সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

এরবাকানের অভিযোগের জবাব দেন এরদোয়ান

নতুন দলের লোকজনকে পুরাতন দলের লোকজনেরা জাহান্নামে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে নতুন দলের লোকজনের প্রজ্ঞা ও ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। যেমনটা এরদোয়ান দিয়েছেন।

এরদোয়ান সম্পর্কে অভিযোগ করে নাজিমুদ্দিন এরবাকান বলেন -

"আপনারা আমাকে বলছেন, "আমি কেন আমার ছাত্র এরদোয়নদের বিরুদ্ধে কথা বলছি?" আমি আসলে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলছি না। আমি তাদের বড় ভাই, তাদের মুক্তি কামনা করি। তারা যা করছে, তা গুনাহের কাজ। তারা এসব থেকে আর নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না। এরদোয়ান কেয়ামতের দিন কিভাবে আল্লাহকে হিসাবে দিবে? এরদোয়ান যদি বলে "আমি মাদ্রাসায় পড়েছি, আমার স্ত্রী হিজাব পরে, আমি নামাজ নিয়মিত পড়ি" তাতেও সে কিয়ামতের দিন মুক্তি পাবে না। কারণ, এরদোয়ান ইহুদিদেরকে সাহায্য করেছে, সে ইজরাইলকে সাহায্য করেছে, ইজরাইলের তৈরি পুঁজিবাদকে গ্রহণ করেছে। এই পুঁজিবাদ পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্র আফ্রিকাকে পৃথিবীর সবচেয়ে ফকির রাষ্ট্র বানিয়েছে। ৩ মিলিয়ন শিশুকে খাদ্যহীন রেখেছে। এরদোয়ান এসব জুলুমকে সাহায্য করছে। কিয়ামতে দিন সে এসব জুলুম থেকে কিভাবে নিজেকে রক্ষা করবে? এরদোয়ান যদি বলে, "আহা, আমি তো এসব জানতাম না" তাহলে কি এরদোয়ান নিজেকে রক্ষা করতে পারবে? কেয়ামতের দিন এরদোয়ান কখনো নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না।"

নাজিমুদ্দিন এরবাকানের উপরোক্ত কথাগুলো সম্পর্কে এরদোয়ানকে জিজ্ঞাস করা হলে এরদোয়ান বলেন -

"সত্য কথা বলতে আমি আসলে উনার কথাগুলো দেখি না। আমাদের অফিসে একসাথে প্রায় ৪০টি টেলিভিশনকে সারাদিন পর্যবেক্ষণ করা হয়। সেখান থেকে বাছাইকৃত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আমাকে জানানো হয়। তবে আমি কিছুটা দুঃখ পেয়েছি। আমার দুঃখের কারণ হলো, আমি আঠারো বছর থেকে শ্রদ্ধেয় এরবাকানের সাথে যুক্ত হয়ে দেশের সেবা করেছি। একেবারে ছোট থেকে শুরু করেছি, প্রথমে সমর্থক হয়েছি, এরপর কর্মী হয়েছি, এরপর শাখা সভাপতি হয়েছি, উপজেলা সভাপতি হয়েছি, এবং ৩১ বছর বয়সে জেলা সভাপতি হয়েছি। অন্য কাউকে না পাওয়ায় আমাকে জেলা সভাপতি বানানো হয়েছে। এসব বলতে গেলে এখন আজকে রাত শেষ হয়ে যাবে।

আমার দুঃখের কারণ হলো, আমাকে উনারা সব ধরণের অপমান করছেন। আমাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করছেন। কিন্তু, আমি ৮০ বয়সী এরবাকানের বিরুদ্ধে কখনো কিছু বলিনি। এবং তাঁর কোনো অভিযোগের জবাবও কখনো দিবো না। আমি শ্রদ্ধেয় এরবাকান থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি, তাতে উনার কথার জবাব দেয়াটা আমার জন্যে উচিত নয়। আমি কখনো তাঁর কোনো কথার জবাব দিইনি, এবং ভবিষ্যতেও দিবো না। এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতেও আমি ইচ্ছুক নই।"

______

এরদোয়ান এরবাকান সম্পর্কে আজ পর্যন্ত খারাপ একটা কথাও বলেননি। বাংলাদেশে যারা নতুন রাজনীতি করছেন, তাদেরকে যতই উপহাস করা হোক, তবু তারা পুরাতন দলকে নিয়ে কোনো খারাপ কিছু বলা উচিত নয়

https://m.youtube.com/watch?feature=youtu.be&v=8jJvTyLwR0Y

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?

এক ভাইয়া প্রশ্ন করেছেন – “তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?” এ প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় ও দার্শনিক দিক থেকে পৃথিবীতে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, এবং এখনো চলছে। কিন্তু ভাইয়া আমাকে বলেছেন খুব সহজ ভাষায় লেখার জন্যে। অবশ্য, আমি সবকিছু সহজ-সরল করেই লেখার চেষ্টা করি। কারণ, আমি ছোট মানুষ, কঠিন ও প্যাঁচালো লেখা যথাসম্ভব কম পড়ি ও লিখি। যাই হোক, তাকদীরের বিষয়টা আমার কাছে খুবই সহজ একটি বিষয় মনে হয়। এ বিষয়ে আমাদের মনে সাধারণত দু’টি প্রশ্ন জাগে। ১। ‘তাকদীর’ বা ভাগ্য যদি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আগেই নির্ধারিত হয়ে থাকে, তাহলে আমরা আর ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে লাভ কি? অথবা, ২। আমরাই যদি নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে আল্লাহ দ্বারা নির্ধারিত ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে হবে কেন? এ প্রশ্নগুলোর জবাব জানার আগে কিছু উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বোঝার চেষ্টা করব।

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...