সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

তুরস্কের শিশু দিবস

বাংলাদেশের শিশু দিবসের সাথে তুরস্কের দিবসের অনেক পার্থক্য রয়েছে।

১) বিশ্বের প্রথম শিশু দিবস উদযাপন হয় তুরস্কে। তুরস্কের জাতির পিতা মোস্তফা কামাল ১৯২০ সালের ২৩ এপ্রিল প্রথম এ দিবসটি শুরু করেন। এরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিশু দিবস পালন করা শুরু হয়। তার ধারাবাহিকতায়, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে প্রথম শিশু দিবস চালু করা হয়।


২) তুরস্কে যেদিন সংসদ ভবন প্রথম চালু করা হয়েছিলো, এবং যেদিন জনগণ প্রথম নিজেদের সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করেছিলো, সেদিনকে তারা শিশু দিবস হিসাবে উদযাপন করে। কিন্তু বাংলাদেশে যেদিন জাতীর জনক জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সে দিনকে শিশু দিবস হিসাবে পালন করা হয়।

৩) তুরস্কের জাতীর জনক এ উদ্দেশে শিশু দিবস ঘোষণা করেছিলেন যে, আগামীদিনের শিশুরা যাতে তুর্কি জাতির নেতৃত্ব গ্রহণ করতে পারে। তিনি সত্যিকারভাবে শিশুদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এই দিনটিকে শিশু দিবস ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশে শিশু দিবস পালন করা হয় রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক কারণে। অর্থাৎ, শিশুরা যাতে জাতীর জনককে ভুলে না যায়, তাই তাঁর জন্মদিনে শিশু দিবস পালন করা হয়।

৪) তুরস্কে শিশু দিবস পালন করার জন্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, সেনা বাহিনীর প্রধান, নৌ বাহিনীর প্রধান, এবং বিমান বাহিনীর প্রধান সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীলরা তাদের নিজেদের দায়িত্ব একজন শিশুর হাতে তুলে দেন। শিশুরা এতে আগামী দিনের নেতা ও দায়িত্বশীল হবার স্বপ্ন দেখতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে শিশুদেরকে এমন কোনো সুযোগ দেয়া হয় না। বাংলাদেশে শিশু দিবস পালন করার জন্যে বিভিন্ন সভা-সেমিনারের মাধ্যমে শেখ মুজিবের জীবনী এবং পুরানো দিনের কাল্পনিক গল্পগুলো শিশুদের শুনানো হয়।

৫) তুরস্কের শিশু দিবসে শিশুরা হয় বক্তা, আর বড়রা হয় শ্রোতা। বাংলাদেশের শিশু দিবসে বড়রা হয় বক্তা, আর শিশুরা হয় শ্রোতা।

৬) আজকে এরদোয়ান তাঁর মন্ত্রীসভায় নিজের চেয়ারটি যখন একটি শিশুকে ছেড়ে দিয়েছিলেন, তখন ঐ শিশুটিকে সাংবাদিকরা প্রেসিডেন্টের মর্যাদা দিয়েই বিভিন্ন ইস্যুতে প্রশ্ন করেছিলেন। এবং শিশু মন্ত্রীরাও শিশু রাষ্ট্রপতিকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছিলেন। কমেন্টে কিছু ভিডিও লিংক দিচ্ছি, দেখুন। এমন অনুষ্ঠানগুলো শিশুদের স্বপ্ন নির্মাণে বিশাল সাহায্য করে।

৭) তুরস্কের শিশু দিবসের উদ্দেশ্য হলো শিশুদেরকে ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাওয়া। আর, বাংলাদেশের শিশু দিবসের উদ্দেশ্য হলো শিশুদেরকে অতীতের দিকে নিয়ে যাওয়া।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...

হাতমোজা সমাচার

আমার আপু ইনবক্সে আমাকে একটা লেখা পাঠিয়েছেন। হাতমোজা নিয়ে অন্য একজনের লেখা । লেখার নিচে মন্তব্যগুলো পড়ে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জেগেছে। ১। মুসলিমদের মহাসম্মেলনে অর্থাৎ হজ্জের সময়ে লাখো লাখো পুরুষের সামনে নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরেন না কেন? ২। নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরে যদি একেবারে ১০০% ঢেকে ফেলেন, তাহলে সূরা নূরের ৩০ নং আয়াতে পুরুষদেরকে দৃষ্টি নত করতে বলা হয়েছে কেন? ৩। সূরা নূরের ৩১ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “নারীদের যা প্রকাশ্য থাকার তা ব্যতীত” তাদের বক্ষদেশ আভরণ করার জন্যে। কিন্তু হাতমোজা দিয়ে ১০০% ঢেকে ফেললে নারীদের আর প্রকাশ্য থাকে কি? ৪। রাসূল (স) সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বলেছেন, “সহজ কর, কঠিন করো না”। কোনো নারী যদি হাতমোজা না পরতে চান, তাহলে তার জন্যে কঠিন কঠিন নিময় করার জন্যে কি রাসূল (স) বলেছেন? ৫। ঈমান ও তাকওয়া কি মানুষের হৃদয়ে থাকে না হাতে-পায়ে থাকে?