সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য গড়ার একাডেমিক পদ্ধতি।

প্রতিটি মানুষের চেহারারা যেমন ভিন্ন ভিন্ন, তেমনি প্রতিটি মানুষের চিন্তাও ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু, ভিন্ন চিন্তার মানুষেরাও একে অপরকে সম্মান করে, যদি উভয়ে জ্ঞানী হয়ে থাকে। এ জন্যে মুসলিমদের ঐক্যের প্রাথমিক শর্ত হলো একাডেমিক চর্চা বা জ্ঞানের বিস্তৃতি বাড়ানো।


ধরুন, একজন মানুষ ইসলামী রাজনীতির ভক্ত, এবং অন্যজন পীরের ভক্ত। অথবা, একজন সালাফিজমের ভক্ত, এবং অন্যজন তাবলীগের ভক্ত। এ দুইজনের মাঝে কিভাবে পারস্পরিক সম্মান বৃদ্ধি করা যায়?

আপনি যদি ডায়লগের নামে তাঁদের উভয়কে একসাথে কথা বলতে দেন, তাহলে একজন বলবেন, আমার ইসলাম মানার পদ্ধতি শ্রেষ্ঠ; অন্যজন বলবেন, আমার ইসলাম মানার পদ্ধতি শ্রেষ্ঠ। সুতরাং, দু'জনকে কথা বলতে দিলে পারস্পরিক সম্মানের চেয়ে ঘৃণাই বেশি বৃদ্ধি পাবে।

তাহলে উপায় কি?

উপায় হলো একাডেমিক আলাপ শুরু করা। যেমন, ইসলামপন্থী একজনকে এ কথা বলা যে, রাসূলের (স) মৃত্যুর পর থেকে ১০০০ হিজরির মধ্যে লিখিত এমন একটি বই নিয়ে আসুন, যা আপনার ইসলামী রাজনীতির রূপরেখা আমাদের কাছে ব্যাখ্যা করবে। একইভাবে, একজন সূফিভক্তকেও এ কথা বলা যে, আপনিও ১০০০ হিজরির মধ্যে লিখিত একটি বই নিয়ে আসুন, যা পড়ে আমরা আপনার সূফীবাদ সম্পর্কে বুঝতে পারবো। দু'জনেই যখন তাদের চিন্তার দুটি মৌলিক বই নিয়ে আসবে, তখন সে বইগুলো নিয়ে যখন আমরা আলাপ শুরু করবো, তখন দেখতে পাবো যে, একজন ইসলামপন্থী ও সূফীপন্থীর মাঝে দূরত্ব অনেক কমে আসছে, এবং একে অপরকে সম্মান করতে শুরু করেছেন।

একইভাবে, একজন সালাফীপন্থী ও একজন হানাফীপন্থী যদি রাসূলের (স) মৃত্যুর পর থেকে ১০০০ বছরের মধ্যে লিখিত তাঁদের চিন্তার মৌলিক কোনো বই নিয়ে আলোচনা শুরু করেন, তাহলে তাঁদের পারস্পরিক দূরত্ব কমে আসবে, এবং সম্মান বৃদ্ধি পাবে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

আহলে কোর'আনের কিছু প্রশ্ন ও তার জবাব - ২

মোহাম্মদ Junaid ভাইয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তার উত্তর। ১) ইমামদেরকে standard মানতে হবে কেন? - ইমামদেরকে আমরা প্লেটো বা এরিস্টটলের মতো জ্ঞানী, স্কলার ও আলেম মনে করি, standard নয়। ২) ওনাদের status কী? - পৃথিবীর হাজার হাজার স্কলারের মাঝে ইমামরাও অন্তর্ভুক্ত। ৩) ওনাদের কি সুসংবদ্ধ চিন্তা ছিল? - জ্বী, উনাদের কাজ-ই ছিলো চিন্তাকে ফ্রেম দেওয়া। ৪) ওনাদের রচনাসমগ্ৰ কি সুলভ? - দুর্ভাগ্য আমাদের। বাংলা ভাষায় উনাদের বই পুস্তক অনুবাদ হয়নি। কিন্তু, উনাদের প্রচুর বই আছে, যা আমরা জানি না। ৫) প্রামাণিকতা প্রশ্নাতীত? - জী। ৬) বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা তো প্রবহমান নদীর মতো। পুরা যুগের কারো পায়রবিতে আটকে থাকতে হবে কেন? - নদী যেমন তার উৎসের সাথে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না, তেমনি আমরাও আমাদের অতীতের সকল জ্ঞানের উৎসের সাথে বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না। বরং আমাদের জ্ঞানের উৎসে যাবার রাস্তা খোলা রাখতে চাই। ৭) জ্ঞানের পরিমাপক কী? - একজন মানুষ তার সময়ের কতগুলো সমস্যার সমাধান দিতে পেরেছেন, সেটাই তার জ্ঞানের পরিমাপক। ৮) ওনারা কি কিয়ামত দিবসে আমাদের কাজের দায়দায়িত্ব গ্ৰহণ করবেন? - অবশ্যই না। তবে, পৃথিবীকে জানা...