সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

'ইসলামী চিন্তার মানচিত্র' পরিচিতি

১৬ নভেম্বর ২০১৭। ইসলামী জ্ঞানের জগতে একটি বিশাল বিপ্লব প্রকাশিত হয়েছে। বিপ্লবটি পরিচালনা করেছেন তুরস্কের প্রায় ২০০ জন বুদ্ধিজীবী। আর, বিপ্লবটির নাম – “মুসলিম চিন্তাবিদদের মানচিত্র”।

রাসূল (স)-এর পর থেকে আজ পর্যন্ত মুসলিমদের যত দার্শনিক, বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ছিলেন, সবাইকে এক কাতারে এবং এক নজরে নিয়ে এসেছে এই মানচিত্রটি। তিন খণ্ডের বই ও একটি চমৎকার ওয়েব সাইটের মাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়েছে।

https://www.islamdusunceatlasi.org/timemaps/1


উপরের লিংকটিতে সকল মুসলিম দার্শনিক, বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদদের সিরিয়াল করা হয়েছে সময় অনুযায়ী। এখানে আপনি দেখতে পাবেন, কোন যুগে কোন দার্শনিক-বিজ্ঞানী-চিন্তাবিদ কি কি অবদান রেখেছেন। এ ছাড়া, তাঁরা কোথায় জন্ম গ্রহণ করেছেন, কোথায় মৃত্যু বরণ করেছে, এবং কোথায় কোথায় ভ্রমণ করেছেন, সব কিছু মানচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে।

এরপর নিচে দেখুন, চারটি লিঙ্ক দেয়া আছে। প্রথম লিঙ্কে প্রবেশ করলে দেখবেন, দর্শন শাস্ত্রে মুসলিমদের যত মৌলিক বই ছিলো, তার একটি লিস্ট। দ্বিতীয় লিঙ্কে কালাম, তৃতীয় লিঙ্কে মানতিক এবং চতুর্থ লিঙ্কে দেয়া আছে তাসাউফের মৌলিক বইগুলোর লিস্ট। এখানে যে কোনো বইয়ে ক্লিক করলে ঐ বইটির উপর লেখা অন্য বইগুলোর আরেকটি লিস্টও পাওয়া যাবে।

দর্শন: https://www.islamdusunceatlasi.org/bookmaps/330

কালাম: https://www.islamdusunceatlasi.org/bookmaps/331

মানতিক বা লজিক: https://www.islamdusunceatlasi.org/bookmaps/332

তাসাউফ: https://www.islamdusunceatlasi.org/bookmaps/333

এরপর, নিচে যে লিংকটি দেয়া আছে, তা খুবই চমৎকার। এখানে আকাশের নক্ষত্র ও তারার মত মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি আকাশ তৈরি করা হয়েছে। বড় বড় বৃত্তে যে নামগুলো রয়েছে, তাঁরা হলেন বড় বড় চিন্তাবিদ। আর, ছোট ছোট বিন্দুতে যে নামগুলো রয়েছে, তাঁরা হলেন ছোট ছোট চিন্তাবিদ। এখানে সব চিন্তাবিদকে একসাথে দেয়া আছে। আবার দর্শন, কালাম, তাসাউফের জন্যে আলাদা আলাদা করে মুসলিম নক্ষত্রদের আকাশ নির্মাণ করা হয়েছে।

সবচেয়ে চমৎকার বিষয় হলো, যে কোনো একজন চিন্তাবিদের নামে ক্লিক করলে, তাঁর সকল শিক্ষক ও ছাত্রদেরকেও দেখা যাবে।

https://www.islamdusunceatlasi.org/peoplemaps

এ ছাড়া আরো অসংখ্য সুন্দর সুন্দর জিনিস দিয়ে এক অসাধারণ জ্ঞানের বিপ্লব সাধন করে ফেলেছেন তুরস্কের বুদ্ধিজীবীগণ।

এ কাজটি মুসলিম বিশ্বে নতুন করে জ্ঞানের আলোড়ন সৃষ্টি করবে। এবং এ কাজটির মাধ্যমে মুসলিমদের যাবতীয় হীনমন্যতা দূর হয়ে যাবে, মুসলিমরা আবার নতুন করে জ্ঞান অর্জনে অনেক বেশি উৎসাহী হবে।

তাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলা ভাষায় এই কাজটির মতো একটি কাজ করে ফেলা প্রয়োজন। আল্লাহ আমাদেরকে সেই তাওফিক দান করুক।


 

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মুসলিম চিন্তাবিদ ও মনীষীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা

বিংশ শতাব্দীর মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা ১. আয়াতুল্লাহ খমিনী – (ইরান, ১৯০২ - ১৯৮৯) ২. আল্লামা তাবাতাবাঈ – (ইরান, ১৯০৩ - ১৯৮১) ৩. আবুল আ’লা মওদুদী – (পাকিস্তান, ১৯০৩ - ১৯৭৯) ৪. মালিক বিন নাবী – (আলজেরিয়া, ১৯০৫ - ১৯৭৩) ৫. হাসান আল বান্না – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৪৯) ৬. সাইয়েদ কুতুব – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৬৬) ৭. নুর উদ্দিন তোপচু – (তুরস্ক, ১৯০৯ – ১৯৭৫ ৮. ফজলুর রহমান – (পাকিস্তান, ১৯১৯- ১৯৮৮) ৯. মুর্তাজা মোতাহারী – (ইরান, ১৯২০ - ১৯৭৯) ১০. ইসমাইল রাজি আল ফারুকি - (ফিলিস্তিন, ১৯২১ - ১৯৮৬ ) ১১. আলী আইজাত বেগোভিচ – (বসনিয়া, ১৯২৫ - ২০০৩) ১২. নাজিমুদ্দিন এরবাকান – (তুরস্ক, ১৯২৬ - ২০১১) ১৩. শহীদ মোহাম্মদ বেহেশতী – (ইরান, ১৯২৮ - ১৯৮১) ১৪. নাকিব আল-আত্তাস – (ইন্দোনেশিয়া, ১৯৩১ - ) ১৫. হাসান আত-তুরাবী, (সুদান, ১৯৩২ - ২০১৬) ১৬. আলী শরিয়তি – (ইরান, ১৯৩৩ - ১৯৭৭) ১৭. সেজাই কারাকোচ - (তুরস্ক, ১৯৩৩ - ) ১৮. সাইয়্যেদ হোসাইন নাসর – (ইরান, ১৯৩৩ - ) ১৯. হাসান হানাফি – (মিশর, ১৯৩৫ - ) ২০. আবেদ আল জাবেরি – (মরক্কো, ১৯৩৬ - ২০১০) ২১. রশিদ ঘানুশী – (তিউনিসিয়া, ১৯৪১ - ) ২২. নাসের আবু জায়েদ – (মিশর, ১৯৪৩ - ২০

স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত দুই বিজ্ঞানীর দ্বন্দ্ব

স্টিফেন হকিং এবং মিচিও কাকু দু’জনই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী। বাংলাদেশে স্টিফেন হকিং-এর নামটি অনেক পরিচিত হলেও বিজ্ঞানের জগতে স্টিফেন হকিং-এর চেয়ে মিচিও কাকু-র অবদান অনেক বেশি। মিচিও কাকু হলেন ‘স্ট্রিং তত্ত্বের’ কো-ফাউন্ডার। এ তত্ত্বটি অতীতের বিগ ব্যাং তত্ত্বকে পিছনে ফেলে বর্তমানে বিজ্ঞানে বিপ্লব নিয়ে এসেছে। তাই বিশ্বের কাছে স্টিফেন হকিং এর চেয়ে মিচিও কাকু’র জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। নিউ ইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার বইয়ের তালিকায় সাধারণত বিজ্ঞানের কোনো বই পাওয়া না গেলেও সেখানে মিচিও কাকু-র বিজ্ঞান বিষয়ক তিনটি বই বেস্টসেলার হয়েছে। অবশ্য, সেই তালিকায় স্টিফেন হকিং-এর একটি বইও নেই। দু’জনেই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী হলেও স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে দু’জনের অবস্থান দুই প্রান্তে।   ১ - ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে তাঁদের বিতর্ক।   স্টিফেন হকিং তাঁর ‘The Grand Design’ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে বলেছেন, ‘দর্শন মরে গেছে এবং ধর্ম অকার্যকর হয়ে গেছে, এখন কেবল বিজ্ঞানের যুগ’। তাঁর মতে, সত্য মানেই বিজ্ঞান। ধর্ম ও দর্শনের যাবতীয় সমস্যা বিজ্ঞান দিয়ে সমাধান করা সম্ভব। তাই, ধর্ম ও দর্শন এখন অপ্রয়

সকল জ্ঞান-ই ইসলামের সম্পদ

কোর'আন একটি জ্ঞান, হাদিস একটি জ্ঞান, ফিকাহ একটি জ্ঞান, দর্শন একটি জ্ঞান, এবং বিজ্ঞান একটি জ্ঞান। এদের মাঝে স্তরবিন্যাসে পার্থক্য থাকলেও একটি জ্ঞান কখনো অন্য জ্ঞানের বিরোধী হয় না। আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা প্রথম যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন, তা পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে কেউ যে নামেই জ্ঞান চর্চা করুক না কেন, তা আল্লাহর সত্য জ্ঞানের সাথে কখনো বিরোধী হওয়া সম্ভব না। অজ্ঞতার কারণে অনেকেই মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। এবং দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের বৈপরীত্য রয়েছে। নাস্তিকরা মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলুল কোর'আন মনে করেন, কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলে হাদিস মনে করেন, হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। কিছু কিছু ধার্মিক মনে করেন, ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। আধুনিক বস্তুবাদী বিজ্ঞানী মনে করেন, বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম ও দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। কিন্তু, আসলে সব জ্ঞান-ই আল্লাহর পক্