সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ধর্মনিরপেক্ষের আসল রূপ - এরদোয়ান

ধর্মভিত্তিক রাজনীতি সম্পর্কে এরদোয়ান বলেন -

CHP (সেক্যুলার পার্টি) তুরস্কের জন্যে কিছুই করতে পারেনি। তারা তাদের সকল দুর্বলতা, ভুল-ভ্রান্তি ও বিশ্বাসঘাতকতাকে 'ধর্মনিরপেক্ষ' পরিভাষা দিয়ে গোপন করার চেষ্টা করে। অথচ একে পার্টির ধর্মনিরপেক্ষের সংজ্ঞাকে ইউরোপ পর্যন্ত সুন্দরভাবে গ্রহণ করেছে। আমাদের একে পার্টির সংবিধানে স্পষ্ট লিখা রয়েছে, "ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের জন্যে অপরিহার্য। ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতা হলো আমানত স্বরূপ।"

একইসাথে, আমাদের দেশে যারা ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি ইচ্ছেকৃতভাবে বারবার ব্যবহার করে ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ করে, আমরা তাদেরও বিরোধী।


মুসলিমদের কথা বাদ দিন, খ্রিস্টান ও ইহুদি থেকে শুরু করে সকল ধর্মের ইবাদাত করার স্বাধীনতা এবং ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ তুরস্কে কেবল আমরাই প্রথম দিয়েছি।

অর্থোডক্স থেকে ক্যাথলিক সকল খ্রিস্টান গ্রুপগুলোকে জিজ্ঞেস করুন, অথবা ইহুদিদের যে কোনো গ্রুপকে জিজ্ঞেস করুন, সবাই আপনাকে বললে, "একে পার্টির সময়ে আমরা সবচেয়ে শান্তিতে ও আরামে আছি"। কারণ, আমাদের সাথে কারো ধর্মীয় বিশ্বাস, ইবাদাত বা চিন্তার বিরোধিতা নেই। আমাদের কাছে শিয়া-সুন্নী বলেও কোনো বিভেদ নেই। যে কোনো মানুষ তাদের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা পাবার জন্যেই আমরা আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছি, এবং এখনো করছি।

প্রিয় ভাইয়েরা, একটিমাত্র বিষয়ে আমরা আপোষ করি না। তা হলো, আমাদের দেশ ও জাতির বিরুদ্ধাচরণ। বিশেষ করে আমাদের দেশে যে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আমরা।

সকল ধর্ম যেন তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী চলতে পারে, এবং তাদের উপাসনা করতে পারে, আমরা সে সুযোগ করে দিয়েছি। এবং একইসাথে এও বলেছি, আপনারাও মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরোধিতা করতে পারবেন না। মুসলিমরাও যেনো তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী চলতে পারে।

আমরা ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করার বিপক্ষে। একইসাথে, যারা অন্যের ধর্ম ও বিশ্বাসের বিরুদ্ধাচরণ করে, আমরা তাদেরও বিরুদ্ধে।


 

https://www.tccb.gov.tr/haberler/410/92592/-ozgurluklerin-herkes-icin-alabildigine-genis-bir-sekilde-yasatilabilmesi-amaciyla-mucadele-ediyoruz-?fbclid=IwAR0x82AAJGxL_8eC8--WFZcWTcaHwJuuCDRQTfymJqYav-oL_88lfEPvli0

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?

এক ভাইয়া প্রশ্ন করেছেন – “তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?” এ প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় ও দার্শনিক দিক থেকে পৃথিবীতে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, এবং এখনো চলছে। কিন্তু ভাইয়া আমাকে বলেছেন খুব সহজ ভাষায় লেখার জন্যে। অবশ্য, আমি সবকিছু সহজ-সরল করেই লেখার চেষ্টা করি। কারণ, আমি ছোট মানুষ, কঠিন ও প্যাঁচালো লেখা যথাসম্ভব কম পড়ি ও লিখি। যাই হোক, তাকদীরের বিষয়টা আমার কাছে খুবই সহজ একটি বিষয় মনে হয়। এ বিষয়ে আমাদের মনে সাধারণত দু’টি প্রশ্ন জাগে। ১। ‘তাকদীর’ বা ভাগ্য যদি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আগেই নির্ধারিত হয়ে থাকে, তাহলে আমরা আর ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে লাভ কি? অথবা, ২। আমরাই যদি নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে আল্লাহ দ্বারা নির্ধারিত ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে হবে কেন? এ প্রশ্নগুলোর জবাব জানার আগে কিছু উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বোঝার চেষ্টা করব।

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...