সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ছড়া

প্রিয়তমা,
তুমি আমার রক্তকে বলো রঙ
চোখের পানিকে বলো ঢঙ।

জানো প্রিয়তমা?

রক্ত বেচে এই জমিনটা
কিনেছি আমি যখন,
তোমার বাবা আমার পাশে
ছিলো না তো তখন।

তবু তুমি আমায় কেন
করলে ঘরজামাই?
এই ঘরেতে আমি আবার
স্বাধীনতা চাই।

#৫_মে
**************

কোদালযোদ্ধা
_____

তোমরা যারা কোদালযোদ্ধা
আমার কাছে এসো,
বমি বিজ্ঞান শিক্ষা দিবো
আমার সাথে বসো।

জানি, তোমারা তরুণেরা
আমায় ভালোবাসো,
তাই তো কোদাল নিয়ে তোমরা
আমার কাছে আসো।

আমি যখন করবো বমি
তোমাদের-ই পায়ে,
কোদাল দিয়ে সেসব আবার
দিয়ো আমার গায়ে।

চিনবে না কেউ আমায় তখন
থাকবে না তো ভয়,
কোদালযুদ্ধে আমরা তখন
নিশ্চিত পাবো জয়।

**************
মনের ভিতর জমে আছে
হাজার ব্যাকুলতা,
বলতে চাই, কিন্তু যে নেই
বলার স্বাধীনতা।

দেশের জন্যে আছে অনেক
কষ্ট দুঃখ ব্যথা,
কিন্তু দেশের শাসন আমায়
বলতে দেয় না কথা।

সারাদেশে স্বাধীনতা
পাই না খুঁজে কোথা,
কারাগারে গিয়ে দেখি
আমার স্বাধীনতা।

২৬ - ০৩ - ২০১৮
**************

বলতো পারো, বাংলাদেশটা
স্বাধীন হবে কবে?
স্বৈরাচারীর জুলুম থেকে
মানুষ মুক্ত রবে?

ভাইয়ের হত্যা, বোনের ধর্ষণ
কবে বন্ধ হবে?
দেশের মানুষ একটু সুখে
নিশ্বাস নিবে কবে?

কবে জুলুম শেষ হবে
ইনসাফ পাবে সবে?
কেউ রবে না আর্তরবে
শান্তি আসবে ভবে?

২৭ - ০৩ - ২০১৮
**************

ভালোবাসা মানে আদম হয়ে
সরি বলতে পারা,
ভালোবাসা মানে মূসা হয়ে
ধনের মোহ ছাড়া।

ভালোবাসা মানে নূহের মতো
বারংবারে ডাকা,
ভালোবাসা মানে লূতের মতো
ধৈর্য ধরে থাকা।

ভালোবাসা মানে সৎ চরিত্র
ইউসুফের মতো,
ভালোবাসা মানে সত্য বলা
বিপদ আসুক যতো।

ভালোবাসা মানে ইব্রাহীমের
অগ্নি পরীক্ষা,
ভালোবাসা মানে মুহাম্মদের
ত্যাগ তিতিক্ষা।

ভালোবাসা মানে তোমার জন্যে
আমার অপেক্ষা,
ভালোবাসা মানে আখিরাতে
তোমায় নিয়ে থাকা।

09 - 04 - 2018
**************

ওরা 'রাজাকারের বাচ্চা', কারণ,

ওরা ওদের মেধার স্বীকৃতি চায়, অসহায় মাকে নিয়ে বাঁচতে চায়,
হতাশা, নিরাশা, ঘৃণা ও হিংসার ঊর্ধ্বে উঠে তরুণ হতে চায়,
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ও হলে শিক্ষার পরিবেশ চায়,
অসৎ, অযোগ্য, স্বার্থপর ও মূর্খ শিক্ষকজাতির থেকে রক্ষা চায়।

ওরা 'রাজাকারের বাচ্চা', কারণ,

ওরা মুক্তচিন্তা, যুক্তিশীলতা, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার চায়,
দারিদ্র্য, দুর্ভিক্ষ, দূষণ, দুর্নীতি, দুর্বৃত্ত ও দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়,
খুন, গুম, হত্যা, ধর্ষণ, অবিচার ও ব্যভিচার থেকে বাঁচতে চায়,
সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থবিরতাকে গতি দিয়ে চায়।

ওরা 'রাজাকারের বাচ্চা', কারণ,

ওরা রাষ্ট্রের নিপীড়ন, প্রতিহিংসা, জুলুম ও বৈষম্যের সাথে লড়তে চায়,
মানুষ হিসাবে ন্যূনতম মৌলিক অধিকার ও ইনসাফ ফিরে পেতে চায়,
এই উদ্ধারহীন, শ্বাসরুদ্ধকর ও বদ্ধ অন্ধকার থেকে বের হতে চায়,
এই ডাকাতপল্লী, দুর্বৃত্তকবলিত শহর ও বন্দীশিবির থেকে মুক্তি চায়।

১১ - ০৪ - ২০১৮
**************

প্রিয়তমা,
তুমি আমাকে আঘাতের পর আঘাত করো,
আমি একটুও কষ্ট পাবো না,
কিন্তু অভিমান করো না।
তোমার অভিমানে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়
সমস্ত বাংলাদেশ।

তোমার অভিমানে গুম হয়ে যাবে
আন্দোলনের কর্মীরা,
তোমার অভিমানে পুলিশের খাদ্য হবে
মেধাবী শিক্ষার্থীরা,
তোমার অভিমানে লাশ হয়ে যাবে
প্রজন্মের তরুণেরা।

প্লিজ, প্রিয়তমা,
আমাকে আঘাত করো, অভিমান করো না।

১১ - ০৪ - ২০১৮
**************

সান্নিধ্যের রজনী
_______
ব্যকুল তিনি হারায় যখন
খাদিজার ভালোবাসা,
প্রভু বলেন সময় হলো
আমার কাছে আসা।

এসো সান্নিধ্যে প্রিয় আমার
এসো কাছে আরশের,
রাঙ্গিয়ে নাও তোমায় তুমি
ছুঁয়ে প্রেম পরশের।

তোমার প্রেমে জগত হবে
ভালোবাসায় ভরা,
নফসে মুতমাইন্না হবে
বিশ্বাসীদের ধরা।

খাদিজার থেকে খোদার তরে
উঠলো প্রেমের স্তর,
তাই তো প্রিয়ার প্রেমে বাঁধি
ভালোবাসার ঘর।

১৪ - ০৪ - ২০১৮
**************

ভালোবাসা নয়তো একটি
বীজগণিতের বই,
হিসাব-নিকাশ করেই তবে
দিবে প্রেমের সই।

ভালোবাসা নয়তো একটি
যুক্তি বুদ্ধির খেলা,
তর্কে তর্কে কেটে যাবে
সকাল সন্ধ্যা বেলা।

ভালোবাসা নয়তো একটি
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,
একটু ভুল হলেই তবে
লাখ টাকার লোকসান।

ভালোবাসা হলো ধৈর্য
মানিয়ে নেয়ার রীতি,
পরস্পরকে মেনে নিলেই
ঘটে প্রেম ও প্রীতি।

১৫ - ০৪ - ২০১৮
**************

আয়েশা (রা)-এর রচিত কবিতা
_____
لنا شمس وللآفاق شمس + وشمسى خير من شمس السماء
وشمس الناس تطلع بعد فجر + وشمسى تطلع بعد العشاء

আমার একটি সূর্য আছে, আকাশেরও আছে সূর্য;
আকাশের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হলো আমার নিজের সূর্য।
মানুষের সূর্য জেগে ওঠে ফজর নামাজ পরে;
আমার সূর্য জেগে ওঠে এশার নামাজ পরে।

২১- ০৪ - ২০১৮
**************

ভালোবাসা ভালো তবে
আছে অনেক পরীক্ষা,
ভালোবাসার পরীক্ষাতে
লাগে অনেক সু-দীক্ষা।

তোমার ভালোবাসায় জ্বলে
নিজেই হবো খাঁটি,
যেমন করে স্বর্ণ পুড়ে
গড়ে গয়না-গাঁটি।

ভালোবাসার প্রমাণ দিতে
আগুনে দিবো ঝাঁপ,
যেমন করে দিয়েছিলেন
ইসমাঈলের বাপ।

২৮ - ০৪ - ২০১৮
**************

প্রজাপতির সৌন্দর্য তার শরীরে হয়,
মানুষের সৌন্দর্য তার হৃদয়ে রয়।

**********

কাজটা আমি করে ফেলবো
ঠিক আগামীকাল,
যদিও আজকে ছিলো আগামী
ঠিক যে গতকাল।


সকাল গিয়ে আসে বিকাল
কালের পরে কাল,
আগামীকাল আসে না তাই
পাল্টে না মোর হাল।


**********

ভালোবেসে পর হয়ে যায়
যখন সকল লোক,
যখন তোমার কেউ দেখে না
দুঃখ, ব্যথা, শোক।


তখন ফেরাও মানুষ থেকে
ভালোবাসার ঝোঁক,
তোমার ভালোবাসা কেবল
প্রভুর সাথেই হোক।


**********

নিজের ভিতর যদি করো
অন্যের দোষ চাষ,
পরের ক্ষতি নেই তো তাতে
নিজের সর্বনাশ।


অর্ধ মানুষ সবসময়ে
দোষে সর্বজনে,
পূর্ণ মানুষ নিজের ত্রুটি
দেখে অন্যজনে।


**********

এই শহরে জানে না কেউ
ভালোবাসার মন্ত্র,
প্রেমের নামে চলে কেবল
ব্যভিচারের যন্ত্র।


এই শহরে সবাই কাঁদে
হাসে না তো কেউ,
ফিরাউনের লোকরা কেবল
করে ঘেউ ঘেউ।

এই শহরে ধুলাও জানে
অত্যাচারের মানে,
মুক্তি কবে আসবে কেবল
আল্লাহ তায়ালা জানে।


**********

শিশুর অধিকার
বেঁচে থাকার,
তার বাবার
নাম জানার।


কিন্তু,

শিশুর জীবন ধ্বংস করে
যিনা ব্যভিচার,
পৃথিবীর বুকে এটাই হলো
জঘন্য অবিচার।


**********

এই করেছি পণ মোরা
এই করেছি পণ,
করবো বিয়ে যাঁদের ঘরে
নেই টেলিভিশন।
যে মেয়েটি দেখে না তো
ভারতীয় সিরিয়াল,
সময় নষ্ট করবে না সে
ধরবে সংসারের হাল।

**********

সুন্দর : যা সত্য
সত্য : যা সুন্দর
সত্য ও সুন্দর : প্রাকৃতিক
মিথ্যা ও কুৎসিত : আবিষ্কৃত

**********




সুন্দরকে ভালোবাসার নাম প্রেম নয়
ভালোবাসাকে সুন্দর দেখার নাম প্রেম

العشق ليس أن تحب الجميل
بل رؤية من تحب جميلا



**********

প্রেম ও স্রষ্টা, এক ও অভিন্ন
অস্তিত্ব আছে, তবু নেই চিহ্ন

**********

কুরবানি মানে,
ভালোবাসার জন্যে
ভালোবাসার বিসর্জন।

কুরবানি মানে,
বিসর্জনের মাঝেই
খুঁজে পাওয়া অর্জন।



কুরবানি মানে
অসীমের পানে
সসীমের গমন।


***

সে বলে:

তুমি তো কবি,
তোমার হাতে এ পাথর কেন?


আমি বলি:

কবি কেবল ভালোবাসায় নত হয়, জুলুমে নয়।


 

***

বিশ্বজিৎ এর লাল রক্তে
এখনো গোলাপ ফুটে
চেতনার শাহবাগে।

***

ঐ নারীটির কান্না, আমি
আজো শুনতে পাই,
দুষ্ট সমাজের চালে, যে
হারিয়েছে প্রিয়তমের ঠাঁই।


[সূত্র - ৫৮: ১]

 


***

তোমার সাথে পাশাপাশি বসার ইচ্ছে আমার নেই,
বসতে চাই মুখোমুখি হয়ে।
জান্নাতের মত করে।
মুখোমুখি বসাই বন্ধুত্ব, চোখাচোখি হয় প্রেম।


[সূত্র – ৫৬:১৬]

 


***

অহংকারে জ্বলে যায়
ভালোবাসার ঘর,
পৃথিবীর সবি আপন
অহংকার-ই পর।

***

প্রিয়তমা,

তোমার পদ্য গদ্যে লিখি বলে,
অ-বুঝেরা কত কটু কথা বলে।


ভালোবাসা দাও না কিছু দিয়ে,
তাঁদের বদ্ধ পাষাণ হৃদয়ে।

 


***

প্রেমের রাজ্যে গড়ে তোলো তোমার স্থান,
গড়ে তোলো নতুন দিন-রাত, নতুন কাল।

دیارِ عشق میں اپنا مقام پیدا کر
نیا زمانہ، نئے صبح و شام پیدا کر


দায়ারে ইশক মে আপনা মাকাম পায়দা কর,
নায়া জামানা নেয়ি সুবহ-ও-সাম পায়দা কর

Create a place for thyself in the realm of Love;
Create a new age, new days and nights.

[আল্লামা ইকবালের ছেলে জাবেদ যখন তাঁর নিকট একটি টেলিফোন চায়, তখন তিনি তাঁর ছেলেকে এটি লিখে পাঠান।]


***

যা অহংকার নয়, তাই প্রেম
অহংকারের অপর নাম বিচ্ছেদ।

অহংকার একটি দেয়ালের নাম
বান্দা ও আল্লাহর মাঝামাঝি যার স্থান।

***

প্রিয় বাংলাদেশ!
তোমার ছেলে হলে গুম;
হারিয়ে যায় মায়ের হাসি,
বাবার সুখ ও বোনের ঘুম।

***

ভালোবাসবে যখন
বলবে না তখন;
প্রভু আছেন হৃদয়ে আমার,
বল, আমি আছি হৃদয়ে তোমার।


- খলিল জিব্রান।

[When you love you should not say, "God is in my heart," but rather, "I am in the heart of God."]


 

***

বৃষ্টি হবার স্বপ্ন বুনছে আমার মেঘগুলো
সেই কবে থেকে, চলছে তো চলছে
তোমার পৃথিবী খুঁজে পাচ্ছে না কোথাও

পৃথিবীগুলো আজকাল বড্ড অহংকারী
ছোট ছোট বৃষ্টিগুলো গ্রহণ করে না কিছুতেই



বৃষ্টি কবুল কর হে পৃথিবী
মেঘের ভারে আকাশ ভেঙ্গে পড়লে
তবে, কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।


***

বিদ্যুৎ-হীন গরমে
সূর্যের কাছে বসে আছ

তুমি
প্রিয় ভূমি।


আমার আকাশের বৃষ্টিগুলো
পাঠিয়ে দিলাম তোমায়।

নতুন প্রাণ ও
নতুন নেতার অপেক্ষায়।


***

ভিতরে জ্ঞানীর যে হৃদয়,
বাইরে তা কোর'আন হয়।

সূত্র - ২৯:৪৯

***

শবে বরাত সর্বজনীন
বাঙালির সংস্কৃতি,
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান এসো
একসাথে পালন করি।


ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে
এসো হে শবে বরাত,
শত্রু মিত্র ভুলে যেতে
এসো হে ক্ষমার রাত।


***

খোদার রাজ্যে প্রবেশ করতে
পারবে কে?
মনের কাবার মূর্তিগুলো
ভাঙবে যে।

***

হৃদয়ের আকাশ তুমি,
যেখানে, যখনি আমি,
চোখ মেলি,
তোমায় দেখি।

***

A × B = AB, যদি হয়,
২ × ৩ = ২৩, কেন নয়?
২ × ৩ = ৬, যদি হয়,
গণিত কি অন্ধ নয়?

***

ভালোবাসা তুমি,
তোমার তরে আমি
তোমার পানে আমি।

ইন্না লিল্লাহি,
ইন্না ইলাইহি
রাজিউন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?

এক ভাইয়া প্রশ্ন করেছেন – “তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?” এ প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় ও দার্শনিক দিক থেকে পৃথিবীতে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, এবং এখনো চলছে। কিন্তু ভাইয়া আমাকে বলেছেন খুব সহজ ভাষায় লেখার জন্যে। অবশ্য, আমি সবকিছু সহজ-সরল করেই লেখার চেষ্টা করি। কারণ, আমি ছোট মানুষ, কঠিন ও প্যাঁচালো লেখা যথাসম্ভব কম পড়ি ও লিখি। যাই হোক, তাকদীরের বিষয়টা আমার কাছে খুবই সহজ একটি বিষয় মনে হয়। এ বিষয়ে আমাদের মনে সাধারণত দু’টি প্রশ্ন জাগে। ১। ‘তাকদীর’ বা ভাগ্য যদি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আগেই নির্ধারিত হয়ে থাকে, তাহলে আমরা আর ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে লাভ কি? অথবা, ২। আমরাই যদি নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে আল্লাহ দ্বারা নির্ধারিত ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে হবে কেন? এ প্রশ্নগুলোর জবাব জানার আগে কিছু উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বোঝার চেষ্টা করব।

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...