সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

তুরস্কে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দের অপব্যবহার

বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটির অপব্যবহার করা হয়। এক পক্ষ ধর্মনিরপেক্ষ শব্দের আড়ালে ইসলামের বিরোধিতা করেন। আরেক পক্ষ ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটিকে বুঝতে চেষ্টা না করেই এর বিরোধিতা করেন।

একই পরিস্থিতি তুরস্কেও রয়েছে। তুরস্কের সেক্যুলার পার্টি CHP ধর্মনিরপেক্ষ শব্দের আড়ালে ইসলামের বিরোধিতা করেন। আবার কিছু ইসলামপন্থী পার্টি ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটির আসল অর্থ না বুঝে এর বিরোধিতা করেন।

এ সম্পর্কে এরদোয়ান বলেন -


"তুরস্কে ধর্মনিরপেক্ষ সম্পর্কে যে খারাপ ধারণা রয়েছে, তার সবচেয়ে বড় কারণ আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ দল। তারা যখন থেকে এক দলীয় শাসন কায়েম করেছিলো, তখন থেকে তারা ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটিকে ভুলভাবে ব্যবহার করে আসছিলো। এটা তাদের অজ্ঞতা ছিলো। আমাদের দেশ ও জাতীর মূল্যবোধ, ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কেউ যদি ধর্মনিরপেক্ষবাদকে ব্যবহার করতে চায়, তাহলে অবশ্যই সমস্যার সৃষ্টি হবে।

রাষ্ট্র কোনো ধর্মের পক্ষপাতিত্ব করবে না, এ অর্থে ধর্মনিরপেক্ষকে আমরাও গ্রহণ করি। এবং এমন ধর্মনিরপেক্ষ বাস্তবায়নের প্রয়োজন মনে করি। রাষ্ট্র সকল ধর্মের মানুষকে সমানভাবে দেখবে, এমন ধর্মনিরপেক্ষে আমদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু, সকল বিষয়ে ধর্মনিরপেক্ষকে সামনে নিয়ে এসে নিজেদের বাইরে অন্য সবাইকে ধর্মনিরপেক্ষের বাইরে বের করে দেয়া CHP পার্টির এমন চিন্তার যুগ শেষ হয়ে গেছে।

একে পার্টি গত ১৫ বছর কিভাবে ধর্মনিরপেক্ষকে বাস্তবায়ন করেছে, তা দেখলে ধর্মনিরপেক্ষ নিয়ে CHP-এর মুনাফেকি বুঝা যাবে।"

একে পার্টির মতো ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটিকে সঠিক অর্থে ব্যবহার করার মতো কোনো দল এখনো বাংলাদেশে নেই। তাই একটি নতুন দল প্রয়োজন, যারা ধর্মনিরপেক্ষকে সঠিক অর্থে ব্যবহার করে রাজনীতি করবেন।

https://www.tccb.gov.tr/haberler/410/86058/onumuzdeki-secimleri-degil-ulkemizin-gelecegini-dusunerek-calismalarimizi-yurutuyoruz?fbclid=IwAR2ajRvHNxpy_xT4AZ-cTtFXzxAddcCme8dc5OiUhD_EkgrX2fvSy079P64
(১৯ মিনিট থেকে)

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?

এক ভাইয়া প্রশ্ন করেছেন – “তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?” এ প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় ও দার্শনিক দিক থেকে পৃথিবীতে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, এবং এখনো চলছে। কিন্তু ভাইয়া আমাকে বলেছেন খুব সহজ ভাষায় লেখার জন্যে। অবশ্য, আমি সবকিছু সহজ-সরল করেই লেখার চেষ্টা করি। কারণ, আমি ছোট মানুষ, কঠিন ও প্যাঁচালো লেখা যথাসম্ভব কম পড়ি ও লিখি। যাই হোক, তাকদীরের বিষয়টা আমার কাছে খুবই সহজ একটি বিষয় মনে হয়। এ বিষয়ে আমাদের মনে সাধারণত দু’টি প্রশ্ন জাগে। ১। ‘তাকদীর’ বা ভাগ্য যদি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আগেই নির্ধারিত হয়ে থাকে, তাহলে আমরা আর ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে লাভ কি? অথবা, ২। আমরাই যদি নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে আল্লাহ দ্বারা নির্ধারিত ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে হবে কেন? এ প্রশ্নগুলোর জবাব জানার আগে কিছু উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বোঝার চেষ্টা করব।

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...