সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইসলামন্থীদের পরিচয়

মুসলিমদের মত প্রকাশের অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্যে যারা সংগ্রাম করে, তাঁদেরকে ইসলামপন্থী বলা হয়। একজন মুসলিম হবার জন্যে যেমন ইসলামপন্থী হওয়া জরুরী নয়, তেমনি একজন ইসলামপন্থী হওয়া জন্যেও মুসলিম হবার জরুরী নয়।

আবু তালিব রাসূল (স)-এর ধর্মীয় মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্যে সংগ্রাম করেছিলেন, সে অর্থে তিনি একজন ইসলামপন্থী; কিন্তু তিনি একজন মুসলিম নন। এ কারণে ইসলামপন্থীদের দলে যে কোনো অমুসলিম প্রবেশ করতে পারেন, যদিও বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের দলে কোনো অমুসলিম নেই।

__________

মুসলিম ও ইসলামপন্থীদের মাঝে অনেক পার্থক্য রয়েছে। ইসলাম যদি অনেক বড় একটি ঘর হয়, তাহলে ইসলামপন্থা হলো তার ছোট্ট একটা কক্ষ। সম্পূর্ণ ইসলামকে রাজনৈতিক চোখে দেখার নাম ইসলামপন্থা। ইসলামকে বুঝার এটি একটি নতুন পদ্ধতি। ঊনবিংশ এবং বিশ্ব শতাব্দীতে উপনিবেশবাদের বিরোধিতার মাধ্যমেই ইসলামপন্থীদের ইতিহাস শুরু হয়েছে, কিন্তু মুসলিমদের ইতিহাস অনেক পুরাতন।

একজন মানুষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে বা রমজানের রোজা রাখলে তিনি মুসলিম, কিন্তু ইসলামপন্থী নন। ইসলামপন্থী তাঁরাই, যাদের একটি রাজনৈতিক দর্শন রয়েছে। একজন মুসলামের জন্যে ইসলামপন্থী হওয়া জরুরী নয়, আবার ইসলামপন্থী হওয়া খারাপ কিছুও নয়।


বর্তমান সময়ে দুই ধরণে ইসলামপন্থী রয়েছে। ১) মতাদর্শিক ইসলামপন্থী, ২) বাস্তববাদী ইসলামপন্থী। উভয় ইসলামপন্থী ইসলামকে রক্ষা করতে চায়, তবে একেক দলের পদ্ধতি একেক রকম।

মতাদর্শিক ইসলামপন্থীগণ বাস্তবতার চেয়ে মতাদর্শকে বেশি গুরুত্ব দেন। অন্যদিকে বাস্তববাদী ইসলামপন্থীগণ মতাদর্শের চেয়ে বাস্তবতাকে বেশি গুরুত্ব দেন। তুরস্কের একে পার্টি ও তিউনেশিয়ার আন-নাহদা পার্টি হলো বাস্তববাদী ইসলামপন্থীর উদাহরণ।

বাংলাদেশে বাস্তববাদী ইসলামপন্থীদের কোনো দল এখনো সৃষ্টি হয়নি।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

গণতন্ত্র সময়ের একটি চাহিদা

আজ থেকে ৪০০ বছর আগে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো নির্বাচনের কথা কি আমরা কল্পনা করতে পারি? ধরুন, ১৬১৭ সাল। উসমানী খেলাফতের অধীনে তখন বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ ভূমি। সেই এক-তৃতীয়াংশ ভূমির খেলাফতের দায়িত্ব পালন করছেন সুলতান আহমদ। কেউ যদি তখন বলতো, আমরা সুলতান আহমদের পরিবর্তন চাই এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। তাহলে তখন কিভাবে সে নির্বাচনটি হত? তখন তো আর ইন্টারনেট বা টেলিভিশন ছিল না, এমনকি প্লেনও ছিল না। নির্বাচন কমিশনারের নির্বাচনী তফসিলটি বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রত্যেকের কাছে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করতে করতে কমপক্ষে ৩ বছর সময় লেগে যেতো। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সকল মানুষ যেহেতু খলীফা প্রার্থী হবার অধিকার রাখে, সুতরাং নির্বাচন কমিশনারের কাছে তাঁদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে করতে সময় লাগতো আরো ২ বছর। নির্বাচন কমিশনার লক্ষ লক্ষ মনোনয়ন পত্র বাচাই করতে করতে লাগতো আরো ১ বছর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের এবং আপিল নিষ্পত্তি করতে সময় লাগতো কমপক্ষে আরো ৫ বছর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার সময় দিতে হতো কমপক্ষে আরো ১ বছর। কারণ প্রার্থীদেরকে বহুদূর থেকে এসে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হতো। তারপর, প্রা...