সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার

পহেলা বৈশাখ নিয়ে উস্তাদ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর খুবই একাডেমিক কিছু কথা বলেছেন এ ভিডিওতে। সেখান থেকে কয়েকটা পয়েন্ট তুলে দিচ্ছি।

১) পহেলা বৈশাখ একটি অবৈজ্ঞানিক, কুসংস্কারপূর্ণ, অযৌক্তিক, অমানবিক ও জমিদারদের খাজনা আদায়ের উৎসব।

২) পশ্চিম বঙ্গের পহেলা বৈশাখের সাথে বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখের অনেক পার্থক্য রয়েছে। পশ্চিম বঙ্গের পহেলা বৈশাখ হলো একটি সামাজিক উৎসব, কিন্তু বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখ একটি রাজনৈতিক উৎসব।

৩) বাংলাদেশের সেক্যুলারগণ পহেলা বৈশাখকে মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে মুসলিমদের ধর্মীয় পরিচয় দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে। এবং সমাজ থেকে ইসলামী মূল্যবোধ উঠে যাচ্ছে।

৪) পহেলা বৈশাখ হলো একটি পুঁজিবাদী উৎসব। ইসলামী উৎসবের সাথে পহেলা বৈশাখের পার্থক্য রয়েছে। ইসলামী উৎসবের উদ্দেশ্য হলো ত্যাগ, আর পুঁজিবাদী পহেলা বৈশাখের উদ্দেশ্য হলো ভোগ। ইসলামী উৎসবে ধনীরা গরিবদেরকে খুশি করার আগে নিজেরা উৎসব করেন না। কিন্তু পহেলা বৈশাখে ধনীদের অত্যাচারের কারণে গরিবরা ঘর থেকে বেরও হতে পারেন না।

৫) পহেলা বৈশাখের আনন্দটা মিডিয়ার সৃষ্টি। কারণ, এর ফলে মিডিয়াগুলো পুঁজিবাদীদের থেকে পণ্যের বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করতে পারে।

৬) মঙ্গল শোভাযাত্রার অপর নাম প্রকৃতি পূজা। প্রাচীন, অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক যুগে মানুষ প্রকৃতি পূজা করতো। সেই প্রকৃতি পূজার বর্তমান নাম পহেলা বৈশাখ।

৭) পহেলা বৈশাখের কারণে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রচুর বেড়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর বৈশাখী মেলায় অসংখ্য মেয়ে নির্যাতিত ও ধর্ষিত হয়েছে।

৮) হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি বা উৎসব বলে কোনো কিছু নেই। বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা শুরু হয়েছে গত দশ-বিশ বছর থেকে।

৯) মুসলিম পরিবারগুলোতে পারিবারিক আনন্দের খুবই অভাব। এ কারণেই মুসলিম পরিবারের সন্তানেরা পহেলা বৈশাখে আনন্দ করার জন্যে অধীর অপেক্ষায় থাকে। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ আসার আগেই মুসলিম পরিবারগুলো তাদের সন্তানদেরকে আনন্দ প্রদান করার জন্যে কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ এবং কিছু আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা প্রয়োজন।

১০) পহেলা বৈশাখ পালন করলে কেউ কাফির হয়ে যাবে না, তবে গুনাহগার হবে। মিডিয়া ও সমাজের কারণেই মানুষ না জেনে ও না বুঝে পহেলা বৈশাখ পালন করে, তাই এর জন্যে কাউকে ঘৃণা করা যাবে না। যারা পহেলা বৈশাখ পালন করেন, তাদেরকে গালাগালি বা ঘৃণা না করে, ভালোবেসে ও সুন্দর ভাষায় পহেলা বৈশাখ পালনের ক্ষতিকর দিকগুলো বুঝিয়ে দেয়া প্রয়োজন।

১১) পয়লা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা হলো সেক্যুলার ধর্মের একটি উপাসনার নাম, যা মানুষকে অবৈজ্ঞানিক, অযৌক্তিক, ঐতিহ্যহীন, পশ্চাৎপদ ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন কাজের দিকে আহবান করে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

গণতন্ত্র সময়ের একটি চাহিদা

আজ থেকে ৪০০ বছর আগে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো নির্বাচনের কথা কি আমরা কল্পনা করতে পারি? ধরুন, ১৬১৭ সাল। উসমানী খেলাফতের অধীনে তখন বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ ভূমি। সেই এক-তৃতীয়াংশ ভূমির খেলাফতের দায়িত্ব পালন করছেন সুলতান আহমদ। কেউ যদি তখন বলতো, আমরা সুলতান আহমদের পরিবর্তন চাই এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। তাহলে তখন কিভাবে সে নির্বাচনটি হত? তখন তো আর ইন্টারনেট বা টেলিভিশন ছিল না, এমনকি প্লেনও ছিল না। নির্বাচন কমিশনারের নির্বাচনী তফসিলটি বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রত্যেকের কাছে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করতে করতে কমপক্ষে ৩ বছর সময় লেগে যেতো। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সকল মানুষ যেহেতু খলীফা প্রার্থী হবার অধিকার রাখে, সুতরাং নির্বাচন কমিশনারের কাছে তাঁদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে করতে সময় লাগতো আরো ২ বছর। নির্বাচন কমিশনার লক্ষ লক্ষ মনোনয়ন পত্র বাচাই করতে করতে লাগতো আরো ১ বছর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের এবং আপিল নিষ্পত্তি করতে সময় লাগতো কমপক্ষে আরো ৫ বছর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার সময় দিতে হতো কমপক্ষে আরো ১ বছর। কারণ প্রার্থীদেরকে বহুদূর থেকে এসে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হতো। তারপর, প্রা...