সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মুসলিমরা অত্যাচারিত হবার কারণ কি?

সিরিয়া ও মিয়ানমার সহ সারাবিশ্বের মুসলিমদেরকে আঘাত করছে অমুসলিমরা। এর কারণ হলো মুসলিমদের বিভক্তি। যদি প্রশ্ন করা হয়, মুসলিমদের বিভক্তির কারণ কি? উত্তর - অজ্ঞতা।

রাসূল (স)-এর আগমনের পূর্বে, অর্থাৎ অজ্ঞতার যুগে আরবের গোত্রে গোত্রে কেবল যুদ্ধ হতো। রাসূল (স) এসে সেই অজ্ঞ জাতিকে বললেন - "পড়"। মানুষ যখন পড়তে শুরু করলো, তখন তাঁদের মধ্যে শান্তির সু-বাতাস বইতে লাগলো। এবং এই শান্তির সু-বাতাস ছড়িয়ে পড়লো সারাবিশ্বে।

এরপর, মুসলিমরা আবার যখন জ্ঞান থেকে দূরে সরে গেলো, তখনি মুসলিমদের মধ্যে বিভক্তি শুরু হলো, এবং ভাইয়ে ভাইয়ে যুদ্ধ শুরু হলো। অজ্ঞতাই হলো নিজেরা নিজেরা যুদ্ধের কারণ। এবং অজ্ঞতাই হলো শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে না পারার কারণ।


খুব সাধারণ একটি সূত্র দেখুন,

বাসে বা ট্রেনে আপনার পাশে বসা অপরিচিত একজন মানুষ। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি তার সাথে কথা বলে তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে না পারবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার মনে এক ধরণের ভয় বা সংশয় কাজ করবে। কিন্তু যখন আপনি তার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন, তখনি তাকে বন্ধুর মতো মনে হবে।

বর্তমানে মুসলিমরা একে অপরকে শত্রু মনে করছে। এর কারণ, মুসলিমরা একে অপরকে জানার চেষ্টা করছে না। ফেইসবুকে আমরা একে অপরকে জানতে যতটা আগ্রহী, তার চেয়ে ঝগড়া করতে বেশী আগ্রহী।

দুইজন অশিক্ষিত মানুষ যতো তাড়াতাড়ি ঝগড়া শুরু করে দেয়, দুইজন শিক্ষিত মানুষ ততো তাড়াতাড়ি ঝগড়া শুরু করে দেয় না। শিক্ষা হলো ঐক্যের অন্যতম মাধ্যম। আর, ঐক্য হলো শত্রুর আঘাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার মাধ্যম।

আমরা মুসলিমরা আজ সারাবিশ্বে নির্যাতিত হবার পিছনে অন্যতম কারণ হলো আমাদের অজ্ঞতা।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?

এক ভাইয়া প্রশ্ন করেছেন – “তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?” এ প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় ও দার্শনিক দিক থেকে পৃথিবীতে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, এবং এখনো চলছে। কিন্তু ভাইয়া আমাকে বলেছেন খুব সহজ ভাষায় লেখার জন্যে। অবশ্য, আমি সবকিছু সহজ-সরল করেই লেখার চেষ্টা করি। কারণ, আমি ছোট মানুষ, কঠিন ও প্যাঁচালো লেখা যথাসম্ভব কম পড়ি ও লিখি। যাই হোক, তাকদীরের বিষয়টা আমার কাছে খুবই সহজ একটি বিষয় মনে হয়। এ বিষয়ে আমাদের মনে সাধারণত দু’টি প্রশ্ন জাগে। ১। ‘তাকদীর’ বা ভাগ্য যদি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আগেই নির্ধারিত হয়ে থাকে, তাহলে আমরা আর ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে লাভ কি? অথবা, ২। আমরাই যদি নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে আল্লাহ দ্বারা নির্ধারিত ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে হবে কেন? এ প্রশ্নগুলোর জবাব জানার আগে কিছু উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বোঝার চেষ্টা করব।

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...