সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জামায়াতে ইসলামীর সংস্কার সম্পর্কে মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাইদী

মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর একটি কথা যদি জামায়াতে ইসলামীর সকল কর্মী মেনে নিতেন, তাহলে আহলে হাদিস বা কওমী আলেমদের সাথে জামায়াতে ইসলামীর দ্বন্দ্ব অনেক কমে যেতো। মাওলানা সাঈদী বলেন -

"মাওলানা সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদুদী (রাহঃ) জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা - এটা কোনো গোপন বিষয় নয়। পক্ষান্তরে তাঁকে ইমাম হিসাবে অনুসরণ করতে হবে বা মানতে হবে, অথবা তাঁর যে কোনো মতামতকেই প্রাধান্য দিতে হবে, তাঁর সর্বপ্রকার চিন্তা-চেতনাকে জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ ও উদ্দেশ্য পরিণত করতে হবে, এমন কোনো কথা জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রে নেই। বরং কোরআন ও সুন্নাহর আদর্শ জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে এবং এটাই যে জামায়াতে ইসলামীর মূল উদ্দেশ্য - এ কথাই জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।" [মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, আমি কেন জামায়াতে ইসলামী করি, পৃষ্ঠা - ৮]

সাঈদী সাহেবের উপরোক্ত কথা থেকে আমরা কিছু অনুসিদ্ধান্তে আসতে পারি।

১) মাওলানা মওদুদীর কোনো ভুল যদি কেউ ধরে, তাহলে সে-ভুলগুলোকে পুনর্বিবেচনায় নিতে হবে। কেউ যদি হিংসা-বিদ্বেষের কারণে মাওলানা মওদুদীর বিরোধিতা করেন, তাহলে একাডেমিকভাবে তার জবাব দিতে হবে। কিন্তু যদি সত্যিই মাওলানা মওদুদীর কোনো চিন্তা এখন গুরুত্বপূর্ণ না হয়, তাহলে জামায়াতে ইসলামীকে মাওলানা মওদুদীর বিকল্প চিন্তা হাজির করতে হবে।

২) "মাওলানা মওদুদী মানুষ, তাঁর ভুল হতেই পারে" - এ কথাটা জামায়াতে ইসলামীর সকল কর্মীকে সহজেই স্বীকার করে নেয়া প্রয়োজন।

উপরোক্ত দুটি অনুসিদ্ধান্ত যদি জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা মেনে চলতে পারেন, তাহলে তাদের সাথে আহলে হাদিস ও কওমী আলেমদের বিতর্ক অনেক কমে যাবে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

গণতন্ত্র সময়ের একটি চাহিদা

আজ থেকে ৪০০ বছর আগে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো নির্বাচনের কথা কি আমরা কল্পনা করতে পারি? ধরুন, ১৬১৭ সাল। উসমানী খেলাফতের অধীনে তখন বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ ভূমি। সেই এক-তৃতীয়াংশ ভূমির খেলাফতের দায়িত্ব পালন করছেন সুলতান আহমদ। কেউ যদি তখন বলতো, আমরা সুলতান আহমদের পরিবর্তন চাই এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। তাহলে তখন কিভাবে সে নির্বাচনটি হত? তখন তো আর ইন্টারনেট বা টেলিভিশন ছিল না, এমনকি প্লেনও ছিল না। নির্বাচন কমিশনারের নির্বাচনী তফসিলটি বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রত্যেকের কাছে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করতে করতে কমপক্ষে ৩ বছর সময় লেগে যেতো। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সকল মানুষ যেহেতু খলীফা প্রার্থী হবার অধিকার রাখে, সুতরাং নির্বাচন কমিশনারের কাছে তাঁদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে করতে সময় লাগতো আরো ২ বছর। নির্বাচন কমিশনার লক্ষ লক্ষ মনোনয়ন পত্র বাচাই করতে করতে লাগতো আরো ১ বছর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের এবং আপিল নিষ্পত্তি করতে সময় লাগতো কমপক্ষে আরো ৫ বছর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার সময় দিতে হতো কমপক্ষে আরো ১ বছর। কারণ প্রার্থীদেরকে বহুদূর থেকে এসে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হতো। তারপর, প্রা...