সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কোর’আনে নবী-রাসূলদের এতো বেশি কাহিনী কেন?

কেউ যখন প্রথম প্রথম কোর’আন পড়তে শুরু করে, তখন মনে হয়, কোর’আনে কেবল আগেকার যুগের নবী-রাসূলদের কিচ্ছা-কাহিনী দিয়ে ভরা। তাই, অনেকেই কোর’আন পড়ে খুব বেশি মজা পায় না।


আসলে কোর’আনের বর্ণিত অতীতের নবী রাসূলদের সকল গল্পের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ (স)-কে বিভিন্ন শিক্ষা দিয়েছিলেন।

উদাহরণ স্বরূপ মুসা (আ)-এর কাহিনীগুলো দেখুন,

সূরা আরাফ, সূরা শুআরা, সূরা কাসাস, সূরা সাফফাত সহ যেসব সূরা মক্কায় নাযিল হয়েছে, সেগুলো পড়লে আমরা দেখব যে, সেখানে মূসা (আ)-এর সাথে ফিরাউনের দ্বন্দ্বের বিষয়টি বারবার আলোচনা করা হচ্ছে। কারণ, তখন মক্কা জীবনে রাসূল (স)-এর সাথে আবু জাহেলদের ব্যাপক দ্বন্দ্ব হচ্ছিল। তাই, তখন আল্লাহ তায়ালা রাসূল (স) ও সাহাবীদেরকে মক্কার বিভিন্ন পরিস্থিতির মোকাবেলা করার জন্যে মূসা (আ) ও ফিরাউনের কাহিনীগুলো বর্ণনা করছিলেন।

কিন্তু,

রাসূল (স) মদিনায় যাবার পর মূসা (আ) ও ফিরাউনের কাহিনী আর নাযিল হয়নি। তখন শুরু হয়েছে, মূসা (আ)-এর সাথে বনী ইজরাইলের দ্বন্দ্বগুলোর আলোচনা। কেননা, মদিনায় আসার পর মক্কার মতো রাসূল (স)-এর আর কোনো শত্রু ছিলো না। কিন্তু তখন আবার শুরু হলো মুনাফিকদের চক্রান্ত। ফলে, সূরা বাকারা সহ মদিনায় নাযিল হওয়া বিভিন্ন সূরার মধ্যে আমরা দেখতে পাই যে, এখানে কেবল বনী ইজরাইলের সাথে মুসা (আ)-এর দ্বন্দ্বগুলো আলোচনা করা হচ্ছে। মদিনায় আসার পর ফিরাউনকে আমরা আর দেখতে পাচ্ছি না।

অর্থাৎ, রাসূল (স) ও তাঁর সাহাবীগণ যখন যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, তখন আল্লাহ তায়ালা তাঁদের জন্যে সে সমস্যার সমাধান হিসাবে অতীতে ঘটে যাওয়া একই ধরণের ঘটনা জানিয়ে দিয়েছেন।

সুতরাং, নবী-রাসূলদের কাহিনীগুলোকে কেবল ঐতিহাসিক ঘটনা হিসাবে গ্রহণ না করে, এগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার জন্যেই আল্লাহ তায়ালা কোর'আনে এতো বেশি অতীতের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। কোর'আনের প্রতিটি ঘটনার মাঝেই আমাদের জন্যে শিক্ষা রয়েছে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

গড হেলমেট দিয়ে কি নাস্তিক কে আস্তিক বানানো যায়?

একবার, বিশ্বকুখ্যাত নাস্তিক রিচার্ড ডকিন্স-কে বিজ্ঞানী মাইকেল পের্সিঙের তার অফিসে ডেকে আনলেন। তাকে বললেন, আপনি তো বিজ্ঞানে বিশ্বাস করেন; তাই না? ডকিন্স : হুম। পের্সিঙের : তাহলে আমরা দেখব, বিজ্ঞানের সাহায্যে আপনার মস্তিষ্ককে পরিবর্তন করে আপনাকে নাস্তিক থেকে আস্তিক বানাতে পারি কিনা? ডকিন্স : ওকে। উল্লেখ্য, মাইকেল পের্সিঙের একজন নিউরো বিজ্ঞানী। তিনি এবং বিজ্ঞানী স্ট্যানলি করেন, উভয়ে একটি হেলমেট আবিষ্কার করেন। যার নাম – ‘গড হেলমেট’। এই ‘হেলমেট’টি দিয়ে তারা পরীক্ষা করেন যে - মানুষের মস্তিষ্কের কোন জায়গায় তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের অনুভূতি জাগ্রত হয়। তারা মানুষের মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরণের ধর্মীয় অনুভূতির সিগন্যাল পাঠিয়ে স্রষ্টায় বিশ্বাস তৈরির চেষ্টা করেন। তো, তারা ডকিন্স-কে একটি বদ্ধ ঘরে প্রবেশ করিয়ে তার মাথায় ‘গড হেলমেট’টি লাগিয়ে দিলেন। ডকিন্সের চোখ বন্ধ করে দিলেন। এবং ডকিন্সের রুম থেকে সবাই বের হয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন।