সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিদেশিরা তাবলীগ ও জামাতকে সমানভাবে ভালোবাসে

ধরুন, বাংলাদেশের একজন মুসলিম তাবলীগের ফাজায়েলে আমলের খুব ভক্ত, তিনি কি মওদুদীর (রাহিমাহুল্লাহ) তাফহীমুল কোর'আন পড়বেন? অথবা, তাফহীমুল কোর'আনের একজন ভক্ত কি ফাজায়েলে আমল পড়েন? অথবা, আবুল হাসান আলি নদভির (রাহিমাহুল্লাহ) কোনো ছাত্র কি তাফহীমুল কোর'আন অনুবাদ করবেন? কিংবা, মওদুদীর ভক্তরা কি আলি নদভীর বই তাদের সিলেবাসে রাখবেন?

বাংলাদেশে এটি সম্ভব না, কিন্তু তুরস্কে সম্ভব।

গতকাল তুরস্কের এক লেখকের সাথে দেখা করলাম, উনার নাম - ইউসুফ কারাজা। তিনি আবুল হাসান আলি নদভির সরাসরি ছাত্র। নদভীর নির্দেশে তিনি অনেকগুলো বইয়ের তার্কি অনুবাদ করেন। তন্মধ্যে রয়েছে ফাজায়েলে আমল, আবুল আলা মওদুদির তাফহীমুল কোর'আন, আল্লামা ইকবালের বালি জিবরীল, শিবলী নোমানীর সফরনামা ও ইমাম গাজালী, এবং আলী নদভীর প্রায় ২০টা বই। এ ছাড়াও আরো অনেকগুলো উর্দু ও আরবি বই তিনি অনুবাদ করেছেন।

তুর্কি এই লেখক অর্থাৎ ইউছুফ কারাজা তাঁর উস্তাদ আবুল হাসান আলি নদভিকে যতটা ভালোবাসেন, ঠিক ততটাই ভালোবাসেন আবুল আলা মওদুদীকে অথবা আল্লামা ইকবালকে। এমন লোক তুরস্কে অনেক আছে, যারা মওদুদী ও নদভীকে সমানভাবে ভালোবাসেন। অথচ, বাংলাদেশে এমন কাউকে দেখিনি, যিনি দেওবন্দি ও জামায়াতি উভয়কে সমান ভালোবাসেন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

গণতন্ত্র সময়ের একটি চাহিদা

আজ থেকে ৪০০ বছর আগে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো নির্বাচনের কথা কি আমরা কল্পনা করতে পারি? ধরুন, ১৬১৭ সাল। উসমানী খেলাফতের অধীনে তখন বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ ভূমি। সেই এক-তৃতীয়াংশ ভূমির খেলাফতের দায়িত্ব পালন করছেন সুলতান আহমদ। কেউ যদি তখন বলতো, আমরা সুলতান আহমদের পরিবর্তন চাই এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। তাহলে তখন কিভাবে সে নির্বাচনটি হত? তখন তো আর ইন্টারনেট বা টেলিভিশন ছিল না, এমনকি প্লেনও ছিল না। নির্বাচন কমিশনারের নির্বাচনী তফসিলটি বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রত্যেকের কাছে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করতে করতে কমপক্ষে ৩ বছর সময় লেগে যেতো। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সকল মানুষ যেহেতু খলীফা প্রার্থী হবার অধিকার রাখে, সুতরাং নির্বাচন কমিশনারের কাছে তাঁদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে করতে সময় লাগতো আরো ২ বছর। নির্বাচন কমিশনার লক্ষ লক্ষ মনোনয়ন পত্র বাচাই করতে করতে লাগতো আরো ১ বছর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের এবং আপিল নিষ্পত্তি করতে সময় লাগতো কমপক্ষে আরো ৫ বছর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার সময় দিতে হতো কমপক্ষে আরো ১ বছর। কারণ প্রার্থীদেরকে বহুদূর থেকে এসে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হতো। তারপর, প্রা...