সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জুপিটার কেন সৃষ্টি হল?

বড়দের কাজ হলো ছোটদেরকে বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করা। এ দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা মানুষদেরকে যেমন দিয়েছেন, তেমনি সৌরজগতের গ্রহগুলোকেও দিয়েছেন।

আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহের নাম জুপিটার। পৃথিবীর চেয়ে ১১ গুন বড়। অর্থাৎ, কম করে হলেও ১৩০০টি পৃথিবীকে সে একাই গিলে খেতে পারবে।

বড় ভাই হিসাবে জুপিটারকে আল্লাহ তায়ালা অনেক দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে তার প্রধান দায়িত্ব হলো ছোট ভাই পৃথিবীকে বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করা।


বিপদ-আপদগুলো কি? এবার সে সম্পর্কে একটু বলি।

বিভিন্ন সৌরজগতের কিছু কিছু নক্ষত্র মাঝেমধ্যে আমাদের সৌরজগতে বেড়াতে আসে। এদের নাম - Hot Jupiters । এরা বেড়াতে আসার পর আমাদের সৌরজগতের নক্ষত্রদের কেউ বলে, এটা আমার জায়গা, তুই এখানে আসলি কেন? বেড়াতে আসা নক্ষত্র বলে, এটা আমার জায়গা, তুই এখানে আসলি কেন?

এক পর্যায়ে তাদের উভয়ের মাঝে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এবং উভয় নক্ষত্র ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে যায়। কিছু কিছু টুকরা আকারে আমাদের পৃথিবীর মত বড় হয়, আবার কিছু কিছু টুকরা একটু ছোট হয়। এই টুকরোগুলোকেই আমরা ধূমকেতু বলি।

নক্ষত্রগুলো ধ্বংস হবার পর টুকরাগুলো এদিক-সেদিক ছুটতে থাকে। কিছু কিছু টুকরা সূর্যের গায়ের উপর গিয়ে পড়ে। আর কিছু কিছু টুকরা পৃথিবী সহ বিভিন্ন গ্রহের দিকে ছুটতে থাকে।

পৃথিবীর দিকে ছুটে আসা টুকরোগুলোকে জুপিটার পৃথিবীর দিকে যেতে দেয় না, বরং তার নিজের কাছে টেনে নিয়ে যায়।

আল্লাহ তায়ালা যদি জুপিটারকে সৃষ্টি না করতেন, তাহলে এসব টুকরাগুলো পৃথিবীর উপর এসে পড়তো, এবং সম্পূর্ণ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেত।

এই যে ক’দিন আগে, অর্থাৎ ১৭ মার্চ ২০১৬ -তে বিজ্ঞানীরা দেখলো যে, বড় একটি টুকরা জুপিটারকে আঘাত করেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রতি মাসেই অন্তত চার-পাঁচটি টুকরা জুপিটারকে আঘাত করে। অবশ্য জুপিটারের এতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, যে একাই ১৩০০ পৃথিবী গিলে খেতে পারে, তার জন্যে এমন হাজার হাজার টুকরা তো কিছুই না।

কিন্তু, কল্পনা করুন, কখনো একটি টুকরা যদি পৃথিবীর উপর এসে পড়ে, তখন কি হবে?

এর উত্তর দিচ্ছেন আল্লাহ তায়ালা।

أَفَلَمْ يَرَوْا۟ إِلَىٰ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ ۚ إِن نَّشَأْ نَخْسِفْ بِهِمُ ٱلْأَرْضَ أَوْ نُسْقِطْ عَلَيْهِمْ كِسَفًۭا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ ۚ إِنَّ فِى ذَ‌ٰلِكَ لَءَايَةًۭ لِّكُلِّ عَبْدٍۢ مُّنِيبٍۢ

“তারা কি লক্ষ্য করে না, তাদের সামনে ও পিছনে আকাশে ও পৃথিবীতে কি আছে? আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে সহ পৃথিবীকে ধসিয়ে দিতে পারি। অথবা আকাশের থেকে কোনো খণ্ড তাদের উপর ফেলতে পারি। আল্লাহ অভিমুখী প্রত্যেক বান্দার জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে”। [সূরা ৩৪/সাবা - ৯]

আয়াতটি নিয়ে চিন্তা করুন। আমাদের এ পৃথিবীটা কত অসহায়। আর এ পৃথিবীতে বসবাসরত আমরা আরো কত বেশি অসহায়। আল্লাহ তায়ালা যদি প্রতি মুহূর্তে মুহূর্তে আমাদের প্রতি করুণা না করতেন, তাহলে আমাদের বেঁচে থাকা কিছুতেই সম্ভব হতো না।

[জুপিটার সম্পর্কে বিজ্ঞানের নতুন এ আবিষ্কারটি যারা বিস্তৃতভাবে জানতে চান, তাদের জন্যে কিছু লিংক দিলাম।]


 

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

আহলে কোর'আনের কিছু প্রশ্ন ও তার জবাব - ২

মোহাম্মদ Junaid ভাইয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তার উত্তর। ১) ইমামদেরকে standard মানতে হবে কেন? - ইমামদেরকে আমরা প্লেটো বা এরিস্টটলের মতো জ্ঞানী, স্কলার ও আলেম মনে করি, standard নয়। ২) ওনাদের status কী? - পৃথিবীর হাজার হাজার স্কলারের মাঝে ইমামরাও অন্তর্ভুক্ত। ৩) ওনাদের কি সুসংবদ্ধ চিন্তা ছিল? - জ্বী, উনাদের কাজ-ই ছিলো চিন্তাকে ফ্রেম দেওয়া। ৪) ওনাদের রচনাসমগ্ৰ কি সুলভ? - দুর্ভাগ্য আমাদের। বাংলা ভাষায় উনাদের বই পুস্তক অনুবাদ হয়নি। কিন্তু, উনাদের প্রচুর বই আছে, যা আমরা জানি না। ৫) প্রামাণিকতা প্রশ্নাতীত? - জী। ৬) বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা তো প্রবহমান নদীর মতো। পুরা যুগের কারো পায়রবিতে আটকে থাকতে হবে কেন? - নদী যেমন তার উৎসের সাথে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না, তেমনি আমরাও আমাদের অতীতের সকল জ্ঞানের উৎসের সাথে বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না। বরং আমাদের জ্ঞানের উৎসে যাবার রাস্তা খোলা রাখতে চাই। ৭) জ্ঞানের পরিমাপক কী? - একজন মানুষ তার সময়ের কতগুলো সমস্যার সমাধান দিতে পেরেছেন, সেটাই তার জ্ঞানের পরিমাপক। ৮) ওনারা কি কিয়ামত দিবসে আমাদের কাজের দায়দায়িত্ব গ্ৰহণ করবেন? - অবশ্যই না। তবে, পৃথিবীকে জানা...