সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আত্মশুদ্ধি, আত্মউন্নয়ন ও সফলতার ছয়টি উপায়।

‘আত্মশুদ্ধি’ বা ‘তাজকিয়াতুন নাফস’ শব্দগুলো শুনলেই আমরা মনে করি এগুলো পীরপন্থীদের কথা। অথচ কোর’আনে আত্মশুদ্ধি ও আত্মউন্নয়নের অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, এবং এর উপায়গুলোও শিখিয়ে দেয়া হয়েছে।

আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব সম্পর্ক আল্লাহ তায়ালা বলেন –

وَنَفْسٍ وَمَا سَوَّاهَا - فَأَلْهَمَهَا فُجُورَهَا وَتَقْوَاهَا - قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا - وَقَدْ خَابَ مَن دَسَّاهَا

“শপথ নফসের এবং যিনি এটিকে সুবিন্যস্ত করেছেন। তিনি নফসকে অসৎকর্ম এবং সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। যে ব্যক্তি তার নফসকে পবিত্র করবে, সে সফলকাম হবে। এবং যে ব্যক্তি তার নফসকে কলুষিত করবে, সে ব্যর্থ হবে”। [সূরা ৯১/ শামস – ৭,৮,৯,১০]

আত্মশুদ্ধি হলো দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করার উপায়। যিনি নিজের নফসের উন্নয়ন করতে পারবেন না, তিনি দুনিয়া ও আখিরাতের সকল কাজেই ব্যর্থ হবেন।

এবার, কোর’আনের আলোকে আত্মশুদ্ধি ও আত্মউন্নয়নের উপায়গুলো দেখে নেয়া যাক।

১। প্রতি মুহূর্তে আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করার মাধ্যমে আত্মসচেতন ও জাগ্রত হওয়া।

আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

وَاذْكُر رَّبَّكَ فِي نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَخِيفَةً وَدُونَ الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ وَلَا تَكُن مِّنَ الْغَافِلِينَ

“তুমি তোমার প্রতিপালককে বিনীত ও সংকোচে, অনুচ্চস্বরে, সকালে ও সন্ধ্যায় তোমার নফসের মাধ্যমে স্মরণ করবে। আর তুমি উদাসীন হবে না।” [সূরা ৭/ আরাফ - ২০৫]

আমাদের মন যখন উদাসীন হয়ে যায়, অথবা, আমরা কোনো কাজ করতে গেলে যখন বারবার ভুল করি, তখন বুঝতে হবে যে, আমাদের নফসে সমস্যা রয়েছে। নফসের এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার উপায় হলো, প্রতি মুহূর্তে মনে মনে কিংবা অল্প আওয়াজে আল্লাহর জিকির করা। আমরা যতবেশি আল্লাহর জিকির করবো, ততবেশি নিজের সম্পর্কে মনোযোগী হতে পারবো। এবং যতবেশি নিজের প্রতি ও নিজের কাজের প্রতি মনযোগী হতে পারবো, ততবেশি সফল হতে পারবো।

২। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাসী হওয়া।

আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

وَلَقَدْ آتَيْنَا لُقْمَانَ الْحِكْمَةَ أَنِ اشْكُرْ لِلَّهِ ۚ وَمَن يَشْكُرْ فَإِنَّمَا يَشْكُرُ لِنَفْسِهِ ۖ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ حَمِيدٌ

“আমি লোকমানকে প্রজ্ঞা দান করেছিলাম যাতে সে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হতে পারে। যে ব্যক্তি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, সে নিজের নফসের জন্যেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আর কেউ যদি অকৃতজ্ঞ হয়, তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ অভাবমুক্ত ও প্রশংসার্হ।” [সূরা ৩১/ লুকমান - ১২]

পৃথিবীতে আত্মবিশ্বাসী মানুষেরাই কেবল সফল হতে পারে। আত্মবিশ্বাসী মানুষ হবার প্রধান শর্ত হলো, নিজের প্রতি নিজে সন্তুষ্ট হওয়া এবং অন্য মানুষদের সাথে অহংকার ও হিংসা না করা। কিন্তু, নিজের প্রতি সন্তুষ্ট হবার প্রধান শর্ত হলো, জীবনের প্রতিটি কাজে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হওয়া এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।

নিজের উপর আত্মবিশ্বাসী হবার জন্যে এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জ্ঞান ও প্রজ্ঞার। আত্মশুদ্ধি ও আত্মউন্নয়নের দ্বিতীয় ধাপ হলো, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে নিজের প্রতি নিজের আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করা।

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যিনি যতো বেশি ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলতে পারেন, তিনি ততবেশি আত্মবিশ্বাসী হতে পারেন, এবং তিনি ততবেশি সফল হতে পারেন।

৩। আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী সত্য পথের অনুসন্ধান করা।

আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

إِنَّا أَنزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ لِلنَّاسِ بِالْحَقِّ ۖ فَمَنِ اهْتَدَىٰ فَلِنَفْسِهِ ۖ وَمَن ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا ۖ وَمَا أَنتَ عَلَيْهِم بِوَكِيلٍ

“আমি আপনার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি মানুষের কল্যাণকল্পে। অতএব, যে সৎপথ অবলম্বন করে, সে তা নিজের নফসের জন্যেই তা করে। আর, যে পথভ্রষ্ট হয়, সে নিজের নসফকেই পথভ্রষ্ট করে। আপনি তাদের জন্যে দায়ী নন”। [সূরা ৩৯/ যুমার – ৪১]

সত্য মানে স্থায়ী, এবং মিথ্যা মানে অস্থায়ী। আমরা যদি কোর’আন অনুযায়ী সত্যের পথের অবলম্বন করি, তাহলে আমাদের প্রতিটি কাজ দুনিয়া ও আখিরাতে স্থায়ী হবে। কিন্তু আমরা যদি মিথ্যার পথ অবলম্বন করি, তাহলে আমারদের প্রতিটি কাজ বৃথা হয়ে যাবে।

নিজেদের সফলতার জন্যেই আমাদেরকে সৎ পথ অবলম্ব করা উচিত এবং যাবতীয় মিথ্যা ও অসৎ উপায় থেকে বেঁচে থাকা উচিত।

৪। আত্মউন্নয়নের জন্যে নিয়মিত সাধনা ও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

وَمَن جَاهَدَ فَإِنَّمَا يُجَاهِدُ لِنَفْسِهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَغَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ

“যে সাধনা করে, সে তো নিজের নফসের জন্যেই সাধনা করে। আল্লাহ তো বিশ্বজগত থেকে অমুখাপেক্ষী।” [সূরা ২৯/ আনকাবুত – ৬]

অনেকে মনে করেন, আত্মশুদ্ধি বা আত্মউন্নয়নের জন্যে কেবল আল্লাহর জিকির করলেই হয়, কোনো ধরণের পরিশ্রম বা সাধনা করতে হয় না। কিন্তু, আল্লাহ বলছেন, আত্মউন্নয়নের জন্যে অনেক সাধনা ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

আমরা পৃথিবীতে যতই যুদ্ধ-সংগ্রাম ও প্রচেষ্টা করি না কেনো, তা দিয়ে আল্লাহর কোনো লাভ নেই। মূলত আমাদের নিজেদের আত্মউন্নয়নের জন্যেই আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যাবতীয় যুদ্ধ-সংগ্রাম ও সাধনা করতে বলেছেন।

৫। নিজের কাজ নিজে করা, অতিরিক্ত কাজের বোঝা না নেওয়া, এবং নিজের ভুলগুলো নিয়মিত সংশোধন করার মাধ্যমে নিজের দক্ষতা উন্নয়ন করা।

আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ ۚ وَإِن تَدْعُ مُثْقَلَةٌ إِلَىٰ حِمْلِهَا لَا يُحْمَلْ مِنْهُ شَيْءٌ وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَىٰ ۗ إِنَّمَا تُنذِرُ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِالْغَيْبِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ ۚ وَمَن تَزَكَّىٰ فَإِنَّمَا يَتَزَكَّىٰ لِنَفْسِهِ ۚ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ

“কেউ একে অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার অতিরিক্ত ভার বহন করার জন্যে অন্যকে আহবান করে, তবুও কেউ তা বহন করবে না; এমনকি নিকটবর্তী আত্মীয়রাও না। আপনি কেবল তাদেরকে সতর্ক করেন, যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখেও ভয় করে এবং নামায কায়েম করে। যে নিজেকে সংশোধন করলো, সে নিজের নফসের জন্যেই করলো। আর, আল্লাহর নিকটই সকলের প্রত্যাবর্তন।” [সূরা ৩৫/ ফাতির - ১৮]

একজন মানুষের নামাজ যেমন অন্য মানুষ পড়ে দিতে পারে না, তেমনি কোনো ব্যক্তির নিজের কাজগুলো অন্যকে দিয়ে করানো যায় না। একাই নিজের কাঁধে অনেক কাজের বোঝা নিয়ে নেয়া উচিত না। বরং জীবনে অল্প কাজের দায়িত্ব নিয়ে সে কাজটি নিজে নিজেই করা উচিত।

পৃথিবীতে তাঁরাই সফলতা লাভ করে, যারা নিজের কাজগুলো নিজে নিজেই করে ফেলে। যারা অলসতা করে নিজের কাজ অন্যের জন্যে রেখে দেয়, তারা পৃথিবীতে ব্যর্থ হয়। নিজের কাজ নিজে করার মাধ্যমে এবং নিজের ভুলগুলো নিজেই সংশোধন করার মাধ্যমেই একজন মানুষ দক্ষ ও সফল হয়ে উঠে।

৬। সে কাজটি করা উচিত, যে কাজে নিজের ও অন্যের উপকার রয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

مَّنْ عَمِلَ صَالِحًا فَلِنَفْسِهِ ۖ وَمَنْ أَسَاءَ فَعَلَيْهَا ۗ وَمَا رَبُّكَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيدِ

“যে সৎকর্ম করে, সে নিজের নফসের জন্যেই তা করে। আর যে অসৎকর্ম করে, তাও তার নফসের উপরই বর্তাবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেও যুলুম করেন না।” [সূরা ৪১/ হা-মীম আস-সাজদা - ৪৬]

একজন মানুষ নিজের জন্যে এবং অন্যের জন্যে যতবেশি উপকারী কাজ করতে পারে, তিনি ততবেশি সফল হতে পারেন। সারাজীবন সিগারেট পান করে কেউ সফল হতে পারে না, কেননা এই সিগারেট পান করার মধ্যে নিজের বা অন্যের ক্ষতি ছাড়া কোনো উপকার নেই।

আত্মশুদ্ধি, আত্মউন্নয়ন এবং সফলতার জন্যে সেই কাজগুলো বেশি বেশি করা উচিত, যে কাজগুলোর মধ্যে নিজের ও অন্যের জন্যে উপকার রয়েছে।
________

উপরোক্ত ছয়টি উপায় ছাড়াও আত্মশুদ্ধি, আত্মউন্নয়ন এবং সফলতার জন্যে কোর’আনে আরো অনেক উপায় বলে দেয়া হয়েছে। তবে, উপরোক্ত ছয়টি উপায়ে সরাসরি নফসের সাথে সম্পর্কিত। তাই উপরোক্ত ছয়টি উপায়ে আমাদের নফসের উন্নয়ন বা আত্মশুদ্ধি করা প্রয়োজন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মুসলিম চিন্তাবিদ ও মনীষীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা

বিংশ শতাব্দীর মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা ১. আয়াতুল্লাহ খমিনী – (ইরান, ১৯০২ - ১৯৮৯) ২. আল্লামা তাবাতাবাঈ – (ইরান, ১৯০৩ - ১৯৮১) ৩. আবুল আ’লা মওদুদী – (পাকিস্তান, ১৯০৩ - ১৯৭৯) ৪. মালিক বিন নাবী – (আলজেরিয়া, ১৯০৫ - ১৯৭৩) ৫. হাসান আল বান্না – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৪৯) ৬. সাইয়েদ কুতুব – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৬৬) ৭. নুর উদ্দিন তোপচু – (তুরস্ক, ১৯০৯ – ১৯৭৫ ৮. ফজলুর রহমান – (পাকিস্তান, ১৯১৯- ১৯৮৮) ৯. মুর্তাজা মোতাহারী – (ইরান, ১৯২০ - ১৯৭৯) ১০. ইসমাইল রাজি আল ফারুকি - (ফিলিস্তিন, ১৯২১ - ১৯৮৬ ) ১১. আলী আইজাত বেগোভিচ – (বসনিয়া, ১৯২৫ - ২০০৩) ১২. নাজিমুদ্দিন এরবাকান – (তুরস্ক, ১৯২৬ - ২০১১) ১৩. শহীদ মোহাম্মদ বেহেশতী – (ইরান, ১৯২৮ - ১৯৮১) ১৪. নাকিব আল-আত্তাস – (ইন্দোনেশিয়া, ১৯৩১ - ) ১৫. হাসান আত-তুরাবী, (সুদান, ১৯৩২ - ২০১৬) ১৬. আলী শরিয়তি – (ইরান, ১৯৩৩ - ১৯৭৭) ১৭. সেজাই কারাকোচ - (তুরস্ক, ১৯৩৩ - ) ১৮. সাইয়্যেদ হোসাইন নাসর – (ইরান, ১৯৩৩ - ) ১৯. হাসান হানাফি – (মিশর, ১৯৩৫ - ) ২০. আবেদ আল জাবেরি – (মরক্কো, ১৯৩৬ - ২০১০) ২১. রশিদ ঘানুশী – (তিউনিসিয়া, ১৯৪১ - ) ২২. নাসের আবু জায়েদ – (মিশর, ১৯৪৩ - ২০

স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত দুই বিজ্ঞানীর দ্বন্দ্ব

স্টিফেন হকিং এবং মিচিও কাকু দু’জনই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী। বাংলাদেশে স্টিফেন হকিং-এর নামটি অনেক পরিচিত হলেও বিজ্ঞানের জগতে স্টিফেন হকিং-এর চেয়ে মিচিও কাকু-র অবদান অনেক বেশি। মিচিও কাকু হলেন ‘স্ট্রিং তত্ত্বের’ কো-ফাউন্ডার। এ তত্ত্বটি অতীতের বিগ ব্যাং তত্ত্বকে পিছনে ফেলে বর্তমানে বিজ্ঞানে বিপ্লব নিয়ে এসেছে। তাই বিশ্বের কাছে স্টিফেন হকিং এর চেয়ে মিচিও কাকু’র জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। নিউ ইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার বইয়ের তালিকায় সাধারণত বিজ্ঞানের কোনো বই পাওয়া না গেলেও সেখানে মিচিও কাকু-র বিজ্ঞান বিষয়ক তিনটি বই বেস্টসেলার হয়েছে। অবশ্য, সেই তালিকায় স্টিফেন হকিং-এর একটি বইও নেই। দু’জনেই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী হলেও স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে দু’জনের অবস্থান দুই প্রান্তে।   ১ - ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে তাঁদের বিতর্ক।   স্টিফেন হকিং তাঁর ‘The Grand Design’ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে বলেছেন, ‘দর্শন মরে গেছে এবং ধর্ম অকার্যকর হয়ে গেছে, এখন কেবল বিজ্ঞানের যুগ’। তাঁর মতে, সত্য মানেই বিজ্ঞান। ধর্ম ও দর্শনের যাবতীয় সমস্যা বিজ্ঞান দিয়ে সমাধান করা সম্ভব। তাই, ধর্ম ও দর্শন এখন অপ্রয়

সকল জ্ঞান-ই ইসলামের সম্পদ

কোর'আন একটি জ্ঞান, হাদিস একটি জ্ঞান, ফিকাহ একটি জ্ঞান, দর্শন একটি জ্ঞান, এবং বিজ্ঞান একটি জ্ঞান। এদের মাঝে স্তরবিন্যাসে পার্থক্য থাকলেও একটি জ্ঞান কখনো অন্য জ্ঞানের বিরোধী হয় না। আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা প্রথম যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন, তা পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে কেউ যে নামেই জ্ঞান চর্চা করুক না কেন, তা আল্লাহর সত্য জ্ঞানের সাথে কখনো বিরোধী হওয়া সম্ভব না। অজ্ঞতার কারণে অনেকেই মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। এবং দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের বৈপরীত্য রয়েছে। নাস্তিকরা মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলুল কোর'আন মনে করেন, কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলে হাদিস মনে করেন, হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। কিছু কিছু ধার্মিক মনে করেন, ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। আধুনিক বস্তুবাদী বিজ্ঞানী মনে করেন, বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম ও দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। কিন্তু, আসলে সব জ্ঞান-ই আল্লাহর পক্