সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আকল বা যুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে কিছু বানী

আকল বা যুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে কিছু বানী।



রাসূল (স) বলেন -

مَا اكْتَسَبَ الْمَرْءُ مِثْلَ عَقْلٍ يَهْدِي صَاحِبَهُ إلَى هُدًى، أَوْ يَرُدُّهُ عَنْ رَدًى
[أدب الدنيا والدين ص: 17]

"মানুষ আকল বা যুক্তি-বুদ্ধির মতো কোনো কিছু অর্জন করেনি। আকল মানুষকে সত্যের পথ দেখায়, অথবা, বিতর্ক থেকে রক্ষা করে।"



রাসূল (স) আরো বলেন -

لِكُلِّ شَيْءٍ عُمِلَ دِعَامَةٌ وَدِعَامَةُ عَمَلِ الْمَرْءِ عَقْلُهُ فَبِقَدْرِ عَقْلِهِ تَكُونُ عِبَادَتُهُ لِرَبِّهِ
[أدب الدنيا والدين ص: 17]

"প্রতিটি জিনিসের একটি স্তম্ভ বা মেরুদণ্ড থাকে। আর মানুষের কাজের মেরুদণ্ড হলো যুক্তি বা আকল। মানুষ যতবেশি ইবাদাত করে, তাঁর যুক্তি ততবেশি বাড়ে।"



কোর'আনে বলা হয়েছে, গোনাহগার বান্দা জাহান্নামের দরজায় গিয়ে আফসোস করে বলবে -

لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ

"যদি আমরা (রাসূলের কথা) শুনতাম, অথবা যুক্তি-বুদ্ধির ব্যবহার করতাম, তাহলে আমরা জাহান্নামের অধিবাসী হতাম না" [সূরা মূলক - ১০]



ওমর (রা) বলেন -

أَصْلُ الرَّجُلِ عَقْلُهُ، وَحَسَبُهُ دِينُهُ، وَمُرُوءَتُهُ خُلُقُهُ
[أدب الدنيا والدين ص: 17]

"একজন ব্যক্তির আসল জিনিস হলো তাঁর যুক্তি-বুদ্ধি। তার নিজের কাছে হিসাব চাওয়া হলো দীন বা ধর্ম। এবং তার মানবতা হলো তার চরিত্র।"



হাসান বসরী (র) বলেন -

مَا اسْتَوْدَعَ اللَّهُ أَحَدًا عَقْلًا إلَّا اسْتَنْقَذَهُ بِهِ يَوْمًا مَا
[أدب الدنيا والدين ص: 17]

"কোনো ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা যদি যুক্তি-বুদ্ধি দান করে, এর মানে, সে ব্যক্তি কোনো একদিন অন্য কাউকে রক্ষা করবে"



কিছু কিছু দার্শনিক বলেন -

الْعَقْلُ أَفْضَلُ مَرْجُوٍّ، وَالْجَهْلُ أَنْكَى عَدُوٍّ
[أدب الدنيا والدين ص: 17]

"যুক্তি-বুদ্ধি হলো একজন মানুষের সবচেয়ে প্রত্যাশিত জিনিস, আর মূর্খতা হলো একজন মানুষের সবচেয়ে খারাপ শত্রু"



আরবি প্রবাদ রয়েছে -

صَدِيقُ كُلِّ امْرِئٍ عَقْلُهُ وَعَدُوُّهُ جَهْلُهُ
[أدب الدنيا والدين ص: 17]

"মানুষের বন্ধু তার যুক্তি-বুদ্ধি, এবং মানুষের শত্রু তার অজ্ঞতা।"

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

গণতন্ত্র সময়ের একটি চাহিদা

আজ থেকে ৪০০ বছর আগে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো নির্বাচনের কথা কি আমরা কল্পনা করতে পারি? ধরুন, ১৬১৭ সাল। উসমানী খেলাফতের অধীনে তখন বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ ভূমি। সেই এক-তৃতীয়াংশ ভূমির খেলাফতের দায়িত্ব পালন করছেন সুলতান আহমদ। কেউ যদি তখন বলতো, আমরা সুলতান আহমদের পরিবর্তন চাই এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। তাহলে তখন কিভাবে সে নির্বাচনটি হত? তখন তো আর ইন্টারনেট বা টেলিভিশন ছিল না, এমনকি প্লেনও ছিল না। নির্বাচন কমিশনারের নির্বাচনী তফসিলটি বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রত্যেকের কাছে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করতে করতে কমপক্ষে ৩ বছর সময় লেগে যেতো। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সকল মানুষ যেহেতু খলীফা প্রার্থী হবার অধিকার রাখে, সুতরাং নির্বাচন কমিশনারের কাছে তাঁদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে করতে সময় লাগতো আরো ২ বছর। নির্বাচন কমিশনার লক্ষ লক্ষ মনোনয়ন পত্র বাচাই করতে করতে লাগতো আরো ১ বছর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের এবং আপিল নিষ্পত্তি করতে সময় লাগতো কমপক্ষে আরো ৫ বছর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার সময় দিতে হতো কমপক্ষে আরো ১ বছর। কারণ প্রার্থীদেরকে বহুদূর থেকে এসে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হতো। তারপর, প্রা...