সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হাদিস সমগ্র

বিয়েতে ‘গায়ে হলুদ’ প্রসঙ্গে একটি হাদিস


আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা) মদিনায় আসার পর রাসূল (সা) তাঁর সাথে সা’দ ইবনে রাবী আল আনসারী (রা)-এর ভ্রাতৃত্ব বন্ধন গড়ে দিলেন। এ আনসারীর দু’জন স্ত্রী ছিল। সা’দ (রা) আবদুর রহমান (রা)-কে বললেন, "আপনি আমার পরিবার এবং সম্পদের অর্ধেক নিন"। তিনি উত্তরে বললেন, "আল্লাহ্‌ আপনার পরিবার ও সম্পদে বারাকাত দিন। আপনি আমাকে বাজার দেখিয়ে দিন"।




এরপর আবদুর রহমান বাজারে গিয়ে পনির ও মাখনের ব্যবসা করে লাভবান হলেন।


কিছুদিন পরে রসূল (সা) আবদুর রহমান (রা)-এর শরীরে হলুদ রঙের দাগ দেখতে পেলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, "হে আবদুর রহমান। কী হয়েছে তোমার?"

তিনি উত্তরে বললেন, "আমি এক আনসারী মেয়েকে বিয়ে করেছি"। নবী (সা) জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি কত মোহর দিয়েছ?"। তিনি উত্তরে বললেন, "এক টুকরো স্বর্ণ"। নবী (সা) বললেন, একটি বকরী দিয়ে হলেও খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠান করো।

[সহীহ বুখারী - ৫০৭২, মাকতাবায়ে শামেলা]
_______________

مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ قَدِمَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ عَوْفٍ فَآخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَه“ وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ الأَنْصَارِيِّ وَعِنْدَ الأَنْصَارِيِّ امْرَأَتَانِ فَعَرَضَ عَلَيْهِ أَنْ يُنَاصِفَه“ أَهْلَه“ وَمَالَه“ فَقَالَ بَارَكَ اللهُ لَكَ فِي أَهْلِكَ وَمَالِكَ دُلُّوْنِي عَلَى السُّوْقِ فَأَتَى السُّوْقَ فَرَبِحَ شَيْئًا مِنْ أَقِطٍ وَشَيْئًا مِنْ سَمْنٍ فَرَآهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ أَيَّامٍ وَعَلَيْهِ وَضَرٌ مِنْ صُفْرَةٍ فَقَالَ مَهْيَمْ يَا عَبْدَ الرَّحْمٰنِ فَقَالَ تَزَوَّجْتُ أَنْصَارِيَّةً قَالَ فَمَا سُقْتَ إِلَيْهَا قَالَ وَزْنَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ قَالَ أَوْلِمْ وَلَوْ بِشَاةٍ.


 

**************


খাবার খাওয়ার নিয়ম


“মানুষ পেটের চেয়ে অধিক নিকৃষ্ট কোনো পাত্র পূর্ণ করে না। মেরুদণ্ড সোজা রাখতে পারে, এমন কয়েক লোকমাই বনি আদমের জন্যে যথেষ্ট। যদি আরো বেশি খাবার প্রয়োজন হয়, তাহলে পাকস্থলীর এক-তৃতীয়াংশ খাদ্যের জন্যে, এক-তৃতীয়াংশ পানির জন্যে, এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্যে রাখবে”।

[তিরমিজি, সহীহ হাদিস – ২৩৮০]
__________

عن المقدام بن معد يكرب قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا مَلَأَ آدَمِيٌّ وِعَاءً شَرًّا مِنْ بَطْنٍ بِحَسْبِ ابْنِ آدَمَ أُكُلَاتٌ يُقِمْنَ صُلْبَهُ فَإِنْ كَانَ لَا مَحَالَةَ فَثُلُثٌ لِطَعَامِهِ وَثُلُثٌ لِشَرَابِهِ وَثُلُثٌ لِنَفَسِهِ


**************
নারীদেরকে খারাপ বলার প্রতিবাদ


আয়েশা (রা)-এর সামনে আলোচনা হচ্ছিলো যে, নামাজের সামনে দিয়ে কুকুর, গাধা ও নারীরা যাতায়াত করলে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়।

আয়েশা (রা) বললেন, তোমরা আমাদেরকে কুকুর ও গাধার সমতুল্য মনে করছো? আল্লাহর কসম, আমি রাসূল (স)-কে নামাজ পড়তে দেখতাম, অথচ, তাঁর ও কিবলার মধ্যবর্তী স্থানে আমি খাটে শুয়ে থাকতাম।

[সহীহ মুসলিম – ২৭০, মাকতাবায়ে শামেলা]
_______

عَنْ عَائِشَةَ، وَذُكِرَ عِنْدَهَا مَا يَقْطَعُ الصَّلَاةَ الْكَلْبُ، وَالْحِمَارُ، وَالْمَرْأَةُ فَقَالَتْ عَائِشَةُ: قَدْ شَبَّهْتُمُونَا بِالْحَمِيرِ وَالْكِلَابِ، وَاللهِ لَقَدْ «رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي وَإِنِّي عَلَى السَّرِيرِ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْقِبْلَةِ مُضْطَجِعَةً،

**************


সম্পদ


অনেক সম্পদ হলেই কেউ ধনী হয় না,বরং মনের দিক থেকে ধনী হওয়াই প্রকৃত ধনী।

- মুহাম্মদ (স), সহীহ বুখারী - ৬৪৪৬।
________

لَيْسَ الْغِنَى عَنْ كَثْرَةِ الْعَرَضِ وَلَكِنَّ الْغِنَى غِنَى النَّفْسِ

**************

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?

এক ভাইয়া প্রশ্ন করেছেন – “তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?” এ প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় ও দার্শনিক দিক থেকে পৃথিবীতে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, এবং এখনো চলছে। কিন্তু ভাইয়া আমাকে বলেছেন খুব সহজ ভাষায় লেখার জন্যে। অবশ্য, আমি সবকিছু সহজ-সরল করেই লেখার চেষ্টা করি। কারণ, আমি ছোট মানুষ, কঠিন ও প্যাঁচালো লেখা যথাসম্ভব কম পড়ি ও লিখি। যাই হোক, তাকদীরের বিষয়টা আমার কাছে খুবই সহজ একটি বিষয় মনে হয়। এ বিষয়ে আমাদের মনে সাধারণত দু’টি প্রশ্ন জাগে। ১। ‘তাকদীর’ বা ভাগ্য যদি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আগেই নির্ধারিত হয়ে থাকে, তাহলে আমরা আর ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে লাভ কি? অথবা, ২। আমরাই যদি নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে আল্লাহ দ্বারা নির্ধারিত ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে হবে কেন? এ প্রশ্নগুলোর জবাব জানার আগে কিছু উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বোঝার চেষ্টা করব।

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...