সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

এরদোয়ানের রাষ্ট্র দর্শন

আদালতের সংজ্ঞা


বিচারপতিদের এক বৈঠকে এরদোয়ান বলেন – "আদালত হলো রাষ্ট্রের ছাদ। আদালতের কাজ সম্পর্কে পৃথিবীতে অনেকে দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ কথা বলেছেন। তবে সবচেয়ে মূল্যবান কথা বলেছেন মাওলানা জালাল উদ্দিন রূমি"।


মাওলানা জালাল উদ্দিন রূমি বলেছেন – “জুতাকে পায়ের নিচে রাখা, আর টুপিকে মাথার উপর রাখা-ই আদালতের কাজ। যখন টুপিকে পায়ের নিচে রাখা হয়, এবং জুতাকে মাথার উপর রাখা হয়, তখন আদালত ভেঙ্গে পড়ে। তিনি আরো বলেন, নায় বিচার হলো গাছে পানি দেয়া, আর, জুলুম হলো আগাছায় পানি দেয়া।”


এরদোয়ান বলেন – "আদালতের কাজ হলো, যে যা প্রাপ্য, তাকে সেটা বুঝিয়ে দেয়া। আর, জুলুম হলো, যে যা প্রাপ্য, তাকে সেটা না দেওয়া। দেশে যখন আদালত প্রতিষ্ঠা থাকে, তখন দেশে শান্তি থাকে। কিন্তু যখন আদালত ভেঙ্গে পড়ে, তখন দেশে অশান্তি শুরু হয়"।

২০১৮ এর নির্বাচনে এরদোয়ান দুটি অর্থনৈতিক ইশতিহার


১) সুদকে শূন্যের কাছাকাছি নিয়ে আসা। এরদোয়ানের মতে, সূদের পরিমাণ যতো বাড়ে, দ্রব্যমূল্যের দামও তত বাড়ে; এবং সূদের পরিমাণ যতো কমে দ্রব্যমূল্যের দামও তত কমে। এরদোয়ান যখন ক্ষমতায় আসেন তখন শতকরা সুদ ছিলো ৬৩ টাকা। কিন্তু ২০১৩ সালে সুদের পরিমাণ নেমে আসে ৪.০৬ টাকায় এবং বর্তমানে সুদের পরিমাণ শতকরা ১৩.৫০ টাকা। এরদোয়ানের নির্বাচনী ইশতিহার হলো সুদকে শূন্যের কাছাকাছি নিয়ে আসা।

২) এখন তুরস্কের টাকার মান নির্ণয় হয় ডলারের হিসাবে, তাই অ্যামেরিকা তুরস্ককে অর্থনৈতিক ধরা দিতে পারে। কিন্তু এরদোয়ানের পরিকল্পনা হলো, ডলারের পরিবর্তে স্বর্ণের হিসাবে তুরস্কের টাকার মান নির্ধারণ করা। এর ফলে চীন, রাশিয়া এবং ইরান সহ অন্যান্য দেশের মানুষেরা নিজের দেশের টাকা দিয়েই তুরস্কের সাথে ব্যবসা করতে পারবে, এবং তুরস্কও নিজেদের লিরা দিয়ে অন্য দেশের সাথে ব্যবসা করতে পারবে। যেমন, চীন থেকে একজন পরিদর্শক এসে চীনের মুদ্রা ইউয়ান দিয়েই তুরস্কে চলাফেরা করতে পারবে, এবং তুরস্কের একজন পরিদর্শক চীনে গিয়ে লিরা দিয়ে চলাফেরা করতে পারবে। এর ফলে তুরস্ক অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হতে পারবে।

 

আসুন রাজনীতি শিখি : ১৯৯৩ সালে দেয়া এরদোয়ানের বক্তব্য
______________


প্রিয় ভাইয়েরা, মানুষকে ভয় প্রদান করবেন না, সুসংবাদ প্রদান করুন। আমাদের এই প্রোগ্রামে কোনো ইমাম সাহেব থাকলে কিছু মনে করবেন না।


জুমার নামাজ বা ঈদের নামাজ পড়ার জন্যে মানুষ যখন মসজিদে আসেন, তখনি ইমাম সাহেবরা শুরু করেন –“কেন মসজিদে আসলেন? গতকাল মসজিদ খালি ছিলো, আর আজকে মসজিদে জায়গা হচ্ছে না। গতকাল আপনারা কোথায় ছিলেন? আপনারা এক ঈদ থেকে আরেক ঈদ পর্যন্ত, এক জুমা থেকে আরেক জুমা পর্যন্ত যদি মসজিদে না আসেন, তাহলে আপনাদের আসার দরকার নেই”।

আবার কিছু কিছু ইমাম সাহেব খুতবা দিতেই বসেই শুরু করেন – “এই যে বেপর্দা নারীরা! তারা তো সবাই জাহান্নামী। কোনো নারীর যদি একটা চুলও দেখা যায়, তাহলে সে ৪০ বছর জাহান্নামে থাকতে হবে। আর, আপনারা যারা নিয়মিত নামাজ পড়েন না, আপনারাও জাহান্নামে যাবেন। যারা রোজা রাখেন না, তারাও জাহান্নামে যাবেন”।

মনে রাখা প্রয়োজন, আমরা মুসলিম। আমাদের কথাগুলোও সবচেয়ে সুন্দর হওয়া উচিত। একজন ইমাম সাহেব যদি এভাবে বলতেন যে, “পর্দা করা নারীরা জান্নাতে যাবে। নামাজ-রোজা করা মানুষেরা জান্নাতে যাবে”। তাহলে কথাগুলো কতই না সুন্দর হতো!

ইমাম সাহেবরা কেন আল্লাহর জান্নাতকে নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেন?

মসজিদের ইমাম সাহেব কেবল 'জাহান্নাম-জাহান্নাম' বলার ফলে সাধারণ মানুষেরা তখন বলেন – “ঠিক আছে, আমরা মসজিদে না গিয়ে কোনো পীরের দরবারে যাবো। কারণ, পীর সাহেব তো জাহান্নামের ভয় দেখান না, বরং জান্নাতের কথা বলেন, এবং জান্নাতে যেতে সাহায্য করবেন বলে আশা দেন।”

প্রিয় ভাইয়েরা, মানুষকে ভয় প্রদান করবেন না, বরং সুসংবাদ প্রদান করুন। নিজেকে বিচারকের স্থানে রাখবেন না এবং মানুষকে শুধু শুধু বিচার করবেন না; বরং মানুষকে ক্ষমা করে দিন। আমরা বিচারক নই, আমরা সত্যের পথে আহবান কারী। কাউকে বলবেন না যে, 'সে কাফির', 'সে মুশরিক', 'সে মুনাফিক', এসব বলার অধিকার আমাদের নেই। এসব বলার অধিকার একমাত্র সব বিচারকের বড় বিচারক আল্লাহ তায়ালার। আমরা কেবল ভালোর দিকে মানুষকে ডাকবো, কেবল সৌন্দর্যের দিকে মানুষকে ডাকবো।

[সূত্র Erdoğan'ı Reis Yapan Efsane Konuşma, 12 dakikadan]


 


পাঁচটি মূলনীতি


বিদেশী ছাত্রদের উদ্দেশ্য এরদোয়ান বলেন, পাঁচটি মূলনীতির উপর ভিত্তি করে সবাই নিজ নিজ দেশকে গড়ে তোলা প্রয়োজন।

পাঁচটি মূলনীতি হলো, ১) স্বাধীনতা বা মুক্তচিন্তা, ২) আদালত বা ন্যায় বিচার, ৩) গণতন্ত্র, ৪) নৈতিকতা, এবং ৫) জনগণের নিরাপত্তা

অর্থনৈতিক অবস্থা


কোনো একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে, নাকি দেশটি ধ্বংস হচ্ছে, তা বোঝার একটি সহজ উপায় আছে।

ধরুন, ২০১৮ সাথে চালের দাম শতকরা ৫ টাকা বেড়েছে। যদি সরকারি চাকরির বেতনও শতকরা পাঁচ টাকা বাড়ে তাহলে বুঝতে হবে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সামনেও যাচ্ছে না, আবার, পিছনেও যাচ্ছে না। অর্থাৎ, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে না, বরং দেশ আগের মতোই চলছে।

যদি চালের দাম শতকরা ৫ টাকা বাড়ার সাথে সাথে সরকারি চাকরির বেতন শতকরা ৬ বা ১০ টাকা বেড়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে। অর্থাৎ, দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।


কিন্তু, যদি চালের দাম শতকরা ৫ টাকা বাড়ার পরেও সরকারি চাকরির বেতন না বাড়ে, তাহলে বুঝতে হবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পিছনের দিকে যাচ্ছে। অর্থাৎ, দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।


 

জাতিসঙ্ঘের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য


এরদোয়ান আজ লন্ডনে একটি বক্তব্য দেন। বক্তব্যের সারমর্ম হলো -

শেক্সপিয়ার যদি আজ বেঁচে থাকতেন, এবং তিনি যদি আবার 'হ্যামলেট' লিখতেন, তাহলে আমি বিশ্বাস করি, এখনো তিনি হ্যামলেটকে দিয়ে বলাতেন যে – “পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে”। কারণ, সিরিয়া, ফিলিস্তিন ও মায়ানমারে এখন যা হচ্ছে, তাতে অন্য কিছু তিনি বলতেন না।
.
[facebook url="https://www.facebook.com/trtworld/videos/2112121195724692/" /]
গত এক মাসে তুরস্কের চরম মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। ইউরোপ ও অ্যামেরিকা নৈতিক ও যৌক্তিকভাবে এরদোয়ানের সাথে হেরে গিয়ে এখন তুরস্ককে অর্থনৈতিক হামলা করছে।

দু’দিন আগে, তুরস্কের সেক্যুলার দলের প্রার্থী মোহাররেম ইঞ্জে ইউরোপের রাষ্ট্রদূতদের সাথে মিটিং করেছেন। সেখানে ইউরোপের রাষ্ট্রদূতেরা সেক্যুলার প্রার্থী মোহাররেম ইঞ্জেকে বলেন, “আপনি ক্ষমতায় আসলে এরদোয়ানকে কারাগারে পাঠাবেন নাকি?”

স্পষ্টত, ইউরোপ ও অ্যামেরিকা এরদোয়ানের চরম বিরোধী। ১৫ জুলাই ক্যু এর মাধ্যমে এরদোয়ানকে ক্ষমতা থেকে সরাতে না পেরে ইউরোপ এখন মরিয়া হয়ে উঠছে। যেকোনো ভাবেই হোক ইউরোপ ও অ্যামেরিকা এরদোয়ানের পতন চায়।


প্রশ্ন হলো, ইউরোপ ও অ্যামেরিকা কেন এরদোয়ানের এতো বিরোধী?

১) এরদোয়ান ইউরোপ ও অ্যামেরিকাকে প্রভু হিসাবে গ্রহণ করে না, বরং সব সময় ধমকের উপর রাখে। এটা ইউরোপ ও অ্যামেরিকার সহ্য হয় না। তাই তারা এরদোয়ানের কণ্ঠরোধ করতে চায়।

২) সারাবিশ্বের জুলুম ও নির্যাতনের কারণ হিসাবে এরদোয়ান জাতিসঙ্ঘকে দায়ী করেন। এরদোয়ান বলেন, বিশ্বশান্তির জন্যে জাতিসঙ্ঘের অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের পরিবর্তন করতে হবে, জাতিসঙ্ঘকে পুনর্গঠন করতে হবে। এবং বিশ্বের সবচেয়ে দানশীল রাষ্ট্র তুরস্ককে জাতিসঙ্ঘের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার সুযোগ দিতে হবে। এরদোয়ানের এসব যৌক্তিক প্রস্তাব ইউরোপের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

৩) এরদোয়ান তুরস্কের অর্থনীতিকে সুদমুক্ত ও স্বাধীন করতে চায়। বিশ্বব্যাংক ও IMF সহ যারা সুদের কারবার করে, এবং যারা বিভিন্ন মুসলিম দেশকে ঋণ দিয়ে অ্যামেরিকা ও ইউরোপের দাস করতে চায়, এরদোয়ান তাদের প্রতিরোধ করতে চায়।

৪) আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলার ও ইউরো যেভাবে বিশ্বের বুকে প্রভুত্ব বিস্তার করে আছে, এরদোয়ান তা খর্ব করে দিতে চায়। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলার ও ইউরোর পরিবর্তে স্বর্ণমুদ্রা চালু করতে চায় এরদোয়ান।

৫) এরদোয়ান মুসলিম বিশ্বকে একতাবদ্ধ করতে চায়, এবং যাবতীয় জুলুম থেকে পৃথিবীকে মুক্তি দিতে চায়। ফলে ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ অনেকেই এরদোয়ানের বিরোধিতা করছে এবং যেভাবেই হোক এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছে।



এরদোয়ানের বাণী_________


ইসলাম ছাড়া পৃথিবীতে এমন কোনো ধর্ম বা দর্শন আছে কি, যারা বলে মায়ের অর্থাৎ নারীর পায়ের নিচে জান্নাত?

- এরদোয়ান।

মায়ের কোলে থাকা ফিলিস্তিনি শিশুদেরকে অ্যামেরিকা হত্যা করেছে। অ্যামেরিকার হাতে ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্ত লেগে আছে। এরপর থেকে অ্যামেরিকা যতো গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শান্তির কথা বলবে, তাদের কোনো কথার-ই মূল্য থাকবে না। শিশু হত্যাকারীদের মুখে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের কথা মানায় না।

- এরদোয়ান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের ইফতার অনুষ্ঠানে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মুসলিম চিন্তাবিদ ও মনীষীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা

বিংশ শতাব্দীর মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা ১. আয়াতুল্লাহ খমিনী – (ইরান, ১৯০২ - ১৯৮৯) ২. আল্লামা তাবাতাবাঈ – (ইরান, ১৯০৩ - ১৯৮১) ৩. আবুল আ’লা মওদুদী – (পাকিস্তান, ১৯০৩ - ১৯৭৯) ৪. মালিক বিন নাবী – (আলজেরিয়া, ১৯০৫ - ১৯৭৩) ৫. হাসান আল বান্না – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৪৯) ৬. সাইয়েদ কুতুব – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৬৬) ৭. নুর উদ্দিন তোপচু – (তুরস্ক, ১৯০৯ – ১৯৭৫ ৮. ফজলুর রহমান – (পাকিস্তান, ১৯১৯- ১৯৮৮) ৯. মুর্তাজা মোতাহারী – (ইরান, ১৯২০ - ১৯৭৯) ১০. ইসমাইল রাজি আল ফারুকি - (ফিলিস্তিন, ১৯২১ - ১৯৮৬ ) ১১. আলী আইজাত বেগোভিচ – (বসনিয়া, ১৯২৫ - ২০০৩) ১২. নাজিমুদ্দিন এরবাকান – (তুরস্ক, ১৯২৬ - ২০১১) ১৩. শহীদ মোহাম্মদ বেহেশতী – (ইরান, ১৯২৮ - ১৯৮১) ১৪. নাকিব আল-আত্তাস – (ইন্দোনেশিয়া, ১৯৩১ - ) ১৫. হাসান আত-তুরাবী, (সুদান, ১৯৩২ - ২০১৬) ১৬. আলী শরিয়তি – (ইরান, ১৯৩৩ - ১৯৭৭) ১৭. সেজাই কারাকোচ - (তুরস্ক, ১৯৩৩ - ) ১৮. সাইয়্যেদ হোসাইন নাসর – (ইরান, ১৯৩৩ - ) ১৯. হাসান হানাফি – (মিশর, ১৯৩৫ - ) ২০. আবেদ আল জাবেরি – (মরক্কো, ১৯৩৬ - ২০১০) ২১. রশিদ ঘানুশী – (তিউনিসিয়া, ১৯৪১ - ) ২২. নাসের আবু জায়েদ – (মিশর, ১৯৪৩ - ২০

স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত দুই বিজ্ঞানীর দ্বন্দ্ব

স্টিফেন হকিং এবং মিচিও কাকু দু’জনই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী। বাংলাদেশে স্টিফেন হকিং-এর নামটি অনেক পরিচিত হলেও বিজ্ঞানের জগতে স্টিফেন হকিং-এর চেয়ে মিচিও কাকু-র অবদান অনেক বেশি। মিচিও কাকু হলেন ‘স্ট্রিং তত্ত্বের’ কো-ফাউন্ডার। এ তত্ত্বটি অতীতের বিগ ব্যাং তত্ত্বকে পিছনে ফেলে বর্তমানে বিজ্ঞানে বিপ্লব নিয়ে এসেছে। তাই বিশ্বের কাছে স্টিফেন হকিং এর চেয়ে মিচিও কাকু’র জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। নিউ ইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার বইয়ের তালিকায় সাধারণত বিজ্ঞানের কোনো বই পাওয়া না গেলেও সেখানে মিচিও কাকু-র বিজ্ঞান বিষয়ক তিনটি বই বেস্টসেলার হয়েছে। অবশ্য, সেই তালিকায় স্টিফেন হকিং-এর একটি বইও নেই। দু’জনেই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী হলেও স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে দু’জনের অবস্থান দুই প্রান্তে।   ১ - ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে তাঁদের বিতর্ক।   স্টিফেন হকিং তাঁর ‘The Grand Design’ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে বলেছেন, ‘দর্শন মরে গেছে এবং ধর্ম অকার্যকর হয়ে গেছে, এখন কেবল বিজ্ঞানের যুগ’। তাঁর মতে, সত্য মানেই বিজ্ঞান। ধর্ম ও দর্শনের যাবতীয় সমস্যা বিজ্ঞান দিয়ে সমাধান করা সম্ভব। তাই, ধর্ম ও দর্শন এখন অপ্রয়

সকল জ্ঞান-ই ইসলামের সম্পদ

কোর'আন একটি জ্ঞান, হাদিস একটি জ্ঞান, ফিকাহ একটি জ্ঞান, দর্শন একটি জ্ঞান, এবং বিজ্ঞান একটি জ্ঞান। এদের মাঝে স্তরবিন্যাসে পার্থক্য থাকলেও একটি জ্ঞান কখনো অন্য জ্ঞানের বিরোধী হয় না। আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা প্রথম যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন, তা পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে কেউ যে নামেই জ্ঞান চর্চা করুক না কেন, তা আল্লাহর সত্য জ্ঞানের সাথে কখনো বিরোধী হওয়া সম্ভব না। অজ্ঞতার কারণে অনেকেই মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। এবং দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের বৈপরীত্য রয়েছে। নাস্তিকরা মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলুল কোর'আন মনে করেন, কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলে হাদিস মনে করেন, হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। কিছু কিছু ধার্মিক মনে করেন, ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। আধুনিক বস্তুবাদী বিজ্ঞানী মনে করেন, বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম ও দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। কিন্তু, আসলে সব জ্ঞান-ই আল্লাহর পক্