সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ডাক্তারদেরকে আধ্যাত্মিক বিদ্যা অর্জন করতে হবে

একজন ডাক্তার যখন একজন ইঞ্জিনিয়ারের মত আচরণ করেন, তখন সমস্যা সৃষ্টি হয়।

একজন ইঞ্জিনিয়ার কেবল বস্তু নিয়ে কাজ করেন, কিন্তু একজন ডাক্তারকে মানুষ ও প্রাণীদের নিয়ে কাজ করতে হয়। বস্তু ও মানুষ এক নয়। একজন ইঞ্জিনিয়ার কোনো বস্তুকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে কাটতে পারেন, এবং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে জোড়া লাগাতে পারেন। কিন্তু একজন ডাক্তার মানুষকে বস্তুর মত ব্যবহার করতে পারেন না।

প্রতিটি মানুষের শরীরের সাথে একটি চেতনা রয়েছে, যাকে আমরা বলি আত্মা। মানুষের বস্তুগত অংশ হলো শরীর, এবং অবস্তুগত অংশ হলো আত্মা। শরীর ও আত্মা মিলেই তৈরি হয় একজন মানুষ।


কোনো ডাক্তার যদি মানুষের আত্মাকে অস্বীকার করে কেবল বস্তুগত শরীরকে গুরুত্ব দেয়, তাহলে তিনি আর ডাক্তার থাকেন না, বরং একজন ইঞ্জিনিয়ারে পরিণত হন। ফলে, ডাক্তারের দায়িত্ব হারিয়ে তিনি একজন শ্রমিকের দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেন।

কোনো শ্রমিক যদি ভালোভাবে কাজ না করে, তাহলে অত্যাচারী মালিক সে শ্রমিককে মারধর করে। আমাদের দেশের ডাক্তারগণও নাকি মাঝে মাঝে রোগীর অভিভাবকদের হাতে মার খান। এর কারণ হতে পারে, ডাক্তারগণ তাদের উপযুক্ত সম্মান হারিয়ে ফেলেছেন। অথবা, আমরা বাঙালীরা জাতিগতভাবে অনেক বেশি অসহিষ্ণু।

অতীতে বড় বড় মুসলিম ডাক্তারগণ সবাই শরীর বিদ্যা ও আধ্যাত্মিক বিদ্যায় সমান পারদর্শী ছিলেন। কেননা, আত্মার সুখ না থাকলে শরীরে অনেক অসুখ সৃষ্টি হয়।

ডাক্তারদেরকে কেবল শরীর বিদ্যা জানলে হয় না, আধ্যাত্মিক বিদ্যাও জানতে হয়। কিন্তু, তারা যখন আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জন না করে মানুষের চিকিৎসা করতে যান, তখন তারা আসলে একজন ইঞ্জিনিয়ারের ভূমিকা পালন করেন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...

হাতমোজা সমাচার

আমার আপু ইনবক্সে আমাকে একটা লেখা পাঠিয়েছেন। হাতমোজা নিয়ে অন্য একজনের লেখা । লেখার নিচে মন্তব্যগুলো পড়ে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জেগেছে। ১। মুসলিমদের মহাসম্মেলনে অর্থাৎ হজ্জের সময়ে লাখো লাখো পুরুষের সামনে নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরেন না কেন? ২। নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরে যদি একেবারে ১০০% ঢেকে ফেলেন, তাহলে সূরা নূরের ৩০ নং আয়াতে পুরুষদেরকে দৃষ্টি নত করতে বলা হয়েছে কেন? ৩। সূরা নূরের ৩১ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “নারীদের যা প্রকাশ্য থাকার তা ব্যতীত” তাদের বক্ষদেশ আভরণ করার জন্যে। কিন্তু হাতমোজা দিয়ে ১০০% ঢেকে ফেললে নারীদের আর প্রকাশ্য থাকে কি? ৪। রাসূল (স) সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বলেছেন, “সহজ কর, কঠিন করো না”। কোনো নারী যদি হাতমোজা না পরতে চান, তাহলে তার জন্যে কঠিন কঠিন নিময় করার জন্যে কি রাসূল (স) বলেছেন? ৫। ঈমান ও তাকওয়া কি মানুষের হৃদয়ে থাকে না হাতে-পায়ে থাকে?