সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রাজনৈতিক ক্ষুদে আলাপ



একজন রাজনৈতিক হলেন একজন ডাক্তারের মতো। একজন ডাক্তার যেমন ধনী, গরিব, নারী, পুরুষ, মুসলিম, হিন্দু, উপজাতি সবাইকে সেবা প্রদান করেন, তেমনি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অধিকারের জন্যে কাজ করেন।



কেবল মুসলিমদের দ্বারা গঠিত, কিংবা কেবল হিন্দুদের দ্বারা গঠিত একটি দলকে কখনো রাজনৈতিক দল বলা যায় না, বরং ধর্মীয় দল বলা যায়। একটি রাজনৈতিক দল গড়তে হলে দেশের সকল ধর্মের মানুষের অংশ গ্রহণে গড়তে হয়, যেমন রাসূল (স) গড়েছিলেন।

মদিনায় গিয়ে রাসূল (স) প্রথম যে রাজনৈতিক দল বা উম্মাহ গঠন করেছিলেন, সেখানে মুসলিমদের চেয়ে অমুসলিমদের সংখ্যা বেশি ছিলো। বর্তমানে বাংলাদেশে যেসব ইসলামী রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাঁদের দলে কতজন অমুসলিম রয়েছে? যদি না থাকে তাহলে বাংলাদেশের ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো কিভাবে রাসূল (স)-কে অনুসরণ করছে?



"ইসলামী রাষ্ট্রের অগ্রগতির জন্যে এর রাজনৈতিক, সামরিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণসমূহ বিশেষভাবে দায়ী। বিশ্লেষকদের মধ্যে কেউ কেউ ধর্মীয় কারণের উপরও জোর দিয়েছেন, যদিও তাঁদের যুক্তি প্রদর্শনের পক্ষে যথেষ্ট ব্যাখ্যা করা হয়নি।"

- মুহাম্মদ ইয়াসীন মাযহার সিদ্দিকী, রাসূল মুহাম্মদ (স) এর সরকার কাঠামো।

মদিনা সনদের ভিত্তিতে গঠিত রাসূল (স)-এর সভ্যতা দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করার কারণ হলো রাজনীতি ও অর্থনীতি। রাষ্ট্রের জন্যে ধর্মকে এখানে মৌলিক কারণ মনে করা হয়নি।


ইবনে খালদুনের মতে, ধর্ম রাষ্ট্রের পূর্ণতা দান করে, কিন্তু ধর্ম রাষ্ট্রের ভিত্তি নয়।


 



নৈতিকতা শিক্ষা দেয়া রাজনীতির কাজ না। রাজনীতির কাজ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে নিজের দেশকে যাবতীয় ক্ষতি থেকে রক্ষা করা।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...