সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কামাল আতাতুর্ককে যেভাবে ব্যবহার করেন এরদোয়ান ও আমাদের শেখ মুজিব

বাংলাদেশের 'জাতির পিতা' শেখ মুজিব, এবং তুরস্কের 'জাতির পিতা' মোস্তফা কামাল। তাই, বাংলাদেশে শেখ মুজিবকে বাদ দিয়ে রাজনীতি করা যাবে না, যেমন তুরস্কে মোস্তফা কামালকে বাদ দিয়ে রাজনীতি করা যায় না।

এরদোয়ান মোস্তফা কামালের খারাপ কাজগুলোকে বাদ দিয়ে কেবল ভালো কাজগুলোকেই নেন, এবং ভালো কাজের জন্যে মোস্তফা কামালের প্রশংসা করেন। জাতীয় সংসদের এক অধিবাসনে এরদোয়ান মোস্তফা কামালের ভালো কিছুদিক তুলে ধরেন। মোস্তফা কামাল কেমন মানুষ ছিলেন, তা বুঝানোর জন্যে এরদোয়ান বলেন -
_________

"আপনাদেরকে এখানে গাজী মুস্তাফা কামালের একটি টেলিগ্রাফ পড়ে শুনাবো, যা আমাদের জাতীয় সংসদ ভবন উদ্বোধন সম্পর্কে ১৯২০ সালের ২১ এপ্রিল লেখা হয়েছে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ টেলিগ্রাফ। আপনাদেরকে ও দেশবাসীকে এই টেলিগ্রাফটি খুব মনোযোগের সাথে শুনার অনুরোধ করছি।

জরুরী টেলিগ্রাম, আনকারা, ২১ এপ্রিল ১৯২০।

১। আল্লাহর সাহায্যে ইনশাল্লাহ আগামী ২৩ এপ্রিল শুক্রবার জুমার নামাজের পরে আনকারায় জাতীয় সংসদ ভবন উদ্বোধন করা হবে।

২। দেশের স্বাধীনতা, মহান খিলাফত ও সুলতানাত রক্ষার মতো মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর সিদ্ধান্ত নেয়ার এই জাতীয় সংসদ ভবনটি উদ্বোধন করার জন্যে পবিত্র জুম্মার দিন বাচাই করা হয়েছে, যাতে জুম্মার দিনের বরকত অর্জন করা যায়। সকল সংসদ সদস্য 'হাজী বাইরাম জামে মসজিদে' জুমার নামাজ পড়ে, কোর’আনের আলো ও নামাজের মাধ্যমে নিজেদের শক্তি সঞ্চয় করবে। নামাজের পরে রাসূল (স)-এর পবিত্র দাঁড়ি মোবারক ও খিলাফতের পতাকা নিয়ে সবাই জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে যাবে। সংসদ ভবনে প্রবেশের পূর্বে দোয়া পাঠ করে আল্লাহর রাস্তায় কিছু পশু কোরবানি করা হবে।

৩। জাতীয় সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিনটাকে বরকতময় করার জন্যে আজকে (২১ এপ্রিল) থেকে পবিত্র কোর’আন শরীফ এবং বুখারী শরীফ খতম করা শুরু হবে। পবিত্র কোর’আনের সর্বশেষ অংশটি জুমার নামাজের পরে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে এসে তেলোয়াত করার মাধ্যমে খতম পূর্ণ করা হবে।

৪। জাতীয় সংসদ উদ্বোধন উপলক্ষে সকল মসজিদে জুমার নামাজের পূর্বে রাসূল (স)-এর ওপর দরুদ ও সালাত-সালাম পাঠ করা হবে।

৫। এই সংবাদটি তাৎক্ষণিক সকল সংবাদ মাধ্যমে ও সব জায়গায় ছড়িয়ে দেয়ার জন্যে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৬। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই কাজটি সুসম্পন্ন করার তাওফিক দান করুক।

মোস্তফা কামাল।"
_________

দেখুন, মোস্তফা কামাল শেষ জীবনে এসে কতো খারাপ কাজ করেছেন, সেটা আমাদের চেয়ে এরদোয়ান আরো বেশি জানেন। তবুও তিনি মোস্তফা কামালকে ফেলে দিতে চাননি, বরং মোস্তফা কামালের ভালো দিকগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। তেমনি শেখ মুজিবের শেষ জীবনটা খারাপ হলেও তাঁর প্রথম জীবনের অবদানকে স্বীকার করা উচিত।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মুসলিম চিন্তাবিদ ও মনীষীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা

বিংশ শতাব্দীর মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা ১. আয়াতুল্লাহ খমিনী – (ইরান, ১৯০২ - ১৯৮৯) ২. আল্লামা তাবাতাবাঈ – (ইরান, ১৯০৩ - ১৯৮১) ৩. আবুল আ’লা মওদুদী – (পাকিস্তান, ১৯০৩ - ১৯৭৯) ৪. মালিক বিন নাবী – (আলজেরিয়া, ১৯০৫ - ১৯৭৩) ৫. হাসান আল বান্না – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৪৯) ৬. সাইয়েদ কুতুব – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৬৬) ৭. নুর উদ্দিন তোপচু – (তুরস্ক, ১৯০৯ – ১৯৭৫ ৮. ফজলুর রহমান – (পাকিস্তান, ১৯১৯- ১৯৮৮) ৯. মুর্তাজা মোতাহারী – (ইরান, ১৯২০ - ১৯৭৯) ১০. ইসমাইল রাজি আল ফারুকি - (ফিলিস্তিন, ১৯২১ - ১৯৮৬ ) ১১. আলী আইজাত বেগোভিচ – (বসনিয়া, ১৯২৫ - ২০০৩) ১২. নাজিমুদ্দিন এরবাকান – (তুরস্ক, ১৯২৬ - ২০১১) ১৩. শহীদ মোহাম্মদ বেহেশতী – (ইরান, ১৯২৮ - ১৯৮১) ১৪. নাকিব আল-আত্তাস – (ইন্দোনেশিয়া, ১৯৩১ - ) ১৫. হাসান আত-তুরাবী, (সুদান, ১৯৩২ - ২০১৬) ১৬. আলী শরিয়তি – (ইরান, ১৯৩৩ - ১৯৭৭) ১৭. সেজাই কারাকোচ - (তুরস্ক, ১৯৩৩ - ) ১৮. সাইয়্যেদ হোসাইন নাসর – (ইরান, ১৯৩৩ - ) ১৯. হাসান হানাফি – (মিশর, ১৯৩৫ - ) ২০. আবেদ আল জাবেরি – (মরক্কো, ১৯৩৬ - ২০১০) ২১. রশিদ ঘানুশী – (তিউনিসিয়া, ১৯৪১ - ) ২২. নাসের আবু জায়েদ – (মিশর, ১৯৪৩ - ২০

স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত দুই বিজ্ঞানীর দ্বন্দ্ব

স্টিফেন হকিং এবং মিচিও কাকু দু’জনই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী। বাংলাদেশে স্টিফেন হকিং-এর নামটি অনেক পরিচিত হলেও বিজ্ঞানের জগতে স্টিফেন হকিং-এর চেয়ে মিচিও কাকু-র অবদান অনেক বেশি। মিচিও কাকু হলেন ‘স্ট্রিং তত্ত্বের’ কো-ফাউন্ডার। এ তত্ত্বটি অতীতের বিগ ব্যাং তত্ত্বকে পিছনে ফেলে বর্তমানে বিজ্ঞানে বিপ্লব নিয়ে এসেছে। তাই বিশ্বের কাছে স্টিফেন হকিং এর চেয়ে মিচিও কাকু’র জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। নিউ ইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার বইয়ের তালিকায় সাধারণত বিজ্ঞানের কোনো বই পাওয়া না গেলেও সেখানে মিচিও কাকু-র বিজ্ঞান বিষয়ক তিনটি বই বেস্টসেলার হয়েছে। অবশ্য, সেই তালিকায় স্টিফেন হকিং-এর একটি বইও নেই। দু’জনেই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী হলেও স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে দু’জনের অবস্থান দুই প্রান্তে।   ১ - ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে তাঁদের বিতর্ক।   স্টিফেন হকিং তাঁর ‘The Grand Design’ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে বলেছেন, ‘দর্শন মরে গেছে এবং ধর্ম অকার্যকর হয়ে গেছে, এখন কেবল বিজ্ঞানের যুগ’। তাঁর মতে, সত্য মানেই বিজ্ঞান। ধর্ম ও দর্শনের যাবতীয় সমস্যা বিজ্ঞান দিয়ে সমাধান করা সম্ভব। তাই, ধর্ম ও দর্শন এখন অপ্রয়

সকল জ্ঞান-ই ইসলামের সম্পদ

কোর'আন একটি জ্ঞান, হাদিস একটি জ্ঞান, ফিকাহ একটি জ্ঞান, দর্শন একটি জ্ঞান, এবং বিজ্ঞান একটি জ্ঞান। এদের মাঝে স্তরবিন্যাসে পার্থক্য থাকলেও একটি জ্ঞান কখনো অন্য জ্ঞানের বিরোধী হয় না। আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা প্রথম যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন, তা পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে কেউ যে নামেই জ্ঞান চর্চা করুক না কেন, তা আল্লাহর সত্য জ্ঞানের সাথে কখনো বিরোধী হওয়া সম্ভব না। অজ্ঞতার কারণে অনেকেই মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। এবং দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের বৈপরীত্য রয়েছে। নাস্তিকরা মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলুল কোর'আন মনে করেন, কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলে হাদিস মনে করেন, হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। কিছু কিছু ধার্মিক মনে করেন, ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। আধুনিক বস্তুবাদী বিজ্ঞানী মনে করেন, বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম ও দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। কিন্তু, আসলে সব জ্ঞান-ই আল্লাহর পক্