সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জাফর ইকবালদের মুনাফিকি

শাহবাগ আন্দোলনের সময়ে আমি ঢাবির আবাসিক হলে ছিলাম। ফলে, প্রতিদিন আমাদেরকে বাধ্য হয়ে শাহবাগে আসতে হতো। তখন সেই আন্দোলনে বিভিন্ন বিশিষ্টজনেরা এসে এসে বক্তব্য দিতেন। যেমন, প্রথম আলো থেকে কয়েকটি বক্তব্য এখানে তুলে দিচ্ছি।



"অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা আজ জেগে উঠেছ, বিজয় হবেই, হবে।...কেউ আমাদের পরাজিত করতে পারবে না।’

মুহম্মদ জাফর ইকবাল আরও বলেন, ‘তরুণ সমাজকে নিয়ে আমার এত দিন ভুল ধারণা ছিল। আমি ভাবতাম, তরুণেরা শুধু ব্লগে লেখালেখি করে, ফেসবুকে কমেন্টস (মন্তব্য) লেখে আর লাইক দেয়। আমার সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দাও।’

জনপ্রিয় এ লেখক তরুণদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘তোমরা কাজের সময় কাজ করবে, পড়ার সময় পড়বে, গান গাইবার সময় গান করবে। আর যখন দেশের প্রয়োজনে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে তখন কঠোর আন্দোলনে পথে নামবে, প্রতিবাদে জ্বলে উঠবে।

আবেগাপ্লুত এ শিক্ষাবিদ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা শহীদ জননী প্রয়াত জাহানারা ইমামের কথাও এ সময় স্মরণ করেন।"



বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের স্ত্রী মিলি রহমান বলেন, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্ম জেগে উঠেছে।...তোমরা রাজাকারমুক্ত দেশ গঠন করবে। শিবিরমুক্ত স্বাধীন দেশ গড়বে।’



সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘সাংবাদিকেরা নিরপেক্ষ। কিন্তু যখন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন আসে তখন সাংবাদিকেরা রাষ্ট্রের পক্ষেই থাকেন।...সাংবাদিকেরা এই আন্দোলনের সঙ্গে আছেন।’

[প্রথম আলো, ০৯-০২-২০১৩]
_____

আমার প্রশ্ন হলো, আজকে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই একই ছাত্র সমাজ তাদের অধিকার আদায়ের জন্যে আন্দোলন করছে, তখন কি জাফর ইকবাল এসে ঠিক একই বক্তব্য দিয়েছেন? যদি না দিয়ে থাকেন, তাহলে আমি কি বুঝে নিবো, তিনি ছাত্রসমাজের জন্যে নয়, বরং নিজের স্বার্থের জন্যে মিথ্যা বলেছিলেন? ২০১৩-এর আমাদের সামনে এসে তিনি যেভাবে আবেগাপ্লুত হয়ে গিয়েছিলেন, সেই আবেগ এখন তার কোথায়? তিনি কি ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বা মুনাফিকি করছেন না?

একই কথা বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের স্ত্রী মিলি রহমানের জন্যে। তিনি তখন শিবিরের বিরুদ্ধে যেমন কথা বলেছিলেন, এখন কি তার সাহস আছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে একই কথা বলার?

সাংবাদিকরা কি সেইদিনের মতো ঘোষণা দিতে পেরেছেন যে, ‘সাংবাদিকেরা নিরপেক্ষ। কিন্তু যখন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন আসে তখন সাংবাদিকেরা রাষ্ট্রের পক্ষেই থাকেন। সাংবাদিকেরা নুরুদের আন্দোলনের সঙ্গে আছেন।’

প্রথম আলো তখন প্রতিদিন যেভাবে সারা পত্রিকায় মাসের পর মাস হেড নিউজ করতো, এখন কি একই ছাত্র আন্দোলন নিয়ে একই রকম নিউজ করতে পারে?
_____

বাংলাদেশের মিডিয়া ও বিশিষ্টজন বলে কেউ নেই। সবি দলীয় নেতাকর্মী।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মুসলিম চিন্তাবিদ ও মনীষীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা

বিংশ শতাব্দীর মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা ১. আয়াতুল্লাহ খমিনী – (ইরান, ১৯০২ - ১৯৮৯) ২. আল্লামা তাবাতাবাঈ – (ইরান, ১৯০৩ - ১৯৮১) ৩. আবুল আ’লা মওদুদী – (পাকিস্তান, ১৯০৩ - ১৯৭৯) ৪. মালিক বিন নাবী – (আলজেরিয়া, ১৯০৫ - ১৯৭৩) ৫. হাসান আল বান্না – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৪৯) ৬. সাইয়েদ কুতুব – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৬৬) ৭. নুর উদ্দিন তোপচু – (তুরস্ক, ১৯০৯ – ১৯৭৫ ৮. ফজলুর রহমান – (পাকিস্তান, ১৯১৯- ১৯৮৮) ৯. মুর্তাজা মোতাহারী – (ইরান, ১৯২০ - ১৯৭৯) ১০. ইসমাইল রাজি আল ফারুকি - (ফিলিস্তিন, ১৯২১ - ১৯৮৬ ) ১১. আলী আইজাত বেগোভিচ – (বসনিয়া, ১৯২৫ - ২০০৩) ১২. নাজিমুদ্দিন এরবাকান – (তুরস্ক, ১৯২৬ - ২০১১) ১৩. শহীদ মোহাম্মদ বেহেশতী – (ইরান, ১৯২৮ - ১৯৮১) ১৪. নাকিব আল-আত্তাস – (ইন্দোনেশিয়া, ১৯৩১ - ) ১৫. হাসান আত-তুরাবী, (সুদান, ১৯৩২ - ২০১৬) ১৬. আলী শরিয়তি – (ইরান, ১৯৩৩ - ১৯৭৭) ১৭. সেজাই কারাকোচ - (তুরস্ক, ১৯৩৩ - ) ১৮. সাইয়্যেদ হোসাইন নাসর – (ইরান, ১৯৩৩ - ) ১৯. হাসান হানাফি – (মিশর, ১৯৩৫ - ) ২০. আবেদ আল জাবেরি – (মরক্কো, ১৯৩৬ - ২০১০) ২১. রশিদ ঘানুশী – (তিউনিসিয়া, ১৯৪১ - ) ২২. নাসের আবু জায়েদ – (মিশর, ১৯৪৩ - ২০

স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত দুই বিজ্ঞানীর দ্বন্দ্ব

স্টিফেন হকিং এবং মিচিও কাকু দু’জনই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী। বাংলাদেশে স্টিফেন হকিং-এর নামটি অনেক পরিচিত হলেও বিজ্ঞানের জগতে স্টিফেন হকিং-এর চেয়ে মিচিও কাকু-র অবদান অনেক বেশি। মিচিও কাকু হলেন ‘স্ট্রিং তত্ত্বের’ কো-ফাউন্ডার। এ তত্ত্বটি অতীতের বিগ ব্যাং তত্ত্বকে পিছনে ফেলে বর্তমানে বিজ্ঞানে বিপ্লব নিয়ে এসেছে। তাই বিশ্বের কাছে স্টিফেন হকিং এর চেয়ে মিচিও কাকু’র জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। নিউ ইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার বইয়ের তালিকায় সাধারণত বিজ্ঞানের কোনো বই পাওয়া না গেলেও সেখানে মিচিও কাকু-র বিজ্ঞান বিষয়ক তিনটি বই বেস্টসেলার হয়েছে। অবশ্য, সেই তালিকায় স্টিফেন হকিং-এর একটি বইও নেই। দু’জনেই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী হলেও স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে দু’জনের অবস্থান দুই প্রান্তে।   ১ - ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে তাঁদের বিতর্ক।   স্টিফেন হকিং তাঁর ‘The Grand Design’ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে বলেছেন, ‘দর্শন মরে গেছে এবং ধর্ম অকার্যকর হয়ে গেছে, এখন কেবল বিজ্ঞানের যুগ’। তাঁর মতে, সত্য মানেই বিজ্ঞান। ধর্ম ও দর্শনের যাবতীয় সমস্যা বিজ্ঞান দিয়ে সমাধান করা সম্ভব। তাই, ধর্ম ও দর্শন এখন অপ্রয়

সকল জ্ঞান-ই ইসলামের সম্পদ

কোর'আন একটি জ্ঞান, হাদিস একটি জ্ঞান, ফিকাহ একটি জ্ঞান, দর্শন একটি জ্ঞান, এবং বিজ্ঞান একটি জ্ঞান। এদের মাঝে স্তরবিন্যাসে পার্থক্য থাকলেও একটি জ্ঞান কখনো অন্য জ্ঞানের বিরোধী হয় না। আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা প্রথম যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন, তা পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে কেউ যে নামেই জ্ঞান চর্চা করুক না কেন, তা আল্লাহর সত্য জ্ঞানের সাথে কখনো বিরোধী হওয়া সম্ভব না। অজ্ঞতার কারণে অনেকেই মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। এবং দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের বৈপরীত্য রয়েছে। নাস্তিকরা মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলুল কোর'আন মনে করেন, কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলে হাদিস মনে করেন, হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। কিছু কিছু ধার্মিক মনে করেন, ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। আধুনিক বস্তুবাদী বিজ্ঞানী মনে করেন, বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম ও দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। কিন্তু, আসলে সব জ্ঞান-ই আল্লাহর পক্