সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলাদেশিদের জন্যে কিছু রাজনৈতিক শিক্ষা - ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং

বাংলাদেশে আগামীদিনে যারা রাজনীতি করতে চায়, তারা ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং-এর বক্তব্যটা ভালো করে শুনতে হবে।

উনার বক্তব্য থেকে কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখ করছি।

১) ভালো রাজনীতি করতে হলে, বা, যে কোনো কাজে দক্ষ হতে হলে সর্বপ্রথম ভালো মানুষ হতে হবে।

২) কেবল রাজনীতির জন্যে রাজনীতি করলে কেউ সফল হবে না। বরং, যিনি যে কাজে দক্ষ, তিনি তার সে-কাজকে আরো ভালোভাবে করার জন্যে রাজনীতি করতে হবে।

৩) রাজনীতি মানে মানুষের সেবা করা। কিভাবে মানুষকে সবচেয়ে বেশি সেবা প্রদান করা যায়, এটা যারা যতবেশি ভাবতে পারবে, তারা রাজনীতিতে ততবেশি সফল হবে।

৪) ভুটানের মতো বাংলাদেশে আগামী দিনের রাজনীতি করার জন্যে চিকিৎসা খাতে প্রচুর জোর দেয়া প্রয়োজন। আমাদের দেশের মানুষ চিকিৎসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কষ্টের স্বীকার হয়।

৫) যিনি যতবেশি ভিন্ন মতকে গ্রহণ করতে পারবেন, রাজনীতিতে তার সফলতা ততবেশি।

৬) ক্ষমতায় না থাকলেও মানুষের সেবা করা যায়। ক্ষমতায় যাবার আগেই মানুষের সেবা করার মাধ্যমে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

৭) নিজের দলকে অন্যদের চেয়ে বেশি ভালো প্রমাণ করার চেষ্টা করা যাবে না, কিংবা অন্য দলকে খারাপ বলাও যাবে না। বরং, নিজের দলকে অন্য দলের চেয়ে বেশি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাস্তবিকভাবেই প্রমাণ করতে হবে।

৮) ক্ষমতায় যাবার জন্যে রাজনীতি নয়, বরং মানুষের সেবা করার জন্যেই রাজনীতি। নিজের দল যদি কখনো ক্ষমতায় না যেতে পারে, তাহলে মন খারাপ করার কিছু নেই। কারণ, ক্ষমতায় না গিয়েও মানুষের সেবা করা যায়।

৯) টেবিলে বসে বসে কেবল তত্ত্ব তৈরি করলে রাজনীতিতে সফল হওয়া যায় না। বরং, সারা দেশে ঘুরে ঘুরে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে তাঁদের সমস্যা বুঝার চেষ্টা করতে হবে, এবং সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।

১০) মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়ার কোনো দরকার নেই। বরং, মানুষের সমস্যাগুলো সঠিকভাবে মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারলে, এবং সমাধানের পথ মানুষকে দেখাতে পারলে মানুষ এমনিতেই ভোট দিবে।

১১) যে কর্মী যত বেশি নেতার আনুগত্য করে, তাকে তত বড় পদ দেয়ার পরিবর্তে, যিনি যে কাজ যত ভালো পারেন, তাকে সে কাজে তত বড় পদ দিতে হবে। প্রয়োজনে নিজে পদ গ্রহণ না করে অন্যকে নিজের পদ ছেড়ে দিতে হবে।

১২) বর্তমানে রাজনীতিকে অনেকেই খারাপ বলে, তাই শিক্ষিত মানুষরা রাজনীতি করতে চায় না। যারা আগামীদিনের রাজনীতি করবে, তাদেরকে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে একটি ভালো রাজনীতির মডেল হতে হবে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

আহলে কোর'আনের কিছু প্রশ্ন ও তার জবাব - ২

মোহাম্মদ Junaid ভাইয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তার উত্তর। ১) ইমামদেরকে standard মানতে হবে কেন? - ইমামদেরকে আমরা প্লেটো বা এরিস্টটলের মতো জ্ঞানী, স্কলার ও আলেম মনে করি, standard নয়। ২) ওনাদের status কী? - পৃথিবীর হাজার হাজার স্কলারের মাঝে ইমামরাও অন্তর্ভুক্ত। ৩) ওনাদের কি সুসংবদ্ধ চিন্তা ছিল? - জ্বী, উনাদের কাজ-ই ছিলো চিন্তাকে ফ্রেম দেওয়া। ৪) ওনাদের রচনাসমগ্ৰ কি সুলভ? - দুর্ভাগ্য আমাদের। বাংলা ভাষায় উনাদের বই পুস্তক অনুবাদ হয়নি। কিন্তু, উনাদের প্রচুর বই আছে, যা আমরা জানি না। ৫) প্রামাণিকতা প্রশ্নাতীত? - জী। ৬) বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা তো প্রবহমান নদীর মতো। পুরা যুগের কারো পায়রবিতে আটকে থাকতে হবে কেন? - নদী যেমন তার উৎসের সাথে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না, তেমনি আমরাও আমাদের অতীতের সকল জ্ঞানের উৎসের সাথে বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না। বরং আমাদের জ্ঞানের উৎসে যাবার রাস্তা খোলা রাখতে চাই। ৭) জ্ঞানের পরিমাপক কী? - একজন মানুষ তার সময়ের কতগুলো সমস্যার সমাধান দিতে পেরেছেন, সেটাই তার জ্ঞানের পরিমাপক। ৮) ওনারা কি কিয়ামত দিবসে আমাদের কাজের দায়দায়িত্ব গ্ৰহণ করবেন? - অবশ্যই না। তবে, পৃথিবীকে জানা...