সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

প্রথম আলোর গরু

সব যুগেই ইসলাম বিদ্বেষী পত্রিকা ও সংবাদ মাধ্যম ছিল। মুসলিমদের খেলাফত পদ্ধতি ধ্বংসের পিছনে এই জাতীয় পত্রিকাগুলোর অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে।

সুলতান আবদুল হামিদ খানের সময়ে আমাদের ‘প্রথম আলো’র মত একটি পত্রিকা ছিল। নাম ‘মেশফেরেত’। তাদের কাজ ছিল, সুশীল ভাষায় ইসলাম ও ইসলামী খেলাফতের বিরোধিতা করা।

বর্তমান সময়ের বিবিসি বা CNN -এর ভূমিকা পালন করতো তখন ‘Lewiston Evening Journal’ নামক একটি পত্রিকা


প্রথম আলো এখন যা করে, তৎকালীন ‘মেশফেরেত’ পত্রিকাটি তাই করতো। তাদের কাজ ছিল, সুশীল ভাষায় ব্রিটিশ ও অ্যামেরিকানদের গোলামী ও দালালী করা। এ জন্যে তারা Lewiston Evening Journal পত্রিকার সংবাদগুলো উসমানী বা টার্কি ভাষায় অনুবাদ করে তাদের পত্রিকায় ছাপাতো।

তো, একবার এই ‘মেশফেরেত’ পত্রিকা একটি সংবাদ ছেপেছে। সংবাদটি হলো – “ভারতবর্ষে ইংরেজদের অধীনে মুসলিমদের নামাজ পড়ার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।”

সংবাদটির সাথে একটি ছবিও দেয়া হয়েছিল।20664601_1597534273653172_4095241368482289991_n

তখন সুলতান আবদুল হামিদ খানের ছেলে এসে তাঁকে বললেন, “দেখুন, সুলতান, ইংরেজরা মুসলিমদেরকে কত স্বাধীনতা দিয়েছে”।

সুলতান আবদুল হামিদ খান তাঁর ছেলেকে বললেন, ‘এখানে যে ছবিটা আছে, তা ভালোভাবে দেখেছ?’

‘দেখ, মুসল্লিরা বুটজুতো পায়ে দিয়ে মসজিদে নামাজ আদায় করছে। কতটুকু স্বাধীনতা থাকলে মুসল্লিদেরকে বুটজুতো পায়ে দিয়ে নামাজ পড়তে হয়? – এটা একটি মূর্খ মানুষও জানে।’

সুলতান আবদুল হামিদ দালাল ও প্রতারকদের ভালোভাবে চিনতে পারতেন।
_______

প্রথম আলো এখন ঠিক একই কাজ করছে। গরু খাওয়ার অপরাধে ভারতবর্ষে মুসলিমদের হত্যা করা হচ্ছে, তা তারা দেখে না। কিন্তু তারা কার্টুন এঁকে বলে, যারা গরু খায় তারা নিকৃষ্ট প্রাণী।

প্রথম আলোর মত যারা চোখ থাকলেও দেখতে চায় না, কান থাকলেও শুনতে চায় না, তারাই গরু থেকে নিকৃষ্ট।

আল্লাহ বলেন –

وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيرًۭا مِّنَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِ ۖ لَهُمْ قُلُوبٌۭ لَّا يَفْقَهُونَ بِهَا وَلَهُمْ أَعْيُنٌۭ لَّا يُبْصِرُونَ بِهَا وَلَهُمْ ءَاذَانٌۭ لَّا يَسْمَعُونَ بِهَآ ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ كَٱلْأَنْعَـٰمِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْغَـٰفِلُونَ

“আমি বহু জ্বিন ও মানুষকে দোযখের জন্য সৃষ্টি করেছি। তাদের হৃদয় রয়েছে, কিন্তু তারা চিন্তা করে না, তাদের চোখ রয়েছে, কিন্তু তা দ্বারা তারা দেখে না, তাদের কান রয়েছে, কিন্তু তা দ্বারা তারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই হল গাফেল বা শৈথিল্যপরায়ণ। [সূরা ৭/আ’রাফ – ১৭৯]

সুতরাং, যারা গরু খায় তারা নয়, বরং যারা গরুর মত চিন্তা ও বোধ শক্তিহীন, তাঁরাই নিকৃষ্ট।


 

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

গণতন্ত্র সময়ের একটি চাহিদা

আজ থেকে ৪০০ বছর আগে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো নির্বাচনের কথা কি আমরা কল্পনা করতে পারি? ধরুন, ১৬১৭ সাল। উসমানী খেলাফতের অধীনে তখন বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ ভূমি। সেই এক-তৃতীয়াংশ ভূমির খেলাফতের দায়িত্ব পালন করছেন সুলতান আহমদ। কেউ যদি তখন বলতো, আমরা সুলতান আহমদের পরিবর্তন চাই এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। তাহলে তখন কিভাবে সে নির্বাচনটি হত? তখন তো আর ইন্টারনেট বা টেলিভিশন ছিল না, এমনকি প্লেনও ছিল না। নির্বাচন কমিশনারের নির্বাচনী তফসিলটি বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রত্যেকের কাছে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করতে করতে কমপক্ষে ৩ বছর সময় লেগে যেতো। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সকল মানুষ যেহেতু খলীফা প্রার্থী হবার অধিকার রাখে, সুতরাং নির্বাচন কমিশনারের কাছে তাঁদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে করতে সময় লাগতো আরো ২ বছর। নির্বাচন কমিশনার লক্ষ লক্ষ মনোনয়ন পত্র বাচাই করতে করতে লাগতো আরো ১ বছর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের এবং আপিল নিষ্পত্তি করতে সময় লাগতো কমপক্ষে আরো ৫ বছর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার সময় দিতে হতো কমপক্ষে আরো ১ বছর। কারণ প্রার্থীদেরকে বহুদূর থেকে এসে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হতো। তারপর, প্রা...