সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পাল্টে যাবার ইতিহাস

ইউরোপের বড় ভুলগুলোর মধ্যে একটি ছিল, তারা ‘জর্দানো ব্রুনো'র মতো দার্শনিক ও বিজ্ঞানীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করতো। কিন্তু এরপর, ইতিহাস ও রাজনীতি অনেক পাল্টে গেল। এখন ‘জার্দানো ব্রুনো’রাই হলেন ইউরোপের মুক্ত চিন্তার আদর্শ।

ঠিক একইভাবে,

জর্দানো ব্রুনো বিজ্ঞান ও দর্শনের নামে অনেক ভুল কথা প্রচার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বিশ্বজগত অসীম নয়, সসীম। কিন্তু এরপর, বিজ্ঞান ও দর্শন অনেক পাল্টে গেল। আস্তিক-নাস্তিক সবাই এখন বলছেন, আমাদের এই বিশ্বজগত অসীম রহস্যে ঘেরা।


ঠিক একইভাবে,

আমাদের ইতিহাসে যাদের কোনো অবদান ছিল না, তারা এখন বাংলাদেশের রাজা। কবিতা-গল্প-উপন্যাস সব এখন তাদের হাতে। আবার, এমন একদিন আসবে, যখন বর্তমানের নির্যাতিতরা হবেন ভবিষ্যতের রাজা। তখন কবিতা-গল্প-উপন্যাস ও ফেব্রুয়ারি থাকবে তাদেরই হাতে।

প্রয়োজন ধৈর্যের। জগতে আল্লাহ কাউকে অতিরিক্ত বেড়ে যেতে দেন না। তিনি বলেন -

ثُمَّ بَدَّلْنَا مَكَانَ ٱلسَّيِّئَةِ ٱلْحَسَنَةَ حَتَّىٰ عَفَوا۟ وَّقَالُوا۟ قَدْ مَسَّ ءَابَآءَنَا ٱلضَّرَّآءُ وَٱلسَّرَّآءُ فَأَخَذْنَـٰهُم بَغْتَةًۭ وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ

"এরপর, আমি অকল্যাণকে পরিবর্তন করি কল্যাণের দ্বারা। তারা অনেক বেড়ে গিয়েছিল এবং বলতে শুরু করেছিল, 'আমাদের বাবা-দাদারাও তো এমন আনন্দ-বেদনার মধ্যে ছিল'। অতঃপর আকস্মিকভাবে আমি তাদের পাকড়াও করি, তারা উপলব্ধিও করতে পারে না।" [সূরা ৭/আরাফ - ৯৫]

সুতরাং, যারা এখন বাবা, দাদা ও নানার নামে কবিতা-গল্প-উপন্যাস, সাহিত্য, ইতিহাস, রাজনীতি, দর্শন ও বিজ্ঞানের মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি, মার্চ, আগস্ট ও ডিসেম্বর মাস সহ সারা বছর জিকির করে, তাদের দেখে আমাদের হতাশ হওয়া উচিত নয়। আমাদের সাহায্যকারী হিসাবে তো আল্লাহ তায়ালা-ই যথেষ্ট।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...

হাতমোজা সমাচার

আমার আপু ইনবক্সে আমাকে একটা লেখা পাঠিয়েছেন। হাতমোজা নিয়ে অন্য একজনের লেখা । লেখার নিচে মন্তব্যগুলো পড়ে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জেগেছে। ১। মুসলিমদের মহাসম্মেলনে অর্থাৎ হজ্জের সময়ে লাখো লাখো পুরুষের সামনে নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরেন না কেন? ২। নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরে যদি একেবারে ১০০% ঢেকে ফেলেন, তাহলে সূরা নূরের ৩০ নং আয়াতে পুরুষদেরকে দৃষ্টি নত করতে বলা হয়েছে কেন? ৩। সূরা নূরের ৩১ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “নারীদের যা প্রকাশ্য থাকার তা ব্যতীত” তাদের বক্ষদেশ আভরণ করার জন্যে। কিন্তু হাতমোজা দিয়ে ১০০% ঢেকে ফেললে নারীদের আর প্রকাশ্য থাকে কি? ৪। রাসূল (স) সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বলেছেন, “সহজ কর, কঠিন করো না”। কোনো নারী যদি হাতমোজা না পরতে চান, তাহলে তার জন্যে কঠিন কঠিন নিময় করার জন্যে কি রাসূল (স) বলেছেন? ৫। ঈমান ও তাকওয়া কি মানুষের হৃদয়ে থাকে না হাতে-পায়ে থাকে?