সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মানুষ, প্রাণী ও বস্তুর সাথে ভাষার সম্পর্ক

আমাদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয়, ভাষা মানে কি? তখন আমাদের মনে “অ, আ, ক, খ” এমন বর্ণগুলো ভাসতে থাকে। এ কারণে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি আসলেই চতুর্দিকে বিভিন্ন পোষ্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ডে আমরা বাংলা বর্ণগুলো নিয়মিত দেখতে পাই।

এরপর, আমাদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয়, মাতৃভাষা কাকে বলে? তখন ছোটবেলায় মায়ের কাছে আমরা যে ভাষাটি শিখেছি, তা মনে পড়ে।

আসলে ভাষা মানে চোখে দেখা কয়েকটি অক্ষর, অথবা, কানে শুনা কয়েকটি শব্দ নয়। ভাষা মানে হচ্ছে ভাবের বিনিময়। আমাদের মনে যখন কোনো একটি ভাবের উদয় হয়, তখন সে ভাবটি অন্যের নিকট উপস্থাপন করাকেই ভাষা বলে।

মানুষের জন্যে ভাব প্রকাশ করার সবচেয়ে সহজ ও প্রাচীন মাধ্যম হলো মুখ দিয়ে শব্দ উচ্চারণ করা, এবং কান দিয়ে তা শুনা। কিন্তু, প্রাচীন কালে কথা বলার মাধ্যমে যে ভাব প্রকাশ করা হতো, তা খুব অস্থায়ী ও সীমিত রূপ ধারণ করতো। কারণ, মুখে কোনো শব্দ উচ্চারণ করার সাথে সাথে তা বাতাসে মিশে যেতো। তখন মুখের আশেপাশে থাকতো, তারাই কেবল মুখে উচ্চারিত শব্দগুলোর ভাব বুঝতে পারতো।

কিছুদিন পর, মানুষ তার মনের ভাবকে স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত করে রাখার জন্যে প্রাকৃতিক বিভিন্ন প্রাণী বা বস্তুর সাহায্য নিতে লাগলো। তখন মানুষ বিভিন্ন প্রাণী বা বস্তুর ছবি অঙ্কন করে নিজেদের ভাব সংরক্ষণ করে রাখার চেষ্টা করতো। যেমন, এইযে এখন আমি লিখছি, এবং তা আপনি পড়ছেন, এ অক্ষরগুলোও বিভিন্ন প্রাণী বা বস্তুর ছবি থেকে পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানের এই রূপটি ধারণ করেছে।

ভাষা প্রকাশের জন্যে আমরা আপাতত দুটি মাধ্যম পেলাম। ১. মুখে উচ্চারিত শব্দ, ২. লিখিত অক্ষর। কিন্তু মানুষের ভাষা কেবল এ দুটি প্রকাশ-মাধ্যমের দ্বারা সীমিত নয়। মানুষ কেবল তার মুখের উচ্চারিত শব্দ ও লিখিত অক্ষর দিয়ে ভাবের প্রকাশ করে না, বরং মানুষ তার চোখ, নাক, হাত, পা এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ দিয়েও তার ভাবের প্রকাশ করতে পারে।

এই গানটা হয়তো আমরা অনেকেই শুনেছি, //চোখ যে মনের কথা বলে/ চোখে চোখ রাখা শুধু নয়/ চোখের সে ভাষা বুঝতে হলে চোখের মত চোখ থাকা চাই।// অর্থাৎ, চোখেরও একটি ভাষা আছে। কিন্তু চোখের সে ভাষা বুঝতে হলেও আমাদের কিছু যোগ্যতা অর্জন করে নিতে হয়। অর্থাৎ, মুখ যেমন আমাদের ভাষা প্রকাশের একটি মাধ্যম, তেমনি চোখও আমাদের ভাষা প্রকাশের একটি মাধ্যম।

আমাদের হাত দিয়েও আমরা ভাষার আদান-প্রদান করি। দূরের একজন মানুষের কাছে যখন আমাদের মুখের ভাষা পৌঁছায় না, তখন আমরা হাতের ব্যবহার করি। একজন বধির মানুষ যখন আমাদের মুখের শব্দ শুনতে পায় না, তখন তাকে বুঝানোর জন্যেও আমরা হাতের ব্যবহার করি। অর্থাৎ, মুখের ভাষা যেখানে অকার্যকর হয়ে যায়, সেখানে আমরা হাত ও চোখের ভাষা ব্যবহার করি।

আমাদের হাসির মাধ্যমেও আমরা ভাষার আদান-প্রদান করি। একজন মানুষ হাসি দিয়ে একটি কথা বললে যে ভাব প্রকাশ পায়, একই কথা তিনি যখন মুখভার করে বলেন, তখন একই ভাব প্রকাশ পায় না। অর্থাৎ, মানুষের মনের ভাব কেবল মুখে উচ্চারিত কিছু শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং, শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়েও ভাব প্রকাশ করা যায়।

সুতরাং, ভাষা ও ভাব কেবল মুখের উচ্চারিত শব্দ, অথবা, বইয়ের লিখিত অক্ষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং, ভাষা প্রকাশের অসংখ্য মাধ্যম রয়েছে। অর্থাৎ, কেবল বই নয়, বরং স্থিরচিত্র, ছবি, অডিও, ভিডিও, সিনেমা সহ ভাষা প্রকাশের অসংখ্য মাধ্যম রয়েছে।

এবার, যারা মানুষ নয়, তাদের ভাষা সম্পর্কে আলোকপাত করা যাক।

পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীর-ই একটি নির্দিষ্ট ভাষা আছে। তারা একে অপরের সাথে ভাবের আদান-প্রদান করে। মানুষও ইচ্ছে করলেই পৃথিবীর সব প্রাণীর সাথে ভাষার আদান-প্রদান করতে পারে। একটি টিয়া পাখীর সাথে যেমন মানুষ ভাবের আদান-প্রদান করতে পারে, ঠিক তেমনি একটি গরু, বিড়াল বা কুকুরের সাথেও মানুষ তার ভাবের আদান প্রদান করতে পারে।

একইভাবে, পৃথিবীর সব বস্তুর সাথেও মানুষ তার ভাবের আদান-প্রদান করতে পারে। যেমন, কোনো কবি বা সাহিত্যিক যখন কোনো কিছু লিখতে ইচ্ছে করে, কিন্তু লিখতে পারেন না, তখন তিনি নদী বা সাগরের পাড়ে গিয়ে বসেন। নদী, সাগর, পাহাড় ইত্যাদি তাদের নিজেদের অস্তিত্বকে জানান দেয়ার মাধ্যমে কবি বা সাহিত্যিকের মনে কিছু ভাবের সৃষ্টি ঘটায়। তখন কবি বা সাহিত্যিক তাঁর সেই ভাবনাটিকে অক্ষরে পরিণত করেন।

যেমন, কবি সুনির্মল বসু লিখেছিলেন - //আকাশ আমায় শিক্ষা দিল, উদার হতে ভাই রে,/ কর্মী হবার মন্ত্র আমি, বায়ুর কাছে পাই রে।// পাহাড় শিখায় তাহার সমান, হই যেন ভাই মৌন-মহান/ খোলা মাঠের উপদেশে, দিল-খোলা হই তাই রে।//

"সবার আমি ছাত্র" কবিতার মাধ্যমে কবি বুঝিয়েছেন যে, তিনি পৃথিবীর সকল বস্তুর সাথে ভাবের আদান-প্রদান করতে পারেন, এবং সকল বস্তু থেকে তিনি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। অর্থাৎ, এখানে বিভিন্ন বস্তুরা কবির শিক্ষক হিসাবে উপস্থাপিত হয়েছে।

বস্তু কিভাবে আমাদের সাথে ভাবের আদান-প্রদান করে, তার সহজ একটি উদাহরণ দেই। ধরুন, সকালে আপনি বাসা থেকে বের হবেন। বাইরের আবহাওয়া কেমন তা জানার জন্যে আপনি টেলিভিশনটা অন করে খবর শুনতে পারেন, অথবা, জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখতে পারেন। আজকে আবহাওয়া কেমন, তা জানার জন্যে সংবাদ পাঠকের মুখে উচ্চারিত শব্দগুলো না শুনেই আপনি বাইরের দৃশ্য দেখে বুঝে নিতে পারবেন। এখানে বাইরের বস্তুগুলো তাদের অস্তিত্বের মাধ্যমেই আপনাকে জানান দিয়েছে যে, আজকে আবহাওয়া কেমন।

সুতরাং, আমরা বুঝলাম যে, পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণী ও বস্তুর-ই একটি নিজস্ব ভাষা আছে। এবং মানুষ ইচ্ছে করলেই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাণী ও বস্তুর সাথে নিজেদের ভাবের বিনিময় করতে পারে। এখানে মনে রাখা প্রয়োজন, একজন চাইনিজ মানুষের মুখের ভাষা বোঝার জন্যে যেমন আমাদের কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে হয়, তেমনি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাণী ও বস্তুর ভাষা বুঝার জন্যেও আমাদেরকে কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে হয়।

__________________

পৃথিবীতে কেবল মানুষ-ই নিজের ভাব ও ভাষা প্রকাশ করতে পারে, আমরা এমনটাই মনে করি। কিন্তু, কোর’আনে আল্লাহ বলেন, পৃথিবীর এবং পৃথিবীর বাইরের সকল প্রাণী ও বস্তু-ই নিজের ভাব প্রকাশ করতে পারে। যেমন, আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

يُسَبِّحُ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۖ

“আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবকিছুই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে”। [সূরা ৬৪/ তাগাবুন - ১]

পৃথিবীতে যা কিছু আমরা দেখি সব কিছু হলো আল্লাহ তায়ালার একেকটি শব্দ। কারণ, এই মহাবিশ্বের প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি প্রাণী এবং প্রতিটি বস্তু-ই সৃষ্টি হয়েছে আল্লাহ তায়ালার একেকটি “কুন” শব্দটি থেকে।

আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

أَوَلَيْسَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِقَادِرٍ عَلَىٰ أَن يَخْلُقَ مِثْلَهُم ۚ بَلَىٰ وَهُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيمُ --- إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَن يَقُولَ لَهُ كُن فَيَكُونُ

“যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, তিনি আবার এমন অনুরূপ কিছু সৃষ্টি করতে সমর্থ নন? হাঁ, নিশ্চয় তিনি মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ। তিনি যখন কোনো কিছু করার ইচ্ছে করেন, তখন তাকে বলেন “কুন বা হও”। তখন সাথেসাথে তা হয়ে যায়”। [সূরা ৩৬ / ইয়াসিন – ৮১, ৮২]

অর্থাৎ, এই মহাবিশ্বের প্রতিটি প্রাণী ও বস্তু তাদের বর্তমান রূপ লাভ করার পূর্বে ছিলো আল্লাহ তায়ালার একেকটি শব্দ।

একইভাবে আদম (আ) থেকে শুরু করে ঈসা (আ) সহ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষও আল্লাহ তায়ালার একেকটি শব্দ। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

إِنَّ مَثَلَ عِيسَىٰ عِندَ اللَّهِ كَمَثَلِ آدَمَ خَلَقَهُ مِن تُرَابٍ ثُمَّ قَالَ لَهُ كُن فَيَكُونُ

“নিশ্চয় ঈসার উদাহরণ আদমের-এর মতোই। তিনি তাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, এরপর বললেন, "হও", ফলে সে হয়ে গেলো”। [সূরা ৩/ আলে ইমরান - ৫৯]

কেবল আদম (আ) অথবা ঈসা (আ) নন, বরং আমরাও সৃষ্টি হবার পূর্বে ছিলাম আল্লাহ তায়ালার একেকটি শব্দ। আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

هُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ فَإِذَا قَضَىٰ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُن فَيَكُونُ

"তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান, এবং যখন কোনো কিছু করার ইচ্ছে করেন, তখন তাকে বলেন - "হও", ফলে তা হয়ে যায়"। [সূরা ৪০/ মু'মিন - ৬৮]

উপরোক্ত সবগুলো আয়াত থেকে আমরা বেশ কিছু অনুসিদ্ধান্তে আসতে পারি, যা মানুষ, প্রাণী ও বস্তুর সাথে ভাষার সম্পর্কটি বুঝতে আমাদেরকে সাহায্য করবে।

১। মানুষ সহ পৃথিবী ও পৃথিবীর বাইরের সকল প্রাণী ও বস্তু সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহ একেকটি শব্দ ছিলো। আল্লাহর “কুন” শব্দ থেকে আমাদের একেকজন মানুষ ও একেকটি প্রাণী বা বস্তুর সৃষ্টি হয়েছে।

২। যেহেতু প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি প্রাণী ও প্রতিটি বস্তু আল্লাহর একেকটি “কুন” শব্দ থেকে সৃষ্টি হয়েছে, সুতরাং সকল মানুষ, সকল প্রাণী ও সকল বস্তুর-ই একেকটি নির্দিষ্ট ভাষা রয়েছে।

৩। ভাষা প্রকাশের মাধ্যম কেবল মুখ নয়, বরং ভাষা প্রকাশের আরো হাজারো মাধ্যম রয়েছে। পাখী, বা পাহাড় সবাই তাদের ভাব প্রকাশ করতে পারে, এবং মানুষ তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী তা বুঝতে পারে।

৪। নবী-রাসূল ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা বিভিন্ন পশুপাখি ও বস্তুর ভাষা বুঝতেন, এটি অস্বাভাবিক কোনো কিছু নয়। একজন কবি বা সাহিত্যিক যেমন সাগর-নদী-পাহাড়-বনের ভাষা বুঝার চেষ্টা করেন, তেমনি আমরাও যোগ্যতা অর্জন করলে বিভিন্ন প্রাণী ও বস্তুর ভাষা বুঝতে পারবো।

৫। একজন চাইনিজ ব্যক্তি তার মুখের সাহায্যে নিজের ভাষা প্রকাশ করলেও যোগ্যতার অভাবে যেমন আমরা বুঝতে পারি না, তেমনি আমাদের যোগ্যতার অভাবেই আমরা পাখী, পিঁপড়া বা পাহাড়ের ভাষা বুঝতে পারি না।

৬। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি প্রাণী এবং প্রতিটি বস্তুই আমাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রত্যেকেই আল্লাহর একেকটি শব্দ, এবং কাউকেই আল্লাহ তায়ালা বৃথা সৃষ্টি করেননি। সুতরাং, মুসলিমদের দায়িত্ব হলো, প্রতিটি মানুষ, প্রাণী ও বস্তুকে আল্লাহ তায়ালা যেভাবে সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে ঠিক সেভাবে রক্ষা করা।

৭। কোর’আন যেমন আল্লাহর শব্দ, তেমনি বিশ্বজগতের প্রতিটি প্রাণী ও বস্তুও আল্লাহর একেকটি শব্দ। সুতরাং, কোর’আনের ভাষা ও চরিত্র বুঝা আমাদের জন্যে যেমন প্রয়োজন, তেমনি বিশ্বজগতের ভাষা ও চরিত্র বুঝাও আমাদের জন্যে প্রয়োজন।

৮। কোর'আন যেমন আল্লাহর কিতাব, মানুষও আল্লাহর কিতাব, এবং এই বিশ্বজগতও আল্লাহর কিতাব। একটি কিতাব ছাড়া আরেকটি কিতাবকে বুঝা সম্ভব না।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

What is The Ruling Regarding a Women Going to Hajj Without a Mahram?

Answered by Dr. Yusuf al-Qaradawi | Translated by Sister Marwa The original rule stipulated in shari’a that a woman is not to travel alone.  Rather, she has to be accompanied by her husband or any other mahram of hers.  This rule is supported by narrations of Bukhari and others that Ibn-Abbas (ra) said, that the Prophet (pbuh) said, “A woman should not travel except with a mahram, and no man should visit her except in the presence of a mahram.” Abu-Hurairah related the following on behalf of the Prophet (pbuh), “It is not permissible for a woman who believes in Allah and the Last Day to travel for one day and night except with a mahram.” Abu-Sa’id reported that the Prophet (pbuh) said, “A woman should not travel for two days except she is accompanied by her husband or a mahram.”