে খাওয়া আমাদের জন্যে হালাল নয়। অথবা, আল্লাহর নাম ছাড়া অন্যের নাম নিয়ে জবাই করা প্রাণীর মাংস বিশুদ্ধ হলেও তা হালাল নয়। কিংবা, হারাম উপার্জনের টাকায় কেনা বিশুদ্ধ মধুও হালাল নয়। ২। একইভাবে, কোনো খাদ্য হালাল, কিন্তু বিশুদ্ধ নাও হতে পারে। যেমন, রাস্তার পাশে বিক্রি করা চটপটি, ফুচকা, ফাস্টফুড জাতীয় খাবারগুলো হালাল হলেও সাধারণত তা বিশুদ্ধ হয় না। অথবা, ফরমালিন যুক্ত কোনো ফল হালাল হলেও তা বিশুদ্ধ না। কিংবা, অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খ

নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, কি এবং কেন?

ভালোবাসা দুই প্রকার। ১। আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা। ২। আল্লাহর জন্যে ভালোবাসা। আল্লাহকে ভালোবাসা মানে আল্লাহর ইবাদাত করা এবং আল্লাহর হালাল-হারাম মেনে চলা। আর, আল্লাহর জন্যে ভালোবাসা মানে হলো, স্ত্রী, স্বামী, সন্তান, বাবা, মা, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবকে নিঃস্বার্থে ভালোবাসা। দ্বিতীয় প্রকার ভালোবাসার সম্পর্কে রাসূল (স) বলেন - الحُبُّ فِي اللَّهِ وَالبُغْضُ فِي اللَّهِ مِنَ الإِيمَانِ "আল্লাহর জন্যে ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্যে ঘৃণা করাটা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।" [সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা] অপর এক বর্ণনায় রাসূল (স) বলেন - أفضل الأعمال الحب في الله، والبغض في الله "সর্বোত্তম কাজ হলো আল্লাহর জন্যে কাউকে ভালোবাসা, এবং আল্লাহর জন্যে কাউকে ঘৃণা করা" [সুনানে আবু দাউদ, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং - ৪৫৯৯] আল্লাহ জন্যে কাউকে ভালোবাসা মানে নিঃস্বার্থভাবে কাউকে ভালোবাসা, এবং আল্লাহর জন্যে কাউকে ঘৃণা করা মানে নিজের স্বার্থের কারণে কাউকে ঘৃণা না করা।

ইবনে খালদুন সম্পর্কে রোনাল্ড রেগান

কার্ল মার্ক্সকে পড়ার আগে আমাদেরকে ইবনে খালদুন পড়া উচিত। অনেকে মনে করেন, “ইবনে খালদুনের চিন্তাকে আরো সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন কার্ল মার্ক্স। সুতরাং, কার্ল মার্ক্সকে পড়লে এখন আর ইবনে খালদুনকে পড়ার প্রয়োজন হয় না।” কথাটি একেবারেই সত্য নয়। পশ্চিমা বিশ্বে যত বড় বড় অর্থনীতিবিদের জন্মই হোক না কেনো, এখনো সারাবিশ্বে ইবনে খালদুনের প্রয়োজনীয়তা, জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, অ্যামেরিকার ৪০তম প্রেসিডেন্ট Ronald Reagan এর একটি বক্তব্য আমি এখানে বাংলা সাব-টাইটেল করে দিয়েছি। রোনাল্ড রেগান এর সময়ে অ্যামেরিকা সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক সচ্ছলতা লাভ করে। এর কারণ হিসাবে রেগান বলেন, তিনি ইবনে খালদুনের একটি তত্ত্ব মেনে চলতেন। ইবনে খালদুন বলেন –

আত্মবিশ্বাস টেস্ট

আত্মবিশ্বাসের অপর নাম আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল। নিজের উপর আমাদের কতটা আত্মবিশ্বাস আছে, অথবা, আল্লাহর উপর আমাদের কতটা তাওয়াক্কুল রয়েছে, তা নিচের প্রশ্নগুলোর জবাব দিয়ে যাচাই করে নিতে পারেন। ১। কোনো কাজ শুরু করার আগেই কি চিন্তা করেন যে, "যদি সফল না হই?" কিংবা "যদি কাজটি শেষ করতে না পারি?" ২। কোনো কাজ করার আগে আল্লাহ কি বলবে, তা চিন্তা না করে, মানুষ কি বলবে, তা চিন্তা করেন নাকি? ৩। আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে নেয়া কোনো সিদ্ধান্ত ঠিক আছে কিনা, তা অন্যকে জিজ্ঞাস করেন? ৪। বন্ধুদের কেউ অপছন্দের বা অন্যায় কোনো কাজের জন্যে দাওয়াত দিলে বন্ধুত্বের কথা ভেবে তার সাথে রাজি হয়ে যান? ৫। কোনো কাজে ব্যর্থ হলে ভেঙ্গে পড়েন কিনা? ৬। কারো সামনে কথা বলতে বা বক্তব্য দিতে লজ্জা পান কিনা? ৭। নিজেকে সবসময় অন্যের সাথে তুলনা করেন কিনা? ৮। নিজের কাছে সবসময় কোনো কিছুর অভাব মনে হয় কিনা? ৯। অন্যের কাছ থেকে প্রশংসা শুনার আগ্রহ আছে নাকি? ১০। কোনো কিছু কিনতে গেলে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন কিনা? ১১। নিজের শারীরিক কাঠামো ও সৌন্দর্যের বিষয়ে অসন্তুষ্ট কিনা? ১২। খুব বেশি অন্যকে উপদেশ দেয়ার ইচ্ছে হয় নাকি? ১৩। ফেইসব

আবেগ ও আকল এর ব্যবহার

আবেগ, প্রেম, ভালোবাসা, রাগ, ক্ষোভ, দয়া, মায়া, ক্ষুধা এসব আবেগ সকল প্রাণীর-ই রয়েছে। মানুষের অতিরিক্ত যে জিনিসটা আছে, তা হলো আকল বা বুদ্ধি। আবেগ ও আকল, দুটি নিয়েই মানুষের পথ চলতে হয়। শুধু আবেগ কিংবা শুধু আকল দিয়ে পথ চলা যায় না। উদাহরণ স্বরূপ, মানুষকে একটি সাইকেলের সাথে তুলনা করি। আবেগ হলো সাইকেলের প্যাডেল, আর আকল হলো সাইকেলের ব্রেক। প্যাডেলে চাপ না দিলে যেমন সাইকেল সামনে যায় না, তেমনি মানুষের জীবনে ভালোবাসা, রাগ, ক্ষোভ, দয়া, মায়া এসব আবেগ ছাড়া মানুষের জীবন চলে না। একইভাবে, ব্র েক ছাড়া যেমন সাইকেলের পথ ঠিক রাখা যায় না, সাইকেল এক্সিডেন্ট করে; তেমনি আকল ছাড়া মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য ও চলার পথ সোজা রাখা যায় না। দর্শন ও বিজ্ঞান মানুষের আকল বা বুদ্ধি নিয়ে কথা বলে, আবেগ নিয়ে কথা বলে না। কিন্তু ধর্ম মানুষের আবেগ ও আকল দুটি নিয়েই কথা বলে। ধর্ম মানুষের আবেগ ও আকলের মাঝে সমন্বয় সাধন করে মানুষকে সঠিক পথে চালিত করে।

আত্মবিস্মৃত মুসলিম বাঙালী

ধরুন, কেউ এসে আমার মাথার পিছনে আঘাত করায় আমি স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেললাম। হাসপাতালে আমার হুঁশ আসার পর আমি জিজ্ঞাস করলাম: “আমি কে?” কেউ একজন আমাকে বললেন: “তোমার নাম পিন্টু, তুমি জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় পড়ে ছিলে।” এরপর, আমি বললাম: “আমি এখন কোথায় যাব?” কেউ একজন বললেন: “আমার সাথে চল। আমাদের বাসায় তুমি কাজের ছেলে হিসাবে কাজ করবে।” স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলায়, আমি জোবায়েরের নাম হয়ে গেলো পিন্টু। আর আমার কাজ হয়ে গেলো অন্যের দাসত্ব করা। ঠিক একইভাবে, ইংরেজরা আমাদের এই বাংলায় এসে আমাদের মুসলিম বাঙালিদের মাথায় আঘাত করায় আমারা আমাদের স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। তাই, বাঙালিদের কাউকে যদি আপনি জিজ্ঞেস করেন যে, “আচ্ছা ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত গত হাজার বছরের ১০ জন বাঙালি মুসলিম বুদ্ধিজীবীর অথবা রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম বলো তো...।” আমরা তা বলতে পারব না। আমাদের বাঙালি মুসলিমদের হাজার বছরের ঐতিহ্য হারিয়ে আমরা যখন ফেলেছি, তখন অন্যরা এসে আমাদেরকে বলেন যে: “অমুক হলো তোমারদের জাতীর পিতা, তমুক হলো তোমাদের জাতীর বন্ধু, সমুক হলো তোমাদের হাজার বছরের বাঙালি বুদ্ধিজীবী”। এভাবেই আম

সাহসী নারী

নারীর বস্ত্রহরণকারিণী নেত্রী মোদের শ্রাবণী ক্যামেরার সামনে দিলেন তিনি সাহসী নারীর বাণী। গান বাজানোর প্রতিবাদে উচ্চ স্বরে রাতে, বৃদ্ধ পুরুষ পটল তুলেছে সাহসী নারীর হাতে। প্রেমিকটাকে ছুরি মেরে লাভলী ইয়াসমিন বাজিয়ে দিলেন এই বাংলায় সাহসী নারীর বীণ। বাবা মাকে হত্যাকারিণী ইয়াবা নারী ঐশী সেও হলো এই বাংলার মস্ত বড় সাহসী। মহান নারীর নেতৃত্বে দেশে নেই তো ভয়, চতুর্দিকে শুনছি কেবল সাহসী নারীর জয়। ওগো প্রিয়া, তুমি কি ঐ সাহসী নারীর দলে? এমন হলে, জগত ছেড়ে এখনি যাব চলে।

Seyyed Hossein Nasr said about Mahdi

"Eschatology or Mahdism is a dangerous problem as a political and philosophical point of view. It is against the spiritual attitude and belief in God's freedom and God's will. Eschatology is one of the most negative forces politically in the world today, and it needs to be answered from the point of view of the perennial wisdom of all religions. Evangelical Christian says that we have to do this and that to force Christ to come down on earth is really a blasphemy of the wors t kind against Christ and against God. You cannot force the hand of God. And also the idea of Mahdism which is correlative in the Islamic world, which now has some followers including in Iran, is also very dangerous for the same reason." - Seyyed Hossein Nasr, Lecture: The Recovery of the Sacred, from the 30th minute. https://www.youtube.com/watch?v=fAzsKDSkuTI

সংবাদের পিছনে যারা দৌড়ে...

ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা রেডিও বা টেলিভিশন থেকে উপকৃত হবার প্রধান শর্ত হলো, দৈনন্দিন খবরগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা। কারণ, ইমাম মাতুরিদির ছাত্র আবুল কাশেম আল হাকিম বলেন – فتن الدنيا تنشأ من ثلاثة نفر من قائل الأخبار، وطالب استماع الأخبار ومتلقي الأخبار وهؤلاء الثلاثة لا يخلصون من الندامة “দুনিয়ার যত ফিতনা বা সমস্যা আছে, সব শুরু হয় তিনজন ব্যক্তি থেকে। তারা হলেন, (১) সংবাদদাতা, (২) সংবাদের সংগ্রহকারী, এবং (৩) সংবাদের গ্রাহক। এ তিন শ্রেণী কেবল দুঃখ আর আক্ষেপ করে।” ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একান্ত মনে মুসলিম উম্মাহ কিংবা বিশ্ববাসীর জন্যে কাজ করার প্রধান বাধা দৈনন্দিন খবরগুলো। এগুলো থেকে যত দূরে থাকা যায়, ততই ভালো।

ইহুদিরা কি বানর হয়ে গিয়েছিলো?

বানর থেকে মানুষের সৃষ্টি হয়েছে, এ কথার পক্ষে বিবর্তনবাদীরা কোর’আনের একটি আয়াত উপস্থাপন করেন – وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ الَّذِينَ اعْتَدَوْا مِنْكُمْ فِي السَّبْتِ فَقُلْنَا لَهُمْ كُونُوا قِرَدَةً خَاسِئِينَ “তোমরা তাদেরকে ভালো করেই জানো, যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করেছিলো। আমি তাদেরকে বলেছিলাম, তোমরা ঘৃণিত বানর হয়ে যাও।” [সূরা ২/বাকারা - ৬৫] বিবর্তনবাদীদের যুক্তি হলো, কোর’আনের বর্ণনা অনুযায়ী মানুষ থেকে যদি বানর হতে পারে, তাহলে বানর থেকেও মানুষ হতে পারবে না কেন? এ প্রশ্নের উত্তর অনেক আগেই বলে গিয়েছিলেন প্রসিদ্ধ মুফাসসির মুজাহিদ বিন জাবর। তিনি ছিলেন প্রথম মুফাসসির ইবনে আব্বাস (রা) ও আয়েশা (রা) এর ছাত্র। তাঁর মতে – যেসব ইহুদিরা শনিবারে মাছ ধরতো, তারা শারীরিকভাবে বানরের মতো হয়নি, বরং চারিত্রিকভাবে বানরের মতো হয়ে গিয়েছিলো।

কোনো মুমিনকে কাফির বলা যায়?

তবলীগের দুটি গ্রুপ একে অপরের চিন্তাকে গ্রহণ করতে পারছেন না বলে একে অন্যকে ভ্রান্ত বলছেন। এর মধ্যে কয়েকজনকে দেখলাম, অন্যকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দিচ্ছেন। অথচ, আলী (রা)-এর মত একজন সাহাবী ও খলিফার বিরুদ্ধের যারা যুদ্ধ করেছেন, তাঁদেরকেও আলী (রা) মুমিন হিসাবে গ্রহণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে ইমাম আবু হানিফা (রা) বলেন – وقد بلغَني عن علي بنِ طالبٍ رضي اللهُ تعالى عنهُ حينَ كتبَ القضيَّةَ أنهُ يُسمِّي الطائفتَيْنِ مؤمنينَ جميعاً “আমি আলী (রা) থেকে একটি সিদ্ধান্তে পৌছেছি। আলী (রা) যখন ‘কাদীয়্যাহ’ বইটি লিখেন, তখন যুদ্ধরত দুই গ্রুপকেই তিনি মুমিন হিসাবে নামকরণ করেছিলেন।” [সূত্র: রিসালাতু আবি হানিফা ইলাল বাতি] রাসূল (স)-এর প্রিয় সাহাবীদেরকে হত্যা করার মতো জঘন্য অন্যায় যারা করেছেন, তাদেরকেও আলী (রা) ইসলাম থেকে খারিজ করে দেননি, বরং মুমিন হিসাবে তাঁদের পরিচয় দান করেছেন।

আল্লাহর ভাষা কি আরবি?

অনেকে বলেন, আল্লাহ তায়ালার ভাষা হলো আরবি। এ কথা প্রমাণ করার জন্যে তাঁরা যুক্তি দিয়ে বলেন যে, কোর’আন যেহেতু আল্লাহর বাণী, এবং এটি যেহেতু আরবি ভাষায় নাযিল হয়েছে, সুতরাং আল্লাহ তায়ালার ভাষাও আরবি। একই যুক্তির ভিত্তিতে ইহুদীরা বলেন, আল্লাহ তায়ালার ভাষা হলো হিব্রু ভাষা। যেহেতু তাওরাত আল্লাহর বাণী, এবং তা হিব্রু ভাষায় নাযিল হয়েছে, সুতরাং আল্লাহ তায়ালার ভাষা হলো হিব্রু। এ কারণে নাস্তিকরা প্রায়ই জিজ্ঞেস করে – ‘আচ্ছা, তোমাদের আল্লাহ কি আগে হিব্রু ভাষায় কথা বলতেন, আর এখন আরবি ভাষায় কথা বলেন?’ এর উত্তর খুবই সহজ।

তাবলীগের সমস্যা ও আমাদের করণীয়

আপনার আশেপাশে যদি খারাপ কোনো প্রতিবেশী থাকে, তাহলে তিনি মনে মনে চাইবেন, যাতে আপনাদের পরিবারের দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া লাগে। মাঝে মাঝে যখনি আপনাদের দুই ভাইয়ের মাঝে কথা কাটাকাটি শুরু হয়, তখনি ঐ খারাপ প্রতিবেশী মনে মনে খুব খুশী হতে থাকে। কিন্তু, এতে আপনার মা-বাবা কখনো খুশী হবে না। কারো মা-বাবা চায় না, দুই ভাইয়ের মধ্যে কোনো ধরণের ঝগড়া হোক। এর কারণ হলো, আপনার মা-বাবা আপনাদের দুই ভাইকেই ভালোবাসেন। তাবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে এখন ঝগড়া চলছে। কেউ কেউ দেখছি ঐ খারাপ প্রতিবেশীদের মতো মনে ম নে খুব খুশী হয়েছেন, যা খুবই সংকীর্ণ মনের পরিচয়। মুসলিমরা পরস্পর ভাই ভাই। এক ভাইয়ের সাথে অন্য ভাইয়ের ঝগড়া লাগলে বাবা-মায়ের মতোই আমাদের কষ্ট পাওয়া উচিত। _____

দেনমোহর

ওদের আছে অনেক কিছু বাড়ি, গাড়ি, টাকা আমার ওসব কিছুই নেই পকেটটাও ফাঁকা নেই নেই তো কিছুই নেই বিয়ের মাহর কেমনে দেই? কিন্তু জানো? বুকের ভিতর এক জিনিসে ঠাসা, তাঁহার জন্যে এই হৃদয়ের শুদ্ধ ভালোবাসা।

দাওয়াত দিতে হয় ভালোবাসা দিয়ে, ভয় দেখিয়ে না

আমরা পৃথিবীতে যা কিছু করি না কেনো, তার পিছনে থাকে কারো না কারো প্রতি ভালোবাসা। যে কোনো কাজে যখন ভালোবাসা থাকে, তখন সে কাজটি আমাদের কাছে খুবই প্রিয় ও মধুর মনে হয়। কিন্তু যখন ভালোবাসা থাকে না, তখন সে একই কাজটি আমাদের কাছে খুবই কষ্টকর ও বিরক্তিকর মনে হয়। উদাহরণ স্বরূপ, আমাদের সমাজের একজন সাইফুল সাহেবের কথা কল্পনা করুন। সাইফুল সাহেব নতুন বিয়ে করেছেন। তাঁর স্ত্রী তাঁকে একটি অনুরোধ করেছেন, যাতে তিনি দাঁড়ি রেখে দেন। স্ত্রীর প্রতি অনেক ভালোবাসা থাকায় সাইফুল সাহেব তাঁর কথা ফেলে দিতে প ারেননি, দাঁড়ি রেখে দিয়েছেন। কিন্তু এই সাইফুল সাহেবের জীবনে কত শত মানুষ হাজার বার বলেও তাঁকে এক ওয়াক্ত নামাজ পড়াতে পারেন নি। প্রতি শুক্রবার ইমাম সাহেব বলতেন, কিন্তু সে কথা সাইফুল সাহেবের কানে যেতো না। এখন প্রিয়তমা সঙ্গিনীর প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে তিনি কেবল নিয়মিত নামাজ-ই পড়েন না, দাঁড়িও রেখে দিয়েছেন। অথবা, আমাদের সমাজের একজন সালমার কথা কল্পনা করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে কখনো তিনি হিজাব পরতেন না। এ জন্যে তাঁকে কতজনে কতো কথা বলতো, তিনি তাদের কথার কোনো পাত্তাই দিতেন না। কিন্তু এখন জীবনসঙ্গীর অনুরোধ রক্ষার্থে এবং তাঁর প্