সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আল্লাহকে অনুভব করার উপায়

আমরা কখন বুঝব যে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সরাসরি দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন?

১। যখন খুবই ব্যস্ততার মাঝেও আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ হয়।
২। যখন পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন বা অধীনস্থদেরকে সাহায্য করতে মন চায়।
৩। যখন কোনো ফকির বা ভিক্ষুককে টাকা বা খাবার দিতে ইচ্ছা হয়।
৪। যখন গাছ-পালা, সাগর-নদী, পশু-পাখী অর্থাৎ প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা জাগে।
৫। যখন আল্লাহর দেয়া প্রাকৃতিক সম্পদকে অপচয় ও দূষণ থেকে রক্ষা করার দায়িত্ববোধ জাগ্রত হয়।
৬। যখন কারো জন্যে ভালো কোনো খাবার বা সুন্দর কোনো কিছু তৈরি করতে মন চায়।
৭। যখন প্রতিটি খাদ্য ও পানীয়কে আল্লাহর নিয়ামত মনে হয়।
৮। যখন কোর’আন বা কোনো বই পড়ার সময়ে গভীর ও নতুন কোনো চিন্তা-ভাবনা নিজের মাঝে জাগ্রত হয়।
৯। যখন নিজের গভীর চিন্তা থেকে কোনো কিছু আঁকতে বা লিখতে ইচ্ছা হয়।
১০। যখন নিজে নিজে নতুন কিছু আবিষ্কার করে ফেলি।
১১। যখন শিশু বা দুর্বলদের প্রতি হৃদয় থেকে ভালোবাসা জাগে।
১২। যখন কেউ নিজের সন্তানদেরকে নৈতিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে।
১৩। যখন নিজের ব্যক্তিগত সবকিছু বন্ধুদের আগে পিতা-মাতার সাথে শেয়ার করতে মন চায়।
১৪। যখন সমাজের বিভিন্ন বাধা ও দাসত্ব প্রথাগুলো বোঝার যোগ্যতা অর্জন হয়।
১৫। যখন কারো প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদে আমরা তাঁর পাশে দাঁড়াতে চাই।
১৬। যখন নিজের ভুলগুলো আমাদের নিজেদের কাছে ধরা পড়ে।
১৭। যখন কারো সাথে কোনো ভুল করে ফেলার পর তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতে ইচ্ছা হয়।
১৮। যখন নিজের চিন্তাগুলোকে অন্যের সাথে বিনয়ীভাবে প্রকাশ করতে মন চায়।
১৯। যখন আল্লাহ তায়ালাকে খুব কাছে উপলব্ধি হয়।



এমন আরো অনেক ঘটনা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ঘটে থাকে, তখন মনে হয়, আল্লাহ তায়ালা সরাসরি আমাদেরকে দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?

এক ভাইয়া প্রশ্ন করেছেন – “তাকদীর বা ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত না পরিবর্তনশীল?” এ প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় ও দার্শনিক দিক থেকে পৃথিবীতে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, এবং এখনো চলছে। কিন্তু ভাইয়া আমাকে বলেছেন খুব সহজ ভাষায় লেখার জন্যে। অবশ্য, আমি সবকিছু সহজ-সরল করেই লেখার চেষ্টা করি। কারণ, আমি ছোট মানুষ, কঠিন ও প্যাঁচালো লেখা যথাসম্ভব কম পড়ি ও লিখি। যাই হোক, তাকদীরের বিষয়টা আমার কাছে খুবই সহজ একটি বিষয় মনে হয়। এ বিষয়ে আমাদের মনে সাধারণত দু’টি প্রশ্ন জাগে। ১। ‘তাকদীর’ বা ভাগ্য যদি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আগেই নির্ধারিত হয়ে থাকে, তাহলে আমরা আর ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে লাভ কি? অথবা, ২। আমরাই যদি নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে আল্লাহ দ্বারা নির্ধারিত ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে হবে কেন? এ প্রশ্নগুলোর জবাব জানার আগে কিছু উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বোঝার চেষ্টা করব।

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...