সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রাষ্ট্র ও ক্ষমতার আলাপ

ইসলামী রাষ্ট্রের সাথে সেক্যুলার রাষ্ট্রের পার্থক্য হলো –

ইসলামী রাষ্ট্রে ব্যক্তি ইচ্ছে করেই ধনী থেকে ফকির হয়ে যায়, কিন্তু রাষ্ট্র ফকিরি অবস্থা থেকে ধনী হতে থাকে। আর, সেক্যুলার রাষ্ট্রে ব্যক্তি ফকির থেকে ধনী হয়, কিন্তু রাষ্ট্র দেউলিয়া হয়ে যায়।

যেমন, ইসলামী রাষ্ট্রের অধিনায়ক রাসূল (স), আবু বকর, ওমর, উসমান (রা) সহ সকল বিত্তবান সাহাবীরা মারা যাবার সময়ে তেমন কোনো সম্পত্তি রেখে যেতে পারেননি, কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে ক্রমবর্ধমান একটি রাষ্ট্র রেখে যেতে পেরেছিলেন।


অন্যদিকে, বাংলাদেশের মতো সেক্যুলার রাষ্ট্রে রাজনীতিবিদরা সবাই ফকির থেকে ধনী হয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু রাষ্ট্র দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে।


 

******************

ইসলামী রাষ্ট্র ও সেক্যুলার রাষ্ট্রের মাঝে তাত্ত্বিক পার্থক্য হলো -

১। ইসলামী রাষ্ট্র ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে আল্লাহর সৃষ্টি হিসাবে সমান অধিকার দেয়, কিন্তু সেক্যুলার রাষ্ট্র ধার্মিকদেরকে সমান অধিকার দিতে পারে না।

২। ইসলামী রাষ্ট্র মানুষকে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দাসত্ব থেকে মুক্তি দেয়, কিন্তু সেক্যুলার রাষ্ট্র মানুষকে রাষ্ট্রের দাস করে ফেলে।

******************

এনলাইটেনমেন্ট বা 'বুদ্ধির বিকাশ' খ্রিষ্টান সমাজের জন্যে যতটা প্রয়োজনীয়, মুসলিম সমাজের জন্যে ঠিক ততটাই অপ্রয়োজনীয়। কারণ, খ্রিস্টান সমাজের মতো কখনোই বুদ্ধির বিপরীতে গিয়ে মুসলিম সমাজে এক আল্লাহকে তিন খোদা বলেনি।
******************

ক্ষমতা সর্বদা পরিবর্তনীয়। এখন যদি A ক্ষমতায় থাকে, এবং B জেলে থাকে; কিছুদিন পর B ক্ষমতায় থাকবে এবং A জেলে থাকবে। এটাই আল্লাহর নিয়ম।

[কোর'আনের সূত্র: ৩/১৪০]
******************

আওয়ামীলীগ বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতিনিধিত্ব করে, এবং বিএনপি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রতিনিধিত্ব করে। এ কারণে, একটি প্রশ্ন আমরা প্রায়ই শুনি, “আপনি কি বাঙালি না বাংলাদেশী?”

একই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন আনোয়ার ইব্রাহীম। আল জাজিরা তাঁকে প্রশ্ন করেছে – “আপনি কি প্রথমে মালোয়, নাকি প্রথমে মালয়েশিয়ান?”

এ প্রশ্নের উত্তরে আনোয়ার ইব্রাহীম বলেন, “মালোয় ও মালয়েশিয়ান হবার মাঝে কোনো দ্বন্দ্ব আছে বলে আমার মনে হয় না। আপনি আমাকে এভাবেও প্রশ্ন করতে পারেন যে, “আপনি কি প্রথমে মুসলিম, নাকি প্রথমে মালয়েশিয়ান?” উত্তরে আমি বলবো, আমি একাধারে একজন মালোয়, মুসলিম, মালয়েশিয়ান। আমি একজন এশিয়ান। আমি একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তি। আমি একজন প্র্যাকটেসিং মুসলিম, কিন্তু শেকসপিয়রকে আমার কাছে খুব প্রতিভাসম্পন্ন মানুষ মনে হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে শেকসপিয়রের প্রচুর লেখা ও চিন্তার সাথে পরিচিত, কিন্তু তাঁর চিন্তা ও লেখা আমার ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয়তাকে কোনোভাবেই সমস্যা করছে না”।


এবার আসুন, বাংলাদেশের প্রসঙ্গে। আনোয়ার ইব্রাহীমের মতো বাংলাদেশের ইসলামপন্থীরাও বাঙালি ও বাংলাদেশী বিতর্কে না জড়িয়ে উভয় পরিচয়কেই ধারণ করা উচিত। এবং খ্রিষ্টান শেকসপিয়রের মতো হিন্দু রবীন্দ্রনাথকেও আমরা একজন প্রতিভাসম্পন্ন কবি হিসাবে স্বীকৃতি দিতে পারি। এতে আমাদের ধর্মের, সংস্কৃতির বা জাতীয়তার কোনো ক্ষতি হবে না, যদি আমরা আসল রাজনীতিটা বুঝতে পারি।

[Source: Anwar Ibrahim: Malaysia's New Dawn | 101 East - Dawn Baru Malaysia, See from 10 minutes.]

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

What is The Ruling Regarding a Women Going to Hajj Without a Mahram?

Answered by Dr. Yusuf al-Qaradawi | Translated by Sister Marwa The original rule stipulated in shari’a that a woman is not to travel alone.  Rather, she has to be accompanied by her husband or any other mahram of hers.  This rule is supported by narrations of Bukhari and others that Ibn-Abbas (ra) said, that the Prophet (pbuh) said, “A woman should not travel except with a mahram, and no man should visit her except in the presence of a mahram.” Abu-Hurairah related the following on behalf of the Prophet (pbuh), “It is not permissible for a woman who believes in Allah and the Last Day to travel for one day and night except with a mahram.” Abu-Sa’id reported that the Prophet (pbuh) said, “A woman should not travel for two days except she is accompanied by her husband or a mahram.”