সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কোর'আন কিভাবে নাযিল হয়?




কোর'আন আল্লাহর পক্ষ থেকে মোহাম্মদ (স)-এর উপর নাযিল হয়েছে। এখানে নাযিল শব্দটির দুটি অর্থ রয়েছে। একটি নাযিল হলো বৃষ্টির মতো উপর থেকে নিচে নাযিল হওয়া। আরেকটি অর্থ হলো, আল্লাহর ডাইমেনশন থেকে মানুষের ডাইমেনশনে নেমে আসা।

ডাইমেনশন জিনিসটা একটু বলি। ধরুন, একটা কাগজে আপনি একটা বিন্দু আঁকলেন। এখানে বিন্দুটি হলো ১ম ডাইমেনশন। যে কাগজে আঁকলেন, সে কাগজ হলো ২য় ডাইমেনশন। যে কলম দিয়ে আঁকলেন, সে কলম হলো ৩য় ডাইমেনশন। আর, আপনি আপনার বন্ধুর নিকট যখন বিন্দুটির ছবি তুলে পাঠিয়ে দিলেন, তখন সে ছবিটা হয়ে গেলো ৪র্থ ডাইমেনশন। এখন আপনার বন্ধু আপনাকে বললো, "তুমি কিভাবে বিন্দুটি এঁকেছ, অতীতে ফিরে গিয়ে আমাকে একটু দেখাও তো"। আপনি তখন আপনার বন্ধুকে বললেন, "৫ম ডাইমেনশন প্রযুক্তি এখনো আমাদের সামনে না আসার কারণে, আমরা ইচ্ছে করলেই অতীতে চলে যেতে পারি না, বা ভবিষ্যৎ দেখে আসতে পারি না। তাই আমি দুঃখিত, অতীতে গিয়ে তোমাকে বিন্দুটি আঁকা দেখাতে পারবো না।"


মানুষ যখন ৪র্থ ডাইমেনশনের প্রযুক্তি আবিষ্কার করলো, তখন আলোকে যে কোনো বস্তুর ভিতর দিয়ে বিনা বাধায় প্রবেশ করাতে পেরেছে। একইভাবে মানুষ যখন ৫ম ডাইমেনশনে পোঁছাবে, তখন সময়ের ভিতর দিয়েও প্রবেশ করতে পারবে। অর্থাৎ, কেউ ইচ্ছে করলেই তখন জান্নাত ও জাহান্নাম দেখে আসতে পারবে, যেমন রাসূল (স) দেখে এসেছিলেন।

রাসূল (স) অনায়াসেই ৫ম ডাইমেনশনের কাজগুলো করতে পারতেন, যা আমাদের দ্বারা এখনো সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু, আল্লাহ তায়ালার ডাইমেনশন আরো অনেক অনেক উপরে, যা আমরা জানি না।

আল্লাহ তায়ালার ডাইমেনশন থেকে যখন রাসূল (স)-এর ৫ম ডাইমেনশন পর্যন্ত কোর'আন নেমে আসে, তখন সেটাকে আমরা কোর'আন নাযিল হওয়া বলতে পারি। রাসূল (স) তাঁর ৫ম ডাইমেনশন থেকে আমাদের জন্যে কোর'আনকে অক্ষর দিয়ে লিখে ২য় ডাইমেনশনে এনে দিয়েছেন, যাতে আমরা কোর'আন পড়ে বুঝতে পারে।

যে কোর'আন আল্লাহর ডাইমেনশনে থাকে, তা মানুষের তৈরি অক্ষরের সাহায্য ছাড়াই থাকতে পারে। রাসূল (স)-এর ডাইমেনশনে কোর'আন নাযিল হবার পর, তিনি আমাদের জন্যে মানুষের তৈরি অক্ষরের সাহায্যে তা লিখে নিয়েছেন।

সে যাই হোক, কোর'আন নাযিলের একটি অর্থ হলো, আল্লাহর ডাইমেনশন থেকে মানুষের ডাইমেনশনে কোর'আন নেমে আসা।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

আহলে কোর'আনের কিছু প্রশ্ন ও তার জবাব - ২

মোহাম্মদ Junaid ভাইয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তার উত্তর। ১) ইমামদেরকে standard মানতে হবে কেন? - ইমামদেরকে আমরা প্লেটো বা এরিস্টটলের মতো জ্ঞানী, স্কলার ও আলেম মনে করি, standard নয়। ২) ওনাদের status কী? - পৃথিবীর হাজার হাজার স্কলারের মাঝে ইমামরাও অন্তর্ভুক্ত। ৩) ওনাদের কি সুসংবদ্ধ চিন্তা ছিল? - জ্বী, উনাদের কাজ-ই ছিলো চিন্তাকে ফ্রেম দেওয়া। ৪) ওনাদের রচনাসমগ্ৰ কি সুলভ? - দুর্ভাগ্য আমাদের। বাংলা ভাষায় উনাদের বই পুস্তক অনুবাদ হয়নি। কিন্তু, উনাদের প্রচুর বই আছে, যা আমরা জানি না। ৫) প্রামাণিকতা প্রশ্নাতীত? - জী। ৬) বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা তো প্রবহমান নদীর মতো। পুরা যুগের কারো পায়রবিতে আটকে থাকতে হবে কেন? - নদী যেমন তার উৎসের সাথে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না, তেমনি আমরাও আমাদের অতীতের সকল জ্ঞানের উৎসের সাথে বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না। বরং আমাদের জ্ঞানের উৎসে যাবার রাস্তা খোলা রাখতে চাই। ৭) জ্ঞানের পরিমাপক কী? - একজন মানুষ তার সময়ের কতগুলো সমস্যার সমাধান দিতে পেরেছেন, সেটাই তার জ্ঞানের পরিমাপক। ৮) ওনারা কি কিয়ামত দিবসে আমাদের কাজের দায়দায়িত্ব গ্ৰহণ করবেন? - অবশ্যই না। তবে, পৃথিবীকে জানা...