সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"ইসলামী রাষ্ট্র" ছাড়া কি মুসলিমরা চলতে পারে? - জাসের আউদা

মুসলিমরা কি অমুসলিম দেশে বাস করতে পারে? অথবা, "ইসলামী রাষ্ট্র" ছাড়া কি মুসলিমরা চলতে পারে?

- এ প্রশ্নটির উত্তর দিচ্ছেন উস্তাদ Jasser Auda। তিনি বলেন -

"আল্লাহ তায়ালা কোর'আনে অনেক মুসলিমের উদাহরণ দিয়েছেন, যাদের কোনো 'ইসলামী রাষ্ট্র' ছিলো না। এমনকি, ইসলামে আমরা দেখি যে, রাষ্ট্র ছাড়াই কর্তৃত্বের কথা বলা হচ্ছে।

রাষ্ট্রের ধারণা জন্ম লাভ করেছে ১০০ বছর আগে। পৃথিবীতে নানা ধরণের রাষ্ট্র ছিলো; আসল বিষয় হলো, কিভাবে মুসলিমরা সে রাষ্ট্রগুলোর সাথে আচরণ করেছে, কিভাবে রাষ্ট্রগুলোর কাজেকর্মে অংশ নিয়েছে, এবং কিভাবে ন্যায় বিচার ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে রাষ্ট্রকে সমর্থন করেছে। এবং কিভাবে মুসলিমরা সে রাষ্ট্রগুলোতে আল্লাহর ইবাদত করেছে।

যে কোনো রাষ্ট্রের সরকার হতে পারে ন্যায়বান কিংবা জালিম। সরকার যদি ন্যায়বান হয়ে থাকে, তাহলে মুসলিমরা ঐ সরকারকে সাহায্য করতে হবে। যেমন, হজরত ইউসুফ (আ) তাঁর সময়ে মিশরের রাজাকে সাহায্য করেছিলেন। এমনকি মুসা (আ)-ও ফিরাউনকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন, যদি ফিরাউন মুসা (আ)-এর কথা শুনতো।

অন্যদিকে, কোনো রাষ্ট্রে যদি অন্যায় চলতে থাকে, এবং সে রাষ্ট্র যদি মুসলিমদের দ্বারাও পরিচালিত হয়, তবু মুসলিমদেরকে সে রাষ্ট্রের অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।

কোনো রাষ্ট্রের সরকার মুসলিম নাকি অমুসলিম সেটা তেমন কোনো বিষয় নয়; আসল বিষয় হলো, সে রাষ্ট্রে কতটা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হলো, এবং কতটা জনকল্যাণ করা হলো।"

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...

হাতমোজা সমাচার

আমার আপু ইনবক্সে আমাকে একটা লেখা পাঠিয়েছেন। হাতমোজা নিয়ে অন্য একজনের লেখা । লেখার নিচে মন্তব্যগুলো পড়ে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জেগেছে। ১। মুসলিমদের মহাসম্মেলনে অর্থাৎ হজ্জের সময়ে লাখো লাখো পুরুষের সামনে নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরেন না কেন? ২। নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরে যদি একেবারে ১০০% ঢেকে ফেলেন, তাহলে সূরা নূরের ৩০ নং আয়াতে পুরুষদেরকে দৃষ্টি নত করতে বলা হয়েছে কেন? ৩। সূরা নূরের ৩১ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “নারীদের যা প্রকাশ্য থাকার তা ব্যতীত” তাদের বক্ষদেশ আভরণ করার জন্যে। কিন্তু হাতমোজা দিয়ে ১০০% ঢেকে ফেললে নারীদের আর প্রকাশ্য থাকে কি? ৪। রাসূল (স) সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বলেছেন, “সহজ কর, কঠিন করো না”। কোনো নারী যদি হাতমোজা না পরতে চান, তাহলে তার জন্যে কঠিন কঠিন নিময় করার জন্যে কি রাসূল (স) বলেছেন? ৫। ঈমান ও তাকওয়া কি মানুষের হৃদয়ে থাকে না হাতে-পায়ে থাকে?