সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বাংলা ভাষা মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা

বাংলা ভাষা কি মুসলিমদের না ধর্ম-বিদ্বেষী সেক্যুলারদের? পৃথিবীর সব ভাষাই আল্লাহ তায়ালার। কিন্তু একেক ভাষা একেক জাতীর অধিকারে থাকে। সে হিসাবে বাংলা ভাষা মুসলিমদের অধিকারভুক্ত একটি ভাষা, এখানে ধর্ম-বিদ্বেষী সেক্যুলারদের তেমন কোনো স্থান নেই। ‘স্থান নেই’ মানে হলো, বাংলা ভাষা ধর্ম-বিদ্বেষী সেক্যুলারদের অধিকারভুক্ত নয়। একটু ব্যাখ্যা করে বলি। সেক্যুলারদের জন্ম হলো ফ্রান্সে। সে হিসাবে ফরাসী ভাষা হলো ধর্ম-বিদ্বেষী সেক্যুলারদের প্রধান ভাষা। সেক্যুলারদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা হলো চীনা ভাষা। অন্যদিকে, ইব্রাহীম (আ)-এর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ইসলাম ধর্মের উৎপত্তি হয় মক্কায়। সে হিসাবে আরবি ভাষা হলো মুসলিমদের প্রধান ভাষা। কিন্তু মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা হলো বাংলা ভাষা। তাই, বাংলা ভাষা হলো কেবল মুসলিমদের-ই অধিকারভুক্ত একটি ভাষা। প্রশ্ন করতে পারেন, বাংলা ভাষা মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা হলো কিভাবে? হিসাবটা একেবারে সহজ।

মাদ্রাসায় বিদেশি-হিন্দু কবির গান কেন?

বিদেশি অনেক কবি ও লেখককেই আমরা ভালোবাসি। তাই রবীন্দ্রনাথকেও ভালোবাসি। কিন্তু, রবীন্দ্রনাথের মত একজন বিদেশি-হিন্দু কবির গান গাইলে মুসলিমদের স্বদেশ প্রেম বাড়ে কিভাবে? মাদ্রাসার ছাত্র হিসাবে এটা আমরা বুঝি না। অনেকে বলবেন, তিনি অনেক বড় কবি ছিলেন। ঠিক আছে। তাহলে আসুন, আমরা রূমি, হাফিজ, শেখ সাদি, খলিল জিব্রান, ইউনুস এমরে বা মোহাম্মদ ইকবালের “মুসলিম হ্যায় হাম ওতান হ্যায়” গানটি গেয়ে স্বদেশ প্রেম বাড়াই। তাঁরা সবাই রবীন্দ্রনাথের চেয়েও হাজারগুনে বড় মানের বিদেশি কবি। অনেকে বলবেন, রবীন্দ্রনাথ বিদেশি হলেও তিনি ছিলেন বাংলা ভাষার কবি। ঠিক আছে তাহলে। আসুন, আমরা আমাদের জাতীয় কবি নজরুলের “এক আল্লাহ জিন্দাবাদ” গানটি গেয়ে আমাদের দেশ প্রেম বাড়াই। অথবা, কবি ফররুখের “পাঞ্জেরি, রাত পোহাবার কত দেরি?” গানটি গেয়ে সামনে আগাই। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও দেশের সাথে রবীন্দ্রনাথের চেয়ে নজরুল বা ফররুখদের সম্পর্কই সবচেয়ে বেশি।

সূরা কাহাফ : একটি রাজনৈতিক শিক্ষা

সূরা কাহাফে চারটি ঘটনার বর্ণনা আছে। এই চারটি ঘটনার সাথে জড়িত আছে চার ধরণের ফিতনা এবং তা থেকে মুক্তি পাবার উপায়। ঘটনাগুলো হলো – ১) আসহাবে কাহাফ বা গুহাবাসীদের ঘটক্ষা ২) দুই বাগানের মালিক ও তার বন্ধুর ঘটনা, ৩) মুসা (আ) ও খিজির (আ)-এর ঘটনা, এবং ৪) যুলকারনাইন এর ঘটনা, আর, ফিতনাগুলো হলো – ১) সমাজের ফিতনা, যেখানে ধর্ম ও বিশ্বাস টিকিয়ে রাখা যায় না। ২) সম্পদের ফিতনা, যা দিয়ে মানুষ নিজেকে সর্বাধিকারী মনে করে। ৩) জ্ঞানের ফিতনা, যা দিয়ে মানুষ অহংকার করে। এবং ৪) ক্ষমতার ফিতনা, যা দিয়ে মানুষ অন্যের উপর জুলুম করে। এবার আসুন, এই চারটি ঘটনার সাথে চারটি ফিতনার সংযুক্তি কি এবং এর থেকে মুক্তির উপায় কি, তা সূরা কাহাফ থেকে বিস্তৃতভাবে দেখে নেয়া যাক।

ধর্মকেও প্রোডাক্ট বা পণ্য বানিয়ে বিক্রি করে পুঁজিবাদ

"ধর্মকেও প্রোডাক্ট বা পণ্য বানিয়ে বিক্রি করে পুঁজিবাদ" - এই দাবী কমিউনিস্টদের। তাদের এই দাবীর ভ্রান্তি যেমন আছে, কিছুটা সত্যতাও আছে। এখন, আমি বা আপনি, আমরা কিভাবে বুঝব এটি? কিভাবে বুঝব - ধার্মিক বেশে কোনো পুঁজিবাদী ব্যক্তির খপ্পরে পড়েছি কিনা? কিংবা কিভাবে বুঝব - কমিউনিস্টদের এই দাবী কতটা সত্য এবং কতটা মিথ্যা? জবাব খুব সহজ। সূরা ইয়াসিনের ২০ ও ২১ আয়াত দুটি দেখুন। وَجَاءَ مِنْ أَقْصَى الْمَدِينَةِ رَجُلٌ يَسْعَىٰ قَالَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُوا الْمُرْسَلِينَ “শহরের প্রান্তভাগ থেকে এক ব্যক্তি দৌড়ে এলো। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায় তোমরা রসূলগণের অনুসরণ কর ।” اتَّبِعُوا مَنْ لَا يَسْأَلُكُمْ أَجْرًا وَهُمْ مُهْتَدُونَ “অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন বিনিময় কামনা করে না, এবং তারাই সুপথ প্রাপ্ত ।” কোর’আনে স্পষ্ট যে, ধর্মের পথে যারা মানুষকে আহবান করে, তারা কোনো বিনিময় চায় না। এখন, আপনি যদি কোথাও দেখেন যে,

ছোট্ট একটি সূরা দিয়ে আরবি ভাষা শিখে ফেলুন

ছোট বেলায় কোর'আনের শেষ দশটি সূরা মুখস্থ করার সময় সবচেয়ে বেশি প্যাঁচ লাগতো সূরা কাফিরূনে, তাই নামাজে এ সূরাটা খুব কম পড়তে চাইতাম। কিন্তু পরে বুঝলাম, আরবি ভাষা শেখার জন্যে সূরা ‘কাফিরূন’ চমৎকার একটা উদাহরণ। খুবই ছোট্ট একটি সূরা, মাত্র ৬ আয়াত। قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ - 1 لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ - 2 وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ - 3 وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَا عَبَدْتُمْ - 4 وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ - 5 لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ - 6 অনুবাদ ১. বল, হে কাফেরগণ! ২. আমি তার ইবাদাত করি না, যার ইবাদাত তোমরা কর। ৩. এবং তোমরা তার ইবাদাতকারী নও, যার ইবাদাত আমি করি। ৪. এবং আমি তার ইবাদাতকারী নই, যার ইবাদাত তোমরা করছিলে। ৫. এবং তোমরা তার ইবাদাতকারী নও, যার ইবাদাত আমি করি। ৬. তোমাদের ধর্ম তোমাদের, আমার ধর্ম আমার। এই সূরাটা পড়ার সময় আপনি হয়তোবা ভেবেছেন, কি ব্যাপার? এখানে ‘ইবাদাত’ শব্দটা বারবার ঘুরেফিরে এতবার বলা হচ্ছে কেন? আসলে এখানে কাফিরদের উদ্দেশ্য করে [عبد] বা ‘ইবাদাত’ শব্দমূলটিকে আরবি ভাষার বিভিন্ন ভঙ্গীতে প্রকাশ করা হয়েছে। উদাহরণ – এক আরবি ব্যাকরণে বাক্য দুই

কোর'আনের ভাষা কেন বাংলা নয়?

আপনি আফসোস করেছেন কিনা জানি না, তবে আমি ছোটবেলায় খুব আফসোস করতাম – “আহ!!! কোর’আন যদি বাংলা ভাষায় নাযিল হত!!! কত ভালো হত!!!” কিন্তু আল্লাহ বলছেন, إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ “আমি একে আরবি ভাষায় কোর'আন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার।” [সূরা ইউসুফ, আয়াত – ২] আগে এ আয়াতটা পড়লে আমার মনে একটা প্রশ্ন জেগে উঠত, আমি বাঙালি, আরবি বুঝি না। কিন্তু আল্লাহ বলছেন, আমি আরবি ভাষায় কোর’আন নাযিল করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার। তার মানে কোর’আন কি কেবল আরব ভাষাভাষী মানুষদের জন্যে নাযিল হয়েছিল? এ প্রশ্নটার জবাব অনেক পরে পেয়েছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে, বাধ্য হয়ে যখন চর্যাপদ পড়তে হয়েছিল। কোর’আন নাযিলের প্রায় ৪০০ বছর পর চর্যাপদ লেখা হয়েছিলো, প্রাচীন বাংলা ভাষায়। কমেন্টের ঘরে সেই চর্যাপদের একটা ছবি দিয়েছি। দেখুন তো, পড়তে পারেন কিনা? আচ্ছা, ঠিক আছে। পড়তে না পারলে সমস্যা নেই। আধুনিক বাংলা অক্ষরে চর্যাপদের দুই লাইন এখানে তুলে দিচ্ছি। দেখুন তো, বুঝেন কিনা?

ইবলিশ শয়তানের কি দোষ?

প্রশ্নটা কিছুটা দার্শনিক। কোর’আন নিয়ে দার্শনিকরা প্রায়ই এ প্রশ্নটি করে থাকেন। তারা বলেন, কোর’আনে আছে – وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ أَبَىٰ وَاسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ “আমি যখন আদম কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে বললাম, তারা সবাই সেজদা করল। কিন্তু ইবলিস সেজদা করেনি। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল ।” [সূরা বাকারা, আয়াত – ৩৪] এখানে দার্শনিকদের প্রশ্ন হলো, আল্লাহ তায়ালা কেবল ফেরেশতাগণকে সেজদা করতে আদেশ করেছেন। তাই ফেরেশতাগন সবাই সেজদা করেছে। কিন্তু ইবলিস সেজদা না করার কারণ হলো সে ফেরেশতা ছিল না। সে ছিল জিনদের একজন। সুতরাং, ইবলিসের এখানে কি অন্যায় আছে? সে তো আল্লাহর আদেশ অমান্য করেনি। দার্শনিকদের এ প্রশ্নের উত্তর আছে আল কোর’আনের অন্য একটি আয়াতে।

হার্ট ও মস্তিষ্কের সম্পর্ক

হার্ট ও মস্তিষ্কের সম্পর্ক নিয়ে গতকাল ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার পর একজন ভাইয়া আমাকে ১টি প্রশ্ন ও ২টি মন্তব্য করেছেন। ভাইয়ার প্রশ্ন ও মন্তব্যগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্নটি হলো – “আচ্ছা, হার্টকে আপনি যেভাবে ব্যাখ্যা করেছেন এবং কোরআনের আয়াত দিয়ে যেভাবে উপসংহার টেনেছেন, এর মানে হলো প্রত্যেক ব্যক্তির হার্ট স্বতন্ত্র ও স্বাধীন চিন্তা-চেতনা ও মানসিকতার অধিকারী। এখন তো হার্টের সমস্যা হলে হার্ট প্রতিস্থাপন করা যায়। মনে করুন, একজন নাস্তিক ব্যক্তির হার্ট প্রতিস্থাপন করা হলো একজন আস্তিক রোগীর দেহে। তাহলে কি সেই আস্তিক ব্যক্তি হার্ট প্রতিস্থাপনের পর নাস্তিক হয়ে যাবেন?” প্রথমে দেখুন, ভাইয়ার প্রশ্নটি থেকে দুটি শব্দ তুলে নিলাম। ১ – “ব্যক্তি”, ২ – “ব্যক্তির হার্ট”। এখানে স্পষ্ট যে ব্যক্তি ও ব্যক্তির হার্টের মাঝে পার্থক্য আছে। একজন মানুষ জীবনে যা কিছু করে, তার সমষ্টি হলো ঐ ব্যক্তি। অর্থাৎ, ব্যক্তিত্বের সমষ্টি হলো একজন ব্যক্তি। অন্যদিকে, হার্ট মানুষকে কাজ করার জন্যে বা ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলার জন্যে চিন্তা ও শক্তি যোগায়।

বিজ্ঞান বলে হৃদয়ের কথা

একটা মিথ্যা ও বানোয়াট গল্পও যদি বিজ্ঞানের নামে চালিয়ে দেয়া যায়, আধুনিক মানুষরা সেটাকে কোনো প্রশ্ন না করেই বিশ্বাস করে ফেলেন। এমনি একটি কাল্পনিক গল্প, যা বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে চলছে গত ৩০০ বছর ধরে। গল্পটির নাম – ‘মস্তিষ্ক’। খুব সংক্ষেপে গল্পটা হলো – “মানুষের একটা ব্রেইন বা মস্তিষ্ক আছে। এই মস্তিষ্ক দিয়ে মানুষ তার যাবতীয় চিন্তা-ভাবনা, আবেগ-অনুভূতি, বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই মস্তিষ্ক দিয়েই মানুষ তার চিন্তার কাঠামো তৈরি করে। এবং জীবনের প্রয়োজনে এই মস্তিষ্ক দিয়েই মানুষ বুদ্ধি ও আবেগ উৎপন্ন করে। শরীরের সবচেয়ে মূল্যবান অঙ্গ এবং কেন্দ্রবিন্দু হলো এই মস্তিষ্ক। এই মস্তিষ্ক-ই হলো শরীরের রাজা, এবং অন্যান্য সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন হৃদয়, কান, চোখ ও চর্ম ইত্যাদি সব হলো মস্তিষ্কের দাশ ও প্রজা।” গল্পটা এখানেই শেষ না। বাকি অংশ বলছি, তবে তার আগে এই গল্পের একটু ইতিহাস বলে রাখি। মানব ইতিহাসের শুরু থেকে গত তিন শত বছরের আগ পর্যন্ত জ্ঞানের যত বই-পুস্তক ছিল, কোথাও এমন কোনো কাল্পনিক ও বানোয়াট গল্পের সন্ধান খুঁজে পাওয়া যায় না। যেদিন থেকে পৃথিবীতে ‘আধুনিক বিজ্ঞান’ নামের একটি কুসংস্কার চালু হয়েছে, সেদিন

কোর'আনের সংখ্যাতাত্ত্বিক মুজিযা নিজে নিজেই যাচাই করুন!

কোর’আনকে সংখ্যা দিয়ে বিশ্লেষণ করার প্রয়োজনটা কি? –এ প্রশ্ন অনেকেই করেন। আসলে আমাদের বর্তমান যুগে, চোখের সামনে আমরা যত প্রযুক্তি দেখছি, সব কিছুই সংখ্যার দ্বারা পরিচালিত। সব কিছুর ভাষা-ই সংখ্যা। কম্পিউটার বা মোবাইলের মত সকল প্রযুক্তি-ই আমাদের বাংলা বা ইংরেজি ভাষাকে চিনে না, সে চিনে কিছু বাইনারি সংখ্যাকে। আমরা যা-ই লেখি না কেন, সে এটাকে বাইনারি সংখ্যায় কনভার্ট করে নেয়। এই যে ফেইসবুকে বাংলায় এই লেখাটি পড়ছেন, এটাও কিন্তু আসলে কিছু সংখ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। একটা যুগ ছিল সাহিত্যের। সে যুগে সাহিত্যকে চ্যালেঞ্জ করে কোর’আন নিজেই নিজের মুজিযা প্রকাশ করেছে। এরপর একটা যুগ ছিল জ্যোতির্বিদ্যার, সেই যুগে কোর’আন জ্যোতির্বিদ্যাকে চ্যালেঞ্জ করে নিজের মুজিযা প্রকাশ করেছে। এভাবে একের পর এক চলতে থাকে। কিন্তু, বর্তমান যুগ হলো সংখ্যার যুগ। সব কিছুকেই সংখ্যা দিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়। তাই সংখ্যাতত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ করে কোর’আন এখন নিজেই নিজের মুজিযা প্রকাশ করছে। তো চলুন, হাতের কাছে কাগজ-কলম থাকলে, নিজে নিজেই কোর’আনের একটি সংখ্যাতাত্ত্বিক মুজিযা বের করে ফেলি। খুব সহজে।

মানুষের তিনটি স্তরবিন্যাস

আল কোর’আনে বর্ণিত মানুষের চরিত্র নিয়ে গত সপ্তাহ একটা স্ট্যাটাস দেয়ার পর একজন ভাই আমার এক প্রিয় স্যারের কাছে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বললেন – “ইসলামে কি মানুষের ব্যাপারে শুধু নেতিবাচক বক্তব্যই আছে? সুন্দর সুন্দর অনেক উদাহরণ বা রহমতের কোথাও তো আছে। এগুলোর উল্লেখ করলে বরং মানুষ তা ভালোভাবে নিত, আমল করতে পারত।” আসলে, ভাইয়ার কথাটা ঠিক। তিনি দারুণ প্রশ্ন তুলেছেন। দেখুন, আল কোর’আন কিভাবে এ বিষয়টির চমৎকার ব্যাখ্যা করছে। মানুষকে বুঝানোর জন্যে আল কোর’আনে অনেকগুলো শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন – বাশার [الْبَشَر ] নাস [النَّاس ], এবং ইনসান [ الْإِنْسَان ] এ তিনটি শব্দের অর্থই মানুষ। কিন্তু তিনটি শব্দ দ্বারা একই চরিত্রের মনুষকে বোঝানো হয় না। অর্থৎ, প্রত্যেকটি শব্দ-ই আলাদা আলাদা চরিত্রের মানুষকে নির্দেশ করে। আল কোর’আনের মুজেযা এটাই। কোর’আনে একই জিনিসের অনেকগুলো সমর্থক শব্দ থাকলেও প্রত্যেকটি শব্দের আলাদা আলাদা সংজ্ঞা থাকে। প্রতিটি শব্দ-ই ইউনিক। ফলে, কোর’আনের একটি শব্দের স্থানে অন্য কোনো সমর্থক শব্দ বসানো যায় না। বাশার, নাস এবং ইনসান – এ তিনটি শব্দ মানুষের তিনটি স্তরবিন্যাসকে নির্দেশ করে। মানুষের এই তিনটি স

আল কোর'আনের আলোকে মানুষের বৈশিষ্ট্য

আল কোর’আনে মানুষের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ রয়েছে। এগুলোকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়। এক – শারীরিক বৈশিষ্ট্য এবং দুই – চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। মানুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলো হলো – ১. সুন্দর আকৃতি বিশিষ্ট। لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ “আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে।” [সূরা ৯৫/তীন – ৪] ২. দুর্বল প্রকৃতির। [সূত্র: সূরা ৪/নিসা - ২৮] ৩. শ্রম নির্ভর। [সূত্র: সূরা ৯০/বালাদ -৪] আর, মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো হলো –

কোর'আনের একটি সূরার সাথে পরবর্তী সূরার সম্পর্ক

আল কোর’আন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটা চেইনের মত; এর একটি আয়াত অন্য একটি আয়াতের সাথে সংযুক্ত, এবং একটি সূরা অন্য একটি সূরার সাথে সম্পর্কিত। আল কোর’আনের অন্যতম দুটি বৈশিষ্ট্য হলো – - প্রত্যেকটি সূরার প্রথম আয়াতগুলোর সাথে শেষের আয়াতগুলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এবং - কোর’আনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকটি সূরা একটির সাথে অন্যটি সম্পর্কিত। কিছু উদাহরণ দিচ্ছি। সূরা ফাতিহার প্রথম ও শেষ আয়াতের সম্পর্ক।  الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ [সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।] صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ [যাদেরকে তুমি অনুগ্রহ দান করেছ, সে সমস্ত লোকের পথ আমাদের দেখাও। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার ক্রোধ নিপতিত হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।] দেখুন, সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত হলো আল্লাহর উপর মানুষের সন্তুষ্টির বর্ণনা, এবং শেষ আয়াতটি হলো মানুষের উপর আল্লাহর সন্তুষ্টির বর্ণনা। সূরা ফাতিহার সাথে সূরা বাকারার সম্পর্ক।  اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ “আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর।” [সূরা ফাতিহা – ৫] ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ

বক্ষ প্রশস্ত হওয়ার বিজ্ঞান

ছোট বেলায়, টেবিলে পড়তে বসে শুরুতে একটি দোয়া না পড়লে আব্বু-আম্মু বকা দিতেন। দোয়াটা হলো – رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِي يَفْقَهُوا قَوْلِي অর্থাৎ, “হে আমার প্রতিপালক! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন। আমার কাজ সহজ করে দিন। এবং আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।” [আল কোর’আন, ২০/সূরা তাহা, আয়াত ২৫-২৮] মূলত, এ দোয়াটি হজরত মূসা (আ)-এর একটি দোয়া। মূসা (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা যখন ফিরাউনের নিকট যাওয়ার আদেশ দিলেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে এই দোয়াটি করেছিলেন। তো, ছোট থেকে যখন আমি আরেকটু বড় হলাম, এবং যখন এই দোয়াটির অর্থ বুঝলাম, তখন মনে একটি প্রশ্ন আসলো – ‘আচ্ছা, বক্ষ প্রশস্ত হওয়ার সাথে পড়াশুনার সম্পর্ক কি?”

বাংলা সাহিত্যে "স্বামী-স্ত্রী" সমস্যা, এবং কোর'আনের সমাধান

পর্ব এক ‘স্বামী-স্ত্রী’ শব্দ জোড়াটি নিয়ে বাংলা সাহিত্যে প্রচুর তর্ক-বিতর্ক আছে। এ শব্দ দুটি যেমন আপত্তিজনক, তেমনি বিপদজনকও বটে। বেগম রোকেয়া, ফরহাদ মজহার সহ অনেকেই এ শব্দগুলো নিয়ে আপত্তি তুলেছেন, বিতর্ক করেছেন এবং সমাধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলেও সত্য যে, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ‘স্বামী-স্ত্রী’ শব্দের সঙ্কট এখনো প্রকট। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ‘স্বামী-স্ত্রী’ শব্দ জোড়াটি নিয়ে যদিও এখনো কেউ কোনো মীমাংসায় যেতে পারেনি, কিন্তু, আপনি ইচ্ছা করলেই কোর’আন থেকে ‘স্বামী-স্ত্রী’ শব্দে র সঙ্কট নিরসন করতে পারবেন। প্রথমে আসুন, দেখা যাক, বাংলা সাহিত্যে ‘স্বামী-স্ত্রী’ শব্দ জোড়াটি এবং এর সমর্থক শব্দগুলো কেন আপত্তিজনক? বাংলা একাডেমীর অভিধানে, ‘স্বামী’ শব্দের অর্থ হলো – ১ প্রভু; মনিব; পতি; খসম; ভর্তা। ২ মালিক; অধিপতি। ৩ পণ্ডিত; সন্ন্যাসীর উপাধিবিশেষ। এবং একই অভিধানে, ‘স্ত্রী’ শব্দের অর্থ হলো – ১ জায়া; পত্নী; বেগম; বিবি; বিবি; বধূ। ২ নারী; রমণী; কামিনী। ৩ মাদি। সুতরাং, এখানে দেখতেই পাচ্ছেন যে, ‘স্বামী’ ও ‘স্ত্রী’ শব্দ দুটির মাঝে শব্দগত কোনো সাদৃশ্য নেই, অর্থের কোনো সঙ্গতি নেই, এবং মর্যাদাগত কোন

একজন সত্য সন্ধানী ব্যক্তি কি বস্তুবাদী হতে পারে?

ফেইসবুকে রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছেন একজন ভাই। নাম – ‘সত্য সন্ধানী বাস্তববাদী’। নামটি দেখে খুব অবাক হলাম। কারণ, তিনি কিভাবে একজন ‘সত্য সন্ধানী’ হয়ে আবার ‘বাস্তববাদী’ও হতে পারলেন? আসলে, ঐ ভাইয়াটির দোষ নেই। সমস্যা আমাদের বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের – তাঁরা বাংলা ভাষার সঠিক প্রয়োগ করেন না। ফলে, ঐ ভাইয়াটির মত আরো অনেক ভাইয়া আছেন, যারা নিজেদেরকে একদিকে ‘সত্য সন্ধানী’ ভাবেন, আবার অন্যদিকে ‘বাস্তববাদী’ও ভাবেন। বাংলা ভাষায় ‘বস্তুবাদ’ ও ‘বাস্তববাদী’ ধারণাটি যেমন সমস্যাজনক, এর বিপরীতে ‘ভাববাদ’ ধারণাটিও সমান সমস্যাজনক। এই দু’টি ছোট বৃত্তের বাইরে সত্য অবস্থান করে। বস্তু, বস্তুবাদ ও বাস্তববাদী সম্পর্কে আজকে একটু বলি। অন্যদিন, ইনশাল্লাহ ‘ভাব’ ও ‘ভাববাদ’ নিয়ে বলা যাবে। ‘বস্তু’ শব্দটি থেকে এসেছে ‘বাস্তব’,‘বাস্তববাদী’ ও ‘বস্তুবাদ’ শব্দগুলো। কোনো কিছু সত্য বলে প্রমাণিত হলে বাংলা ভাষায় বলে ‘বাস্তব’। এবং ‘বাস্তবতা’কে যিনি জীবনের পথ হিসাবে গ্রহণ করেন, তাকে বলা হয় ‘বাস্তববাদী’। এ কারণে হয়তো, ঐ ভাইয়াটি মনে করে ছিলেন যে, বাস্তববাদী মানে সত্যবাদী।

বিজ্ঞান কি অনেক এগিয়ে গেছে?

কেউ কেউ বলেন – ‘বিজ্ঞান আজ অনেক এগিয়ে গিয়েছে’। আমার মনে হয়, এভাবে না বলে আমাদের বলা উচিত – ‘বিজ্ঞান আজো অনেক পিছনে পড়ে রয়েছে’। কেন এ কথা বলেছি? একটা উদাহরণ দিচ্ছি। কোর’আনের শুরুতেই বলা হয়েছে – যারা ‘অজানা’ বা ‘গায়েব’কে বিশ্বাস করে, তাঁরা সফল। কিন্তু, সেকেলে উগ্র-মূর্খ বিজ্ঞানীরা বলতেন, ‘আরে বেটা, বিশ্বজগতে অজানা-অদৃশ্য বলে কিছুই নেই; সব-ই তো আমাদের জানা, সবই তো আমাদের দেখা। তোরা কি-সব অদৃশ্য বেহেস্ত-দোজখ-জিন-ফেরেশতার কথা বলছিস? এসব এখন রাখ, এখন বিজ্ঞানের যুগ। আমরা তোদের ঐ-সব অদৃশ্য জগত বিশ্বাস করি না’। এরপর, ঐসব মূর্খ বিজ্ঞানীদের পাল্লায় পড়ে আমাদের বাঙালি কবি-সাহিত্যিকরাও তখন লিখতে শুরু করলেন – “উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু সব তোমাদের জানা আমরা শুনেছি সেখানে রয়েছে জিন ,পরী, দেও, দানা।” ---সুফিয়া কামাল, আজিকার শিশু। কিন্তু, কয়দিন আগে ঘটলো ভিন্ন ঘটনা – এসব মূর্খ-বিজ্ঞানীদের হুঁশ ফিরে আসতে শুরু করলো। তারা তাদের আশেপাশের ঘুমন্ত বিজ্ঞানীদের জাগাতে শুরু করলেন। এবং বললেন – ‘আরে... আরে... শুনছ...? তোমরা তো এ বিশ্ব জগত সম্পর্ক কিছুই জানো না’।

পৃথিবীতে বিজ্ঞানের যত বই আছে, সবগুলো-ই ভুল

জানি, আপনি হয়তো আমার কথা বিশ্বাস করবেন না। এ কারণেই, কাকু’র একটা লেকচার কমেন্টে দিয়ে দিলাম। না, না। তিনি আমার কাকা না। ভদ্রলোকের নাম –মিচিও কাকু [Michio Kaku]। তিনি অ্যামেরিকার নিউ ইয়র্ক সিটি কলেজের একজন প্রফেসর, এবং বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় একজন পদার্থ বিজ্ঞানী। বাংলার ‘জাফর ইকবাল’ নিয়মিত এই ভদ্রলোকের লেখা চুরি করেন বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ রায়। তো, কাকু বলছেন যে, ‘পৃথিবীতে পদার্থ বিজ্ঞানের যত বই আছে, প্রতিটি বই-ই ভুল’। কেন বললেন? কাকু’র ব্যাখ্যাটা শুনুন। তিনি বলছেন – পৃথিবীর প্রতিটি বিজ্ঞানের বইয়ে লেখা রয়েছে যে, ‘বিশ্বজগতের সবকিছু পরমাণু দিয়ে গঠিত’। – এই কথাটার চেয়ে বড় কোনো ভুল পৃথিবীতে আর নেই। বিশ্বজগতে প্রধানত দুই ধরণের বস্তু এবং দুই ধরণের শক্তি আছে। আমাদের এই দু’চোখ দিয়ে আমরা যা কিছু দেখতে পারি, তা হলো মোট বিশ্বজগতের ০.০৩% ভাগ। বাকি ৯৯.৯৭% ভাগ বস্তু ও শক্তি কোনো বিজ্ঞানীর দ্বারাও দেখা ও বোঝা সম্ভব না। এগুলোকে বলা হয় – অদৃশ্য বস্তু এবং অদৃশ্য শক্তি। মহাবিশ্বের এই ‘অদৃশ্য বস্তু’ এবং ‘অদৃশ্য শক্তি’কে পৃথিবীর সকল বিজ্ঞানের বইয়ে অস্বীকার করা হয়েছে। তাই, পৃথিবীতে বিজ্ঞানের সকল বইপুস্তক

পাল্টে যাবার ইতিহাস

ইউরোপের বড় ভুলগুলোর মধ্যে একটি ছিল, তারা ‘জর্দানো ব্রুনো'র মতো দার্শনিক ও বিজ্ঞানীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করতো। কিন্তু এরপর, ইতিহাস ও রাজনীতি অনেক পাল্টে গেল। এখন ‘জার্দানো ব্রুনো’রাই হলেন ইউরোপের মুক্ত চিন্তার আদর্শ। ঠিক একইভাবে, জর্দানো ব্রুনো বিজ্ঞান ও দর্শনের নামে অনেক ভুল কথা প্রচার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বিশ্বজগত অসীম নয়, সসীম। কিন্তু এরপর, বিজ্ঞান ও দর্শন অনেক পাল্টে গেল। আস্তিক-নাস্তিক সবাই এখন বলছেন, আমাদের এই বিশ্বজগত অসীম রহস্যে ঘেরা। ঠিক একইভাবে, আমাদের ইতিহাসে যাদের কোনো অবদান ছিল না, তারা এখন বাংলাদেশের রাজা। কবিতা-গল্প-উপন্যাস সব এখন তাদের হাতে। আবার, এমন একদিন আসবে, যখন বর্তমানের নির্যাতিতরা হবেন ভবিষ্যতের রাজা। তখন কবিতা-গল্প-উপন্যাস ও ফেব্রুয়ারি থাকবে তাদেরই হাতে। প্রয়োজন ধৈর্যের। জগতে আল্লাহ কাউকে অতিরিক্ত বেড়ে যেতে দেন না। তিনি বলেন - ثُمَّ بَدَّلْنَا مَكَانَ ٱلسَّيِّئَةِ ٱلْحَسَنَةَ حَتَّىٰ عَفَوا۟ وَّقَالُوا۟ قَدْ مَسَّ ءَابَآءَنَا ٱلضَّرَّآءُ وَٱلسَّرَّآءُ فَأَخَذْنَـٰهُم بَغْتَةًۭ وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ "এরপর, আমি অকল্যাণকে পরিবর্তন করি কল্যাণের দ্বারা।

গড হেলমেট দিয়ে কি নাস্তিক কে আস্তিক বানানো যায়?

একবার, বিশ্বকুখ্যাত নাস্তিক রিচার্ড ডকিন্স-কে বিজ্ঞানী মাইকেল পের্সিঙের তার অফিসে ডেকে আনলেন। তাকে বললেন, আপনি তো বিজ্ঞানে বিশ্বাস করেন; তাই না? ডকিন্স : হুম। পের্সিঙের : তাহলে আমরা দেখব, বিজ্ঞানের সাহায্যে আপনার মস্তিষ্ককে পরিবর্তন করে আপনাকে নাস্তিক থেকে আস্তিক বানাতে পারি কিনা? ডকিন্স : ওকে। উল্লেখ্য, মাইকেল পের্সিঙের একজন নিউরো বিজ্ঞানী। তিনি এবং বিজ্ঞানী স্ট্যানলি করেন, উভয়ে একটি হেলমেট আবিষ্কার করেন। যার নাম – ‘গড হেলমেট’। এই ‘হেলমেট’টি দিয়ে তারা পরীক্ষা করেন যে - মানুষের মস্তিষ্কের কোন জায়গায় তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের অনুভূতি জাগ্রত হয়। তারা মানুষের মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরণের ধর্মীয় অনুভূতির সিগন্যাল পাঠিয়ে স্রষ্টায় বিশ্বাস তৈরির চেষ্টা করেন। তো, তারা ডকিন্স-কে একটি বদ্ধ ঘরে প্রবেশ করিয়ে তার মাথায় ‘গড হেলমেট’টি লাগিয়ে দিলেন। ডকিন্সের চোখ বন্ধ করে দিলেন। এবং ডকিন্সের রুম থেকে সবাই বের হয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন।

মিচিও কাকু ও স্টিফেন হকিং : বিশ্বাস ও অবিশ্বাস

বিজ্ঞানমনস্ক অবিশ্বাসীদের কাউকে যদি আপনি জিজ্ঞেস করেন, ‘ভাই, স্টিফেন হকিং-কে চিনেন?’ প্রশ্ন শুনেই তিনি চেয়ার থেকে লাফ দিয়ে উঠে বলবেন, ‘আরে, মিঞা, চিনি না মানে...। উনারে না চিনলে তো আপনার জীবনের ষোল আনাই মিছে’। এরপর, যদি আবার জিজ্ঞেস করেন, ‘ভাই, মিচিও কাকু-কে চিনেন?’ তিনি একটা শুকনা কাশি দিয়ে বলবেন, ‘কোন গ্রামের ‘মিস্ত্রী চাচা’র কথা বলছেন?’ আসলে, বিজ্ঞানমনস্ক বাঙালিরা স্টিফেন হকিং-কে খুব ভালোভাবে চিনলেও মিচিও কাকু-র নামও জানেন না অনেকেই। অথচ, দুই জনই বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানে অবদানের ক্ষেত্রে মিচিও কাকু-র অবদান স্টিফেন হকিং-এর চেয়ে অনেক বেশি। মিচিও কাকু হলেন ‘স্ট্রিং তত্ত্বের’ কো-ফাউন্ডার, যা অতীতের বিগ ব্যাং তত্ত্বকে পিছনে ফেলে বর্তমান বিজ্ঞানে বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে। অবিশ্বাসী বাঙালিরা ব্যতীত, বিশ্বের অন্য মানুষদের কাছে, স্টিফেন হকিং এর চেয়ে মিচিও কাকু অনেক বেশি জনপ্রিয়। নিউ ইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার বইয়ের তালিকায় সাধারণত কোনো বিজ্ঞানের বই পাওয়া যায় না। কিন্তু সেখানেও মিচিও কাকু-র বিজ্ঞান বিষয়ক তিনটি বই বেস্টসেলার হয়েছে। অথচ, সেই তালিকায় স্টিফেন হকিং-এর নাম-গন্ধও নেই। মিচিও কা

গার্লফ্রেন্ড থাকলে সমস্যা কি?

মেয়ে বন্ধু নিয়ে চিন্তা করলে আর যাই হোক না কেন, বড় কোনো জ্ঞানী বা বিজ্ঞানী হওয়া যায় না। এ কথাটা আমি বলিনি, বলেছেন – বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন। আমাদের যেমন দু’একজন খারাপ বন্ধুবান্ধব থাকে, নিউটনেরও এমন দু’একজন খারাপ বন্ধু ছিল। একবার, তারা নিউটনকে অনেক বুঝিয়ে-শুনিয়ে একটি মদের হাউজে নিয়ে যায়। সেখান কিছু খারাপ মেয়েও ছিল। নিউটন অনেক কষ্টকরে কিছুক্ষণ থাকলেন। কিন্তু, বের হয়ে এসে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন – ‘তিনি আর কখনো ঐসব খারাপ বন্ধুবান্ধবদের সাথে চলবেন না, এবং কখনো আর ঐসব মদের হাউজে প্রবেশ করবেন না’। কারণ হিসাবে নিউটন বলেছিলেন, ‘ঐসব খারাপ স্থানে গেলে তার পড়াশুনা ও চিন্তা-ভাবনা সব একেবারেই ধ্বংস হয়ে যায়’। এরপর, নিউটন ঐসব খারাপ বন্ধুদের সঙ্গ ত্যাগ করে পড়াশুনায় ও ধর্ম পালনে মনোযোগী হন। কারণ, নিউটন ছিলেন খুবই ধার্মিক একজন মানুষ। নিউটন সবসময় বলতেন –

ডিভাইন সিক্রেট বা সত্য লাভ করার উপায়।

গৌতম ছিলেন বিশাল ধন-সম্পদ ও অট্টালিকার মালিক। কিন্তু, তিনি তার সম্পদ দিয়ে সত্য খুঁজে পাননি। তাই চলে গেলেন বাগানে, ‘বোধি’ গাছের নিছে। সত্য পেয়ে ফিরে আসলেন ‘গৌতম বুদ্ধ’ হয়ে। আর, ঐ বোধি গাছটির নাম হয়ে গেল – ‘জ্ঞানের গাছ’। নিউটন ছিলেন বিশাল লাইব্রেরী ও জ্ঞানের মালিক। কিন্তু, তিনি তার জ্ঞান দিয়ে সত্য খুঁজে পাননি। তাই চলে গেলেন বাগানে, ‘আপেল’ গাছের নিছে। সত্য পেয়ে ফিরে আসলেন ‘বিজ্ঞানী নিউটন’ হয়ে। আর, ঐ আপেল গাছটি হয়ে গেল – ‘বিজ্ঞানের প্রতীক’। বোধি গাছ বা আপেল গাছ, সবি আল্লাহর নিদর্ শন। সত্য পেতে হলে আল্লাহ তায়ালার এসব নিদর্শনের কাছাকাছি যেতে হয়, এবং তাকে ভালোভাবে বুঝতে হয়। কেবল অর্থ-সম্পদ ও জ্ঞানের উপর ভর করে সত্য পাওয়া যায় না। প্রশ্ন হলো, আমরা কিভাবে আল্লাহর নিদর্শনগুলো বুঝতে পারব? দুই ভাবে। এক – সরাসরি কোর’আন থেকে আল্লাহর নিদর্শনাবলী গবেষণা করার মাধ্যমে। যেমন আল্লাহ বলেছেন - المر تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ وَالَّذِي أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ الْحَقُّ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يُؤْمِنُونَ "আলিফ-লাম-মীম-রা। এগুলো কোর’আনের আয়াত বা নিদর্শন। তোমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা কিছু তোম

আমার ফেইসবুক নীতিমালা

ফেইসবুককে কেউ হৃদয় দিয়ে ভালোবাসলে দেখবেন, দুঃখ-রাগ-ক্ষোভ-বিতর্ক এগুলো আপনার নিত্য দিনের সঙ্গী হয়ে যাবে। কিন্তু, তবুও, যারা ফেইসবুক’কে হৃদয় দিয়ে ভালোবেসে ফেলেছেন, কিংবা, যারা ফেইসবুক’কে নিজেদের হার্ট মনে করেন, তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা উচিত। দায়িত্বটি হলো – হার্ট যেমন শরীরের খারাপ রক্তগুলোকে অক্সিজেনের সাহায্যে ভালো রক্ততে পরিবর্তন করে, ফেইসবুকেও তুলনামূলক খারাপ বন্ধুদেরকে লিস্ট থেকে সরিয়ে দিয়ে ভালো বন্ধুদেরকে গ্রহণ করতে হয়। সহজ কথায়, যারা ফেইসবুক-হৃদয় ও সমাজকে কলুষিত করে, তাদেরকে ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে বাদ দিতে হয়। এবং নতুন ভালো বন্ধুদের যুক্ত হবার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হয়। প্রশ্ন হলো, কারা হৃদয়কে কলুষিত করে? উত্তরটা কোর’আনে দেখুন। كَذَٰلِكَ يَطْبَعُ اللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِ الَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ “যাদের জ্ঞান নেই, এমনিভাবে আল্লাহ তাদের হৃদয়ে মোহরাঙ্কিত করে দেন।” [সূরা ৩০/রূম – ৫৯] অর্থাৎ, যারা ফেইসবুকে ও সমাজে অযথা, অযৌক্তিক ও মূর্খের মত আচরণ করে, তারাই হৃদয় ও সমাজকে কলুষিত করে। সুতরাং, তাদেরকে দূরে সরিয়ে দেয়াই হৃদয়ের জন্যে নিরাপদ ও উত্তম। যোজন-বিয়োজনের এ দায়িত্বটি বছরে এক

স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছে?

অবিশ্বাসীগন বলেন, “স্রষ্টা মানুষকে সৃষ্টি করেনি, বরং মানুষ-ই স্রষ্টাকে সৃষ্টি করেছে।” হুম। তাদের কথা ঠিক। মানুষ অসংখ্য ঈশ্বরকে সৃষ্টি করেছে। যেমন, কেউ কৃষ্ণকে ঈশ্বর বানিয়ে পূজা করে। কেউ গৌতম বুদ্ধকে মহাজাগতিক স্রষ্টা ভেবে পূজা করে। কেউ ঈসা (আ)-কে আল্লাহর পুত্র বলে পূজা করে। কেউ আধুনিক বিজ্ঞানের পূজা করে। কেউ সম্পদের পূজা করে। কেউ জ্ঞানের পূজা করে। কেউ ভাস্কর্যের পূজা করে। কেউ শহীদদের স্তম্বকে পূজা করে। মানুষ এভাবে ইতিহাসে অসংখ্য স্রষ্টাকে সৃষ্টি করেছে এবং তার পূজা করছে। তাই, অবিশ্বাসীদের কথা কিছুটা ঠিক। তবে, মানুষ যে-সকল স্রষ্টাকে সৃষ্টি করতে পারে, আমরা তাদের ইবাদাত করি না। আবার, আমরা যে স্রষ্টার ইবাদত করি, মানুষ তাঁকে সৃষ্টি করতে পারে না। পার্থক্যটি এখানে সুস্পষ্ট।

প্রেম ও বিয়ে : সমস্যা ও সমাধান

বড় ভাই ও বন্ধুদের মাঝে যাদের ‘প্রেম-বিয়ে’র গল্প আমাকে শুনতে হয়েছে, সবগুলো মোটামুটি একই। ছেলে-মেয়ে দু’জন দুজনকে দেখে পছন্দ হয়েছে। কিছুদিন প্রেম করেছে। এরপর, মেয়ের পরিবার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিতে চাইলো। কিন্তু ছেলে তখনো বেকার, পড়াশুনা করে। বেকার ছেলের কাছে মেয়ের পরিবার কোনোভাবেই মেয়ে বিয়ে দিবে না। কারণ, ছেলে বিয়ে করে মেয়েকে রাখবে কোথায়? খাওয়াবে কোত্থেকে, এবং পরাবে কি? সুতরাং, ছেলে-মেয়ের এ সম্পর্ক কোনো ভাবেই মেনে নেয়া হবে না – এটাই মেয়ের পরিবারের শেষ সিদ্ধান্ত হয়। তারপর, তারা দু’জন পালিয়ে বিয়ে করে ফেলেন। এখন দুই পরিবারের কেউই এ বিয়ে মেনে নিচ্ছে না। - এ সমস্যাটি আমাদের সমাজে প্রচুর। বন্ধু হিসাবে আপনি যদি বন্ধুর পক্ষে কথা বলেন, তাহলে বন্ধুর পরিবার আপনাকে খারাপ বলবে। অন্যদিকে, আপনি যদি বন্ধুর পরিবারের পক্ষে কথা বলেন, তাহলে আপনার প্রিয় বন্ধুকে আপনি চিরতরে হারাতে হবে। সুতরাং, এ ক্ষেত্রে সমাধান কি? কেউ কেউ হয়তো বলবেন, যেহেতু তারা প্রেম করে বিয়ে করেছে, সুতরাং তাদের পক্ষে না যাওয়া-ই ভালো। আবার, কেউ কেউ হয়তো বলবেন, তারা যেহেতু বিয়ে করেই ফেলেছে, সুতরাং পরিবারের উচিত এই বিয়ে মেনে নেয়া। আসলে, এ ক্ষেত্রে

নিউটনের মত হতে চাইলে...

আপনার বয়স যদি ১৯ –এর কম হয়, তাহলে আপনার সম্ভাবনা আছে; আপনি নিউটনের মত জ্ঞানী হতে পারবেন। না, মজা করছি না। সত্যি বলছি। নিউটনের বয়স যখন ১৯ ছিল, তখন তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন – জীবনে আর কখনো কোনো পাপকাজ করবেন না। কেবল ‘ইনশাল্লাহ’ বলেই তিনি থেমে যাননি। তাঁর জ্ঞান হবার পর থেকে ১৯ বছরের আগ পর্যন্ত তাঁর দ্বারা যতগুলো অন্যায় ও পাপকাজ হয়েছে, তিনি সবগুলোর একটা তালিকা তৈরি করলেন। এরপর, ঐ তালিকাটি ধরে তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন যে, জীবনে আর কখনো এই পাপ কাজগুলো তিনি দ্বিতীয়বার করবেন না। এ কারণেই, গান-বাজনা, পার্টি করা, আড্ডা মারা এসব তিনি পছন্দ করতেন না। খারাপ বন্ধুদের সাথে কোথাও ঘুরতে যেতেন না, এবং সবসময় খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকতেন। নিউটন মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন, জ্ঞান ও কল্যাণের পথে পাপকাজ বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

বিজ্ঞান ও মূর্তি পূজা

স্যার আইজ্যাক নিউটন যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনি নিশ্চিত হেফাজতে ইসলামের এই আন্দোলনে যোগদান করতেন। কারণ, হেফাজতে ইসলাম যেমন মূর্তি ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে, নিউটনও তাঁর সারাজীবন মূর্তি ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "Idolatry is a more dangerous crime because it is apt by the authority of Kings & under very specious pretenses to insinuate itself into mankind." Source: Isaac Newton, Keynes Ms. 7, King's College, Cambridge, UK অর্থাৎ, “মূর্তিপূজা হলো সবচেয়ে বিপদজনক একটি অপরাধ। এটি রাজা-বাদশাহ বা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাকে পুঁজি করে, মানবজাতির সাথে কটাক্ষ করার জন্যে খুবই সুন্দর একটি ভণ্ডামি”। - স্যার আইজ্যাক নিউটন। এমন দু’এক লাইন কেবল নয়, মূর্তি ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে শত-শত পৃষ্ঠা লিখেছিলেন তিনি। প্রশ্ন হলো, নিউটন কেন মূর্তি ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে এত সোচ্চার ছিলেন?

কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি

কওমি মাদ্রাসায় পড়ার সৌভাগ্য হয়নি, তাই অনেক কিছুই বুঝি না। তবে, মনে হয়, কওমি মাদ্রাসাকে সরকারীকরণ করলে অনেক ভালো হবে। কারণ, এক। সরকারি পদ্ধতি মানেই ধর্মহীন পদ্ধতি নয়। আজ হয়তো সেক্যুলার মানুষেরা সরকার পরিচালনা করছে, কিন্তু কাল তো হয়তো ধার্মিক মানুষেরা সরকার পরিচালনা করবে। গত ৭০ বছরে এ দেশের কত উত্থান-পতন হল, আগামী ৭১ বছরে আরো কত উত্থান-পতন হবে, তা এখনি বলে দেয়া সম্ভব নয়। দুই। অন্য গ্রহের মানুষ দ্বারা পরিচালিত কোনো পদ্ধতি নাম সরকার নয়। হোক কওমি, আলিয়া বা বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের বাবা-মায়ের টাকা দিয়েই সরকার চলে। দেশকে উন্নত করি আমরাই। আমরা সরকারের কর্মচারী নই, বরং সরকার নিজেই কর্মচারী হিসাবে আমাদের জন্যে কাজ করে। সরকারি কাজ করা মানে সরকারের কর্মচারী হওয়া নয়, বরং মানুষের সেবা করা। কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা এমনিতেই দেশের অনেক সেবা করে, সরকারীকরণের ফলে এই সেবা আরো অনেক বিস্তৃত হবে। তিন। কওমি, আলিয়া ও বিশ্ববিদ্যালয় – এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের মাঝে সমন্বয় ও মেলবন্ধন প্রয়োজন। কারণ, আমাদের প্রত্যেকের-ই কিছু না কিছু ক্রুটি আছে। সবাই একসাথে কাজ করলে দেশের সামষ্টিক জ্ঞান ও কাজের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এবং

মঙ্গল শোভাযাত্রায় কারা যায় এবং কেন যায়?

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছিলাম, তাই ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অনেক কিছুই দেখতে ও শুনতে হয়েছে। ভালো মুসলিমদের কেউ কখনো মঙ্গল শোভাযাত্রায় যায় না। এটাকে শিরক মনে করে। তাহলে যায় কারা? এবং কেন? এক। মঙ্গল শোভাযাত্রায় সবচেয়ে বেশি অংশ গ্রহণ করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। ঢাকেশ্বরী মন্দির ও জগন্নাথ হলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মঙ্গল শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। মঙ্গল শোভাযাত্রাকে অনেক হিন্দু যেহেতু তাদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান মনে করেন, তাই এ নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যত ইচ্ছা তত যেতেই পারেন তাদের মঙ্গল শোভাযাত্রায়। দুই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে থাকা ছাত্র-ছাত্রীরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণে দ্বিতীয়। ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই নিজ ইচ্ছায় মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করে, ব্যাপারটা এমন না। ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জোর করে মঙ্গল শোভাযাত্রায় নিয়ে যায়। যারা হলে থেকেছেন, তারা বিষয়টা ভালোভাবে জানেন। নেতা-নেত্রীরা নিজেদেরকে ভগবানের ছেয়েও বড় মনে করে। তাদের ছোট্ট একটা কথাও যদি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা না শুনে তাহলে হাত-পা ভেঙ্গে সোজা পুলিশে ধরিয়ে দেয়া হয়।

সিদ্ধান্ত আপনার

আধুনিক নারীরা সন্তান লালন-পালন করাকে ইবাদাত মনে করেন না, বরং বোঝা মনে করেন। যে মায়েরা সন্তানকে বোঝা মনে করেন, বড় হলে তাদের সন্তানদের মাঝে এই অনুভব সৃষ্টি হয় যে, তার মা তাঁকে ছোট বেলায় বোঝা মনে করেছিল। ফলে, সেও নিজের অজান্তেই তার মাকে বোঝা মনে করবে। এটাই স্বাভাবিক, সুন্নাতুল্লাহ বা প্রকৃতির নিয়ম। অন্য দিকে, কেউ যদি সন্তান লালন-পালন করাকে আল্লাহর ইবাদাত মনে করেন, তাহলে বড় হবার পর আল্লাহ তায়ালা ঐ সন্তানকে বলবেন – তুমি তোমার মায়ের সেবা কর, মাকে ভালোবাসো এবং তোমার মাকে একটুও কষ্ট দিয়ো না। আমাদের কাছে এখন দুইটি রাস্তা খোলা আছে। এক – সন্তানের চেয়ে চাকরিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া। দুই – চাকরির চেয়ে সন্তানকে বেশি গুরুত্ব দেয়া। যাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে, ভবিষ্যতে সেই আপনার পাশে থাকবে। মনে রাখতে হবে, বৃদ্ধ বয়সে চাকরীর পেনশনের চেয়ে সন্তানের সেবা-যত্ন অনেক বেশি প্রয়োজন। এখন, সিদ্ধান্ত আপনার।

সুদ মূর্তি পূজার চেয়েও বড় শিরক

মূর্তির সাথে সাথে সুদ ব্যবস্থারও বিরোধিতা করা উচিত। কারণ, মূর্তির চেয়েও বড় শিরক হলো সুদ ব্যবস্থা। কোর’আনে বলা হয়েছে, যারা সুদের ব্যবসা করে, তারা আল্লাহ তায়ালার সাথে যুদ্ধ করে। فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا۟ فَأْذَنُوا۟ بِحَرْبٍۢ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ۖ وَإِن تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَ‌ٰلِكُمْ لَا تَظْلِمُونَ وَلَا تُظْلَمُونَ অর্থাৎ, “তোমরা যদি সুদের ব্যবসা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমরা নি জের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করবে না এবং তোমাদের সাথেও কেউ অত্যাচার করবে না ।” [সূরা ২/বাকারা - ১৭৯] এ আয়াতটিকে আমি যেভাবে বুঝেছি – পৃথিবীর যাবতীয় অপরাধের মূল হলো অর্থের লোভ। অর্থের প্রতি লোভ থাকার কারণে মানুষ সুদের পন্থা আবিষ্কার করে। সুদ ব্যবস্থা তখনি শুরু হয়, যখন মানুষ দান-সদকা করতে চায় না। আর দান-সদকা তখনি মানুষ করতে চায় না, যখন তার অন্তরে দয়া ও ভালোবাসা থাকে না। মানুষের হৃদয়ে তখনি দয়া ও ভালোবাসার পরিধি বৃদ্ধি হয় না, যখন তার কাছে সত্যের জ্ঞান না থাকে। আর, সত্যের জ্ঞান মানে হলো আল্লাহ তায়ালা

নারী, ইসলাম ও খ্রিস্টান

খ্রিস্টান ধর্মে, স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির সম্পর্ক হলো পিতা ও পুত্রের সম্পর্ক। স্রষ্টা হলেন পিতা, আর সৃষ্টির প্রতিনিধি যীশু হলেন পুত্র। কোর’আনে অনেকবার বলা হয়েছে যে, ঈসা (আ) হলেন মরিয়ম নামের একজন নারীর পুত্র, কিন্তু খ্রিস্টানরা বরাবর-ই বলতে থাকেন যে, ঈসা হলেন আকাশে থাকা একজন পুরুষের পুত্র। এখানেই ইসলাম ও খ্রিস্টান ধর্মের পার্থক্য। খ্রিস্টান ধর্মে নারীদের কোনো স্থান নেই। নারীরা হলো পাপের উৎস। এ কারণে, খ্রিষ্টান ধর্মের বর্তমান ভার্সন বা আধুনিক ধর্মেও নারীরা হলো পাপী বা শয়তান। আধুনিক ধর্মের ভাষা ইংরেজি। তাই, ইংরেজি ভাষায় – প্রথম নারীর নাম – ইভ [Eve], আর এ কারণে, শয়তানের নাম – ইভিল [Evil] অর্থাৎ, নারী মানে শয়তান, আর শয়তান মানে নারী। ইউরোপ-অ্যামেরিকা বলুন, আর মধ্যপ্রাচ্য বলুন, বিশ্বের যেখানেই আধুনিক ধর্ম প্রবেশ করে, সেখানেই নারীদেরকে ‘শয়তান’ বা মন্দ নামে অভিহিত করা হয়। ফলে সেখানে নারীবাদ নামে নতুন এক শক্তির উদ্ভব হয়। আধুনিক ধর্ম ও নারীবাদ একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। যেখানেই আধুনিক ধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘটেছে, সেখানেই নারীবাদের জন্ম হয়েছে। আপনি আধুনিক ধর্ম গ্রহণ করে নারীদেরকে শয়তান বলবেন, আর নারীরা

পড়, তোমার মনের কিতাব!

লোকে বলে, মানুষের মন বুঝা সবচেয়ে কঠিন। আসলেই কঠিন। অন্যের মন বুঝা তো দূরে থাক, নিজের মন বুঝাই কষ্টকর। যে নিজের মনকে নিজে বুঝতে পারে, পৃথিবীতে সেই সবচেয়ে সুখী। নিজের মন নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসার নাম-ই শান্তি। এর অপর নাম সালাম, বা ইসলাম। যে নিজের মনকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে পারে, কিংবা, যে নিজের মনকে নিজেই বন্ধী করতে পারে, অথবা, যে নিজের কাছে নিজের মনকে সমর্পণ করতে পারে, সে জান্নাতি সুখ অনুভব করে। নিজের মনকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসার সর্বোত্তম ও সহজ দিকনির্দেশনা প্রদান করে যে গ্রন্থটি, তার নাম আল কোর’আন। আল কোর’আনের প্রথম শব্দ পড়। অর্থাৎ, রবের নামে তোমার মনকে পড়। সুখ, দুঃখ, বা রাগের সময় মনকে শান্ত বা নিয়ন্ত্রণ রাখার সবচেয়ে কার্যকারী কৌশল শেখায় আল কোর’আন। শান্ত মন-ই কেবল জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে। অশান্ত মনের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণা। নিজেই নিজের মনকে জানা, বোঝা ও নিয়ন্ত্রণ করা পৃথিবীতে অনেক কষ্টকর হলেও আখিরাতে বিনাকষ্টে সবাই নিজের মনকে নিজেই দেখতে পাবে। কারণ, মৃত্যুর পরে সবার চোখের সীমাবদ্ধতা দূর হয়ে যায়। তাই সবাই তাদের নিজেদেরকে খুব ভালোভাবে দেখতে পারে। পৃথিবীর অশান্ত মনগুলো আখিরাতে নিজেদের বিশ্র

সখী, ভালোবাসা কারে কয়?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বিখ্যাত একটি কবিতায় গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রশ্ন তুলছিলেন। তিনি প্রশ্ন করেন – সখী, ভালোবাসা কারে কয়? সে কি কেবলই যাতনাময়? রবীন্দ্রনাথের কথা হলো, আকাশ-বাতাস, গাছগাছালি, সাগর-নদী, গ্রহ-তারা, চাঁদ-সূর্য, বিশ্বের সবাই ভালোবেসে সুখী হয়। কিন্তু মানুষ কেন ভালোবেসে যন্ত্রণা ভোগ করে? কেন ভালোবাসার যন্ত্রণায় মানুষ নিজে নিজে জ্বলে পুড়ে মরে যায়? কেন এ যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে মানুষ আত্মহত্যা করে? কেন নিজের ভালোবাসার মানুষকে সে নিজেই হত্যা করে? রবীন্দ্রনাথ এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেয়েছিলেন কিনা জানি না। তবে আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার চেষ্টা করব। প্রথমত বোঝার চেষ্টা করি, ভালোবাসা কি? এর কি কোনো বস্তুগত সংজ্ঞা আছে? উত্তর হলো – না। ভালোবাসার কোনো বস্তুগত সংজ্ঞা নেই। ভালোবাসাকে যিনি যেভাবে উপলব্ধি করেন, তিনি সেভাবে এর সংজ্ঞা নির্ধারণ করেন। ভালোবাসা পানির মত কোনো বস্তু নয় যে তার সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা দেয়া যায়, এটি হলো অনুভবের বিষয়। বস্তুর আকার, স্থান, কাল ও সীমানা থাকে; কিন্তু অনুভবের আকার, স্থান, কাল বা সীমানা থাকে না। অনুভব বস্তুর ঊর্ধ্বে। তাই ভালোবাসার বস্তুগত

ভালোবাসা

এই দুনিয়ায় আসি মোরা, ভালোবাসার জন্য ভালোবাসা ছাড়া মোদের, নেই কোনো কাজ ভিন্ন। শরীরের কোষগুলো সব, ডেকে বলে আল্লাহ তোমায় ছাড়া দেখি না কিছু, সোবহান আল্লাহ। আসমান জমিন প্রতি ক্ষণে, ডেকে বলে আল্লাহ অহংকার নাই হয়ে যায়, তোমায় দেখে আল্লাহ ভালোবাসা যে পায়, সে দুনিয়ার আর কি চায়? দমে দমে তাই সে বলে আল্লাহ ও আল্লাহ। [তুরস্কের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্যে তাঁদের বিখ্যাত একটি গানের বাংলা অনুবাদ করে দিলাম।] https://youtu.be/XFPeblMoqTw

রমজানে চাই রোবট ইমাম!

রমজানের দু’এক মাস আগ থেকেই তারাবীহ নামাজের জন্যে মসজিদে মসজিদে ইমাম নিয়োগ করা শুরু হয়। কিছু কিছু মসজিদে ইমামের পরীক্ষা নেয়া হয় যে, তিনি কত দ্রুত নামাজ পড়াতে পারেন। যারা খুবই দ্রুত নামাজ পড়তে ও পড়াতে চান, তাদের জন্যে দরকারি একটা পরামর্শ। কষ্ট করে বিদেশ থেকে একটা রোবট বানিয়ে নিয়ে আসুন। খুব বেশি টাকা লাগবে না, আগামী পাঁচ বছর ইমামের জন্যে যে টাকা ব্যয় করবেন, সে টাকা দিয়ে সারা জীবনের জন্যে একজন রোবট ইমাম পেয়ে যাবেন। রোবট ইমামের মধ্যে সবকিছু প্রোগ্রামিং করা থাকবে। সে সূরা ফাতিহা থেকে শুরু করে রুকু-সেজদা সব করতে পারবে। ফলে, খুবই দ্রুত এবং ভালোভাবে খতম তারাবীহ পড়াতে পারবে। কত মিনিটে কত রাকাত নামাজ পড়াতে হবে, তা রোবটের গায়ে ক্লিক করে দিলেই হবে, রোবট এক সেকেন্ডও বেশি সময় নিবে না। আপনি যদি চান যে, এক পারা কোর’আন দিয়ে ৫ মিনিটে ২০ রাকাত নামাজ পড়াতে হবে, এটা রোবট ইমামের জন্যে কোনো ব্যাপার-ই হবে না। আপনি চাইলে, সে প্রতিদিন-ই একবার করে সম্পূর্ণ কোর’আন খতম করতে পারবে। চাইলে, একটি রোবট ইমামকে দিয়ে আশেপাশের পাঁচ-দশটি মসজিদে নামাজ পড়াতে পারবেন। অর্থাৎ, আপনি যেভাবে চান, ঠিক সে ভাবেই রোবট ইমাম আপনাকে নামাজ

নবীরা এবং নবীর উত্তরসূরিরা কেবল একটি অ্যালার্ম ঘড়ির মত কাজ করেন

হিংসা, অজ্ঞতা ও মূর্খতার কারণে কেউ গালাগালি করলে আমরা তাকে গালাগালি করব কেন? নবীরা এবং নবীর উত্তরসূরিরা কেবল একটি অ্যালার্ম ঘড়ির মত কাজ করেন। মানুষকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়া এবং সচেতন করাই তাঁদের কাজ। তবে অন্যকে ঘুম থেকে জাগাতে হলে আগে নিজেকে জাগতে হয়। সচেতন ও জ্ঞানী হতে হয়। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন – يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمُدَّثِّرُ قُمْ فَأَنذِرْ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ “হে চাদরাবৃত! উঠ, (মানুষকে) সতর্ক ও সচেতন কর। তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর”। [সূরা ৭১/মুদ্দাছছির – ১, ২, ৩] আয়াতটি লক্ষ্য করুন, নবী বা নবীর উত্তরসূরিদের কাজ হলো প্রথমে নিজে ঘুম থেকে জাগা বা বৈশ্বিক সচেতনতা অর্জন করা। এরপর, অন্য ঘুমন্ত মানুষদেরকে জাগিয়ে তোলা। অর্থাৎ, অন্য মানুষদেরকে পৃথিবী ও পৃথিবী পরবর্তী জীবন সম্পর্কে সচেতন করা। একজন মানুষ তখনি কেবল নবীর উত্তরসূরি হতে পারেন, যখন তিনি নিজে জাগ্রত ও সচেতন হন। অর্থাৎ দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে যিনি যত বেশি সচেতন, তিনি তত বেশি নবীর উত্তরসূরি। এবং তিনি তত বেশি অ্যালার্ম দেয়ার কাজ করতে পারেন। গালাগালি করে কাউকে কখনো জ্ঞান দেয়া যায় না, বা সচেতনও করা যায় না। এখানে মনে রাখা প্রয়োজন

সুদ ব্যবস্থা কি মূর্তি পূজার চেয়েও ভয়ঙ্কর?

মূর্তি পূজার মত সুদ ব্যবস্থারও বিরোধিতা করা উচিত। কারণ, মূর্তি পূজার চেয়েও বড় শিরক হলো সুদ ব্যবস্থা। কোর’আনে বলা হয়েছে, যারা সুদের ব্যবসা করে, আল্লাহ তায়ালা তাদের সাথে যুদ্ধ করেন। فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا۟ فَأْذَنُوا۟ بِحَرْبٍۢ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ۖ وَإِن تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَ‌ٰلِكُمْ لَا تَظْلِمُونَ وَلَا تُظْلَمُونَ অর্থাৎ, “তোমরা যদি সুদের ব্যবসা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমরা নিজের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করবে না এবং তোমাদের সাথেও কেউ অত্যাচার করবে না ।” [সূরা ২/বাকারা - ১৭৯] এ আয়াতটিকে আমি যেভাবে বুঝেছি – পৃথিবীর যাবতীয় অপরাধের মূল হলো অর্থের লোভ। অর্থের প্রতি লোভ থাকার কারণে মানুষ সুদের পন্থা আবিষ্কার করে। সুদ ব্যবস্থা তখনি শুরু হয়, যখন মানুষ দান-সদকা করতে চায় না। আর দান-সদকা তখনি মানুষ করতে চায় না, যখন তার অন্তরে দয়া ও ভালোবাসা থাকে না। মানুষের হৃদয়ে তখনি দয়া ও ভালোবাসার পরিধি বৃদ্ধি হয় না, যখন তার কাছে সত্যের জ্ঞান না থাকে। আর, সত্যের জ্ঞান মানে হলো আল্লাহ তায়

The Simple Equation of the Bengali

Bengali and Muslim – is there any conflict between these two terminologies? The question may have different answers. It may be a yes, or a no, or something else entirely. Generally, the Islamic scholars do not see this as an issue of debate, but rather as something afoul or too trivial to discuss. On the other hand, the secular civil society takes this question very seriously. In fact some believe that this should be the main issue of discussion in today’s Bangladesh. To put things under perspective, almost all secular civil society intellectuals believe that Muslim and Bengali identities are in such a state of disagreement with each other, that there is a huge gap in effect present between them. Islamic scholars do not worry themselves with this debate, largely because of their preoccupation with pondering upon the matters of religion, or due to being busy with imparting moral education to the masses. However, since secular civil society intellectuals do not worry about the above in t

আলো

জ্ঞানের পথে, প্রথম ধ্যান। জ্ঞান কি আলো? না, আলো-ই জ্ঞান? জ্ঞানের আলো? না, আলোর জ্ঞান? রবি বলে – আলো আমার, আলো ওগো, আলো ভুবন-ভরা। আলো নয়ন-ধোওয়া আমার, আলো হৃদয়-হরা। সে বলে – আলোয় আলোয় খেলা, আলোয় জ্ঞানের মেলা। আলোর আলো তুমি, কালোর আলো তুমি। চাঁদ, সূর্য, তোমার আলো তুমি বিনে নেই আলো, যা দেখ, তাই আলো তুমি ছাড়া সব কালো। আমি বলি – জ্ঞান তুমি, আলো তুমি, আমি দেখি শুধু তুমি, পাই না নিজ আমি দেখি আলো, কই আমি? সূত্র [২৪:৩৫]

আজব দেশ

আজব দেশের নাম শুনেছি দাদা-দাদীর মুখে, সেই দেশটি দেখার খুবই ইচ্ছা ছিল বুকে। হঠাৎ একটি দৈত্য এসে বদলে দিল সব, মোদের দেশটা হয়ে গেল একেবারে আজব। দাদা-দাদীর আজব দেশে সুখ ছিল না শেষ, কিন্তু মোদের আজব দেশে দুঃখের তো নেই শেষ। বলব তোমায়? আজব দেশের দুঃখের কাহিনী? আছে কিনা? আশেপাশে পুলিশ বাহিনী? আজব দেশের মানুষেরা প্যাঁচার পূজা করে, মঙ্গল শোভা না করলে পুলিশ তারে ধরে। মুখের দাঁড়ি বড় হলে জঙ্গি তারে বলে, ক্রসফায়ার করে তারে ফেলে নদীর জ্বলে। আজব দেশের দুঃখ বলে, হবে না তো শেষ। বলতে পার? নাম কি ওটার? প্রিয় বাংলাদেশ!!

কেমন হত?

মানুষ যদি পাখি হত, তখন কি ভিসা হত? আমাদের ফেলানীরা তখন কি গুলি খেত? বিএসএফ হায়েনারাও তখন কি মানুষ হত? দিল্লীর দালালেরা তখন কি গরু হত? বাংলার মিডিয়া তখন কি অন্ধ হত? মোদের দুঃখ, হাসি না তখন কি ভারত যেত?

স্বাধীনতা কারে কয়?

এক, দুই, তিন আমরা কি স্বাধীন? চার, পাঁচ, ছয় স্বাধীনতা কারে কয়? সাত, আট, নয় দেশ কি মোদের নয়? দশ, এগারো, বারো ভয় কি কর কারো? – তেরো, চোদ্দো, পনেরো কোর’আনটাকে ধরো। ষোল, সতের, আঠারো ভালো করে পড়ো। উনিশ, বিশ, একুশ আসবে ফিরে হুঁশ। হবে স্বাধীন মানুষ।।

৭১ দেখিনি, তো!

আমি, ৭১ দেখিনি তো কি হয়েছে? ১৭ দেখেছি তো। আমি, দেখিনি পাকিস্তান, কিন্তু, ভারত দেখেছি তো। দেখিনি হানাদার, কিন্তু, বিএসএফ দেখেছি তো। আমি, গেরিলা বাহিনী দেখিনি তো কি হয়েছে, ‘জঙ্গি’ শিশুর লাশ দেখেছি তো। মুক্তিযোদ্ধা বোনদের দেখিনি তো কি হয়েছে, ফেলানীদের দেখেছি তো। আমি, দেখিনি ইয়াহিয়া খান, কিন্তু, শে. রাক্ষসীকে দেখেছি তো। দেখিনি অপারেশন সার্চলাইট, কিন্তু, ক্রসফায়ার দেখেছি তো। তরুণ আমি, শেখ মুজিবকে দেখিনি তো কি হয়েছে, হাজারো নিরাপরাধ কারাবন্ধী দেখেছি তো। রেসকোর্স ময়দান দেখিনি তো কি হয়েছে, শাপলা চত্বর দেখেছি তো। নেতা ভাসানীকে দেখিনি তো কি হয়েছে, লাখো মজলুমের অসহ্য কষ্ট দেখেছি তো। জাহানারা ইমামকে দেখিনি তো কি হয়েছে, অগণিত মায়ের আকাশ বিদীর্ণ কান্না দেখেছি তো। আমি, দেখিনি বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড, কিন্তু, বিজ্ঞ আলেমের ফাঁসি দেখেছি তো। দেখিনি ৭১-এর নারী ধর্ষণ, কিন্তু, ১৭-এর হোলি উৎসব দেখেছি তো। গুরু বলেন – তুমি, ৭১-এর বৃদ্ধ নও, ১৭-এর তরুণ। ৭১ পিছনের নয়, দেখ সামনের ৭১ পুরানো ইতিহাস তোমার লিখতে হবে না আর, তুমি-ই তো হবে একবিংশে স্বাধীনতার রূপকার।