সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জ্ঞানের প্রকারভেদ - ইমাম গাজালি

ইমাম গাজালির মতে জ্ঞান প্রথমত তিন প্রকার।

১) শুধুমাত্র আকল দ্বারা অর্জিত জ্ঞান। অথবা, নিরেট যুক্তি নির্ভর জ্ঞান। যেমন, পাটি গণিত, বীজগণিত, ত্রিকোণমিতি, জ্যামিতি, ইঞ্জিনিয়ারিং, পদার্থ, রসায়ন ইত্যাদি। এসব জ্ঞানের সাথে ওহীর কোনো সম্পর্ক না থাকলেও এসব জ্ঞান দ্বারা মানুষের লাভ ছাড়া কোনো ক্ষতি হয় না।

২) কেবল ওহী দ্বারা অর্জিত জ্ঞান। অথবা, নিরেট ওহী নির্ভর জ্ঞান। যেমন, কোর'আন ও হাদিস। এসব জ্ঞানের ক্ষেত্রে যুক্তির কোনো প্রয়োজন নেই। কেবল মুখস্থ শক্তি থাকলেই এসব জ্ঞান যে কেউ অর্জন করতে পারে।

৩) যুক্তি ও ওহীর সংমিশ্রিত জ্ঞান। এটি আবার ৪ প্রকার।

ক) দর্শন। এর অধীনে রয়েছে সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইতিহাস, জীববিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, ইত্যাদি।

খ) কালাম। এর অধীনে রয়েছে মুতাজিলা, সালাফি, হানাফি, শাফেয়ী, হাম্বলী, আশয়ারি, মাতুরিদি, ইত্যাদি স্কুলের জ্ঞান।

গ) উসুল। এর অধীনে রয়েছে উসুলুত তাফসীর, উসুলুল হাদিস, উসুলুল ফিকহ ইত্যাদি।

ঘ) তাসাউফ। এর অধীনে রয়েছে আখলাক, আচরণ, ভালোবাসা, ভয়, মোটিভেশন, আখিরাত ইত্যাদি।

শুধু আকল নির্ভর জ্ঞানের জন্যে কিছু সূত্র মুখস্থ করলেই হয়, এবং শুধু ওহী নির্ভর জ্ঞানের জন্যে কিছু আয়াত-হাদিস মুখস্থ করলেই হয়। এই দুই ধরণের জ্ঞান অর্জন করা কঠিন নয়। কিন্তু, পরবর্তী চার ধরণের জ্ঞান অর্জন করা খুবই কঠিন। এসব জ্ঞান অর্জন করার সময় প্রচুর ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সূত্র [المستصفى ص: 4]

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

গড হেলমেট দিয়ে কি নাস্তিক কে আস্তিক বানানো যায়?

একবার, বিশ্বকুখ্যাত নাস্তিক রিচার্ড ডকিন্স-কে বিজ্ঞানী মাইকেল পের্সিঙের তার অফিসে ডেকে আনলেন। তাকে বললেন, আপনি তো বিজ্ঞানে বিশ্বাস করেন; তাই না? ডকিন্স : হুম। পের্সিঙের : তাহলে আমরা দেখব, বিজ্ঞানের সাহায্যে আপনার মস্তিষ্ককে পরিবর্তন করে আপনাকে নাস্তিক থেকে আস্তিক বানাতে পারি কিনা? ডকিন্স : ওকে। উল্লেখ্য, মাইকেল পের্সিঙের একজন নিউরো বিজ্ঞানী। তিনি এবং বিজ্ঞানী স্ট্যানলি করেন, উভয়ে একটি হেলমেট আবিষ্কার করেন। যার নাম – ‘গড হেলমেট’। এই ‘হেলমেট’টি দিয়ে তারা পরীক্ষা করেন যে - মানুষের মস্তিষ্কের কোন জায়গায় তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের অনুভূতি জাগ্রত হয়। তারা মানুষের মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরণের ধর্মীয় অনুভূতির সিগন্যাল পাঠিয়ে স্রষ্টায় বিশ্বাস তৈরির চেষ্টা করেন। তো, তারা ডকিন্স-কে একটি বদ্ধ ঘরে প্রবেশ করিয়ে তার মাথায় ‘গড হেলমেট’টি লাগিয়ে দিলেন। ডকিন্সের চোখ বন্ধ করে দিলেন। এবং ডকিন্সের রুম থেকে সবাই বের হয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন।