১
প্রতিটি দল বা গ্রুপ যখন নতুন শুরু হয়, তখন একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই শুরু হয়। কিন্তু, সময়ের বিবর্তনে দলটি নানাভাবে অসুস্থ হতে থাকে, এবং দলটি তার যৌবন হারিয়ে বার্ধক্যে উপনীত হয়। যদি ভালো কোনো ডাক্তার বা সংস্কারের মাধ্যমে দলটিকে চিকিৎসা করা না যায়, তাহলে দলটি মারা যায়।
তুরস্কের রেফাহ পার্টি যখন অসুস্থ হলো, তখন এরদোয়ান তার চিকিৎসা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, রেফাহ পার্টি এরদোয়ানকে সেই সুযোগ দেয়নি, ফলে একসময় রেফাহ পার্টি মারা যায়, এবং এখন কেবল তার কঙ্কালটা রয়েছে।
একইভাবে এখন আবার এরদোয়ানের একে পার্টি অসুস্থ। ইস্তানবুলে ও আনকারায় হেরে গিয়েছে। ফলে একে পার্টিকে সুস্থ ও সংস্কার করার প্রস্তাব দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাউতউলু। তিনি গতকাল (২২ এপ্রিল ১৯) ফেইসবুকে প্রায় ১৫ পৃষ্ঠার একটি প্রেসক্রিপশন বা সংস্কার মেনিফেস্টো প্রকাশ করেছেন। সেখানে একে পার্টির অসুস্থতা ও দুর্বলতাগুলো তুলে ধরেছেন।
এরদোয়ান যদি আহমেদ দাউদউলুর এই প্রেসক্রিপশন বা সংস্কার মেনিফেস্টোকে গ্রহণ করেন, তাহলে একে পার্টি আরো বেশ কিছুদিন বাঁচবে, নতুবা একে পার্টি খুব দ্রুতই মরে যাবে বলে মনে হচ্ছে।
২
তুরস্কের ইসলামপন্থী দল একে পার্টির সংস্কার চেয়ে ১৫ পৃষ্ঠার একটি প্রস্তাব দিয়েছেন দেশের সর্বশেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী আহমদ দাউতউলু।
দাউত উলু শুরু করেন এটা বলে যে –
“আমরা আজ একটি ঐতিহাসিক সংকটের মধ্যে রয়েছি। আমি গত তিন বছর ধরে আমাদের দেশের এবং আমাদের দল একে পার্টির সমস্যাগুলো পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রপতি এরদোয়ানকে সরাসরি মৌখিকভাবে বলেছি এবং তাঁকে লিখিতভাবে পাঠিয়েছি। কিন্তু, বিরোধীদলগুলো খারাপ উদ্দেশ্য বিতর্ক শুরু করবে বলে জনগণের কাছে তা প্রকাশ করিনি। ৩১ মার্চ নির্বাচনের পর জনগণের কাছে যখন সামাজিক ও রাজনৈতিক অনেক কিছু প্রকাশ হয়ে গেল, তখন আমি দেশের স্বার্থে এবং দলের স্বার্থে কিছু বিষয় প্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। জাতীয় সংসদ ভবন প্রতিষ্ঠার ৯৯তম বার্ষিকীর প্রাক্কালে জনগণের নির্বাচিত সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এবং একে দ্বিতীয় সভাপতি হিসাবে দেশ ও দল সম্পর্কে আমার সংস্কার চিন্তাগুলো দেশবাসীর কাছে প্রকাশ করাটা অপরিহার্য দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
দাউত উলু তাঁর সংস্কার প্রস্তাবের শুরুতেই পাঁচটি মৌলিক নীতির উপর গুরুত্ব প্রদান করেন। তিনি বলেন –
“যেসব আন্দোলন ও রাজনৈতিক দল ইতিহাসে বিশাল প্রভাব সৃষ্টি করেছে, তাদের মৌলিক পাঁচটি নীতি রয়েছে।
১) নিজেদের মধ্যে কিছু মৌলিক নীতি ও মূল্যবোধ প্রণয়ন করা।
২) সেই মূল্যবোধের আলোকে নিজেদেরকে গঠন করা, এবং সেই মূল্যবোধ প্রচার করা।
৩) সমাজের প্রতিটি মানুষকে গ্রহণ করা ও মূল্যায়ন করা।
৪) দলের নেতা-কর্মীরা একই মূল্যবোধ ধারণ করা, এবং একইভাবে সমাজের সবাইকে গ্রহণ করা।
৫) সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দলের সংস্কার করার জন্যে স্বাধীন চিন্তা ও পারস্পরিক পরামর্শকে গুরুত্ব দেয়া।"
৩
তুরস্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দাউতউলু তাঁর নিজের দলকে সংস্কার করার জন্যে ১৫ পৃষ্ঠার একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। সেখানে তিনি তাঁর দলকে কূটনৈতিক ভাষায় বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। যা সহজভাবে বললে এমন –
১) যে নিয়মনীতিগুলোর কারণে কোনো রাজনৈতিক দলকে মানুষ ভালোবাসে, সে নিয়মনীতিগুলো থেকে তারা যদি দূরে চলে যায়, তাহলে তারা জনগণের ভালোবাসাও হারায়।
২) আমাদের দলকে ব্যক্তি নির্ভর না হয়ে নিয়মনীতি নির্ভর হতে হবে। দলের ভিতর কেউ অহংকারী কথাবার্তা বলা উচিত নয়।
৩) ক্ষমতাশীল দল হলেই নিজেদের নেতা-কর্মীদের নামে রাস্তার নাম, স্কুল বা কোনো স্থাপনার নাম দেয়া উচিত নয়।
৪) কেবল ক্যামেরার সামনে আসার জন্যে বিভিন্ন প্রোগ্রামের আয়োজন করা উচিত নয়।
৫) প্রতিটি কথা ও কাজের মধ্যে মিল থাকতে হবে।
৬) রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মের ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ, বিরোধীদলকে ছোট করার জন্যে ধর্মের ব্যবহার করা যাবে না।
৭) কোনো ব্যক্তির অপরাধের জন্যে তাঁর পরিবারের ক্ষতি করা যাবে না।
৮) রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষকে অপমান করার জন্যে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার করা যাবে না।
৯) যারা সারাজীবন একে পার্টির জন্যে কাজ করেছেন, তারা কোনো কারণে দল থেকে বের হয়ে গেলে, তাদের অতীতের কাজকর্মকে ছোট করে দেখা যাবে বা, এবং তাদের প্রতি সবসময় কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।
এরপর, দাউতউলু বলেন, সম্প্রতি বছরগুলোতে আমাদের দল কয়েকটি বিষয়ে পিছিয়ে গিয়েছে। এবং সেগুলো হলো –
১) সাধারণ মানুষকে কেন্দ্র করে চিন্তা করা।
২) মানবাধিকার।
৩) মত প্রকাশের স্বাধীনতা।
৪) নিয়মিত সংস্কার।
৫) বিরোধী পক্ষকে বুকে নেয়ার মানসিকতা।
৬) রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কথায় আস্তা ও বিশ্বাস।
এগুলোকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।
তারপর, মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়ার জন্যে দাউতউলু তাঁর দলকে প্রচুর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন –
“যত দ্রুত সম্ভব মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিধি বাড়াতে হবে। চিন্তাশীল, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, বা যে কোনো দলের রাজনৈতিক ব্যক্তি হোক না কেন, তাঁদের নিজস্ব চিন্তার কারণে তাঁদেরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যাবে না। মানুষের মত প্রকাশের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দিতে হবে।”
প্রতিটি দল বা গ্রুপ যখন নতুন শুরু হয়, তখন একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই শুরু হয়। কিন্তু, সময়ের বিবর্তনে দলটি নানাভাবে অসুস্থ হতে থাকে, এবং দলটি তার যৌবন হারিয়ে বার্ধক্যে উপনীত হয়। যদি ভালো কোনো ডাক্তার বা সংস্কারের মাধ্যমে দলটিকে চিকিৎসা করা না যায়, তাহলে দলটি মারা যায়।
তুরস্কের রেফাহ পার্টি যখন অসুস্থ হলো, তখন এরদোয়ান তার চিকিৎসা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, রেফাহ পার্টি এরদোয়ানকে সেই সুযোগ দেয়নি, ফলে একসময় রেফাহ পার্টি মারা যায়, এবং এখন কেবল তার কঙ্কালটা রয়েছে।
একইভাবে এখন আবার এরদোয়ানের একে পার্টি অসুস্থ। ইস্তানবুলে ও আনকারায় হেরে গিয়েছে। ফলে একে পার্টিকে সুস্থ ও সংস্কার করার প্রস্তাব দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাউতউলু। তিনি গতকাল (২২ এপ্রিল ১৯) ফেইসবুকে প্রায় ১৫ পৃষ্ঠার একটি প্রেসক্রিপশন বা সংস্কার মেনিফেস্টো প্রকাশ করেছেন। সেখানে একে পার্টির অসুস্থতা ও দুর্বলতাগুলো তুলে ধরেছেন।
এরদোয়ান যদি আহমেদ দাউদউলুর এই প্রেসক্রিপশন বা সংস্কার মেনিফেস্টোকে গ্রহণ করেন, তাহলে একে পার্টি আরো বেশ কিছুদিন বাঁচবে, নতুবা একে পার্টি খুব দ্রুতই মরে যাবে বলে মনে হচ্ছে।
২
তুরস্কের ইসলামপন্থী দল একে পার্টির সংস্কার চেয়ে ১৫ পৃষ্ঠার একটি প্রস্তাব দিয়েছেন দেশের সর্বশেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী আহমদ দাউতউলু।
দাউত উলু শুরু করেন এটা বলে যে –
“আমরা আজ একটি ঐতিহাসিক সংকটের মধ্যে রয়েছি। আমি গত তিন বছর ধরে আমাদের দেশের এবং আমাদের দল একে পার্টির সমস্যাগুলো পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রপতি এরদোয়ানকে সরাসরি মৌখিকভাবে বলেছি এবং তাঁকে লিখিতভাবে পাঠিয়েছি। কিন্তু, বিরোধীদলগুলো খারাপ উদ্দেশ্য বিতর্ক শুরু করবে বলে জনগণের কাছে তা প্রকাশ করিনি। ৩১ মার্চ নির্বাচনের পর জনগণের কাছে যখন সামাজিক ও রাজনৈতিক অনেক কিছু প্রকাশ হয়ে গেল, তখন আমি দেশের স্বার্থে এবং দলের স্বার্থে কিছু বিষয় প্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। জাতীয় সংসদ ভবন প্রতিষ্ঠার ৯৯তম বার্ষিকীর প্রাক্কালে জনগণের নির্বাচিত সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এবং একে দ্বিতীয় সভাপতি হিসাবে দেশ ও দল সম্পর্কে আমার সংস্কার চিন্তাগুলো দেশবাসীর কাছে প্রকাশ করাটা অপরিহার্য দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
দাউত উলু তাঁর সংস্কার প্রস্তাবের শুরুতেই পাঁচটি মৌলিক নীতির উপর গুরুত্ব প্রদান করেন। তিনি বলেন –
“যেসব আন্দোলন ও রাজনৈতিক দল ইতিহাসে বিশাল প্রভাব সৃষ্টি করেছে, তাদের মৌলিক পাঁচটি নীতি রয়েছে।
১) নিজেদের মধ্যে কিছু মৌলিক নীতি ও মূল্যবোধ প্রণয়ন করা।
২) সেই মূল্যবোধের আলোকে নিজেদেরকে গঠন করা, এবং সেই মূল্যবোধ প্রচার করা।
৩) সমাজের প্রতিটি মানুষকে গ্রহণ করা ও মূল্যায়ন করা।
৪) দলের নেতা-কর্মীরা একই মূল্যবোধ ধারণ করা, এবং একইভাবে সমাজের সবাইকে গ্রহণ করা।
৫) সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দলের সংস্কার করার জন্যে স্বাধীন চিন্তা ও পারস্পরিক পরামর্শকে গুরুত্ব দেয়া।"
৩
তুরস্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দাউতউলু তাঁর নিজের দলকে সংস্কার করার জন্যে ১৫ পৃষ্ঠার একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। সেখানে তিনি তাঁর দলকে কূটনৈতিক ভাষায় বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। যা সহজভাবে বললে এমন –
১) যে নিয়মনীতিগুলোর কারণে কোনো রাজনৈতিক দলকে মানুষ ভালোবাসে, সে নিয়মনীতিগুলো থেকে তারা যদি দূরে চলে যায়, তাহলে তারা জনগণের ভালোবাসাও হারায়।
২) আমাদের দলকে ব্যক্তি নির্ভর না হয়ে নিয়মনীতি নির্ভর হতে হবে। দলের ভিতর কেউ অহংকারী কথাবার্তা বলা উচিত নয়।
৩) ক্ষমতাশীল দল হলেই নিজেদের নেতা-কর্মীদের নামে রাস্তার নাম, স্কুল বা কোনো স্থাপনার নাম দেয়া উচিত নয়।
৪) কেবল ক্যামেরার সামনে আসার জন্যে বিভিন্ন প্রোগ্রামের আয়োজন করা উচিত নয়।
৫) প্রতিটি কথা ও কাজের মধ্যে মিল থাকতে হবে।
৬) রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মের ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ, বিরোধীদলকে ছোট করার জন্যে ধর্মের ব্যবহার করা যাবে না।
৭) কোনো ব্যক্তির অপরাধের জন্যে তাঁর পরিবারের ক্ষতি করা যাবে না।
৮) রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষকে অপমান করার জন্যে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার করা যাবে না।
৯) যারা সারাজীবন একে পার্টির জন্যে কাজ করেছেন, তারা কোনো কারণে দল থেকে বের হয়ে গেলে, তাদের অতীতের কাজকর্মকে ছোট করে দেখা যাবে বা, এবং তাদের প্রতি সবসময় কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।
এরপর, দাউতউলু বলেন, সম্প্রতি বছরগুলোতে আমাদের দল কয়েকটি বিষয়ে পিছিয়ে গিয়েছে। এবং সেগুলো হলো –
১) সাধারণ মানুষকে কেন্দ্র করে চিন্তা করা।
২) মানবাধিকার।
৩) মত প্রকাশের স্বাধীনতা।
৪) নিয়মিত সংস্কার।
৫) বিরোধী পক্ষকে বুকে নেয়ার মানসিকতা।
৬) রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কথায় আস্তা ও বিশ্বাস।
এগুলোকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।
তারপর, মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়ার জন্যে দাউতউলু তাঁর দলকে প্রচুর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন –
“যত দ্রুত সম্ভব মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিধি বাড়াতে হবে। চিন্তাশীল, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, বা যে কোনো দলের রাজনৈতিক ব্যক্তি হোক না কেন, তাঁদের নিজস্ব চিন্তার কারণে তাঁদেরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যাবে না। মানুষের মত প্রকাশের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দিতে হবে।”