সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সুলতান সেলিম ও জেনবিলি আলি এফেন্দি-র রাজনীতি

একজন মুসলিমকে সকল কাজ 'বিসমিল্লাহ' বলে শুরু করতে হয়।

একজন মুসলিম দার্শনিককে 'বিসমিল্লাহ' বলেই তাঁর চিন্তা শুরু করতে হয়। একজন মুসলিম বিজ্ঞানীকে 'বিসমিল্লাহ' বলেই তাঁর গবেষণা শুরু করতে হয়। একজন মুসলিম ডাক্তারকে 'বিসমিল্লাহ' বলেই তাঁর ডাক্তারি শুরু করতে হয়। তেমনি, একজন মুসলিম রাজনৈতিক ব্যক্তিকে 'বিসমিল্লাহ' বলেই রাজনীতির মাঠে নামতে হয়।

অর্থাৎ, একজন মানুষ যে কোনো কিছুই করুক না কেন, 'বিসমিল্লাহ' বলেই কাজটি শুরু করতে হয়।


সুতরাং, বিজ্ঞান, দর্শন ও রাজনীতি সহ জীবনের সব কাজেই ধর্মের ভূমিকা রয়েছে।
_____

এ প্রসঙ্গে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা বলি।
_____

উসমানী খেলাফতের সময়ে সুলতান সেলিম কিছু লোককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। কিন্তু, তখনকার আলেমগণ আমাদের সময়ের মত অন্যায় মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে চুপ করে থাকতেন না। তাই সে সময়ের শাইখুল ইসলাম জেনবিলি আলি এফেন্দি সুলতানের দরবারে এসে বললেন - "বাদশাহ! আপনি যাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, তাদের অপরাধ অনুযায়ী এই শাস্তি অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে। আপনি এ শাস্তি প্রত্যাহার করুন।"

সুলতান সেলিম তাঁকে বললেন - "দেখুন, মাওলানা সাহেব! আপনার কাজ আখিরাত নিয়ে মানুষকে সচেতন করা। আপনি আমার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো কথা বলা উচিত না।"

তখন শাইখুল ইসলাম বললেন - "বাদশাহ শুনুন! আপনার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে মাথা ঘামাতে আমি এখানে আসি নাই। আমি এসেছি আপনাকে আখিরাতের বিষয়ে সচেতন করার জন্যে। কিয়ামতের মাঠে এ অন্যায় শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তিরা যদি আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখন আপনি কি করবেন?"

সুলতান সেলিম এবার নিজের ভুল বুঝতে পারলেন। এবং তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেন।
_____

আমারা পৃথিবীতে যাই করি, সব কিছু ভবিষ্যতের জন্যে করি। আর, ভবিষ্যতের অপর নাম আখিরাত। এ কারণে, ধর্ম ও আখিরাত ছাড়া একজন মুসলিমের কোনো কিছুই করা সম্ভব না।


 

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মুসলিম চিন্তাবিদ ও মনীষীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা

বিংশ শতাব্দীর মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা ১. আয়াতুল্লাহ খমিনী – (ইরান, ১৯০২ - ১৯৮৯) ২. আল্লামা তাবাতাবাঈ – (ইরান, ১৯০৩ - ১৯৮১) ৩. আবুল আ’লা মওদুদী – (পাকিস্তান, ১৯০৩ - ১৯৭৯) ৪. মালিক বিন নাবী – (আলজেরিয়া, ১৯০৫ - ১৯৭৩) ৫. হাসান আল বান্না – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৪৯) ৬. সাইয়েদ কুতুব – (মিশর, ১৯০৬ - ১৯৬৬) ৭. নুর উদ্দিন তোপচু – (তুরস্ক, ১৯০৯ – ১৯৭৫ ৮. ফজলুর রহমান – (পাকিস্তান, ১৯১৯- ১৯৮৮) ৯. মুর্তাজা মোতাহারী – (ইরান, ১৯২০ - ১৯৭৯) ১০. ইসমাইল রাজি আল ফারুকি - (ফিলিস্তিন, ১৯২১ - ১৯৮৬ ) ১১. আলী আইজাত বেগোভিচ – (বসনিয়া, ১৯২৫ - ২০০৩) ১২. নাজিমুদ্দিন এরবাকান – (তুরস্ক, ১৯২৬ - ২০১১) ১৩. শহীদ মোহাম্মদ বেহেশতী – (ইরান, ১৯২৮ - ১৯৮১) ১৪. নাকিব আল-আত্তাস – (ইন্দোনেশিয়া, ১৯৩১ - ) ১৫. হাসান আত-তুরাবী, (সুদান, ১৯৩২ - ২০১৬) ১৬. আলী শরিয়তি – (ইরান, ১৯৩৩ - ১৯৭৭) ১৭. সেজাই কারাকোচ - (তুরস্ক, ১৯৩৩ - ) ১৮. সাইয়্যেদ হোসাইন নাসর – (ইরান, ১৯৩৩ - ) ১৯. হাসান হানাফি – (মিশর, ১৯৩৫ - ) ২০. আবেদ আল জাবেরি – (মরক্কো, ১৯৩৬ - ২০১০) ২১. রশিদ ঘানুশী – (তিউনিসিয়া, ১৯৪১ - ) ২২. নাসের আবু জায়েদ – (মিশর, ১৯৪৩ - ২০

স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত দুই বিজ্ঞানীর দ্বন্দ্ব

স্টিফেন হকিং এবং মিচিও কাকু দু’জনই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী। বাংলাদেশে স্টিফেন হকিং-এর নামটি অনেক পরিচিত হলেও বিজ্ঞানের জগতে স্টিফেন হকিং-এর চেয়ে মিচিও কাকু-র অবদান অনেক বেশি। মিচিও কাকু হলেন ‘স্ট্রিং তত্ত্বের’ কো-ফাউন্ডার। এ তত্ত্বটি অতীতের বিগ ব্যাং তত্ত্বকে পিছনে ফেলে বর্তমানে বিজ্ঞানে বিপ্লব নিয়ে এসেছে। তাই বিশ্বের কাছে স্টিফেন হকিং এর চেয়ে মিচিও কাকু’র জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। নিউ ইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার বইয়ের তালিকায় সাধারণত বিজ্ঞানের কোনো বই পাওয়া না গেলেও সেখানে মিচিও কাকু-র বিজ্ঞান বিষয়ক তিনটি বই বেস্টসেলার হয়েছে। অবশ্য, সেই তালিকায় স্টিফেন হকিং-এর একটি বইও নেই। দু’জনেই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী হলেও স্রষ্টা ও ধর্ম নিয়ে দু’জনের অবস্থান দুই প্রান্তে।   ১ - ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে তাঁদের বিতর্ক।   স্টিফেন হকিং তাঁর ‘The Grand Design’ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে বলেছেন, ‘দর্শন মরে গেছে এবং ধর্ম অকার্যকর হয়ে গেছে, এখন কেবল বিজ্ঞানের যুগ’। তাঁর মতে, সত্য মানেই বিজ্ঞান। ধর্ম ও দর্শনের যাবতীয় সমস্যা বিজ্ঞান দিয়ে সমাধান করা সম্ভব। তাই, ধর্ম ও দর্শন এখন অপ্রয়

সকল জ্ঞান-ই ইসলামের সম্পদ

কোর'আন একটি জ্ঞান, হাদিস একটি জ্ঞান, ফিকাহ একটি জ্ঞান, দর্শন একটি জ্ঞান, এবং বিজ্ঞান একটি জ্ঞান। এদের মাঝে স্তরবিন্যাসে পার্থক্য থাকলেও একটি জ্ঞান কখনো অন্য জ্ঞানের বিরোধী হয় না। আদম (আ)-কে আল্লাহ তায়ালা প্রথম যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন, তা পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে কেউ যে নামেই জ্ঞান চর্চা করুক না কেন, তা আল্লাহর সত্য জ্ঞানের সাথে কখনো বিরোধী হওয়া সম্ভব না। অজ্ঞতার কারণে অনেকেই মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। এবং দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের বৈপরীত্য রয়েছে। নাস্তিকরা মনে করেন, কোর'আনের এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলুল কোর'আন মনে করেন, কোর'আনের সাথে হাদিসের বৈপরীত্য রয়েছে। আহলে হাদিস মনে করেন, হাদিসের সাথে ফিকহের বৈপরীত্য রয়েছে। কিছু কিছু ধার্মিক মনে করেন, ধর্মের সাথে দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। আধুনিক বস্তুবাদী বিজ্ঞানী মনে করেন, বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম ও দর্শনের বৈপরীত্য রয়েছে। কিন্তু, আসলে সব জ্ঞান-ই আল্লাহর পক্