সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ছেলে কি করে? বউ খাওয়াতে পারব তো?

ছেলে কি করে? টাকা পয়সা কেমন আছে? বউ খাওয়াতে পারব তো? – এসব প্রশ্ন দিয়ে মেয়েপক্ষ নিয়মিতই বিবাহ প্রার্থী ছেলেদেরকে পীড়িত ও বিব্রত করে।

এ কারণে ছেলেরাও সবসময় ভাবে, একটা ভালো চাকরি না পেলে যেহেতু ভালো কোনো মেয়ে বিয়ে করা যাবে না, সুতরাং, জীবনে সকল পড়াশুনার উদ্দেশ্য হলো একটি ভালো চাকরি পাওয়া।

ফলে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্য কাঠামোকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে গ্রাজুয়েশন শেষ করে সবাই ভালো একটি চাকরি পেতে পারে। শিক্ষার্থীকে একজন জ্ঞানী মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার পরিবর্তে একজন যোগ্য শ্রমিক হিসাবে গড়ে তোলাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রধান উদ্দেশ্য। জ্ঞান অর্জন বা জ্ঞান বিতরণ করা তাদের কাজ নয়, বরং সম্পদ অর্জন করার কৌশল শেখানোই তাদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


এই সমস্যাটির মূল কারণ কি? কারণ একটাই। আমরা জ্ঞানের চেয়ে সম্পদকে বেশি গুরুত্ব দেই। ফলে বিয়ের বাজারে গেলে দেখা যায়, মেয়েপক্ষ একজন জ্ঞানী ছেলের চেয়েও একটি ধনী পরিবারে তাঁদের মেয়েকে বিয়ে দিতেই বেশি আগ্রহী হয়। অথচ, আল্লাহ তায়ালা দারিদ্রের ভয়কে বলেছেন শয়তানের কাজ। আর, জ্ঞানকে বলছেন আল্লাহর পক্ষ থেকে উত্তম নিয়ামত।

আল্লাহ তায়ালা বলেন –

الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُم بِالْفَحْشَاءِ ۖ وَاللَّهُ يَعِدُكُم مَّغْفِرَةً مِّنْهُ وَفَضْلًا ۗ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ ---- يُؤْتِي الْحِكْمَةَ مَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا ۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّا أُولُو الْأَلْبَابِ

“শয়তান তোমাদেরকে দারিদ্র্যের ভয় দেখায় এবং অশ্লীলতার আদেশ দেয়। পক্ষান্তরে আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সুবিজ্ঞ।

তিনি যাকে ইচ্ছা জ্ঞান-প্রজ্ঞা দান করেন এবং যাকে জ্ঞান-প্রজ্ঞা দান করা হয়, সে প্রচুর কল্যাণকর বস্তু প্রাপ্ত হয়। উপদেশ তারাই গ্রহণ করে, যারা জ্ঞানবান। [সূরা ২/ বাকারা - ২৬৮ এবং ২৬৯]

এখানে প্রথম আয়াতে বলা হয়েছে যে, দারিদ্র্যতার ভয় হলো শয়তানের কাজ। এবং দ্বিতীয় আয়াতে বলা হয়েছে যে, জ্ঞান হলো আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একটি শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। আর এ জিনিসটি তাঁরাই বুঝেন, যারা সত্যিকার অর্থে জ্ঞানী।

সুতরাং,

বিয়ে করতে গেলে যারা প্রথমেই জিজ্ঞাস করেন, “ছেলের টাকা-পয়সা কেমন আছে?” তাদের থেকে দূরে থাকুন। অর্থাৎ, শয়তান থেকে দূরে থাকুন।

কিন্তু,

যদি জিজ্ঞাস করে, “ছেলের জ্ঞান বা যোগ্যতা কেমন?” তাহলে, সেখানেই বিয়ে করুন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

আহলে কোর'আনের কিছু প্রশ্ন ও তার জবাব - ২

মোহাম্মদ Junaid ভাইয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তার উত্তর। ১) ইমামদেরকে standard মানতে হবে কেন? - ইমামদেরকে আমরা প্লেটো বা এরিস্টটলের মতো জ্ঞানী, স্কলার ও আলেম মনে করি, standard নয়। ২) ওনাদের status কী? - পৃথিবীর হাজার হাজার স্কলারের মাঝে ইমামরাও অন্তর্ভুক্ত। ৩) ওনাদের কি সুসংবদ্ধ চিন্তা ছিল? - জ্বী, উনাদের কাজ-ই ছিলো চিন্তাকে ফ্রেম দেওয়া। ৪) ওনাদের রচনাসমগ্ৰ কি সুলভ? - দুর্ভাগ্য আমাদের। বাংলা ভাষায় উনাদের বই পুস্তক অনুবাদ হয়নি। কিন্তু, উনাদের প্রচুর বই আছে, যা আমরা জানি না। ৫) প্রামাণিকতা প্রশ্নাতীত? - জী। ৬) বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা তো প্রবহমান নদীর মতো। পুরা যুগের কারো পায়রবিতে আটকে থাকতে হবে কেন? - নদী যেমন তার উৎসের সাথে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না, তেমনি আমরাও আমাদের অতীতের সকল জ্ঞানের উৎসের সাথে বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না। বরং আমাদের জ্ঞানের উৎসে যাবার রাস্তা খোলা রাখতে চাই। ৭) জ্ঞানের পরিমাপক কী? - একজন মানুষ তার সময়ের কতগুলো সমস্যার সমাধান দিতে পেরেছেন, সেটাই তার জ্ঞানের পরিমাপক। ৮) ওনারা কি কিয়ামত দিবসে আমাদের কাজের দায়দায়িত্ব গ্ৰহণ করবেন? - অবশ্যই না। তবে, পৃথিবীকে জানা...