সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মুসলিমরা কখন সারা বিশ্বের আদর্শ হতে পারবে?

মুসলিমরা হলো সারা পৃথিবীর আদর্শ। সারা পৃথিবীর মানুষ যাতে মুসলিমদের অনুকরণ করতে পারে, সে মানের মুসলিম হবার জন্যে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন।

وَكَذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ اُمَّةً وَسَطًا لِتَكُونُوا شُهَدَٓاءَ عَلَى النَّاسِ

"তোমাদেরকে আমি মধ্যপন্থী জাতি হিসাবে সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা সমস্ত মানবজাতির জন্যে সাক্ষ্যদাতা বা আদর্শ হতে পারো।" [সূরা বাকারা - ১৪৩]


মুসলিমরা সমগ্র মানব জাতীর জন্যে আদর্শ হতে হবে। অর্থাৎ, মুসলিমরা প্রতিটি কাজ করার আগে ভাবতে হবে, আমরা যে কাজ করছি, একই কাজ যদি অন্য কেউ আমাদের সাথে করে, তাহলে কি আমরা মেনে নিব? যদি মেনে নিতে পারি, তাহলে সেটাই হবে আমাদের আদর্শ কাজ।

ধরুন, ভারতের হিন্দুরা মুসলিমদেরকে অপমান করে। সেটা দেখে বাংলাদেশের মুসলিমরা যদি কোনো হিন্দুকে অপমান করে, তাহলে এখানে আদর্শ গ্রহণ করা হবে হিন্দুদের থেকে।

মুসলিমদের এমন কাজ করতে হবে, যে কাজ অন্য ধর্মের কেউ করলে মুসলিমদের আপত্তি থাকবে না। তখনি কেবল মুসলিমরা মানব জাতীর জন্যে আদর্শ হতে পারবেন।

মুসলিমরা যদি অন্য ধর্মের মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার করে, তাহলে অন্য ধর্মের লোকেরাও মুসলিমদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করবে। মুসলিমরা যদি অন্য ধর্মের লোকের ওপর বোমা মারে, তাহলে অন্য ধর্মের লোকেরাও মুসলিমদের ওপর বোমা মারবে। মুসলিমরা যদি অন্য ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা প্রদান করে, তাহলে অন্য ধর্মের লোকেরাও মুসলিমদেরকে নিরাপত্তা দিবে। অর্থাৎ, মুসলিমদেরকে আগে তাদের আদর্শ প্রদর্শন করতে হবে, যাতে অন্যরা মুসলিমদের থেকে শিখতে পারে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

গণতন্ত্র সময়ের একটি চাহিদা

আজ থেকে ৪০০ বছর আগে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো নির্বাচনের কথা কি আমরা কল্পনা করতে পারি? ধরুন, ১৬১৭ সাল। উসমানী খেলাফতের অধীনে তখন বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ ভূমি। সেই এক-তৃতীয়াংশ ভূমির খেলাফতের দায়িত্ব পালন করছেন সুলতান আহমদ। কেউ যদি তখন বলতো, আমরা সুলতান আহমদের পরিবর্তন চাই এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। তাহলে তখন কিভাবে সে নির্বাচনটি হত? তখন তো আর ইন্টারনেট বা টেলিভিশন ছিল না, এমনকি প্লেনও ছিল না। নির্বাচন কমিশনারের নির্বাচনী তফসিলটি বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রত্যেকের কাছে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করতে করতে কমপক্ষে ৩ বছর সময় লেগে যেতো। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সকল মানুষ যেহেতু খলীফা প্রার্থী হবার অধিকার রাখে, সুতরাং নির্বাচন কমিশনারের কাছে তাঁদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে করতে সময় লাগতো আরো ২ বছর। নির্বাচন কমিশনার লক্ষ লক্ষ মনোনয়ন পত্র বাচাই করতে করতে লাগতো আরো ১ বছর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের এবং আপিল নিষ্পত্তি করতে সময় লাগতো কমপক্ষে আরো ৫ বছর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার সময় দিতে হতো কমপক্ষে আরো ১ বছর। কারণ প্রার্থীদেরকে বহুদূর থেকে এসে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হতো। তারপর, প্রা...